Yoga 30 Days Challenge | 'সামার বডি' পেতে সকলেই করছেন যোগার ৩০দিনের চ্যালেঞ্জ! জানুন মেদ ঝরিয়ে শরীর সুঠাম করবেন কী করে!

Wednesday, May 15 2024, 12:17 pm
highlightKey Highlights

অনেকেই মনে করেন, যোগের ফলাফল পেতে বোধহয় বহুদিন লাগে। যদিও বিষয়টি একবারেই তেমন নয়। ফিটনেস ও যোগা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১ মাস সঠিকভাবে যোগা করলেই শরীরে বদল আসে চমকে দেওয়ার মতো।


যোগাসন-যোগব্যায়ামের জন্ম ভারতে। প্রায় ৫ হাজার সাল আগে থেকে এই শরীরচর্চা করে আসছেন আমাদের পূর্বপুরুষরা। তবে বর্তমানে ভারতের গন্ডি ছাড়িয়ে যোগব্যায়ামের চর্চা ছড়িয়ে পড়েছে দেশ-বিদেশেও। জিম থাকতেও মেদ ঝড়াতে এবং শরীরের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও যোগব্যায়াম করে থাকেন অনেকে।  স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে ফিটনেস বিশেষজ্ঞ সকলেই বলছেন, সহজ উপায়ে মেদ ঝরিয়ে সুঠাম চেহারা পেতে সবথেকে কার্যকরী উপায়ের মধ্যে অন্যতম যোগব্যায়াম। এমনকি বর্তমানে ৩০ দিনের যোগব্যায়াম চ্যালেঞ্জও নিয়ে থাকেন। অনেকেই মনে করেন, যোগের ফলাফল পেতে বোধহয় বহুদিন লাগে। যদিও বিষয়টি একবারেই তেমন নয়। যোগের ফল অত্যন্ত দ্রুত পাওয়া যায়। এমনকি ৩০ দিনেই ফল মেলে হাতেনাতে। এই প্রসঙ্গে যোগা বিশেষজ্ঞরা বলেন, ফলাফল পেতে মোটামুটি ৩০ দিন নিয়মিত করতে হবে যোগ। 

মেদ ঝরিয়ে সুঠাম চেহারা পেতে সবথেকে কার্যকরী উপায়ের মধ্যে অন্যতম যোগব্যায়াম
মেদ ঝরিয়ে সুঠাম চেহারা পেতে সবথেকে কার্যকরী উপায়ের মধ্যে অন্যতম যোগব্যায়াম

ফিটনেস ও যোগা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১ মাস সঠিকভাবে যোগা  করলেই শরীরে বদল আসে চমকে দেওয়ার মতো। কয়েকদিন যোগ করতে পারলেই শরীরে এন্ডোরফিন বাড়তে শুরু করে। পেশি শক্ত হয়। এমনকী বিপাকের হার বাড়ে। ফলে ওজনও কমে। এছাড়া মানসিক স্বাস্থ্য শুধরে যায় নিমেষে। এক্ষেত্রে অনেকেই ৩০দিনের যোগা চ্যালেঞ্জ নিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে দিনের একটা সময় বের করুন। সেই সময়ে অবশ্যই ব্যায়াম করতে হবে।

যেসব যোগব্যায়াম মেদ ঝরাবে । Yoga Exercises to Lose Fat :

 শরীরে যোগব্যায়ামের বিরাট প্রভাব রয়েছে। তাই নিয়মিত করার প্রয়াস করুন। কিন্তু অনেক মনে করেন যোগ খুব কঠিন কাজ। এবার কিছু যোগ অবশ্যই জটিল। তবে কয়েকটি খুব সহজ। সেই যোগ নিয়মিত করা যেতে পারে। দেখে নিন কোন যোগাসনগুলি সহজেই করতে পারবেন এবং যা কমাবে মেদও।

সূর্য নমস্কার (Surya Namaskar) : এই একটা আসনের মধ্যে থাকে একাধিক আসন। যা শরীরের বিভিন্ন পেশি সঞ্চালনে সহায়তা করে। দেহের নমনীয়তা এবং হৃদস্পন্দনও বৃদ্ধি পায়। এছাড়া ওজন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি দেহের রক্ত সঞ্চালনেও আনে অগ্রগতি।

ধনুরাসন বা ধনুক পোজ যোগব্যায়াম (Bow Pose Yoga) : এই আসন পেটের ডিপসেট মাসলের উপর প্রেসার দেবে এবং ফ্যাট ঝরিয়ে ফেলার সঙ্গে সঙ্গে আপনার অন্ত্র, গলব্লাডার ও অগ্নাশয়ের ক্ষরণে সাহায্য করে হজম প্রক্রিয়া ভালোভাবে চালাবে। ধনুরাসন বা ধনুক পোজ যোগব্যায়াম (Bow Pose Yoga) পেটের উপর ভর দিয়ে শুয়ে পড়ুন। এবার দুই পা কিছুটা ফাঁকা করে হাঁটু ভেঙে পা যতটা পারেন উপরে তুলুন। দুই হাত দিয়ে শক্ত করে দুই গোড়ালির কাছে চেপে ধরুন। ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে নিতে দুই হাত দিয়ে টেনে পা যত পারেন উপরে তুলুন। এর সাথে সাথে আপনার পুরো ঊর্ধ্বাঙ্গ মেঝে থেকে উপরে উঠে আসতে দিন। এভাবেই প্রায় ৫ সেকেন্ড থাকুন। তারপর আস্তে আস্তে হাত ছেড়ে দিয়ে আবার আগের পজিশনে চলে যান। রোজ ৫-১০ বার এই আসনটি করুন।

