লাইফস্টাইল

Sugar Alternatives | চিনিযুক্ত পানীয় ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় ১৮ শতাংশ! চিনির বিকল্প হিসেবে কী কী খেতে পারেন দেখুন!

Sugar Alternatives | চিনিযুক্ত পানীয় ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় ১৮ শতাংশ! চিনির বিকল্প হিসেবে কী কী খেতে পারেন দেখুন!
Key Highlights

প্রতি মিলিলিটার চিনিযুক্ত পানীয় ক্যানসারের ঝুঁকি ১৮ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। পাশাপাশি আরও শারীরিক ক্ষতি হয়। এক্ষেত্রে চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে নানান প্রাকৃতিক উৎস।

সুঠাম সুস্থ্য চেহারা চান সকলেই। তবে জীবন পরিচালনা বা খারাপ খাদ্যাভাস এবং নানা কারণে দেহ ভারী হয়ে যায় কমবেশি ছোট-বড় সকলের। জিম, শরীর চর্চা, খাটাখাটনি-বহু কিছু করেও কিছুতেই কমে না ওজন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শরীর চর্চা করেও যদি ওজন না কমে তা হলে সেক্ষেত্রে নজর দিতে হবে খাদ্যাভাসের দিকে। ডায়েট থেকে বাদ দিতে হবে চিনি! খেতে ভারী মিষ্টি হলেও চিনি শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। চিনি একটি প্রক্রিয়াজাতকরণ খাবার। অতিরিক্ত চিনি খাওয়া ওজন বৃদ্ধি করার সঙ্গে সঙ্গে ডেকে আনতে পারে বিভিন্ন রোগব্যাধি। ফুলে যারা ডায়েট করেন তাদের সঙ্গে সকলেই সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে খাদ্যতালিকা থেকে চিনি বাদ দিতে বলা হয়।

শরীরের কী কী ক্ষতি করতে পারে চিনি?

 আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের (American Heart Association) প্রকাশ করা রিপোর্ট অনুসারে সমগ্র বিশ্বেই দৈনিক চিনি খাওয়ার প্রবণতা চোখে পড়ার মতো দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গড় হিসেবে প্রায় সিংহভাগ বিশ্ববাসী প্রতিদিন কম-বেশি প্রায় ২২ চামচ চিনি খেয়ে থাকেন, যা বিপদ সীমার থেকে অনেক ওপরে। প্রসঙ্গত, এত মাত্রায় চিনি খাওয়ার কারণে শরীরের মারাত্বক ক্ষতি হয়ে থাকে, যেমন-

১. শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কর্মক্ষমতাহীন :

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে চিনি শরীরে প্রবেশ করে ফ্রুকটোজে (fructose) রূপান্তরিত লিভারে মেদ জমাতে শুরু করে। সেই সঙ্গে রক্তেও ফ্যাটের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে একটা সময়ে গিয়ে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে লিভারের কর্মক্ষমতাও কমতে শুরু করে। ধীরে ধীরে শরীরের অঙ্গগুলির কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

২. ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি :

এক গবেষণা পত্র অনুসারে চিনি খাওয়ার মাত্রা যত বাড়তে থাকে, তত ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে। কারণ চিনি শরীরে প্রবেশ করার পর নিমেষে সুগার লেভেলকে অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। আর এমমনটা চলতে থাকলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে (type-2 diabetes) আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পায়। আর একবার যদি ডায়াবেটিস শরীরে এসে বাসা বাঁধে তাহলে একে একে প্রায় প্রতিটি ভাইটাল অর্গানই অকেজো হতে শুরু করে।

৩. হার্টের মারাত্মক ক্ষতি :  

 চিনি শরীরে প্রবেশ করার পর হার্টের ক্ষতি করে থাকে। রক্তে চিনির মাত্রা বেড়ে গেলে হৃদপিন্ডের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়। যে কারণে বাড়ে নানাবিধ কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা। প্রসঙ্গত, আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশ করা রিপোর্ট অনুসারে মাত্রাতিরিক্তি চিনি খাওয়ার কারণে কেউ যদি একবার ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে পড়েন, তাহলেও হার্টের কর্মক্ষমতা তো কমেই, সেই সঙ্গে স্ট্রোক এবং হার্ট ফেইলিওরের সম্ভাবনাও প্রায় ৬৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তাই ভুলেও দিনে ৬ চামচের বেশি চিনি না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

৪. ব্লাড প্রেসার বৃদ্ধি :

