Meditative Asanas | মনকে শান্ত করার সঙ্গে সুস্থ্য রাখুন শরীর! প্রতিনিয়ত করুন এই ৫টি মেডিটেটিভ আসন!

Monday, September 25 2023, 9:41 am
highlightKey Highlights

মেডিটেশন বা ধ্যান মানসিক শান্তি প্রদানের সঙ্গে দূর করে অবসাদ। মেডিটেশন করার সঙ্গে সঙ্গে শরীর সুস্থ্য রাখতে করতে পারেন ধ্যানমূলক আসন।


রোজকার কাজের চাপ, জীবনের চাপের জন্য প্রাপ্ত বয়স্ক প্রায় প্রত্যেকেই নানারকমের মানসিক অশান্তিতে থাকেন। মানসিক চাপ থাকলে বা অশান্তি থাকলে যে কোনোরকম সিদ্ধান্ত নিতে ভুল হয়। এছাড়াও এর প্রভাব পড়ে শরীরেও। এক্ষেত্রে মনকে শান্ত করতে এবং মানসিক ক্লান্তি দূর করতে অন্যতম উপায় হলো মেডিটেশন (Meditation) বা ধ্যান। দৈনন্দিন মেডিটেশন করলে মানসিক ও শারীরিক নানারকম উপকার পাওয়া যায়।

মনকে শান্ত করতে এবং মানসিক ক্লান্তি দূর করতে অন্যতম উপায় হলো মেডিটেশন 
মনকে শান্ত করতে এবং মানসিক ক্লান্তি দূর করতে অন্যতম উপায় হলো মেডিটেশন 
Trending Updates

 মূলত মনকে শান্ত বা স্থির করার জন্য বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত ধ্যান করতে বলেন। কর্মসূত্রে হোক বা পারিবারিক কারণ, নানারকম মানসিক চাপ দূর করে মনকে শান্ত কোনো এবং সঠিক চিন্তাভাবনা করতে, সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে মেডিটেশন। মেডিটেশনের গুরুত্ব অপরিসীম।  কেবল মানসিক দিকের জন্যই নয়, শারীরিক ক্ষেত্রেও উপকার করে মেডিটেশন। দেখে নিন কেন প্রতিনিয়ত ধ্যান করা উচিত।

মনকে শান্ত বা স্থির করার জন্য বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত ধ্যান করতে বলেন
মনকে শান্ত বা স্থির করার জন্য বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত ধ্যান করতে বলেন

মেডিটেশনের উপকারিতা । Benefits of Meditation :

মনঃসংযোগ বৃদ্ধি । Increase Mental Connection :

নানারকম মানসিক চাপের কারণে ক্রমশ আমাদের মনঃসংযোগ দুর্বল হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে মনঃসংযোগ বাড়াতে চাইলে ধ্যানের থেকে ভাল আর কিছুই হয় না। যদি আপনি কোনও কাজ নিয়ে সমস্যায় থাকেন, বুঝতে পারেন যে গভীর মনঃসংযোগ না হলে ওই কাজ সম্পন্ন হবে না, তাহলে নিয়মিত মেডিটেশন করা অভ্যাস করুন।

নিয়মিত মেডিটেশন করলে মনঃসংযোগ বৃদ্ধি হয় 
নিয়মিত মেডিটেশন করলে মনঃসংযোগ বৃদ্ধি হয় 

অবসাদ ও অ্যাংজাইটি দূর হবে ।  Depression and Anxiety Will Disappear :

শুধু যে মন শান্ত, ধীর স্থির হয় বা মনঃসংযোগ বাড়ে তাই নয়, মানসিক অবসাদ দূর করতেও মেডিটেশন বা ধ্যানের গুরুত্ব অপরিসীম। সকালবেলা কিছুক্ষণ মেডিটেশন করতে পারলে সারাদিন রিফ্রেশ লাগবে, দূরে থাকবে মানসিক অবসাদ। মানসিক অবসাদ বা চাপের পাশাপাশি অ্যাংজাইটি বা উৎকণ্ঠা বোধ দূর হয় নিয়মিত মেডিটেশন করলে। এমন অনেকেই রয়েছেন যারা সামান্য ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হয়ে যান। নিয়মিত মেডিটেশন বা ধ্যানের অভ্যাসের মাধ্যমে এই উৎকণ্ঠা কমানো সম্ভব।   

