West Bengal Weather | নিম্নচাপের জেরে শুক্রবার পর্যন্ত বৃষ্টি! সপ্তাহান্তে ফের হাওয়া বদল! কয়েক বছরের মধ্যেই একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ে ফুঁসবে গঙ্গা!

Thursday, December 21 2023, 2:33 pm
highlightKey Highlights

বঙ্গোপসাগরে তৈরী হওয়া পরিণত হয়েছে নিম্নচাপে, যার ফলে আগামীকাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়ায় দেখা যাবে বর্ষার খেল। কয়েক বছরের মধ্যেই পর পর তৈরী হবে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়।


বঙ্গোপসাগরে তৈরী হওয়া ঘূর্ণাবর্ত ইতিমধ্যেই পরিণত হয়েছে নিম্নচাপে। যার ফলে আজ সকাল থেকেই দিনভর বিক্ষিপ্ত হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণে ভিজছে গোটা তিলোত্তমা-সহ দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলা। পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া (West Bengal Weather) আপডেট অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহ জুড়েই আজকের মতোই দাপট দেখাবে বৃষ্টি।

 চলতি সপ্তাহ জুড়ে দাপট দেখাবে বৃষ্টি
 চলতি সপ্তাহ জুড়ে দাপট দেখাবে বৃষ্টি
Trending Updates

কেমন থাকবে দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া? । Weather in South Bengal :

আলিপুর আবহাওয়া দফতর (Alipore Meteorological Department) সূত্রে খবর, আগামীকাল, অর্থাৎ শুক্রবার পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির স্পেল চলবে দক্ষিণবঙ্গে। শনিবার থেকে হাওয়া বদল হবে। পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়ার (West Bengal Weather) অনুযায়ী,  শনিবার থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা কিছুটা কমবে, যার ফলে বাড়বে তাপমাত্রার পারদ। পাল্লা দিয়ে  বাড়বে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তিও। তবে আজ, বৃহস্পতিবার সকালের দিকে মেঘলা আকাশ দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু অংশে বেড়েছে বৃষ্টিপাতও।

শুক্রবার পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির স্পেল চলবে দক্ষিণবঙ্গে
শুক্রবার পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির স্পেল চলবে দক্ষিণবঙ্গে

গাঙ্গেয় পশ্চিমের সমস্ত জেলাতেই এদিন হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা (North and South 24 Parganas), পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর (East and West Medinipur) সহ ঝাড়গ্রামে (Jhargram)। পাশাপাশি উপকূল সংলগ্ন কলকাতা (Kolkata),  হাওড়া (Weather Howrah West Bengal), হুগলিতেও (Hooghly)  রয়েছে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা। অন্যান্য সমস্ত জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকছে। 

গাঙ্গেয় পশ্চিমের সমস্ত জেলাতেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা
গাঙ্গেয় পশ্চিমের সমস্ত জেলাতেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা

কেমন থাকবে উত্তরবঙ্গের আবহাওয়া ?। Weather in North Bengal :

উত্তরবঙ্গে ধীরে ধীরে বৃষ্টি কমবে। দার্জিলিং (Darjeeling), কালিম্পং (Kalimpong), জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri), আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) এবং কোচবিহারে (Cooch Behar) এদিন হালকা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া (West Bengal Weather) আপডেট অনুযায়ী,  উপরের দিকের জেলাগুলিতে মূল বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।  ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। মালদা (Malda), উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে (North and South Dinajpur) বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত কম। আগামীকাল, শুক্রবার থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা আরও কমবে এবং ক্রমশ বাড়বে তাপমাত্রা।  বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকায় আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তিও থাকবে। 

উপরের দিকের জেলাগুলিতে মূল বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে
উপরের দিকের জেলাগুলিতে মূল বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে

কেমন থাকবে কলকাতার আবহাওয়া? । Weather in Kolkata :

এদিন কলকাতায় মূলত সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ। সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি কিছুটা বেশি হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় দু-একটি স্পেল মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টিপাতের জেরে শহর কলকাতার তাপমাত্রা বেশ কিছুটা কমতে চলেছে। এদিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকতে পারে ৩২ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে শুক্রবার থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা কিছুটা কমবে। যার ফলে ফের চড়বে তাপমাত্রার পারদ। মূলত শনিবার থেকে অস্বস্তি বাড়বে।

  পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া সম্পর্কে আরও পড়ুন : একদিন আগেই বঙ্গোপসাগরে ঘনাচ্ছে ঘূর্ণাবর্ত! 

