Ayurvedic Medicine for High BP | কিছুতেই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না? উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে মহৌষধির কাজ করবে এই আয়ুর্বেদিক টোটকা!

Friday, January 19 2024, 10:57 am
highlightKey Highlights

উচ্চ রক্তচাপের জন্য আয়ুর্বেদিক ওষুধের মতো কাজ করে বেশ কিছু প্রাকৃতিক উপাদান। দেখুন উচ্চ রক্তচাপের জন্য সেরা আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে কী কী খাবেন এবং কীভাবে রক্তচাপ রাখবেন নিয়ন্ত্রণে।


বর্তমানে ঘরে ঘরে রক্তচাপের সমস্যা, বিশেষ  রক্তচাপ! বয়স কম হোক কিংবা বেশি,  হাই ব্লাড প্রেশারের সমস্যা শুরু হলে সুস্থ্য থাকতে জীবনধারায় আনতে হয় একাধিক পরিবর্তন। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে জীবন ধারায় একটু অবহেলা করলে প্রাণের ঝুঁকিও দেখা দিতে পারে। এই অবস্থায় সুস্থ্য রাখতে পারে আয়ুর্বেদিক উপায়। এমন কিছু খাদ্যাভাস রয়েছে যা উচ্চ রক্তচাপের জন্য আয়ুর্বেদিক ওষুধ (Ayurvedic Medicine for High BP) এর মতো কাজ করে এবং এটি নিয়মিত মেনে চললে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা কেন হয়?

Trending Updates

রক্ত সঞ্চালন পরিবর্তনের কারণগুলির মধ্যে অন্যতম হল রক্তনালিতে বাধা। নানা কারণে রক্তনালির দেওয়ালে রুক্ষতা ও কঠিনতা বৃদ্ধি পায় যা রক্ত সঞ্চালনের পথকে সংকুচিত করে। উচ্চ রক্তচাপের নানান কারণরয়েছে, যেমন-

  • খারাপ খাদ্যাভ্যাস ও জীবনশৈলী। অতিরিক্ত ভাজাভুজি খাওয়া, অত্যাধিক চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়া।
  • অতিরিক্ত পরিশ্রম, মানসিক চিন্তা বা  চাপ, রাত জাগা, দিনের বেলা ঘুমানো, ক্রোধ ইত্যাদি রক্তচাপ বাড়াতে পারে।
  • স্থূলতা বা মেদরোগ, মদ্যপান, ধূমপান ইত্যাদি থেকেও সমস্যা বাড়ে।
  • দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ, ডায়াবেটিস, জন্মগত  হার্টের ত্রুটি, থাইরয়েড রোগ এমনকি নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণেও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হয়।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য কী কী খেতে পারেন?

উচ্চরক্তচাপের চিকিৎসায় মূলত দু’দিক বিচার বিবেচনা করে করা হয়। ঝুঁকিপূর্ণ জীবনশৈলী থাকলে প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা এবং উচ্চরক্তচাপ থাকলে তার নিরাময়মূলক চিকিৎসা দরকার। এমন বেশ কিছু প্রাকৃতিক খাবার ও পানীয় রয়েছে যা উচ্চ রক্তচাপের জন্য সেরা আয়ুর্বেদিক ওষুধ (Best Ayurvedic Medicine for High BP) হিসেবে কাজ করে। দেখে নিন কোন কোন খাবার হাই বিপির জন্য আয়ুর্বেদিক ঔষধ (Ayurvedic Medicine for BP) হিসেবে খেতে পারেন।

বিটরুট :

বিটরুটে উপকারী মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন নাইট্রেট, পটাসিয়াম, ফাইটোকেমিক্যালস এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। বিটরুট উচ রক্তচাপের জন্য আয়ুর্বেদিক ওষুধ (Ayurvedic Medicine for Blood Pressure) হিসেবে কাজ করে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। বিটরুটে পাওয়া নাইট্রেট শরীরে নাইট্রিক অক্সাইডে রূপান্তরিত হয় যা রক্তনালী ও কোষের সঞ্চালন উন্নত করতে সাহায্য করে। 

অশ্বগন্ধা :