ধনুরাসন  পেটের ডিপসেট মাসলের উপর প্রেসার দেবে এবং ফ্যাট ঝরিয়ে ফেলার সঙ্গে অগ্নাশয়ের ক্ষরণে সাহায্য করে
ধনুরাসন  পেটের ডিপসেট মাসলের উপর প্রেসার দেবে এবং ফ্যাট ঝরিয়ে ফেলার সঙ্গে অগ্নাশয়ের ক্ষরণে সাহায্য করে

পশ্চিমোত্তনাসন যোগ (Paschimottanasana Yoga) : মূলত পেটের আশপাশের পেশির জন্য পশ্চিমোত্তনাসন যোগ (Paschimottanasana Yoga) অতুলনীয়। হজমশক্তি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি এটা অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রতঙ্গগুলির জন্যও ভাল। যাঁরা পেটের মেদ কমাতে চাইছেন, তাঁদের জন্য এই আসন খুবই জরুরি।

 নবাসন (The boat pose): এই আসন অ্যাবডমিনাল আর লোয়ার ব্যাক মাসলকে শক্তিশালী করে। এতে করে সহজেই পেট ঝুলে পড়ে না। এই আসন করতে প্রথমেই দুই পা সোজা করে একত্রে মিলিয়ে বসুন। এবার দুই পা একসাথে যতটুকু পারেন উপরে তোলার চেষ্টা করুন। হাত দিয়ে মেঝে ছোঁবেন না। ব্যালেন্স রাখুন। প্রথমে এই আসন পারফেক্টলি করতে পারবেন না। তাই পা যত পারেন তুলে কয়েক সেকেন্ড এভাবে থেকে আবার আগের পজিশনে ফেরত আসুন। আস্তে আস্তে প্রতিবার পা আরো উপরে তোলার চেষ্টা করুন। মেদহীন ও আকর্ষণীয় কোমর পেতে রোজ ৫বার এই আসন টি করুন।

সেতু বন্ধাসন (Setu Bandhasana) : শরীরের মধ্যবর্তী অংশ, থাই এবং পশ্চাদ্দেশের পেশি মজবুত করার জন্য কার্যকরী সেতু বন্ধাসন (Setu Bandhasana)। থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতার জন্যও উপকারী। আর ওজনও থাকে নিয়ন্ত্রণে। 

 সেতুবন্ধ সরবাসন (The bridge pose): মেদহীন ও আকর্ষণীয় কোমর এই আসনটি  হার্ট, কাঁধ, মেরুদণ্ড আর অ্যাবডোমেন সব অংশের জন্যই সমান উপকারী। এটা মেটাবোলিজমের হার বাড়াতেও সাহায্য করে। 

বীরভদ্রাসন (Virbhadrasana): এই আসনও দেহের বিভিন্ন অংশের পেশির উপর কাজ করে। এর মধ্যে অন্যতম হল থাই, কাঁধ এবং হাত। এতে শরীরের শক্তি এবং সহনশীলতা বৃদ্ধি পায়। আর ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্যও তা কার্যকর।

 ভুজঙ্গাসন (The snake pose): এই আসন মেরুদণ্ড, কোমর আর পেটের মাসলের শক্তি বাড়াতে খুবই সাহায্য করে। ভুজঙ্গাসন উপকারিতা (Bhujangasana Benefits)  শরীরের তাপও বাড়ায়। এই আসন করতে প্রথমে পেটের উপরে ভর দিয়ে উপুর হয়ে শুয়ে পড়ুন। দুই পা একটু ফাঁকা থাকবে আর হাতের তালু মাথার পাশে মেঝেতে লাগানো থাকবে। এবার ধীর শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে আস্তে আস্তে শরীরের উপরের অংশকে হাতে ভর দিয়ে ছবির মত করে উপরের দিকে তুলুন।  যতটা পারেন পেটের পেশিতে টান ফেলার চেষ্টা করুন। খেয়াল রাখবেন পা যেন মেঝেতে লাগানো থাকে। এভাবে ১৫-২০ সেকেন্ড থাকুন।

যোগার সময় শরীরের স্ট্রেচিং হয় ও পেশি নমনীয় হয়ে ওঠে
যোগার সময় শরীরের স্ট্রেচিং হয় ও পেশি নমনীয় হয়ে ওঠে

যোগা দেহের শক্তি ও নমনীয়তা বাড়তে পারে খুব সহজে। আসলে যোগার সময় শরীরের স্ট্রেচিং হয়। এই ব্যায়াম করলে পেশি নমনীয় হয়ে ওঠে। তবে একদিন করলে তেমন লাভ মিলবে না। বরং রোজ করতে হবে। তবেই পেশি ও হাড় ঠিকমতো কাজ করতে পারবে এবং ওজন কমবে। যোগ করলে প্যারাসিম্প্যাথেটিক নার্ভ রিল্যাক্স করতে পারে। এমনকী শরীর শান্ত হয়। অপরদিকে সিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম ভালো মতো কাজ করে। মাত্র ৩০ দিন পরপর যোগা করে দেখুন, ফলাফল পাবেন হাতেনাতে।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File