Ayurvedic Cough Syrup | গলা ধরে থাকা, খুশখুশে কাশি থেকে মুক্তি দিতে অ্যান্টিবায়োটিকের চেয়েও কার্যকরী মধু! দেখে নিন কীভাবে খাবেন!

Wednesday, January 3 2024, 12:59 pm
highlightKey Highlights

মধু কাশির সিরাপ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে প্রাচীন জগ থেকে। বড় ও বাচ্চাদের জন্য কাশির সিরাপ হিসাবে মধুর উপকারিতা অতুলনীয়। ২০১৯ সালে অক সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে, অ্যান্টিবায়োটিকের চেয়ে মধু আরও কার্যকর হতে পারে। তবে এই প্রাকৃতিক উপাদান খেতে হবে সঠিক নিয়মে।


আবহাওয়ার মুড্ সুইংয়ে যেমন যেমন ভেস্তে গিয়েছে গোটা শীতকাল তেমনই প্রভাব পড়ছে শরীরের ওপরেও। তাপমাত্রার ওঠা নামার জেরে ঘরে ঘরে সর্দি-কাশি-জ্বর। ছোটো থেকে বড় সকলেই ভুগছেন খুশখুশে কাশিতে। এই শারীরিক সমস্যা দূর করতে বাজারে নানান কাশির ওষুধ পাওয়া গেলেও তার সাইড এফেক্ট থাকে ভয়াবহ। এই এক ঘেয়ে জেদি কাশি করতে পারে ঘরোয়া টোটকা এবং মহৌষধির সমান মধু। আয়ুর্বেদিক কাশির সিরাপ (Ayurvedic Cough Syrup) এরই মতো অনেকটা কাজ করে মধু। এতে রয়েছে অত্যন্ত উপকারী কিছু উপাদান যা কিনা ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসের খেল-খতম করার কাজে সিদ্ধহস্ত। তাই তো যুগের পর যুগ ধরে ঠান্ডা লাগার সমস্যায় মধু ব্যবহার হয়ে আসছে। এমনকী আজও এই ভেষজ উপাদানের গুণেই একাধিক মানুষ অ্যান্টিবায়োটিকের সাহায্য ছাড়াই এইসব সমস্যার ফাঁদ কাটিয়ে সুস্থ হয়ে উঠছেন। তবে সঠিক উপায়ে এই ভেষজ সেবন না করলে উপকার মিলবে না। এমনকী সারবে না সর্দি-কাশি। ফলে দেখে নিন সর্দি-কাশি ঠিক করার জন্য কীভাবে খাবেন মধু।

  আয়ুর্বেদিক কাশির সিরাপ এরই মতো অনেকটা কাজ করে মধু  
  আয়ুর্বেদিক কাশির সিরাপ এরই মতো অনেকটা কাজ করে মধু  

ঠান্ডা লাগার সমস্যা থেকে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে এক গ্লাস জল ফুটিয়ে নিন। তারপর জল ঠান্ডা হয়ে এলে তাতে এক চামচ মধু মিশিয়ে চট করে খেয়ে নিন। এতে কমবে সর্দি, কাশির প্রকোপ। এমনকী  বুকে জমে থাকা কফ বেরিয়ে যেতেও সময় লাগবে না। 

​২. মধু, তুলসী :

মধু কাশির সিরাপ (Honey Cough Syrup) হিসেবে আয়ুর্বেদিক উপাদানের মধ্যে অন্যতম। এরকমই আরেক অন্যতম উপাদান হলো তুলসী পাতা। সর্দি কাশি গলা ব্যথা ঠিক করতে  সকালবেলায় কয়েকটি টাটকা তুলসী পাতা এক চামচ মধুতে মিশিয়ে খেয়ে নিন। কিংবা তুলসী পাতার রস করে তাতে এক চামচ মধু মিশিয়ে খান । এই উপাদানে সর্দি, কাশির মতো সমস্যা আর পিছু নিতে পারবে না। এমনকী বাড়বে ইমিউনিটিও। বাজারে পাওয়া বাচ্চাদের জন্য কাশির সিরাপ (Cough Syrup for Kids) এর বদলে মধু-তুলসী কাশি ঠিক করতে বেশি ভালো কাজ করে।

৩. মধু, আদা :

কাশির জন্য আদা মধু (Ginger Honey for Cough) প্রাচীন জগ থেকে ব্যবহার করে আসা হচ্ছে। এর জন্য একটা ছোট আদা কুচি কুচি করে কেটে নিন। তারপর সেই টুকরোগুলি এক চামচ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে চুষে চুষে খান। কিংবা এই মিশ্রণ জল দিয়ে গিলে খেয়ে নিতে পারেন। কাশির জন্য আদা মধু (Ginger Honey for Cough) এক দারুন ঘরোয়া টোটকা। এতে কাশি ঠিক হয়ে উঠে আসে বুকে জমে থাকা কফ।

