জীবন ও জীবনী

Ishwar Chandra Vidyasagar Biography | বাংলার সমাজ-শিক্ষার বিকাশের প্রাণপুরুষ বিদ্যাসাগর! ২০৩তম জন্মবার্ষিকীতে পড়ুন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী!

Ishwar Chandra Vidyasagar Biography | বাংলার সমাজ-শিক্ষার বিকাশের প্রাণপুরুষ বিদ্যাসাগর! ২০৩তম জন্মবার্ষিকীতে পড়ুন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী!
Key Highlights

সমাজের রক্তচক্ষুর সঙ্গে মোকাবিলা করে বিধবা বিবাহের প্রচলন করেছিলেন তিনি। বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থাকেও করেছিলেন বিকাশ। ২৬সে সেপ্টেম্বর সেই প্রাণপুরুষের জন্মদিবস। জানুন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী সম্পর্কে।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী । Iswar Chandra Vidyasagar Biography :

গোটা বাংলার ঘূণে ধরা সমাজকে এবং বাংলা সাহিত্যকে পরিবর্তন করে গোটা ভারতবর্ষকে নতুন আলোর পথ দেখিয়েছিলেন এই কিংবদন্তি। বাঙালির ভাষা, কথা, পড়া, চলাফেরা সব কিছুর সঙ্গেই জড়িয়ে তিনি। সাগরের মতো গভীর এবং সীমাহীন তাঁর শিক্ষা-বিদ্যা। যার জন্যই 'বন্দ্যোপাধ্যায়' নয়, গোটা বিশ্বের কাছে তিনি 'বিদ্যাসাগর'! আজ, ২৬সে সেপ্টেম্বর, আচার্য বিদ্যাসাগর (Acharya Vidyasagar) অর্থাৎ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিবস। ২০২৩ সালের ২৬সে অগাস্ট পালন করা হচ্ছে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০৩তম জন্মদিন।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বাল্যকাল । Ishwar Chandra Vidyasagar's Childhood :

১৮২০ সালের ২৬সে সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন ঈশ্বরচন্দ্র। ছেলেবেলায় তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় নাম পরিচিত ছিলেন, যা সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়ে হয় ‘বিদ্যাসাগর’। তবে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সই করতেন ‘ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা’ নামে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে ঈশ্বরচন্দ্রের জন্ম হয়। মাতা ভগবতী দেবী ও পিতা ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুযোগ্য সন্তান ছিলেন আচার্য বিদ্যাসাগর (Acharya Vidyasagar)।

পাঁচ বছর বয়সেই পাঠশালায় ভর্তি হন ঈশ্বরচন্দ্র। পড়াশোনার প্রতি তাঁর প্রবল আগ্রহ থাকলেও দুষ্টুমিতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার ছিল। বলা হয়, ঈশ্বরচন্দ্রের ছোটবেলার দুষ্টুমির কারণে অতিষ্ট হয়ে উঠত পাড়া-পড়শী। কখনও কারও বাগানে ঢুকে ফল চুরি করে খাচ্ছেন, তো কখনও কেউ রোদে কাপড় শুকোতে দিলে তাতে ময়লা লাগিয়ে দিচ্ছেন। একবার যবের শিষ খেতে গিয়ে গলায় আটকে যায় যবের কাঁটা। অনেক কষ্টে গলায় আঙুল দিয়ে সেই কাঁটা বের করে দেন  তাঁর ঠাকুরমা। তবে দুষ্টুমিতে যেমন ছিলেন এক নম্বর, তেমনই পড়াশোনাতেও ছিলেন শীর্ষে। লেখাপড়ায় কোনও ত্রুটি রাখতেন না ঈশ্বরচন্দ্র। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী (Ishwar Chandra Vidyasagar Biography)-তে কথিত আছে, আট বছর বয়স পর্যন্ত পাঠশালায় পড়াশোনা করার পর, পাঠশালার শিক্ষক কালীকান্ত, ঈশ্বরচন্দ্রর পিত ঠাকুরদাসকে বললেন, ঈশ্বরকে ইংরেজি শেখালে ভালো হয়। কিন্তু পিত ঠাকুরদাসের ইচ্ছে ছিল ছেলেকে সংস্কৃত শেখাবেন। তাঁর ইচ্ছা ছিল সংস্কৃতশাস্ত্রে পণ্ডিত হয়ে ছেলে গ্রামে গিয়ে একটা টোল খুলুক। অনেক চিন্তাভাবনার পর ছেলেকে তিনি সংস্কৃত কলেজেই ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নেন।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের শিক্ষা । Education of Ishwar Chandra Vidyasagar :

