লাইফস্টাইল

Herbal Face Pack | জেল্লাদার-উজ্জ্বল ত্বক পেতে আর কেমিক্যাল যুক্ত সামগ্রী নয়! ব্যবহার করুন হার্বাল ফেস প্যাক!

Herbal Face Pack | জেল্লাদার-উজ্জ্বল ত্বক পেতে আর কেমিক্যাল যুক্ত সামগ্রী নয়! ব্যবহার করুন হার্বাল ফেস প্যাক!
Key Highlights

পুজোর আগে বাড়িতে কম খরচে ত্বক করে তুলুন পরিষ্কার, উজ্জ্বল, স্বাস্থ্যবান। দেখে নিন কী করে বানাবেন হার্বাল ফেস প্যাক।

দুর্গাপুজোর আর পুরো দু মাসও বাকি নেই। যত সময় এগিয়ে আসছে ততোই বাড়ছে রূপচর্চা আর শরীরচর্চা। পুজোর সময় জেল্লাদার, উজ্জ্বল ত্বক পেতে হলে এখন থেকেই যত্ন নিতে হবে নিজের। দৈনন্দিন মুখ পরিষ্কার রাখার সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত ফেস প্যাকের (Face Pack) ব্যবহার দেবে পরিষ্কার, স্বাস্থ্যবান এবং দাগহীন ত্বক। বর্তমানে নানারকমের ফেড প্যাক বাজারে পাওয়া যায়। কিন্তু অধিকাংশ ফেস প্যাকেই থাকে নানা রকমের জানা অজানা রাসায়নিক। যা ত্বক ভালো করার বদলে উল্টে করে ক্ষতি। এক্ষেত্রে বাড়িতে তৈরী ফেস প্যাকই হবে বড় ভরসা।

কীভাবে বানাবেন হার্বাল ফেসপ্যাক? । How to Make Herbal Face Pack?

প্রায় প্রতিদিনই ত্বক পরিচর্যার নতুন নতুন সম্ভার আসছে বাজারে। এর মধ্যে রয়েছে নানারকমের ফেস প্যাকও। কোনোটির দাবি তা ত্বক কোমল করে, কোনওটা আবার দাবি করে বয়সের ছাপ দূর করে। কিন্তু এ সব প্রডাক্টের বেশিরভাগই রাসায়নিকে ভরা, যা দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। এমনকী, ভেষজ বলে যে সব ক্রিম, লোশন, ফেস প্যাক বাজারে পাওয়া যায়, তাতেও অনেক সময় সিন্থেটিক উপাদান থাকে। প্রচুর টাকা খরচ করে এ সব রাসায়নিক বা সিন্থেটিক সামগ্রী না কিনে বাড়িতেই তৈরি করা যায় হার্বাল ফেস প্যাক (Herbal Face Pack)। বাড়িতে তৈরি এই ফেস প্যাকগুলিতে কোনও কৃত্রিম উপাদান থাকে না। যার ফলে এটি আপনার ত্বকের ওপরও কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ফেলে না। বরং এই ফেস প্যাকগুলি ত্বকের জন্য উপকারী। আসুন জেনে নিন কোন হার্বা‌ল ফেস প্যাকটি আপনার ত্বকের জন্য ভালো এবং কী করেই বা তা বানাবেন।

১. অ্যালোভেরার ফেস প্যাক । Aloe-Vera Face Pack :

ত্বকের জন্য সব থেকে উপকারী ভেষজগুলির মধ্যে অন্যতম হলো অ্যালোভেরা। এর উপক্যার একটি নয় শতাধিক। ত্বক পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে, ত্বকের জেল্লা বাড়ানো, ত্বক দাগহীন করে তোলা, ট্যান দূর করার মতো অজস্র উপকারিতা রয়েছে অ্যালোভেরার। তাই অ্যালোভেরার ফেস প্যাক আপনার ত্বকের ওপরও দারুণ প্রভাব ফেলবে। অ্যালোভেরার ফেস প্যাক তৈরি করার জন্য যেসব উপাদানের প্রয়োজন তা হলো- এক টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল এবং এক চামচ গোলাপ জল।

ফেস প্যাক বানানোর জন্য প্রথমে এই দুটি উপাদানকে এক সঙ্গে ভাল করে মিশিয়ে নিন। তারপর এই মিশ্রণ ত্বকের ওপর প্রয়োগ করুন। তারপর ২ মিনিটের জন্য এটি ত্বকের ওপর ম্যাসেজ করুন। ম্যাসাজের পর এটিকে ১৫-২০ মিনিটের জন্য ত্বকের ওপর রেখে দিন এবং পরে ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফলাফল পেতে হলে সপ্তাহে ২-৩ বার এই হার্বা‌ল ফেস প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।

২. গ্রিন টি ফেস প্যাক । Green Tea Face Pack :

অনেকেই সুঠাম শরীরের জন্য এবং মেদ ঝরানোর জন্য প্রতিনিয়ত গ্রিন টি খেয়ে থাকেন। তবে গ্রিন টি শরীরের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের জন্যও ভীষণ কার্যকরী। গ্রিন টি ত্বক পরিষ্কার এবং উজ্জ্বল করে। এই ফেস প্যাক তৈরির জন্য প্রথমেএকটি বাটিতে একটি ডিম নিন, তাতে চামচ গ্রিন টি-এর পাতা দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। এরপর এই মিশ্রণটি মুখ ও গলার ওপর প্রয়োগ করুন। ১৫-২০ মিনিট প্যাকটি রাখার পর ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক মোলায়েম, পরিষ্কার ও সুন্দর করার পাশাপাশি ত্বকের বার্ধক্য প্রতিরোধ করতে এই প্যাক সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করুন।

