Sir Mokshagundam Visvesvaraya | ভারতের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-র 'জনক' স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়! তাঁর জন্মবার্ষিকীতে এদিন পালন হয় ‘ন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ার্স ডে'!

Friday, October 6 2023, 1:04 pm
highlightKey Highlights

স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়-র দেশের জন্য অবদান, তাঁকে সম্মান জানানোর জন্যই প্রতি বছর ১৫ই সেপ্টেম্বর দেশে পালন করা হয় ন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ার্স ডে। জানুন কে ছিলেন মোক্ষগুণ্ডম বিশ্বেশ্বরায়, দেশের উন্নতির জন্য তাঁর অবদান কী।


আজ, ১৫ই সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রকৌশলী দিবস বা ন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ার্স দিবস (National Engineers Day)। সমাজের নানা দিকে ইঞ্জিনিয়ারদের অসামান্য অবদানকে উদযাপন করতেই পালিত হয় 'ন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ার্স ডে'। মূলত, ১৫ই সেপ্টেম্বর স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরার (Sir Mokshagundam Visvesvaraya) জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই দিনটিকে ন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ার্স ডে হিসাবে পালন করা হয়। পেশাগতভাবে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ও এককালের মাইসুরুর দেওয়ান, মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরাকে (Mokshagundam Visvesvaraya) স্মরণে দেখে নিন 'ন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ার্স ডে'-র গুরুত্ব এবং মোক্ষগুণ্ডম বিশ্বেশ্বরা কে ছিলেন, তাঁর অবদান।

১৫ই সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রকৌশলী দিবস বা ন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ার্স দিবস 
১৫ই সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রকৌশলী দিবস বা ন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ার্স দিবস 

ইঞ্জিনিয়ার্স দিবসের ইতিহাস । History of Engineers Day :

প্রতি বছর ১৫ই সেপ্টেম্বর, ভারতে ইঞ্জিনিয়ার দিবস পালন করা হয়। এই দিনটি প্রতি বছর মোক্ষগুণ্ডম বিশ্বেশ্বরাযর (Mokshagundam Visvesvaraya) সম্মানে পালিত হয়, যিনি প্রথম ভারতীয় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এবং রাষ্ট্রনায়ক এবং মহীশূরের ১৯ তম দেওয়ান ছিলেন। বিশ্বেশ্বরায়র অবদান ও কৃতিত্বকে স্বীকৃতি দিতেই ইঞ্জিনিয়ার দিবস পালিত হয়।

১৯৬৮ সালে ভারত সরকার ১৫ই সেপ্টেম্বর জাতীয় ইঞ্জিনিয়ার দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়
১৯৬৮ সালে ভারত সরকার ১৫ই সেপ্টেম্বর জাতীয় ইঞ্জিনিয়ার দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়

১৯৬৮ সালে ভারত সরকার ১৫ই সেপ্টেম্বর জাতীয় ইঞ্জিনিয়ার দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই দিনটি দেশের অনেক ইঞ্জিনিয়ার, বিশেষ করে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের, স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়র (Sir Mokshagundam Visvesvaraya) উদাহরণ অনুসরণ করে দেশের উন্নতির দিকে কাজ করার জন্য একটি অনুপ্রেরণা হিসাবে কাজ করে।

ভারত ছাড়াও শ্রীলঙ্কা  এবং তানজানিয়াও ১৫ই সেপ্টেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স দিবস উদযাপন করে
ভারত ছাড়াও শ্রীলঙ্কা  এবং তানজানিয়াও ১৫ই সেপ্টেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স দিবস উদযাপন করে

স্যার এম বিশ্বেশ্বরায়কে 'ব্লক সিস্টেম' তৈরি করার কৃতিত্ব দেওয়া হয়। তিনি পুনের নিকটবর্তী একটি জলাধারে জলের ফ্লাডগেট সহ একটি সেচ ব্যবস্থা পেটেন্ট ও স্থাপন করেছিলেন। এটি জল সরবরাহ স্তর এবং সঞ্চয় বাড়ানোর জন্য করা হয়েছিল। সেচ ব্যবস্থা, আগে খড়কভাসলা জলাধারে স্থাপন করা হয়েছিল, পরে গোয়ালিয়রের তিগরা বাঁধে এবং কৃষ্ণরাজা সাগর জলাধার, মহীশূরের কেআরএস বাঁধে স্থাপন করা হয়েছিল। স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়র (Sir Mokshagundam Visvesvaraya) কাজের ফলে টাটা স্টিল ইঞ্জিনিয়াররা (Tata Steel Engineers) সাঁজোয়া, বুলেট-প্রুফ যানবাহন উদ্ভাবন করেছিল যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছিল

১৫ই সেপ্টেম্বর স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরার জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই দিনটিকে ন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ার্স ডে হিসাবে পালন করা হয়
১৫ই সেপ্টেম্বর স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরার জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই দিনটিকে ন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ার্স ডে হিসাবে পালন করা হয়

২০২৩  সালের জাতীয় ইঞ্জিনিয়ার্স দিবসের থিম । Engineers Day 2023 Theme :

ভারত ছাড়াও শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka) এবং তানজানিয়াও (Tanzania) আজ, ১৫ই সেপ্টেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স দিবস উদযাপন করে। চলতি বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের জাতীয় ইঞ্জিনিয়ার্স দিবসের থিম হলো  'টেকসই ভবিষ্যতের জন্য প্রকৌশলী' (Engineering for a Sustainable Future)

২০২৩ সালের জাতীয় ইঞ্জিনিয়ার্স দিবসের থিম হলো  'টেকসই ভবিষ্যতের জন্য প্রকৌশলী' 
২০২৩ সালের জাতীয় ইঞ্জিনিয়ার্স দিবসের থিম হলো 'টেকসই ভবিষ্যতের জন্য প্রকৌশলী' 

জাতীয় ইঞ্জিনিয়ার্স দিবসের তাৎপর্য । Significance of National Engineers Day :

প্রকৌশলী দিবস বা জাতীয় ইঞ্জিনিয়ার্স দিবসের তাৎপর্যপূর্ণ অপরিসীম, কারণ এটি সমাজে প্রকৌশলীদের উৎসর্গ, সৃজনশীলতা এবং অর্জন উদযাপন করে। এটি জটিল সমস্যা সমাধান, প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং বিশ্বব্যাপী মানুষের জীবনযাত্রার মান বাড়াতে, ইঞ্জিনিয়ারদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার অনুস্মারক হিসেবে কাজ করে। ইঞ্জিনিয়ার্স দিবস সৃজনশীলতা এবং অগ্রগতির একটি উদযাপন, কারণ এটি শুধুমাত্র প্রাথমিক প্রকৌশলীদের অবদানকে স্বীকৃতি দেয় না বরং বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে সীমানা অতিক্রম করতে উৎসাহিত করে।

জাতীয় ইঞ্জিনিয়ার্স দিবস সমাজে প্রকৌশলীদের উৎসর্গ, সৃজনশীলতা এবং অর্জন উদযাপন করে
জাতীয় ইঞ্জিনিয়ার্স দিবস সমাজে প্রকৌশলীদের উৎসর্গ, সৃজনশীলতা এবং অর্জন উদযাপন করে

প্রখ্যাত ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ার এবং রাষ্ট্রনায়ক স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়ের (Sir Mokshagundam Visvesvaraya) জন্মবার্ষিকী স্মরণে প্রতি বছর ১৫ই সেপ্টেম্বর এই দিবস পালিত হয়। প্রকৌশলের ক্ষেত্রে, মোক্ষগুণ্ডম বিশ্বেশ্বরায় (Mokshagundam Visvesvaraya) ছিলেন একজন অগ্রগামী, যিনি ভারতের পরিকাঠামোর বৃদ্ধিকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করেছিলেন। বাঁধ, সেচ ব্যবস্থা  এবং অন্যান্য প্রকল্পের উন্নয়নে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। মোক্ষগুণ্ডম বিশ্বেশ্বরায় (Mokshagundam Visvesvaraya) কে ছিলেন, তাঁর আরও অবদান সম্পর্কেই আলোচনা করা হবে এই প্রতিবেদনে।

ইঞ্জিনিয়ার্স দিবস সৃজনশীলতা এবং অগ্রগতির একটি উদযাপন
ইঞ্জিনিয়ার্স দিবস সৃজনশীলতা এবং অগ্রগতির একটি উদযাপন

স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায় । Sir Mokshagundam Visvesvaraya :