১৮২৯ সালের ১লা জুন, মাত্র নয় বছর বয়সে, সংস্কৃত কলেজে ভর্তি হন ঈশ্বর। সংস্কৃত কলেজে ভর্তি হওয়ার দেড় বছর পরেই ১৮৩১ সালের মার্চ মাস থেকে ঈশ্বর মাসে পাঁচ টাকা বৃত্তি পেতে শুরু করেন। ১৮৪১ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর কলকাতা গভর্নমেন্ট সংস্কৃত কলেজের সার্টিফিকেট লাভ করেন ঈশ্বরচন্দ্র। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী (Iswar Chandra Vidyasagar Biography) অনুযায়ী, সংস্কৃত কলেজে পড়ার সময়েই তাঁর নামের শেষে জুড়ে গিয়েছিল একটি উপাধি― 'বিদ্যাসাগর'।

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর জীবনী সম্পর্কে পড়ুন : লেখনী দ্বারা অমূল্য রতনের সৃষ্টি!

দরিদ্র পরিবারের সন্তান হয়েও দরিদ্রতাকে কখনোই তাঁর পথের বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে দেন নি। ছোটবেলায় পিতার সঙ্গে পায়ে হেঁটে কলকাতা আসতেন আচার্য বিদ্যাসাগর (Acharya Vidyasagar) এবং আসার পথে মাইলপোস্টের সংখ্যা গুণে গুণে গণিতের পাঠ গ্রহণ করেন। এদিকে যখন কলকাতার সংস্কৃত কলেজে তিনি ভর্তি হন। তখনও কষ্ট করেন তিনি। প্রচণ্ড দারিদ্র্যের মধ্যে থেকে নিজের হাতে রান্নাবান্না করে রাস্তায় গ্যাসের লাইটে দাঁড়িয়ে ক্লাসের পড়া করে অতিকষ্টে শিক্ষালাভ করেন। অসামান্য মেধা ও কঠোর পরিশ্রম- এই দুইয়ের সমন্বয়ে তিনি প্রতি ক্লাসে শীর্ষে থাকতেন।

বাংলার শিক্ষা ও সাহিত্যে ঈশ্বরচন্দ্রের অবদান । Ishwar Chandra's Contribution to Education and Literature of Bengal :

বিদ্যাসাগরকে বলা হয় বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে বাংলা গদ্যের প্রথম শিল্পী বলে অভিহিত করেছিলেন। বাংলা সাহিত্য বিদ্যাসাগরের প্রতিভার কাছে গভীরভাবে  ঋণী । 'বেতাল পঞ্চবিংশতি'' ,'বর্ণপরিচয়', 'সীতার বনবাস', 'শকুন্তলা', 'ভ্রান্তিবিলাস" প্রভৃতি গ্রন্থ ছিল প্রবাহমান স্বতঃস্ফূর্ত গদ্যের এক জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত । 'বর্ণপরিচয়' এর মাধ্যমে প্রত্যেক বাঙালির 'হাতেখড়ি'  হয়েছে বললেও অত্যুক্তি হবে না। এছাড়াও তিনি সমাজ সংস্কারমূলক বহু সাহিত্যের রচয়িতা। লঘু রচনার মধ্যে 'অতি অল্প হইল', 'আবার অতি অল্প হইল' ইত্যাদি দৃষ্টি আকর্ষণীয়।

'বিদ্যাসাগর' নিজের সীমাতীত শিক্ষা দ্বারা পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা। সাধারণ মানুষ-সকলকে শিক্ষালাভের সুযোগ করে দিতে চেয়েছিলেন।ঈশ্বরচন্দ্র বাঙালিদের অশিক্ষার তমসা থেকে জ্যোতির্ময় আলোতে আনতে চেয়েছিলেন। জাতিকে তিনি মুক্তি ও বিচারবোধে উদ্দীপ্ত করতে চেয়েছিলেন। সেই জন্য সংস্কৃত কলেজের পুনর্গঠনের রিপোর্টে বিদ্যাসাগর তাঁর শিক্ষানীতিকে দৃঢ় করতে চেয়েছিলেন। কৃষিজীবী বয়স্ক মানুষের জন্য তিনি কার্মাটারে নাইট স্কুল খোলেন। মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশনকে তিনি বৃহৎ বেসরকারি কলেজে পরিণত করেন।

