লাইফস্টাইল

Argan | মরক্কোর বিশেষ গাছ থেকে তৈরী হয় এই ‘লিকুইড গোল্ড’! সঠিকভাবে আর্গান তেল ব্যবহার করলে সোনার মতোই দেখাবে ত্বক ও চুল!

Argan | মরক্কোর বিশেষ গাছ থেকে তৈরী হয় এই ‘লিকুইড গোল্ড’! সঠিকভাবে আর্গান তেল ব্যবহার করলে সোনার মতোই দেখাবে ত্বক ও চুল!
Key Highlights

আটলান্টিক মহাসাগরের তট ঘেঁষে উত্তর আফ্রিকার ছোট্ট দেশ মরক্কো। এ দেশেই মেলে আর্গন গাছ। এ গাছের ফলের শক্ত খোলস ভাঙলেই পাওয়া যায় বাদামজাতীয় দানা। তারই শাঁস থেকে তেল বার করে যুগ যুগ ধরে রান্না ও রূপচর্চায় ব্যবহার করছেন মরক্কোবাসীরা। বহুগুণসম্পন্ন এই তেল ত্বকের পাশাপাশি চুলের জন্যও বেশ উপকারী।

 রূপচর্চা এবং চুল ও ত্বকের স্বাস্থ্যের জন আর্গান (Argan) তেল বেশ জনপ্রিয়।যার ফলে নামিদামি বিভিন্ন প্রোডাক্টের ইনগ্রেডিয়েন্ট লিস্টে এই নামটা প্রায়ই দেখা যায়। আবার আলাদাভাবেও আরগান অয়েল পাওয়া যায়। আটলান্টিক মহাসাগরের তট ঘেঁষে উত্তর আফ্রিকার ছোট্ট দেশ মরক্কো। এ দেশেই মেলে আর্গন গাছ। এ গাছের ফলের শক্ত খোলস ভাঙলেই পাওয়া যায় বাদামজাতীয় দানা। তারই শাঁস থেকে তেল বার করে যুগ যুগ ধরে রান্না ও রূপচর্চায় ব্যবহার করছেন মরক্কোবাসীরা। বহুগুণসম্পন্ন এই তেল ত্বকের পাশাপাশি চুলের জন্যও বেশ উপকারী। এই তেলের নাম প্রায়শই শুনে থাকলেও অনেকেই জানেন না ত্বকও চুলের জন্য আর্গান তেল (Argan Oil for Hair) কীভাবে ব্যবহার করা যায় এবং এর উপকারিতা কী।

আর্গান অয়েল আসলে কী? । What is Argan Oil? 

মরক্কোর আর্গান গাছের ফল  (বাদামজাতীয় ) থেকে পাওয়া যায় এই তেল। বিশেষ পদ্ধতিতে তেল নিষ্কাশন করা হয় যাতে প্রাকৃতিক গুণাগুণ অক্ষুণ্ণ থাকে। আর্গান (Argan)তেলে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ই, ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড, অলিক অ্যাসিড এবং লিনোলিক অ্যাসিডের মতো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। ত্বক ও চুলের যত্নে আর্গান অয়েল এতটাই উপকারী, সেজন্য এটিকে বলা হয় ‘লিকুইড গোল্ড’।

আর্গান অয়েলের উপকারিতা । Benefits of Argan Oil :

এই তেলকে কেউ বলেন ম্যাজিক অয়েল, আবার কেউ বলেন তরল সোনা। আর্গন অয়েল ত্বক, চুল, নখের জেল্লা বাড়ানোর উপাদানে ঠাসা। এতে ভিটামিন এ, ভিটামিন ই ও নানা ফ্যাটি অ্যাসিড আছে। অন্য তেলের তুলনায় আর্গন অয়েল বেশ হালকা। লাগানো মাত্র ত্বক শুষে নেয়। 

ত্বকের যত্নে এর উপকারিতা :

আরগান অয়েল ত্বকের হাইড্রেশন লক করে রাখে, বয়সের ছাপ এবং বলিরেখা কমায়, সূর্য এবং দূষণের দ্বারা ক্ষতির বিরুদ্ধে লড়াই করে, ত্বকের ইরিটেশন কমায় এবং ত্বককে কোমল রাখে। আর্গান  অয়েল নন-কমেডোজেনিক। অর্থাৎ এটা স্কিনের পোরস ক্লগ করবে না! ড্রাই স্কিনের পাশাপাশি নরমাল টু কম্বিনেশন স্কিনেও ব্যবহার করা যায় এই তেল। এমনকী ত্বক তৈলাক্ত হলেও এই তেল ব্যবহার করা যায়, কেননা এটা ত্বককে চিটচিটে করে তোলে না । আর্গান অয়েল ড্রাইনেস দূর করে ত্বককে ময়েশ্চারাইজড রাখে। আর অয়েলি স্কিনে অতিরিক্ত সিবাম প্রোডাকশনও কন্ট্রোল করে। এছাড়াও সন্তান জন্মের পর স্ট্রেচ মার্কসের জায়গায় নিয়মিত আর্গন অয়েল মাসাজের ফলে স্ট্রেচ মার্কগুলি তাড়াতাড়ি মিলিয়ে যায়। এই তেল ব্রণ, পক্সের দাগ মেরামত করে দ্রুত। এটি ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ফেরাতেও পটু এই বিশেষ তেল।

চুলের যত্নে এর উপকারিতা :