আগামী ২৪ ঘণ্টায় দু-একটি স্পেল মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে
আগামী ২৪ ঘণ্টায় দু-একটি স্পেল মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে

প্রসঙ্গত, বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়ায় (West Bengal Weather) যে পরিবর্তন এসেছে, যে কারণে কলকাতা এবং দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বৃষ্টি হচ্ছে, তার নেপথ্যে রয়েছে বঙ্গোপসাগরে তৈরী হওয়া ঘূর্ণাবর্ত। যা ইতিমধ্যেই নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে (Bay of Bengal) নিম্নচাপ অবস্থান করেছে। যা ক্রমশ শক্তি বাড়িয়ে ওড়িশা উপকূলের দিকে এগোবে। এর ফলেই দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি। নিম্নচাপের পাশাপাশি আজ থেকে শুরু হচ্ছে অমাবস্যার কটাল। নিম্নচাপ ও কটালের জোড়া ফলায় আজ থেকে সুন্দরবনের নদী ও সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি পাবে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, জলোচ্ছ্বাসের জেরে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে সুন্দরবনের বেহাল নদী ও সমুদ্র বাঁধ। জল ঢুকতে পারে উপকূলের গ্রামগুলিতে। ইতিমধ্যেই মৎস্যজীবীদের সতর্ক করা হয়েছে।

   উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ অবস্থান করেছে  
   উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ অবস্থান করেছে  

অন্যদিকে, আবহাওয়া নিয়ে সম্প্রতি সামনে এসেছে ভয়াবহ এক তথ্য। সূত্রের খবর, কয়েক বছরের মধ্যে এশিয়ার একাধিক নদীর উপর তৈরি হওয়া ঝড় তীব্র হতে পারে। এর প্রভাব পার্শবর্তী এলাকায় ফেলতে পারে ভয়াবহ প্রভাব। আর এই তালিকায় রয়েছে গঙ্গার (Ganga) নাম!

 গঙ্গার ক্রান্তীয় এলাকার ঝড় ২০৫০ সালের মধ্যে আরও ২০ শতাংশ তীব্র হতে পারে
 গঙ্গার ক্রান্তীয় এলাকার ঝড় ২০৫০ সালের মধ্যে আরও ২০ শতাংশ তীব্র হতে পারে

 সম্প্রতি নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের (Newcastle University)  'জার্নাল জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার'-এ গবেষণায় উঠে এসেছে,  গঙ্গার ক্রান্তীয় এলাকার ঝড় ২০৫০ সালের মধ্যে আরও ২০ শতাংশ তীব্র হতে পারে। তবে তীব্রতা বাড়লেও সংখ্যায় এই ঝড় কমতে পারে বলে দাবি গবেষকদের। এই প্রকার ঘূর্ণিঝড় অর্থাৎ ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ে একটি নির্দিষ্ট নিম্নচাপ কেন্দ্র থাকে এবং তা প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত ঘটায়। হারিকেন, টাইফুন, সাইক্লোন হল ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়। ভারত এবং দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে যে সমস্ত ঘূর্ণিঝড়গুলি তৈরি হয় সেগুলিকে শক্তিশালী সাইক্লোন বলা হয়। এছাড়াও উত্তর পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে যে সমস্ত ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয় সেগুলিকে বলা হয় টাইফুন।

বিশ্বে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় হয় প্রায় ৯০টি, এক্ষেত্রে প্রতি ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে
বিশ্বে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় হয় প্রায় ৯০টি, এক্ষেত্রে প্রতি ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে

প্রতি বছর বিশ্বে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় হয় প্রায় ৯০টি। এক্ষেত্রে প্রতি ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। এই ধরণের ঘূর্ণিঝড়ের জন্য বৃষ্টি এবং ঝড়ের ফলে বহু ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও বন্যার সম্ভাবনাও থাকে। মানব সম্প্রদায়ের পক্ষে তা অত্যন্ত ক্ষতিকারক হতে পারে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়। আর এই ক্রান্তীয় ঝড়গুলির চরিত্র বদল থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাওয়া, এই সবের নেপথ্যে অন্যতম বড় কারণ হতে পারে জলবায়ু পরিবর্তন, এমনটাই মতামত আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের একাংশের।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File