লাইফস্টাইল

Holiday For Few Days: মাত্র ২-৩ দিনে ঘুরে আসুন কলকাতার আশেপাশেই

Holiday For Few Days: মাত্র ২-৩ দিনে ঘুরে আসুন কলকাতার আশেপাশেই
Key Highlights

অফিস থেকে মাত্র দু-তিনদিনের ছুটি পেয়েও ঘুরে আসুন ভালোভাবে। কলকাতার আশেপাশেই রয়েছে ভালো ট্যুর স্পট।

কর্ম জীবনের দৌড়ে ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ পান না অনেকেই। আর কোনও ভাবে ছুটি (Holiday) পেলেও সেই তিন চার দিনের বেশি ছুটি নেই। তবে হাতে গোনা দিনের মধ্যেই এক ঘেয়ে 'দী-পু-দা' ছেড়ে নিশ্চিন্তে ঘুরে আসতে পারেন শহরের আসে পাশেই। এরপরের ছুটি পেলে বেরিয়ে পড়ুন ব্যাগ পত্র গুছিয়ে। আপনার মন ভালো করতে কলকাতার পার্শ্ববর্তী এলাকার মধ্যেই রইলো কেবল ৩-৪ দিনের ট্যুর প্ল্যান। 

কৃষ্ণনগর | Krishnanagar: 

কৃষ্ণনগর হল জলঙ্গী নদীর তীরে অবস্থিত একটি জেলা সদর। কলকাতা থেকে ১০৬.৭ কিলোমিটার দূরেই অবস্থিত বহু প্রাচীন এক রাজবাড়ী। প্রসঙ্গত, রাজা কৃষ্ণ চন্দ্র রায়ের নামে কৃষ্ণনগরের নামকরণ করা হয়েছে। তাঁর রাজত্বকালে এখানে নির্মিত রাজবাড়িটি পর্যটকদের আকর্ষণের একটি বিশিষ্ট স্থান হিসেবে আজও বিদ্যমান রয়েছে। এখানের ইতিহাসে রয়েছে মাধুর্য্য, সৌন্দর্য, সাধারণত্ব; যা মনে কেড়ে নিতে পারবে আপনার।

রিশপ | Rishyap: 

আপনি যদি প্রকৃতি প্রেমী হয়ে থাকেন তাহলে রিশপ হতে পারে আপনার নতুন প্রিয় ঘোরার স্থান। পাইন এবং রডোডেনড্রনের সারি সহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা রিশপ। কলকাতা থেকে ৬৭১ কিমি দূরে অবস্থিত কালিম্পং জেলার একটি ছোট গ্রাম। রিশপ নামের “রি” মানে পাহাড়ের চূড়া এবং "শপ" মানে কয়েক দশকের পুরনো গাছ।

এই চিরসবুজ গ্রাম থেকে দেখা যায় তুষারাবৃত কাঞ্চনজঙ্ঘার মহিমান্বিত দৃশ্য। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২৫৯১ মিটার উঁচু এই গ্রামে করা যায় ট্রেকিংও। রিশপের কাছে লাভা, লোলেগাঁও,পেডংও করে পর্যটকদের আকর্ষণ।

সুন্দরবন | Sundarban: 

আপনি কি ওয়াইল্ড লাইফ ট্যুর করতে পছন্দ করেন? যদি আপনার উত্তর "হ্যাঁ" হয়, তাহলে আর দেরি কীসের। কলকাতা থেকে দূরত্ব মাত্র ১০৯ কিলোমিটার। আজই ব্যাগ ঘুচিয়ে রওনা দিন বঙ্গোপসাগরে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদীর সঙ্গম দ্বারা গঠিত ব-দ্বীপের একটি ম্যানগ্রোভ এলাকা সুন্দরবন-এ। 

রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার (Royal Bengal Tiger)-এর জন্য সুন্দরবন বিশ্বখ্যাত। দেশ-বিদেশ থেকে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার দেখার জন্য প্রায়ই ভিড় করে থাকেন বহু পর্যটক। বর্তমানে ভারতবর্ষে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা হল ২৯৬৭। 

শঙ্করপুর | Shankarpur: 

সমুদ্র বলতে আমাদের প্রথমেই মাথায় আসে দিঘা বা পুরীর নাম। তবে এবার এই এক ঘেয়ে দিঘা পুরী  ছেড়ে নিরিবিলি পরিবেশে ঘুরে আসুন শঙ্করপুরে। কলকাতা থেকে ১৭৪.৬ কিমি দূরে ও দিঘা রেলওয়ে স্টেশন থেকে ১৬ কিমি দূরে অবস্থিত শঙ্করপুর সমুদ্র সৈকত হয়ে উঠেছে নয়া আকর্ষণ। স্থানীয় মাছ ধরার নৌকা এবং সারি সারি ক্যাসুয়ারিনা গাছ দ্বারা বেষ্টিত শঙ্করপুর সমুদ্র সৈকত হল একটি কুমারী সৈকত। যারা ভিড় পছন্দ করেন না এবং একটি নিরিবিলি। মন্দারমণির তুলনায় জোয়ার একটু বেশি হওয়ায় এখানের সমুদ্রে স্নান করা না গেলেও নীল সমুদ্রের বিপরীতে গাছের সুরম্য সারির দৃশ্য কেড়ে নেবে আপনার মন।