মোক্ষগুণ্ডম বিশ্বেশ্বরায় (Mokshagundam Visvesvaraya) ছিলেন ভারতের প্রথম সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, স্টেটসম্যান এবং মহীশূরের ১৯ তম দেওয়ান। তাঁর  জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে, তাঁর অবদানকে সম্মান জানানোর জন্যই ১৫ই সেপ্টেম্বর ভারতে ইঞ্জিনিয়ার্স ডে হিসাবে পালিত হয়।

মোক্ষগুণ্ডম বিশ্বেশ্বরায় ছিলেন ভারতের প্রথম সিভিল ইঞ্জিনিয়ার
মোক্ষগুণ্ডম বিশ্বেশ্বরায় ছিলেন ভারতের প্রথম সিভিল ইঞ্জিনিয়ার

স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়ের জন্ম ও শিক্ষালাভ । Birth and Education of Sir Mokshagundam Visvesvaraya :

স্যার এম বিশ্বেশ্বরায়া ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দের ১৫ ই সেপ্টেম্বর   বৃটিশ শাসন অধীনস্ত ভারতের মহীশূর রাজ্যের, বর্তমানে কর্নাটক রাজ্যের চিক্কাবল্লপুর জেলার  মুদ্দেনাহাল্লিতে এক তেলুগু ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও তাঁর পৈতৃক বাড়ি ছিল অন্ধ্রপ্রদেশের মোক্ষগুন্ডম গ্রামে। পিতা মোক্ষগুন্ডম শ্রীনিবাসা ছিলেন প্রাচীন সংস্কৃত ভাষার পণ্ডিত  ও মাতা বিজয়ালক্ষ্মী আম্মা। তবে ছোটবেলায় তার পিতার মৃত্যু হয়।  ফলে বহু কষ্টে নিজের চেষ্টায় তিনি রাস্তার আলোয় বসে পড়াশোনা করেন। তিনি ৬০ কিলোমিটারের পথ পায়ে হেঁটে ব্যাঙ্গালোরের ইউনাইটেড মিশনারি স্কুলে (United Missionary School) পড়াশোনার জন্য যেতেন। স্কুলের  পাঠ শেষ করে মোক্ষগুণ্ডম বিশ্বেশ্বরায় ভর্তি হন মহারাষ্ট্রের পুনে অবস্থিত বর্তমানে সাবিত্রীবাই ফুলে পুনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয় এশিয়ার তৃতীয় প্রাচীন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। অদম্য জেদ এবং মেধার জেরে মাত্র ২৩ বছর বয়সে প্রথম স্থান অধিকার করে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন তিনি।

বহু কষ্টে নিজের চেষ্টায় তিনি রাস্তার আলোয় বসে পড়াশোনা করেন
বহু কষ্টে নিজের চেষ্টায় তিনি রাস্তার আলোয় বসে পড়াশোনা করেন

স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়ের কর্মজীবন ও অবদান । Career and Contribution of Sir Mokshagundam Visvesvaraya :

ইঞ্জিনিয়ারিং পাশের পর মোক্ষগুণ্ডম বিশ্বেশ্বরায় তৎকালীন বোম্বাই শহরের পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্টে (Bombay Public Works Department) সহকারী ইঞ্জিনিয়ার পদে যোগদান করে কর্মজীবনের পথ চলা শুরু করেন। এরপর তিনি ইন্ডিয়ান ইরিগেশন কমিশনে (Indian Irrigation Commission) যোগদান করেন। দাক্ষিণাত্য মালভূমি অঞ্চলে সেচের জন্য এক জটিল পদ্ধতির সূচনা করেন এবং ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে পুনের নিকটস্থ খড়কভাসলা বাঁধের জন্য পরিকল্পনাসহ ও স্বয়ংক্রিয়  প্লাবণক্ষেত্রে জলদ্বার নির্মাণ করেন স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়। এক্ষেত্রে সফলতা লাভ করে একই ডিজাইন ও পদ্ধতিতে মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে তিগরা বাঁধ (Tigra Dam) এবং মহীশূরের কৃষ্ণ রাজা সাগর বাঁধের (Krishna Raja Sagar Dam in Mysore) নির্মাণ সম্পন্ন করেন।

১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে পুনের নিকটস্থ খড়কভাসলা বাঁধের জন্য পরিকল্পনাসহ ও স্বয়ংক্রিয়  প্লাবণক্ষেত্রে জলদ্বার নির্মাণ করেন স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়
১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে পুনের নিকটস্থ খড়কভাসলা বাঁধের জন্য পরিকল্পনাসহ ও স্বয়ংক্রিয় প্লাবণক্ষেত্রে জলদ্বার নির্মাণ করেন স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়