উচ্চ রক্তচাপের জন্য আয়ুর্বেদিক ওষুধ (Ayurvedic Medicine for High BP) হিসেবে কাজ করে অশ্বগন্ধা। এর মধ্যে থাকা ঔষধি গুণ মানসিক চাপ উপশম করে। এর সেবনে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। আসলে উচ্চ রক্তচাপের অনেক কারণ রয়েছে, তার মধ্যে একটি প্রধান কারণ হল মানসিক চাপ। আর এই মানবিক চাপ দূর করতে পারে অশ্বগন্ধার চা। প্রতিদিন এক চা চামচ অশ্বগন্ধা দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে  রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

দারুচিনি :

দারুচিনির মধ্যে পটাসিয়াম, জিঙ্ক, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন ক্যালসিয়াম, ফাইবার, আয়রন থাকার পাশাপাশি অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ফলে এটিও উচ্চ রক্তচাপের জন্য সেরা আয়ুর্বেদিক ওষুধ (Best Ayurvedic Medicine for High BP) হিসেবে বেশ কার্যকর। সাধারণত খাবারে এই মশলা প্রায়শই ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাবারের পাশাপাশি গরম দুধে দারুচিনির গুঁড়ো মিশিয়েও পান করতে পারেন।

অর্জুন গাছের ছাল :

অর্জুন গাছের ছালের অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে, এটি  রক্তচাপের জন্য আয়ুর্বেদিক ওষুধ (Ayurvedic Medicine for Blood Pressure) ছাড়াও একাধিক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এটি শুধুমাত্র উচ্চ রক্তচাপ কমায় না, কোলেস্টেরলের মাত্রায়ও নিয়ন্ত্রণে রাখে। এর চা নিয়মিত খেলে উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এর জন্য ৩-৬ গ্রাম অর্জুনের ছালের গুঁড়ো প্রায় ১০০ মিলি জলের সঙ্গে মিশিয়ে পান করতে পারেন।

ত্রিফলা :

আয়ুর্বেদে শরীরকে চাঙ্গা রাখার জন্য ত্রিফলা একটি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ। এটি হরদ, আমলকী এবং বাহেরা তিনটি ওষুধের সংমিশ্রণ। বিপির জন্য আয়ুর্বেদিক ঔষধ (Ayurvedic Medicine for BP) হিসেবে ত্রিফলা বেশ জনপ্রিয়। এটি রক্ত ​​সঞ্চালন উন্নত করে এবং রক্তনালীতে চাপ কমায়। রাতের খাবারের ২ ঘণ্টা পর এক চামচ ত্রিফলা চূর্ণ খেলে উপকার পাওয়া যায়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি এটি পরিপাকতন্ত্রকেও সুস্থ রাখে।

লেবু :

উচ্চ রক্তচাপকে দূরে রাখতে লেবুও বেশ কার্যকরী। এটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা রক্তনালীগুলিকে নমনীয় রাখতে সাহায্য করে। লেবুর রস ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমায়, তাই এর ব্যবহার উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য উপকারী। এক গ্লাস জলে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।

উল্লেখ্য, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে তা দ্রুত চিকিৎসার দ্বারা নিয়ন্ত্রণে আনা প্রয়োজন। সঠিক খাদ্যাভাস, চিকিৎসার সঙ্গে পরিবর্তন আনতে হবে জীবনধারাতে। যেমন-অতিরিক্ত বা আলাদাভাবে কোনও প্রকার লবণ বা লবনাক্ত খাবার খাওয়া ও পানীয় বর্জন করতে হবে; কোনওরকম তামাক জাতীয় দ্রব্য সেবন ও মদ্যপান ত্যাগ করতে হবে; কোল্ড ড্রিংস, আইসক্রিম ও ফাস্ট ফুডে অতিরিক্ত আসক্তি কমাতে হবে; কমপক্ষে ৬-৭ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে; সকাল বা বিকালে ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা ব্যায়াম বা যোগাসন-মেডিটেশন অথবা হাটাহাটি করতে হবে। মনে রাখবেন, চল্লিশোর্ধ্বদের বছরে অন্তত এক বার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো খুব জরুরি।কেন রক্তচাপ বাড়ল তা দেখতে হবে। উচ্চ রক্তচাপকে অবহেলা করলে তার পরিণতি ভয়ংকর হতে পারে।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File