  কাশির জন্য আদা মধু এক দারুন ঘরোয়া টোটকা  
  কাশির জন্য আদা মধু এক দারুন ঘরোয়া টোটকা  

৪. রোজ সকালে এক চামচ মধু :​

হাতের কাছে অন্য কোনও ভেষজ না থাকলে মধু কাশির সিরাপ (Honey Cough Syrup) হিসেবে খেতে পারেন। সেক্ষেত্রে রোজ সকালে উঠে এক চামচ মধু চট করে খেয়ে নিন। ব্যস, তাতেই কমবে সর্দি-কাশির প্রকোপ। এমনকী ইমিউনিটিও চাঙ্গা থাকবে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে একাধিক সংক্রামক রোগব্যাধির ফাঁদে পড়তে হবে না। এই অভ্যাস বাচ্চাদেরও করাতে পারেন। 

৫. চায়ে লেবু মেশালেই মিলবে উপকার​ :

বড়রা অনেকেই সকাল বিকেলে চা খেয়ে থাকেন। আবার যারা চা খাননা তারা আবার অনেকে ঠান্ডা লাগলে চা খান। এক্ষেত্রে এক কাপ চায়ে কয়েক ফোঁটা পাতিলেবুর রস এবং এক চামচ মধু মিশিয়ে পান করলেই হবে চমৎকার। সর্দি, কাশি নিপাত যাবে। কারণ মধুর পাশাপাশি এই পানীয়ে মজুত থাকা চা এবং লেবুরও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এফেক্ট রয়েছে যা কিনা এইসব সমস্যা কমানোর কাজে ধন্বন্তরির মতো কাজ করে। 

৬. মধু দিয়ে আয়ুর্বেদিক কাশির সিরাপ :

রান্নাঘরে থাকা সামান্য কিছু উপকরণেই খুব কম সময়ে বানিয়ে ফেলা যায় আয়ুর্বেদিক কাশির সিরাপ (Ayurvedic Cough Syrup)৷ মধু এবং আদা মরশুম পরিবর্তনের যেকোনও রোগকে দূরে রাখার জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই কফ সিরাপ তৈরির জন্য নিন মধু ও আদা। এবার একটি পাত্রে এক কাপ জল ঢেলে দিন৷ এবার গ্যাস জ্বেলে ওই পাত্রটি বসান৷ জলের মধ্যে একে একে লেবুর রস, মধু, আদা কুচি, গোলমরিচ, ভিনিগার দিয়ে দিন৷ পুরোপুরি ফুটে যাওয়ার পর নামিয়ে ফেলুন৷ ঠান্ডা হয়ে গেলে মিশ্রণটি একটি কাচের গ্লাসে ছেঁকে নিন৷ গোলমরিচ যেকোনও সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে৷ মধু সর্দি-কাশি প্রতিরোধ করে৷ তাই প্রতিদিন নিয়ম করে ওই কফ সিরাপ পান করলে কাশি বিদায় নিতে বাধ্য। এই মধু কাশির সিরাপ (Honey Cough Syrup) আপনি বাচ্চাদেরও খাওয়াতে পারেন। বাচ্চাদের জন্য কাশির সিরাপ (Cough Syrup for Kids) এটি দারুন কাজ করে।

অ্যান্টিবায়োটিকের চেয়ে মধু আরও কার্যকর
অ্যান্টিবায়োটিকের চেয়ে মধু আরও কার্যকর

মধুর গুণ অপরিসীম। এতে থাকে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, যা ব্যাকটিরিয়া ধ্বংস করতে অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। ২০১৯ সালে অক সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে, অ্যান্টিবায়োটিকের চেয়ে মধু আরও কার্যকর হতে পারে। এছাড়াও হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ ক্ষত নিরাময়ে মধু ব্যবহার করে আসছে। মধু তার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যের জন্যও পরিচিত। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা নির্দিষ্ট ধরণের কোষের ক্ষতি প্রতিরোধে সহায়তা করে। এছাড়াও ঘুমের ঘাটতি মেটাতে মধু ব্যবহার করা যেতে পারে। মধু খেলে ঘুম ভালো হয়। এর একটা হালকা প্রভাব শরীরে থেকে যায়। বিছানায় যাওয়ার আগে, এককাপ দুধে মধু মিশিয়ে খেয়ে নিলে শরীরও ভালো থাকবে। দূরে থাকবে রোগব্যাধি।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File