 কর্মক্ষেত্রে স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়ের অসামান্য দক্ষতার জন্য ভারত সরকারের সৌজন্যে তিনি ইয়েমেনের অ্যাডেন (Aden, Yemen) শহরে যাওয়ার সুযোগ পান এবং সেখানে অ্যাডেনের ওয়াটার সাপ্লাই এবং ড্রেনেজ সিস্টেম সম্পর্কে শিক্ষা গ্রহণ করেন। কেবল শিক্ষালাভই নয়, অ্যাডেনের প্রকল্পটির সার্থক রূপায়ণও করেন তিনি।

স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়  হায়দ্রাবাদ শহরকে বন্যার হাত থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা বাস্তবায়িত করেন।
স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায় হায়দ্রাবাদ শহরকে বন্যার হাত থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা বাস্তবায়িত করেন।

স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়  হায়দ্রাবাদ শহরকে বন্যার হাত থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা বাস্তবায়িত করেন। বিশাখাপত্তনম বন্দরকেও সমুদ্রের ক্ষয় থেকে রক্ষা করতে উন্নত পদ্ধতির পরিকল্পনা করেন তিনি।  বিহারে গঙ্গা নদীর উপর মোকামা ব্রীজটিও তার প্রযুক্তিগত পরামর্শেই নির্মিত হয়েছে। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি মহীশূর শহরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার পদে নিয়োজিত হন। ১৯১২ খ্রিস্টাব্দ থেকে টানা সাত বছর তিনি মহীশূরের দেওয়ান পদে তিনি নিযুক্ত ছিলেন। উল্লেখ্য,তৎকালীন সময়ে তাঁকে আধুনিক মহীশূর রাজ্যের জনক বলা হত। যখন তিনি মহীশূর রাজ্যের দেওয়ান ছিলেন সেসময় স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায় বেসরকারি বিনিয়োগে শিল্পস্থাপনে উৎসাহিত করেছেন। তিরুমালা থেকে তিরুপতি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের পরিকল্পনাতে তিনি মূল ভূমিকা নিয়েছিলেন।

১৯১২ খ্রিস্টাব্দ থেকে টানা সাত বছর তিনি মহীশূরের দেওয়ান পদে তিনি নিযুক্ত ছিলেন স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়
১৯১২ খ্রিস্টাব্দ থেকে টানা সাত বছর তিনি মহীশূরের দেওয়ান পদে তিনি নিযুক্ত ছিলেন স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়

মহীশূর রাজ্য সরকারের সেবারত অবস্থায় মহীশূর সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায়  তিনি  মাইশোর সোপ ফ্যাক্টরি (Mysore Soap Factory), প্যারাসিটয়েড ল্যাবরেটরি (Parasitoid Laboratory), ভদ্রাবতীর মাইশোর আয়রন অ্যান্ড স্টিল ওয়ার্কস (বর্তমানে বিশ্বেশ্বরায়া আয়রন অ্যান্ড স্টিল লিমিটেড) (Mysore Iron and Steel Works at Bhadravati), ব্যাঙ্গালোরের শ্রী জয়চামারাজেন্দ্র পলিটেকনিক (Sri Jayachamarajendra Polytechnic), ব্যাঙ্গালোর এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটি (Bangalore Agricultural University), স্টেট ব্যাঙ্ক অব মাইশোর (বর্তমানে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ায় বিলীন) (State Bank of Mysore), সেঞ্চুরি ক্লাব (Century Club), মাইশোর চেম্বার অব কমার্স (ফেডারেশন অফ কর্নাটক চেম্বার্স অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি) (Mysore Chamber of Commerce),অ্যাপেক্স চেম্বার অফ কমার্স ইন কর্নাটকা (Apex Chamber of Commerce in Karnataka), ইউনিভার্সিটি বিশ্বেশ্বরায়া কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং (ব্যাঙ্গালোর) (University Visvesvaraya College of Engineering) সহ অসংখ্য শিল্পাঞ্চল স্থাপনে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়।

অসংখ্য শিল্পাঞ্চল স্থাপনে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়
অসংখ্য শিল্পাঞ্চল স্থাপনে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়

স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়ের পুরস্কার ও সম্মাননা । Awards and Honors of Sir Mokshagundam Visvesvaraya :