 বেশি মাত্রায় চিনি খেলে রক্তচাপ বাড়তে শুরু করে। আসলে দেহের অন্দরে চিনির মাত্রা বাড়তে থাকলে ইনসুলিনের উৎপাদনও বেড়ে যায়, যে কারণে ধমনিতে এক ধরনের দেওয়াল তৈরি হতে শুরু করে। এই কারণেই রক্তচাপ বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে স্ট্রোকের মতো ভয়ঙ্কর রোগ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।

৫. রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি :

চিনি খাওয়ার মাত্রা বাড়তে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই দেহের ওজন বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রাও বিপদ সীমা ছাড়িয়ে যায়। শুধু তাই নয়, উপকারি কোলেস্টেরলের মাত্রাও বাড়তে শুরু করে। ফলে হার্টের উপর মারাত্মক চাপ পড়ে।

৬. এনার্জি শোষণ  :

একথা ঠিক যে চিনি বা ওই জাতীয় কোনও খাবার খেলে নিমেষে ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। কিন্তু একথাও ঠিক যে কিছু সময় পরে যখন চিনির রেশ কাটতে শুরু করে, তখন এত মাত্রায় এনার্জির ঘাটতি দেখা দেয় যে শরীর একেবারেই চলতে চায় না, উল্টে কাহিল হয়ে পরে। শুধু তাই নয়, চিনি খাওয়ার মাত্রা বাড়ালে মস্তিষ্কের অন্দরে সেরাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যে কারণে ঘন ঘন ঘুম আসতে থাকে। ফলে কাজ করার ইচ্ছা একেবারে চলে যায়।

৭. মানসিক অবসাদে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি :

প্রায় ৯০০০ মানুষের ওপর, পাবলিক হেলথ জার্নালের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে অতিরিক্ত মাত্রায় চিনি খাওয়া শুরু করলে একটা সময়ের পর ডিপ্রেশনে (depression) আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়তে থাকলে মস্তিষ্কের অন্দরে ডোপামাইন নামক ফিল গুড হরমোনের ক্ষরণ কমে যেতে শুরু করে। যা ক্রমশ মানসিক অবসাদের দিকে পরিচালনা করে।

চিনির বিকল্প হিসেবে কী খাবেন?

শরীর সুস্থ্য রাখতে খাদ্যতালিকা থেকে চিনি বাদ দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত যারা ডায়েট করছেন বা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন তাদের চিনি খেতে বারণ করা হয়। তবে তা বলে মিষ্টি ছাড়া খাবার খেতে হবে এমনও নয়।এদিকে অনেকেই চিনির বিকল্প হিসেবে সুগার ফ্রি (Sugar Free) ব্যবহার করে থাকেন। তবে তাতেও রয়েছে নানারকমের রাসায়নিক। এক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন চিনির বিকল্প (Sugar Alternatives)। এমন বেশ কিছু প্রাকৃতিক চিনির বিকল্প রয়েছে যাতে রয়েছে মিষ্টির স্বাদও আবার পুষ্টিগুণও। দেখে নেওয়া যাক চিনির বিকল্প (Sugar Alternatives) হিসেবে কী কী ব্যবহার করতে পারবেন।

মধু:

 প্রাকৃতিক মিষ্টি বলতেই সবার মাথায় প্রথমেই আসে মধুর নাম। এই প্রাকৃতিক তরল মিষ্টির রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ। এতে প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজও আছে। মধু বিভিন্ন ধরনের ঘরোয়া সমাধানেও অতুলনীয়। মধু শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এক চা চামচ মধুতে মাত্র ২০ ক্যালরি থাকে। চা, কফিতে চিনি না মিশিয়ে সামান্য মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।

খেজুর:

 খেজুরে পটাশিয়াম, কপার, আইরন, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন বি ৬ থাকে। এটি চিনির চাইতেও মিষ্টি স্বাদের হয়। রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে খেজুরের জুড়ি নেই।

স্টেভিয়া:

স্টেভিয়া (Stevia) এটি এক ধরনের ভেষজ পাতা। গবেষণায় দেখা গেছে, এর অনেকগুলো পাতা একসঙ্গে নিলে এটি খেতে চিনির চাইতেও মিষ্টি লাগে। এটি দাঁতের ক্ষয়রোগ রোধ করে। স্বাদ বৃদ্ধিকারক হিসেবেও স্টেভিয়ার অনেক চাহিদা রয়েছে। চা, কফি, মিষ্টি, দই, বেকারি ফুড, আইসক্রিমে জাতীয় নানা খাদ্যপণ্য তৈরিতে স্টেভিয়া ব্যবহার করা যায়। এর ভেষজ উপাদান মানুষের দেহে কোনো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না। স্কিন কেয়ার হিসেবে কাজ করে, তাই ত্বকের কোমলতা এবং লাবণ্য বৃদ্ধি করে।