হার্ডিঞ্জের পরিকল্পনামতো তিনি ১০১টি বঙ্গ বিদ্যালয় স্থাপন করেন এবং মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষাদানের জন্য তিনি সবথেকে বেশি প্রয়াসী হয়েছিলেন। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী (Ishwar Chandra Vidyasagar Biography) সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করলেই বোঝা যায়, শিক্ষা বিস্তারে তাঁর অদম্য উৎসাহের মূলে ছিল তাঁর সেই উপলব্ধি। শিক্ষাবিস্তারই  ছিল তাঁর সমাজসংস্কারের প্রাথমিক সোপান। কেবল পুরুষদের মধ্যেই  নয়, নারী সমাজে ও শিক্ষাবিস্তারের জন্য ছিল তাঁর সমান উৎসাহ। বহু বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন ছিল তাঁর অবিস্মরণীয় কীর্তি।

 সমাজ সংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর । Social Reformer Ishwar Chandra Vidyasagar :

তৎকালীন সমাজে নারীদের অমানবিক অত্যাচারে নিপীড়ত হতে হতো। তবে 'ঈশ্বরের' মতোই নারীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য গোটা সমাজের সঙ্গে লড়েছিলেন আচার্য বিদ্যাসাগর (Acharya Vidyasagar)। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী (Iswar Chandra Vidyasagar Biography)-তে ঈশ্বরচন্দ্রর তাঁর মা, ভগবতীর প্রতি শ্রদ্ধার কথা উল্লেখিত হয় বারংবার। আর এই শ্রদ্ধাই তাঁকে নারীমুক্তি আন্দোলনে নিয়োজিত করেছিল। রামমোহন সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে নারীদের প্রতি যে শ্রদ্ধা দেখিয়েছিলেন ,বিদ্যাসাগর সেই পথেই বিধবা বিবাহ আন্দোলন শুরু করেছিলেন। তিনি শাস্ত্রীয় নিয়মের দোহাই দিয়ে সমাজপতিদের বোঝাতে চেয়েছিলেন বিধবা বিবাহ শাস্ত্রসম্মত।

নারীদের জন্য গোটা সমাজের সঙ্গে লড়ে ১৮৫৬ সালের ২৬ শে জুলাই, বিদ্যাসাগর 'বিধবা বিবাহ আইন' পাস করান। তবে আইন পাস করিয়েই সমাজ শুদ্ধিকরণ থামিয়ে দেন নি ঈশ্বরচন্দ্র। এরপর নিজের খরচে তিনি এক একটি করে বিধবা বিবাহ দিয়েছিলেন এবং সেই জন্য তাঁর ব্যক্তিগত ঋণ একসময় বিরাশি হাজার টাকায় পৌঁছে গিয়েছিল। এছাড়াও তিনি পুরুষের বহুবিবাহ রদ করতেও সচেষ্ট হয়েছিলেন। বাল্যবিবাহ নিবারণও ছিল তাঁর অন্যতম প্রধান কীর্তি। দেশের জন্যও ঈশ্বরচন্দ্রর অবদান আজও অনস্বীকার্য। জাতির ও দেশের কল্যাণে তিনি  নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। সিপাহী বিদ্রোহ দমন করার জন্য ইংরেজরা সংস্কৃত কলেজে অস্থায়ী আস্তানা স্থাপন করতে চাইলে বিদ্যাসাগর তাঁর প্রতিবাদ করেন। জাতীয় কংগ্রেসকে তিনি সশস্ত্র আন্দোলনে রূপায়িত করার স্বপ্ন দেখতেন।

'দয়ার সাগর-বিদ্যাসাগর' । Kindness of Vidyasagar :

