আবহাওয়া

West Bengal Weather | বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস! ১ লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছে ডিভিসি!পুজোর মরশুমে বন্যার আশঙ্কা!

West Bengal Weather | বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস! ১ লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছে ডিভিসি!পুজোর মরশুমে বন্যার আশঙ্কা!
Key Highlights

পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া আপডেট অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে তৈরী হয়েছে ঘূর্ণাবর্ত ও নিম্নচাপ। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বৃষ্টিতে ভিজবে গোটা বঙ্গ। অন্যদিকে, ঝাড়খণ্ডে প্রবল বৃষ্টির কারণে ১ লক্ষ কিউসেকেরও বেশি জল ছেড়েছে ডিভিসি। পুজোতে ভারী বৃষ্টির মধ্যে বন্যার পূর্বাভাস।

পুজোর আগে বৃষ্টির ভ্রুকুটি। দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে পুজো। এখন হাতে একটু সময় বেশি থাকা মানেই শপিং। তবে এই 'সুখে' 'ভূত' হয়ে এসেছে বৃষ্টি! সোমবার সকাল থেকেই শহর কলকাত-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত। গোটা দিন জুড়েই কালো মেঘে ঢেকেছে আকাশ। পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া (West Bengal Weather) আপডেট অনুযায়ী, এখনও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে বঙ্গে!

আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আপাতত ২-৩ দিন পরিস্থিতি বদলানোর খুব একটা সম্ভাবনা নেই। কারণ ইতিমধ্যেই উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি করছে। পাশাপাশি তৈরী হয়েছে একটি ঘূর্ণাবর্তও। যা ক্রমশ পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে ক্রমশ্য অগ্রসর হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণাবর্ত-এই দুয়ের জোড়া ঘা খাচ্ছে বঙ্গ। পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া (West Bengal Weather) আপডেট অনুযায়ী, দিনভর কালো মেঘে ঢাকা থাকবে দক্ষিণবঙ্গের আকাশ। থাকবে বৃষ্টির সম্ভাবনাও। এদিন বিশেষ করে বৃষ্টি হবে কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামে। বুধবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। ভারী বৃষ্টি হবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা (South 24 Parganas), পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর (East and West Medinipur), ঝাড়গ্রাম (Jhargram), পুরুলিয়া (Purulia), বাঁকুড়া (Bankura) এবং বীরভূম (Birbhum) জেলাতে। বৃহস্পতিবারও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে বীরভূম, মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) এবং পশ্চিম বর্ধমান (Burdwan)জেলায়।

 হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এদিন শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে, যা কি না স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি নীচে। অপরদিকে আজ শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করবে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি, যা কি না স্বাভাবিক। পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া (West Bengal Weather) আপডেট অনুযায়ী, ২রা অক্টোবর, আজ কলকাতা লাগোয়া উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, হাওড়াতে বেশ কয়েক দফায় বজ্রপাত সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। গাঙ্গেও পশ্চিমবঙ্গে আজ থেকে অবশ্য বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে। কলকাতা ও আশেপাশের জেলায় জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা। আগামিকাল এবং পরশু ফের ভারী বৃষ্টি হতে পারে কলকাতা সংলগ্ন দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। 

উত্তরবঙ্গেও ভালো রকম বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে। উত্তরের জেলাগুলিতে ভারী ও অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা থাকবে। মঙ্গলবার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বৃষ্টির স্পেল উত্তরবঙ্গে। সোমবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে দার্জিলিং (Darjeeling), কালিম্পং (Kalimpong), জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) ও আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলায়। মঙ্গলবার অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা থাকছে কালিম্পং, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার জেলায়। বুধবার ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে কালিম্পং এবং জলপাইগুড়িতে। বৃহস্পতিবার থেকে হালকা মাঝারি বৃষ্টি হবে দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলায়।

উল্লেখ্য, আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে যে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে তা গাঙ্গেও পশ্চিমবঙ্গ এবং রাজ্যের পশ্চিমের জেলাগুলির উপরে অবস্থান করছে। নিম্নচাপটি ইতিমধ্যেই সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। ক্রমেই এটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। এই আবহে আগামী বুধবার পর্যন্ত কলকাতা ও আশেপাশের  জেলাগুলিতে বেশ বৃষ্টি হবে। জারি থাকবে হলুদ সতর্কতা। 

পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া সম্পর্কে আরও পড়ুন : কয়েক বছরের মধ্যেই একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ে ফুঁসবে গঙ্গা!

একদিকে যেমন পুজোর আগে কেনাকাটায় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বৃষ্টি, সেরকমই পুজোতে এবার বঙ্গবাসীদের জন্য বন্যার সতর্কতা! ঝাড়খণ্ডে এক টানা ভারি বৃষ্টির জেরে বানভাসি অবস্থা এরাজ্যের সাত জেলার।যার ফলে ইতিমধ্যেই সাত রাজ্যে বন্যা সতর্কতা জারি করেছে নবান্ন (Nabanna)। ঝাড়খণ্ড লাগোয়া জেলা পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি এবং হাওড়ায় বন্যার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অন্যদিকে, ঝাড়খণ্ডে টানা বৃষ্টি ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এক টানা বৃষ্টিতে জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। এই দুর্যোগে ডিভিসির ছাড়া জলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে এরাজ্যে। ইতিমধ্যেই নীচু এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে।

সূত্রের খবর, রবিবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ মাইথন (Maithan) থেকে ৩০ হাজার কিউসেক এবং পাঞ্চেত (Panchet) থেকে ৫০ হাজার কিউসেক সমেত মোট ৮০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। তারপরই ১২ ঘণ্টাও হতে না হতেই সোমবার সকাল ৯টা নাগাদ আবারও দুই জলাধার থেকে এক লাখ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। এছাড়াও ঝাড়খণ্ডে অবস্থিত গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে এরাজ্যেও চলছে দফায় দফায় বৃষ্টি। ফলে বৃষ্টির সঙ্গে দফায় দফায় জল ছাড়া বানভাসি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে সাত জেলার।

এমন পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে সমস্ত জেলার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Chief Minister Mamata Banerjee)। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমান, হুগলি এবং হাওড়ার জেলা শাসক, পুলিশ কমিশনার সহ উচ্চ পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির জন্য কী কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে সেই নিয়ে সোমবারই বৈঠকে বসতে চলেছেন মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ ত্রিবেদী (Chief Secretary Hare Krishna Trivedi)। এছাড়া ওই মিটিংয়ে উপস্থিত থাকবেন নিকাশি ব্যবস্থা, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সহ বিভিন্ন দফতরের শীর্ষ কর্তারা। প্রশাসনের তরফে স্থানীয় সমস্ত আধিকারিকদের শীঘ্রই সাত জেলায় মাইকিং করে বাসিন্দাদের সতর্ক করার কথা বলা হয়েছে। বিশেষত হাওড়া ও হুগলিতে মানুষকে সতর্ক করে উঁচু জায়গায় সাময়িকভাবে চলে যাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। বন্যা বা নদীর বেড়ে যাওয়া জলস্তর রুখতে বালির বস্তার মতো জিনিসও তৈরি  রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। বানভাসি এলাকায় যাতে শীঘ্র সাহায্য ও ত্রাণ সামগ্রীও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলায় ২৪x৭ নজর রাখার জন্য কন্ট্রোল রুম ইতিমধ্যেই খোলা হয়েছে।