১৯১১ খ্রিস্টাব্দে স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায় সিআইই তথা কম্পানিয়ন অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য ইন্ডিয়ান এম্পায়ার (Companion of the Order of the Indian Empire) হন। এরপর ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে মহীশূরের দেওয়ান থাকাকালীন বৃটিশ সরকার জনসেবায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ, কেসিআইই তথা নাইট কমান্ডার অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য ইন্ডিয়ান এম্পায়ার (Knight Commander of the Order of the Indian Empire), নাইট উপাধিতে ভূষিত হন। স্বাধীনতার পর ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার ইঞ্জিনিয়ারিং ও শিক্ষা ক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ভারতরত্ন (Bharat Ratna) সম্মান দেওয়া হয়। এরপর লন্ডনের ইনস্টিটিউশন অফ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স (Institution of Civil Engineers, London) তাঁকে সম্মানসূচক সদস্যপদ ব্যাঙ্গালোরস্থিত ভারতীয় বিজ্ঞান সংস্থা ফেলোশিপ, ভারতের আটটি বিশ্ববিদ্যালয় সাম্মানিক ডিগ্রি যেমন, ডিএসসি, এলএলডি, ডিলিট প্রদান করে। ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়কে ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। কর্নাটকের দৈনিক প্রজাবাণীর সার্ভে অনুসারে, তৎকালীন সময়ে তিনি কর্নাটকের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

ভারত সরকার ইঞ্জিনিয়ারিং ও শিক্ষা ক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ভারতরত্ন সম্মান দেওয়া হয়
ভারত সরকার ইঞ্জিনিয়ারিং ও শিক্ষা ক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ভারতরত্ন সম্মান দেওয়া হয়

১৯৬২ সালের ১৪ই এপ্রিল ইহলোক ত্যাগ করেন স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়। তবে দেশের জন্য তাঁর অবদান আজও অমর এবং সম্মানিত, পূজিত। ভারতের শিক্ষা এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায় যে অবদান রেখে গেছেন তাঁর স্বীকৃতিস্বরূপ পুরস্কার ও সম্মাননা পাওয়ার সঙ্গে তাঁর নামে কর্নাটকের বেশিরভাগ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে নামকরণ করা হয়।ব্যাঙ্গালোরের অন্যতম কলেজ - ইউনিভার্সিটি বিশ্বেশ্বরায়া কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং (University Visvesvaraya College of Engineering), স্যার এম বিশ্বেশ্বরায়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (Sir M. Visvesvaraya Institute of Technology), নাগপুরের বিশ্বেশ্বরায়া ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (Nagpur Visvesvaraya National Institute of Technology) এর নামকরণ স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়ের নামে রাখা হয়।

বেশিরভাগ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে নামকরণ করা হয় স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়ের নামে
বেশিরভাগ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে নামকরণ করা হয় স্যার মোক্ষগুন্ডম বিশ্বেশ্বরায়ের নামে

এছাড়াও পুনের যে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তিনি পড়াশোনা করেছেন সেখানে তার একটি মূর্তি স্থাপন করা হয়। ব্যাঙ্গালোরের  ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়াম (Bangalore's Industrial and Technological Museum) তার নামে নামাঙ্কিত হয়ে 'বিশ্বেশ্বরায়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়াম' নামে। ব্যাঙ্গালোর শহরের দুটি মেট্রো স্টেশনের নামকরণ করা  হয় - 'স্যার এম বিশ্বেশ্বরায়া স্টেশন সেন্ট্রাল কলেজ' (Sir M Visvesvaraya Station Central College) এবং 'স্যার বিশ্বেশ্বরাইয়া মোতিবাগ স্টেশন' (Sir Visvesvaraya Motibaug Station)।

পুনের যে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তিনি পড়াশোনা করেছেন সেখানে তার একটি মূর্তি স্থাপন করা হয়
পুনের যে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তিনি পড়াশোনা করেছেন সেখানে তার একটি মূর্তি স্থাপন করা হয়

বিশ্বেশ্বরায়া নিজের কাজে সবসময় ছিলেন অত্যন্ত আন্তরিক, সঠিক সময়ে নিষ্পাদনে অবিচল এবং নিবেদিত প্রাণ। তাঁর অবদানকে সম্মান জানাতেই ১৫ই সেপ্টেম্বর দেশে ইঞ্জিনিয়ার্স ডে পালন করা হয়।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File