৩. চন্দনের ফেস প্যাক । Sandalwood Face Pack :

চন্দনে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডান্ট (Anti-Oxidant) রয়েছে, যা ত্বক উজ্জ্বল করতে এবং জেলা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও চন্দন ত্বককে শীতলও রাখে। চন্দনের নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক থেকে দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যায়, অ্যান্টি এজিং ট্রিটমেন্টের অর্থাৎ বার্ধক্য দূর করার উপাদান হিসেবেও চন্দন অত্যন্ত কার্যকর। চন্দনের ফেস প্যাক বানানোর জন্য প্রথমে দু’ চাচামচ চন্দনগুঁড়ো আর দু’ চাচামচ মুলতানি মাটি একসঙ্গে মেশান। এক্ষেত্রে চন্দন গুঁড়ো না দিয়ে চন্দনকাঠ ঘষে টাটকা চন্দনবাটাও তৈরি করে নিতে পারেন। এরপর এই মিশ্রনে এক চাচামচ লেবুর রস আর এক চাচামচ গোলাপজল মিশিয়ে মসৃণ পেস্ট তৈরি করে নিয়ে এটি মুখে লাগিয়ে অন্তত ২০মিনিট রাখুন। প্যাকটি মুখে শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু’বার এই হারবাল ফেস প্যাক ব্যবহার করলে ত্বক টানটান, তারুণ্যে ভরপুর থাকবে।

৪. মুলতানি মাটির ফেস প্যাক । Multani Clay Face Pack :

তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে ভীষণ ভাবে সহায়ক এই মুলতানি মাটি ফেস প্যাক। মুলতানি মাটি ত্বক মসৃন করার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের ব্রণ দূর করে এবং উজ্জ্বল করে তোলে। এই ফেস প্যাক তৈরি জন্য প্রথমে পুদিনা পাতা ও নিম পাতা বেটে নিন। তারপর তাতে এক চামচ মুলতানি মাটি ও এক চামচ গোলাপ জল যোগ করুন। এরপর উপাদানগুলিকে ভাল করে মিশিয়ে নিয়ে ত্বকের ওপর প্রয়োগ করুন। অন্তত ১৫-২০ মিনিট প্যাকটি রাখার পর তা শুকিয়ে গেলে, মুখ ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ফেস প্যাকটির ভালো ফল পেতে হলে সপ্তাহে ২ বার এটি ব্যবহার করুন।

৫. তুলসি-নিম ফেস প্যাক । Tulsi-Neem Face Pack :

তুলসি এবং নিম, উভয়েরই গুনাগুন সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। শরীরের রোগ নিরাময় থেকে শুরু করে সুস্থ্য রাখা, সব ক্ষেত্রেই এই দুই ভেষজের উপকারিতা অসীম। শরীরের মতো ত্বকের ক্ষেত্রেও তুলসি-নিম খুব উপকারী। এই উপাদানগুলি বিবর্ণভাব কমিয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। আর সেই সঙ্গে ব্রণর উপদ্রবও কমায়। এই ফেস প্যাক তৈরী করতে প্রথমে এক চা-চামচ তুলসি পাতার গুঁড়ো আর দু’ চা-চামচ নিমপাতার গুঁড়ো মেশান। এরপর তাতে যোগ করুন দু’ চা-চামচ মুলতানি মাটি, আধ চা-চামচ লেবুর রস আর কয়েক ফোঁটা গোলাপ জল। এরপর মিশ্রণটি ভালো করে মিশিয়ে মসৃণ পেস্ট তৈরি করে নিন। যাঁদের ত্বক শুষ্ক ধরনের, তাঁরা এর সঙ্গে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েলও মেশাতে পারেন। এই ফেস প্যাকটি লাগানোর আগে মুখে মিনিট তিনেকের জন্য গরম জলের স্টিম নিন। এতে রোমছিদ্রগুলো খুলে যাবে এবং প্যাক ত্বকের গভীরে ঢুকতে পারবে। মুখে সামান্য প্যাক লাগিয়ে তা মুখেই শুকিয়ে নিন। এরপর প্যাকটি শুকিয়ে গেলে বরফ ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন।

সুন্দর ত্বক পেতে প্রাকৃতিক উপাদানগুলির কোনও বিকল্প হয় না। ব্রণ, সান ট্যান, শুষ্ক ত্বক, তৈলাক্ত ত্বক এবং নিস্তেজ ত্বকের জন্য বাড়িতে তৈরী করা ফেস প্যাক কাজ করে ম্যাজিকের মতো। তবে বাড়িতে ফেস প্যাক তৈরি করে না প্রয়োগ করার আগে কিংবা বাজার থেকে যেন ফেস প্যাক ব্যবহার করার আগে এর কোনও উপাদানে আপনার অ্যালার্জি আছে কিনা তা যাচাই করে নেওয়া দরকার।