Mount Erebus | রোজ প্রায় ৮০ গ্রাম করে সোনা বেরোয় এই আগ্নেয়গিরি থেকে! ভারতে মূল্য প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা! তাও কেন ধারের কাছে পৌঁছতে পারেন না কেউ?

Friday, April 26 2024, 1:01 pm
highlightKey Highlights

পৃথিবীর অন্যতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মাউন্ট এরিবাস দিকে রোজ প্রায় ৮০ গ্রাম করে সোনা বেরোয়, যার মূল্য ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার কাছাকাছি।


গল্পের কাহিনীর মতো আমাদের পৃথিবীতেই হয় 'সোনার বৃষ্টি'! শুনতে অবাক লাগলেও এ কথা সত্যি। তাও আবার এই সোনার বৃষ্টি হয় বরফে মোড়া এক আগ্নেয়গিরি থেকে। জানা যায়, এই আগ্নেয়গিরি থেকে একটু আধটু নয় রোজ প্রায় ৮০ গ্রাম করে সোনা বেরোয়, যার মূল্য ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। এই 'স্বপ্নের' আগ্নেয়গিরি হলো পৃথিবীর অন্যতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মাউন্ট এরিবাস (Mount Erebus)।

আন্টার্কটিকায় অবস্থিত মাউন্ট এরিবাস পৃথিবীর অন্যতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরি।একেবারে প্রায় পৃথিবীর দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত এটি। এর থেকে দক্ষিণে আর কোনও সক্রিয় আগ্নেয়গিরি নেই বলেই জানা যায়। রস সাগরের মধ্যে রস আইল্যান্ড (Ross Island) এর মধ্যে রয়েছে মাউন্ট এরিবাস। আন্টার্কটিকায় রয়েছে প্রায় ১৩৮টি আগ্নেয়গিরি। তাদের মধ্যে ন’টি সক্রিয়। তার মধ্যে উচ্চতম হল মাউন্ট এরিবাস। এর উচ্চতা প্রায় ৩,৭৯৪ মিটার (১২,৪৪৮ ফুট)। ১৮৪১ সালে ক্যাপ্টেন স্যর জেমস ক্লার্ক রস (Captain Sir James Clark Ross) এই দ্বীপ আবিষ্কার করেন। তাঁর নামেই নামকরণ হয় দ্বীপের। 

Trending Updates

রিপোর্ট বলছে, এই এরিবাস আগ্নেয়গিরি থেকেই গ্যাস, পাথর, বাষ্পের সঙ্গে ছিটকে বের হয় কেলাসিত সোনা। এরিবাস থেকে ৯৯৯ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে সেই লাভা। তা পরীক্ষা করেই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু সোনার কাছাকাছি পৌঁছতে পারেননি তাঁরা। কারণ বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে তাপমাত্রা। আসলে রস সাগরের রস আইল্যান্ড (Ross Island) এ অবস্থিত মাউন্ট এরিবাস। আর এই আগ্নেয়গিরি যেখানে রয়েছে, সেখানে তাপমাত্রা যে কোনও সময়ে মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নেমে যেতে পারে। তাই সেখানে যাওয়া একেবারেই নিরাপদ নয়। এমনকি মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। নাসার (NASA) পৃথিবী পর্যবেক্ষণকারী উপগ্রহ জানিয়েছে, পাতলা ভূত্বকের উপর রয়েছে মাউন্ট এরিবাস আগ্নেয়গিরি। ফলে গলিত পাথর, ভস্ম আরও সহজে বেরিয়ে আসছে প্রচুর পরিমাণে। সেই সঙ্গেই বেরিয়ে আসছে সোনাও।

বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন, মাউন্ট এরিবাসের গহ্বরে রয়েছে একাধিক লাভার হ্রদ। তার মধ্যে একটি সক্রিয় রয়েছে ১৯৭২ সাল থেকে। তার ফলে মাঝেমধ্যে এরিবাস থেকে বেরিয়ে আসছে লাভা। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এই আগ্নেয়গিরির অবস্থা বেশ বিরল। একদিকে এর ভিতরে রয়েছে জ্বলন্ত লাভা। অন্য দিকে, আগ্নেয়গিরিটি বরফাবৃত। ফলেই এতটাই কম সেখানকার তাপমাত্রা যে, অভিযানকারীরা খুব একটা যাওয়ার সাহস দেখান না। এই ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে মাউন্ট এরিবাস নিয়ে গবেষণার সমস্যা হয়। একই কারণে, সেখানে গিয়ে সোনা তুলে আনা এক প্রকার অসম্ভব। তবে মাউন্ট এরিবাস আগ্নেয়গিরির উপর নজর রাখার জন্য তৈরি হয়েছে মাউন্ট এরিবাস ভলকানো অবজ়ারভেটরি। আন্টার্কটিকায় পর্যবেক্ষণ চালানোর জন্য রয়েছে ম্যাকমার্ডো স্টেশন (mcmurdo station)। এই ম্যাকমার্ডো স্টেশন (mcmurdo station) পরিচালনা করে আমেরিকা। আর সেখানে বসেই নজর রাখা হয় এরিবাসের উপর।

প্রসঙ্গত, এই মাউন্ট এরিবাসের উপরই একদা ভেঙে পড়েছিল একটি বিমান। প্রাণ হারিয়েছিলেন সওয়ার ২৫৭ জন। ১৯৭৯ সালের ২৮ নভেম্বর ঘটেছিল সেই ঘটন। এয়ার নিউ জ়িল্যান্ডের বিমান ছিল সেটি। নিউ জ়িল্যান্ডের অকল্যান্ড থেকে আন্টার্কটিকার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে আবার অকল্যান্ডে ফেরত আসার কথা ছিল।কিন্তু ১১ ঘন্টার সেই সফরে ঘটে বিপত্তি। দুপুর ১টা নাগাদ আগ্নেয়গিরির উপর ভেঙে পড়ে বিমান। কাউকে জীবিত উদ্ধার করা যায়ন বলেই জানা যায়।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File