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী (Iswar Chandra Vidyasagar Biography)-তে কর্মাটাঁড় পর্বটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই পর্বে বিদ্যাসাগরকে চেনা যায় অন্যরূপে। অনেকে বলে থাকেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জীবনী (Ishwar Chandra Vidyasagar Biography)-তে এই পর্বটি তাঁর ‘নিঃসঙ্গ’পর্ব। কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় এই যে, এখানে এসে বিদ্যাসাগর যেন তাঁর প্রকৃত সঙ্গীদের খুঁজে পান। কর্মাটাঁড় অঞ্চলের অধিকাংশ অধিবাসী সাঁওতাল। মধ্যবিত্ত, শিক্ষিত শ্রেণির মানুষের সংখ্যা হাতেগোনা। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জীবিকা, সব দিক থেকে তাঁরা বঞ্চিত। অঞ্চলটি পাথর ও কাঁকর মেশানো মাটি চাষবাসের পক্ষে একেবারে অনুপযুক্ত। ফলে, এ অঞ্চলের মানুষদের জীবিকার সন্ধানে যেতে হত দূরবর্তী অঞ্চলে।

১৮৭৩ সালে বিদ্যাসাগর যে সময়ে কর্মাটাঁড়ে বসবাস শুরু করছেন, সে সময়ে রেল প্রতিষ্ঠা এবং ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের লাগাতার যুদ্ধে রণতরী তৈরির জন্য বিপুল পরিমাণ গাছপালা ধ্বংস হয়েছিল ছোটনাগপুর অঞ্চলের অরণ্যে। ফলে, এক দিকে প্রাকৃতিক ভারসাম্য যেমন নষ্ট হয়েছিল, তেমনই টান পড়েছিল আদিবাসীদের বনজ খাদ্যের জোগানে। ফলে বিদ্যাসাগরকে  ভাবাতে থাকে এই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতা। 

অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি এখানকার গরিব প্রান্তিক মানুষদের পরম বন্ধু হয়ে ওঠেন। এরপর এখানকার হতদরিদ্র মানুষদের জীবন ও জীবিকার দায়িত্ব তুলে নিলেন নিজের কাঁধে। 'ঈশ্বর' সাধারণদের দান নয়, পথ দেখালেন জীবিকা অর্জনের। পাঠ দিলেন আত্মমর্যাদা বোধের। তাঁদের নিয়ে শুরু করলেন উদ্যানপালন ও কৃষির কাজ। অনুর্বর অঞ্চলে কৃষিকাজের সম্ভাবনা কম ছিল বলেই বিদ্যাসাগর জোর দিয়েছিলেন উদ্যানপালনে। কর্মাটাঁড়ে তাঁর নন্দনকাননে আম, জাম, কাঠাঁল, বেলের পাশাপাশি বেগুন, লাউ, কুমড়ো, পালং, পাট ও প্রচুর ফুলের গাছ লাগিয়েছিলেন। কলকাতা থেকে উন্নত বীজ এনে তা বাগানে রোপণ করতেন ঈশ্বরচন্দ্র। এ সব কাজে শ্রমিক হিসাবে নিয়োগ করতেন স্থানীয় মানুষদের। নিজে দরিদ্র ঘরের সন্তান হয়েও পারিশ্রমিক দিতেন যথেষ্ট। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কাজে ব্যাঘাত ঘটলেও পারিশ্রমিকে কোনও রকম হেরফের হতো না। কারণ, তাঁর লক্ষ্য ছিল তাঁদের মর্যাদার সঙ্গে স্বনির্ভর করা।

অর্থ ও উৎসাহ পেয়ে শ্রমজীবী মানুষেরাও তাঁকে ভরসা করে কৃষিকাজে মন দিতে শুরু করেন। অনুর্বর জমিকে চাষযোগ্য করে তুলতে বিদ্যাসাগর শ্রমিকদের নানা পরামর্শও দিতেন। কলকাতা থেকে ভাল বীজ এনে বিতরণের পাশাপাশি অনুর্বর জমিকে চাষযোগ্য করে তোলার জন্য এক বুক সমান মাটি খুঁড়ে সেই গর্তে বাইরে থেকে ভাল মাটি এনে ভরাট করাতেন। তারপরে রোপণ করা হত বীজ। শ্রমসাধ্য কাজ হলেও বিদ্যাসাগর হাল ছাড়তেন না। মনেপ্রাণে চাইতেন, এই প্রান্তিক গরিব মানুষগুলো নিজের পায়ে দাঁড়াক, সম্মান নিয়ে বাঁচুক। এভাবেই কার্যত তাঁদের কাছে  ঈশ্বরচন্দ্র হয়ে উঠেছিলেন প্রকৃত ‘ঈশ্বর’।