মানসিক অবসাদ দূর করতে মেডিটেশন বা ধ্যানের গুরুত্ব অপরিসীম
মানসিক অবসাদ দূর করতে মেডিটেশন বা ধ্যানের গুরুত্ব অপরিসীম

 অন্যমনস্কতা দূর করে ।  Eliminates Otherness :

মানসিক চাপে অনেকেরই অন্যমনষ্কতার স্বভাব থাকে। অনেকেই খুব সহজে অনেক কথা বা কাজ ভুলে যান। এক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে মেডিটেশন। এই অমনযোগ দূর করতে মেডিটেশন বা ধ্যান খুব ভাল ভাবে কাজ করে। পাশাপাশি, অনিদ্রার সমস্যা থাকলে সেটাও দূর করবে মেডিটেশনের অভ্যাস। মেডিটেশন করলে আমাদের শরীর শান্ত হয়, শিথিল হয়। তার ফলে ভাল ঘুম হয়।

অমনযোগ দূর করতে মেডিটেশন বা ধ্যান খুব ভাল ভাবে কাজ করে
অমনযোগ দূর করতে মেডিটেশন বা ধ্যান খুব ভাল ভাবে কাজ করে

মেডিটেশনের আসন । Meditative Asanas :

একদিকে মেডিটেশনের মানসিক উপকারিতা, অন্যদিকে আসনের শারীরিক উপকারিতা, বলতে গেলে এক ঢিলে দুই পাখি। মনকে শান্ত, স্থির করার সঙ্গে সঙ্গে শরীরকে সুস্থ্য রাখতে হলে প্রতিনিয়ত ধ্যানমূলক আসন করতে পারেন। এই আসনগুলির লক্ষ্য হল একাগ্রতা স্থিতিশীলতা শান্তি, এবং মনের প্রশান্তি। দেখে নিন কোন কোন আসন পরে এই তালিকায় (Meditative Asanas)।

 মনকে শান্ত, স্থির করার সঙ্গে সঙ্গে শরীরকে সুস্থ্য রাখতে হলে প্রতিনিয়ত ধ্যানমূলক আসন করতে পারেন
 মনকে শান্ত, স্থির করার সঙ্গে সঙ্গে শরীরকে সুস্থ্য রাখতে হলে প্রতিনিয়ত ধ্যানমূলক আসন করতে পারেন

১. সিদ্ধাসন ।  Siddhasana :

সিদ্ধাসন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে। এটি স্নায়ু বা নাড়িতে ভারসাম্যপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এই ধ্যানমূলক আসন করতে হলে প্রথমে পা সোজা করে বসুন। ডান পা বেকিয়ে পা মেঝেতে শরীরের খুব কাছাকাছি রাখুন। এবার বাম পা বাঁকিয়ে বাম পা ডান বাছুরের উপরে রাখুন। পায়ের তলা ডান উরু স্পর্শ করে। ডান পায়ের আঙ্গুলগুলি উরু এবং বাম পায়ের বাছুরের মাঝখানে এবং বাম পায়ের আঙ্গুলগুলি উরু এবং ডান পায়ের বাছুরের মাঝখানে টেনে আনুন। যদি শরীর সোজা রাখা কঠিন হয় বা হাঁটু মেঝেতে না ঠেকে তাহলে বসার জন্য কুশন ব্যবহার করতে পারেন। এবার এই ভঙ্গিতে ধ্যান করুন।

সিদ্ধাসন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে
সিদ্ধাসন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে

২. পদ্মাসন । Padmasana :

পদ্মাসন ভঙ্গিতে মেডিটেশন করলে এটি শরীরের ভারসাম্যপূর্ণ করে এবং মানসিক ভাবনা চিন্তাগুলি শান্ত করে। এই আসনটি করার জন্য প্রথমে পা সোজা করে বসুন। এরপর বাম পা নিন এবং এটি ভাঁজ করুন যাতে বাম পা তির্যকভাবে ডান পাশের শ্রোণীতে বাম গোড়ালি যতটা সম্ভব নাভির কাছাকাছি থাকে। তারপরে ডান পায়ের ক্ষেত্রেও একইভাবে উল্টোদিকে ডান গোড়ালিটি নাভির কাছাকাছি রাখুন। এবার এই ভঙ্গিতে ধ্যান করুন।

