দেশ

Aditya L1 Mission | সূর্যের দিকে ক্রমশ এগিয়ে চলেছে আদিত্য এল-১! সফলভাবে পৌঁছেছে দ্বিতীয় কক্ষপথে!

Aditya L1 Mission | সূর্যের দিকে ক্রমশ এগিয়ে চলেছে আদিত্য এল-১! সফলভাবে পৌঁছেছে দ্বিতীয় কক্ষপথে!
Key Highlights

স্বাভাবিকভাবেই চলছে আদিত্য এল-১ মিশন। পৃথিবীর এক চক্কর লাগিয়ে ইতিমধ্যে দ্বিতীয় কক্ষপথে পৌঁছেছে আদিত্য এল-১। সৌরযানের পরবর্তী পরীক্ষা ১০ই সেপ্টেম্বর।

গত শনিবার, ২রা সেপ্টেম্বর (Aditya L-1 Mission Launch Date ) বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান কেন্দ্র (Satish Dhawan Center in Sriharikota, Andhra Pradesh) থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় ভারতের প্রথম সৌরযান আদিত্য এল-১ (Aditya L-1)। ইসরোর চন্দ্রযান-৩ (ISRO Chandrayaan 3) এর পর ইতিহাস গড়ার উদ্দেশ্যে ক্রমশ এগিয়ে চলেছে আদিত্য এল ১ (Aditya L-1 Mission )।  বর্তমানে  মহাকাশে পৌঁছে পৃথিবীকে চক্কর কাটছে ইসরোর সৌরযান আদিত্য এল-১ (Aditya L1)। ইসরো জানিয়েছে, পৃথিবীর প্রথম কক্ষপথ থেকে বেরিয়ে দ্বিতীয় কক্ষে পা রেখেছে আদিত্য।

ইসরো সূত্রে খবর, রবিবার সকাল ১১ টা ৫০ মিনিটে ইসরো (ISRO) প্রথম আর্থ-বাউন্ড ফায়ারিং করেছে।  হাজার ৪৮০ কিলোগ্রাম ওজনের মহাকাশযানটি উৎক্ষেপণের পর সফলভাবে তা পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপন করা হয়েছে বলে আগেই জানিয়েছে ইসরো। ইতিমধ্যেই বেশ কিছুটা পথ অতিক্রম করে পৃথিবীর প্রথম কক্ষপথ ছেড়ে দ্বিতীয় কক্ষপথে প্রবেশ করেছে আদিত্য এল-১ (Aditya L-1)। উৎক্ষেপণ থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত আদিত্য এল-১ মিশন (Aditya L-1 Mission ) স্বাভাবিকভাবে চলছে বলেই জানিয়েছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (Indian Space Research Organization)।

জানা গিয়েছে, আদিত্য এল-১ (Aditya L-1) এখন ২৮২X৪০২২৫ কিমি কক্ষপথে পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে। চন্দ্রযান-৩ (ISRO Chandrayaan-3) এর মতো আদিত্য এল-১ মিশনের (Aditya L-1 Mission) ক্ষেত্রেও মহাকাশযানটি পৃথিবীর চারপাশে ঘুরবে এবং তারপরে সূর্যের পথে এগিয়ে যাবে। দেশের প্রথম সৌর মিশনের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হচ্ছে পিএসএলভি রকেট (PSLV)। এখানে কোনও সলিড বুস্টার নেই। আদিত্য এল-১ মিশনের (Aditya L-1 Mission ) ক্ষেত্রে স্পেসক্রাফ্টে ব্যবহার করা হয়েছে সেকেন্ড স্টেজ হাই প্রেসার লোয়ার থ্রাস্ট বিকাশ ইঞ্জিন (Vikash Engine)।

ইসরো ও মহাকাশ বিজ্ঞান সম্পর্কে আরও পড়ুন : নাম্বি নারায়ণনের অবদান ছাড়া হতো না ইসরোর 'বিকাশ'!

উল্লেখ্য, আদিত্য এল-১ মিশনের (Aditya L-1 Mission) এই ‘এল-১’ পয়েন্ট হল ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্ট (Lagrange point)। পৃথিবী ও সূর্যের মাঝামাঝি এই পয়েন্টে পৃথিবী ও সূর্যের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ব্যালান্স হয়ে যায়। এই ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্ট এমন এক মধ্যবর্তী জায়গা যেখানে সূর্য ও পৃথিবীর আকর্ষণ সরাসরি পড়বে না স্পেসক্রাফ্টে। ফলে সেটি সূর্যের দিকে এগিয়ে যাবে না আবার পৃথিবীর দিকে পিছিয়েও আসবে না। পাশাপাশি সূর্যের গনগন আগুনের তাপ কোনও ক্ষতি করতে পারবে না মহাকাশযানকে। এছাড়াও এখানে গেলে স্পেসক্রাফট খুব কম জ্বালানিতে দীর্ঘসময় স্থির হয়ে থাকতে পারে। আর ওই পয়েন্ট থেকে সূর্যকে কাছ থেকে দেখাও সম্ভব। আর এই গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টের লক্ষ্যেই ক্রমশ এগিয়ে চলেছে আদিত্য এল ১ (Aditya L-1)। এই 'এল পয়েন্টে' গিয়ে ভারতের প্রথম সৌরযান স্থির হয়ে বসে সূর্যের ছবি তুলবে, সূর্যের করোনার খবর পাঠাবে পৃথিবীর গ্রাউন্ড স্টেশনে।

ভারতের এই প্রথম সূর্য অভিযান, আদিত্য এল-১ মিশনের (Aditya L-1 Mission) আসল উদ্দেশ্য হল, সূর্যের সবচেয়ে উত্তপ্ত অঞ্চল সোলার করোনাকে বোঝা। সূর্য থেকে আগুনে সৌররশ্মিরা কীভাবে ও কোন পথে পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে তা গবেষণা করে দেখা। এছাড়াও সূর্যের শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্রের খোঁজ করতেও পাঠানো হয়েছে আদিত্য এল-১ সৌরযানকে। কারণ সূর্যের চৌম্বকক্ষেত্রে বিশাল পরিমাণ শক্তি রয়েছে। মাঝে মাঝে সেখানে বিকট বিস্ফোরণও হয় ঠিক পরমাণু বোমা ফাটার মতো। সেই শক্তি বেরিয়ে আসে যাকে বলা হয় ‘করোনাল মাস ইঞ্জেকশন’ (Coronal Mass Ejection)।

প্রসঙ্গত, আদিত্য এল-১-কে বেঙ্গালুরু ও পোর্ট ব্লেয়ারে ইসরো-র গ্রাউন্ড স্টেশন থেকেই সৌরযানটি পরিচালিত করা হচ্ছে। বর্তমানে নতুন ২৮২X৪০২২৫ কিলোমিটার কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করছে আদিত্য। ভারতের প্রথম সৌরযানের তৃতীয় পরীক্ষাটি হবে আগামী ১০ ই সেপ্টেম্বর। সেদিন ভোররাত আড়াইটে নাগাদ পৃথিবীর তৃতীয় কক্ষপথে প্রবেশ করবে এই সৌরযান। অর্থাৎ ধীরে-ধীরে পৃথিবীর চারপাশে ঘুরতে-ঘুরতে একের পর এক কক্ষপথ পেরিয়ে সূর্যের দিকে এগিয়ে যাবে আদিত্য এল ১।