 বকখালী | Bakkhali: 

দক্ষিণবঙ্গে ছড়িয়ে থাকা বহু ব-দ্বীপের মধ্যে একটি হল বকখালী। কলকাতা থেকে ১৩৮কিমি দূরে অবস্থিত বকখালীর দক্ষিণমুখী অর্ধচন্দ্রাকার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর বিরল সমুদ্র সৈকতগুলির মধ্যে একটি। যেখান থেকে দেখা যায় সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত উভয়েরই চমৎকার দৃশ্য। বকখালীতে ভ্রমণের সেরা মৌসুম বা মাস হল ফেব্রুয়ারি, মার্চ, অক্টোবর, নভেম্বর এবং ডিসেম্বর। এখানে রয়েছে ৭টি পর্যটন স্থান। যা হল বকখালি ওয়াচ টাওয়ার, সুন্দরবনের ভগবতপুর কুমির প্রকল্প, সাগর দ্বীপ, জাম্বু দ্বীপ, ফ্রেজারগঞ্জ। 

হেনরিজ আইল্যান্ড | Henry's Island: 

প্রাইভেট দ্বীপ, সমুদ্র, জঙ্গল সঙ্গে শান্ত পরিবেশ। ২-৩ দিনের ছুটিতে এমন পরিবেশ পাওয়া যেন স্বপ্ন। এই স্বপ্ন এবার সত্যি করুন হেনরিজ আইল্যান্ডে গিয়ে। কলকাতা থেকে ১৩০ কিমি দূরে অবস্থিতি এই দ্বীপ বিশ্বের বৃহত্তম গঙ্গা ব্রহ্মপুত্র ব-দ্বীপ গঠনকারী অসংখ্য দ্বীপের মধ্যে একটি। সমুদ্র সৈকত এবং ম্যানগ্রোভ বন ছাড়াও দেখা যায় ক্যাসুয়ারিনাস প্ল্যান্টেশনও। 

বিষ্ণুপুর | Bishnupur: 

পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর টেরাকোটা মন্দির এবং বালুচরী শাড়ির জন্য বিখ্যাত। কলকাতা থেকে ১৩৯.৩ কিমি দূরে অবস্থিত বিষ্ণুপুরে রয়েছে গৌরবময় অতীত, স্থাপত্য, সঙ্গীত এবং হস্তশিল্প।মল্ল রাজবংশের হিন্দু রাজাদের দ্বারা শাসিত বিষ্ণুপুরে দেখা যায় টেরাকোটা টাইলস যা রামায়ণ এবং মহাভারতের গল্পগুলি চিত্রিত করে।

 শান্তিনিকেতন | Shantiniketan: 

রবি ঠাকুরের বাড়ি ও বিশ্বভারতীর জন্য পরিচিত শান্তিনিকেতন। কলকাতা থেকে ১৬১.৯ কিমি দূরে অবস্থিত এই লাল মাটির দেশে আপনি পাবেন বাংলার সংকৃতির ছোঁয়া। এখানে আপনি ঘুরে দেখতে পারেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি, বিশ্বভারতী, কালী মন্দির, রাজবাড়ী, রবি ঠাকুরের মিউজিয়াম। বিকেল বেলায় ঘুরে আসতে পারেন কোপাই নদীর তীর থেকে। সোনাঝুরি হাট থেকে কেনাকাটা করার পর শুনুন বাউল গানও। 

মুর্শিদাবাদ | Murshidabad: 

ইতিহাস, সংস্কৃতি, ঐতিহাসিক স্থাপত্যর জন্য বড় আকর্ষণ মুর্শিদাবাদ । ১৬ শতকে মুঘল সম্রাট আকবর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মুর্শিদাবাদ। ১৭৯০ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশদের অধীনে রাজধানী ছিল এই শহর। কলকাতা থেকে ২০৯.৯ কিমি দূরে এই যায়গায় রয়েছে কাতরা মসজিদ, জাহান কোশা কামান, খোশ বাঘ, জগৎ শেঠের বাড়ি, চার বাংলা মন্দির, নাসিপুর প্যালেস, ইমামবারা ইত্যাদি। কম দিনের মধ্যে ঐতিহাসিক জায়গায় ঘুরতে যান মুর্শিদাবাদ।

বড়ন্তি | Baranti: 

কলকাতার আসেপাশের মধ্যেই যদি আপনি চান পাহাড়ের সঙ্গে লেকও, তাহলে আপনার জন্য ভালো যায়গা হল বড়ন্তি। কলকাতা থেকে ২৩৯কিমি দূরে অবস্থিত বড়ন্তি। এখানে পাবেন পাহাড় ও লেকের আমেজ ও প্রকৃতির সৌন্দর্য।

এবার ছুটিতে কোথায় ঘুরতে যাবেন এই নিয়ে আর করতে হবেনা চিন্তা। কেবল তিন চার দিনের মধ্যেই আপনার পরিবারের সঙ্গে উপভোগ করুন সুন্দর পরিবেশ।