পদ্মাসন ভঙ্গিতে মেডিটেশন করলে শরীরের ভারসাম্যপূর্ণ করে এবং মানসিক ভাবনা চিন্তাগুলি শান্ত করে
পদ্মাসন ভঙ্গিতে মেডিটেশন করলে শরীরের ভারসাম্যপূর্ণ করে এবং মানসিক ভাবনা চিন্তাগুলি শান্ত করে

৩.  বজ্রাসন । Vajrasana:

বজ্রাসন করতে হলে পা দুটো ভাজ করে হাঁটু গেড়ে বসুন। খেয়াল রাখবেন যাতে এরকমভাবে বসার সময় দুই পায়ের বড় আঙুলটি একে অপরকে স্পর্শ করে। গোড়ালিগুলি সামান্য বাইরের দিকে রাখবেন। এবার এই ভঙ্গিতে বসে মেডিটেশন করুন। এই ধানমূলক আসন শরীরের হজম শক্তি উদ্দীপিত করে। ফলে বিশেষজ্ঞরা, খাবার খাওয়ার পর ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য বজ্রাসনে বসার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

বিশেষজ্ঞরা খাবার খাওয়ার পর ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য বজ্রাসনে বসার পরামর্শ দিয়ে থাকেন
বিশেষজ্ঞরা খাবার খাওয়ার পর ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য বজ্রাসনে বসার পরামর্শ দিয়ে থাকেন

৪. সুখাসন । Sukhasana:

সুখাসন করতে হলে দুটি পা ভাঁজ করে একে অপরের অপর রাখতে হবে। অর্থাৎ সোজা বাংলা ভাষায় বলতে গেলে বাবু হয়ে বসতে হবে। এই ভাবে বসে মেডিটেশন করা সব থেকে বেশি জনোপ্রিয়। কারণ এই ধ্যানমূলক আসন হল সবথেকে বেশি আরামদায়ক। যাদের সিদ্ধাসন, বজ্রাসন বা পদ্মাসনে দীর্ঘ সময় ধরে বসতে অসুবিধা হয় তাদের এই ভঙ্গিতে বসে মেডিটেশন করার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।

এই ধ্যানমূলক আসন হল সবথেকে বেশি আরামদায়ক
এই ধ্যানমূলক আসন হল সবথেকে বেশি আরামদায়ক

৫. স্বস্তিকাসন । Swastikasana:

স্বস্তিকাসন অনেকটা সুখাসনের মতোই। ডান পা-টা বাং পায়ের ওপর রেখে এবং বাম পা দেন পায়ের তলায় রেখে বসুন। খেয়াল রাখবেন যাতে দুটো পায়ের পাতা মাটিতে স্পর্শ করে। এই ধ্যানমূলক আসনও খুব আরামদায়ক। এই ভঙ্গিতে বসে মেডিটেশন করুন।

স্বস্তিকাসনও বেশ আরামদায়ক আসন 
স্বস্তিকাসনও বেশ আরামদায়ক আসন 

প্রতিনিয়ত মেডিটেশন করলে একাধিক  শারীরিক ও মানসিক উপকারিতা পাওয়া যায়। তবে মেডিটেশন করার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন। অনেকেই প্রথম প্রথম মেডিটেশন করতে গিয়ে নানান সমস্যার সম্মুখীন হন। কারুর মনে হয় এতে কোনও লাভ হচ্ছে না, আবার অনেকে অন্য মনষ্ক হয়ে পড়েন। এক্ষেত্রে প্রথম প্রথম অসুবিধা হবে, ফলে প্রথমে একটানা অনেকক্ষণ ধ্যান করতে পারবেন না। অল্প অল্প সময় করে অভ্যাস করতে হবে। মেডিটেশন করার সময় আশপাশ শান্ত থাকাও প্রয়োজন। প্রয়োজনে হাল্কা মিউজিক চালিয়ে নিতে পারেন।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File