আখের রস:

আখের রস (Sugarcane juice) প্রকৃতির আশ্চর্য দান। এই পানীয়টি শরীরের শক্তি যোগানের দারুন উৎস। এই পানীয় কোল্ড ড্রিংক বা নানান মিষ্টি পানীয়র থেকে বহুগুণ বেশি উপকারী।  পাশাপাশি আখের রস (Sugarcane juice) ত্বকের টোনার হিসেবে, পরিপাকক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে এবং নানা ধরনের রোগ সারাতে সাহায্য করে।

ফলের জ্যাম:

ফলের জ্যাম (Fruit Jam) ও চিনির বিকল্প হিসাবে কিছু খাবারে ব্যবহার করা যেতে পারে। মিষ্টি স্বাদের ফল দিয়ে বানানো জ্যাম শরীরের জন্য উপকারী। জাম, আপেল, নাশপাতি, আঙ্গুর দিয়ে বানানো ফলের জ্যাম (Fruit Jam)  চিনির পরিবর্তে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন।

কাঁঠাল:

বর্তমানে কাঁঠাল সারাবছরই পাওয়া যায়। চিনির বিকল্প হিসেবে বিভিন্ন খাবারে কাঁঠালের কোষ ব্যবহার করা যায়। কাঁঠালের বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত খাবারও প্রস্তুত করা যায়। যেগুলোতে চিনির বদলে কাঁঠালের কোষ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে অনেকেই মিষ্টি এড়িয়ে চলেন। অথচ চায়ে এক চামচ চিনি না মেশালে চলে না। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, সরাসরি চিনি খাওয়ার এই অভ্যাস শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। ২০১০ সালের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, সারা দিনে একবার হলেও চিনিযুক্ত পানীয় খাওয়ার অভ্যাস ডায়াবিটিসের ঝুঁকি প্রায় ২৬ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারে। অ্যালকোহলের চেয়েও চিনি মেশানো কোনও পানীয় অনেক বেশি বিপজ্জনক। প্রতি মিলিলিটার চিনিযুক্ত পানীয় ক্যানসারের ঝুঁকি ১৮ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। চিনির কিছু কৃত্রিম বিকল্পও এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। চিনি থেকে দূরে থাকতে অনেকেরই রোজের ডায়েটে এই কৃত্রিম চিনির গুঁড়ো বা সুগার ফ্রি (Sugar Free) কিংবা ট্যাবলেট খেয়ে থাকেন। তবে চিকিৎসকরা বলছেন বাজারচলতি কৃত্রিম চিনিতে বিভিন্ন রাসায়নিক যৌগ থাকে। কৃত্রিম চিনির মিষ্টি ভাব আনতেই মূলত এগুলি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এগুলি শরীরের পক্ষে মোটেই ভাল নয়। ফলে এক্ষেত্রে প্রাকৃতিক চিনির বিকল্প ব্যবহার করাই ভালো।


Bihar Cabinet | দশমবারের জন্যে মূখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে নীতিশ কুমার, BJP-র হাতে বিহারের মন্ত্রিসভা!
RG Kar Case | RG Kar আর্থিক দুর্নীতি মামলায় সন্দীপ ঘোষের বয়ান রেকর্ড করতে উদ্যোগী ইডি
Shubman Gill | ইডেনে আর খেলবেন না ক্যাপ্টেন 'গিল', আইসিইউতে চিকিৎসা চলছে তাঁর
Duyare Swasthya | এক গাড়িতেই মিলবে ডাক্তার, করা যাবে USG থেকে ব্লাড টেস্ট! শালবনিতে ‘দুয়ারে স্বাস্থ্য পরিষেবা’র উদ্বোধন স্বাস্থ্য দপ্তরের
Red Fort | ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে লালকেল্লা, পর্যটকদের জন্যে খোলা হচ্ছে দরজা
Weather Update | শহর কলকাতায় শীতের দাপট, একনজরে মহানগরের আজকের আবহাওয়া আপডেট
Terrorist-WB | বঙ্গে বসেই চলছিল ‘রিসিন’-বিষ তৈরির কাজ? দেড় মাস কলকাতাতেই ছিলেন দিল্লি বিস্ফোরণের ডান-হাত