এই তেল কেবল ত্বকের জন্যই না চুলের জন্যও উপকারী। আর্গান অয়েল ভিটামিন ই সমৃদ্ধ, যা চুল এবং মাথার ত্বকের শুষ্কতা প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং চুলের রুক্ষ্মতা কমিয়ে উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। আরগান অয়েল চুল ভেঙে যাওয়া কমায়, চুলের আগা ফাটা এবং হেয়ারফল কমিয়ে চুলকে ঘন করে তোলে। 

আর্গান অয়েলের ব্যবহার । Uses of Argan Oil :

চুলের ও মুখের জন্য আর্গান তেল (Argan Oil For Face) বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায়। অনেক ক্ষেত্রে এই তেল নানান প্রসাধনীতে আগের থেকেই মজুত থাকে। আবার আলাদা করে এই তেল কিনে অন্য প্রসাধনীর সঙ্গে মিশিয়েও ব্যবহার করা যায়। জেনে নিন ত্বক ও চুলের যত্নে কীভাবে আর্গান অয়েল ব্যবহার করা যায়।

ত্বকের জন্য আর্গান অয়েলের ব্যবহার :

১. ময়েশ্চারাইজার :

মুখের জন্য আর্গান তেল (Argan Oil For Face) বেশ উপকারী। এই তেল সবথেকে বেশি ইউজ করা হয় ময়েশ্চারাইজার হিসেবে। যাদের নরমাল বা ড্রাই স্কিন, তারা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কয়েক ফোঁটা আর্গান অয়েল ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ত্বকে অ্যাপ্লাই করতে পারেন, এটা স্কিনকে ডিপ নারিশমেন্ট দেয় এবং সেই সাথে হাইড্রেটেড রাখে লং টাইম ধরে।

২. হাইড্রেটিং টোনার :

একটি কটন প্যাডে এক ফোঁটা আর্গান অয়েল নিয়ে টোনারের সাথে মিশিয়ে নিয়ে ফেইসে লাগিয়ে নিন। খুব সহজেই স্কিন হবে গ্লোয়িং এবং স্মুথ।

৩. লিপ এক্সফোলিয়েটর :

ব্রাউন সুগারের সাথে সামান্য আর্গান অয়েল যোগ করুন এবং মিশ্রণটি দিয়ে আপনার ঠোঁটকে আলতো করে ৩০ সেকেন্ড এক্সফোলিয়েট করুন। এরপর ধুয়ে নিয়ে ঠোঁটে এক ফোটা আর্গান অয়েল নিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। সপ্তাহে দুইদিন এভাবে ইউজ করলে ঠোঁট নরম হবে।

চুলের জন্য আর্গান অয়েলের ব্যবহার :

১.  হেয়ার মাস্ক :

 আর্গান  অয়েল দিয়ে খুব ইজিলি হেয়ার মাস্ক বানিয়ে ফেলতে পারবেন যা সহজেই চুলকে করবে সফট আর শাইনি। এক্ষেত্রে কয়েক ফোঁটা আর্গান অয়েল আর নারকেল তেল  হাতের তালুতে নিয়ে চুলের গোড়া থেকে পুরো চুলে ১০ মিনিট ম্যাসাজ করে নিতে হবে। এরপর ৩০-৪০ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করে নিতে হবে।

২.শ্যাম্পু :

আর্গান তেল শ্যাম্পু (argan oil shampoo) দুটোই চুলের জন্য উপকারী। এখন অনেক ব্র্যান্ডের আর্গান অয়েল শ্যাম্পু কিনতে পাওয়া যায়, তবে নিজে তৈরি করাও বেশ সহজ। হাতের তালুতে আপনার চুলের লেন্থ অনুযায়ী শ্যাম্পু ঢেলে দিন। শ্যাম্পুতে এক বা দুই ফোঁটা আরগান অয়েল অ্যাড করুন এরপর শ্যাম্পুর সাথে ভালোমতো মিশিয়ে নিন। এটা দিয়েই চুলে শ্যাম্পু করে ফেলুন। এভাবে সপ্তাহে ২/৩ দিন করলে দেখবেন চুল অনেক সফট আর শাইনি দেখাচ্ছে।

৩. লিভ-ইন কন্ডিশনার :

চুলের জন্য আর্গান তেল (Argan Oil for Hair) কন্ডিশনার  হিসাবেও ব্যবহার করা যায়। শ্যাম্পুর পর চুল তোয়ালে দিয়ে মুছে নিয়ে ২/৩ ড্রপ আরগান অয়েল পুরো চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। এতে চুলের ড্রাইনেস ও ফ্রিজিনেস কমে যাবে অনেকটাই।

৪. হিট প্রোটেক্টর :

চুলে স্ট্রেইট বা কার্ল করার আগে যদি কোন হিট প্রোটেক্টর ইউজ না করা হয় তাহলে চুলের ড্যামেজ অর্থাৎ নষ্ট হতে পারে। সেক্ষেত্রে হাতের কাছে হিট প্রোটেক্টর না থাকলে আরগান অয়েল ইউজ করতে পারেন। হাতের তালুতে দুই ফোঁটা অয়েল নিয়ে নিন, এরপর আপনার দুই হাতের তালুতে অয়েল একসাথে ঘষে নিন। এরপর চুলে হালকাভাবে ম্যাসাজ করে নিন, ব্যস! এবার হিট স্টাইলিং করুন।

প্রসঙ্গত, আর্গন অয়েল বেশ ঘন। তাই দু’এক ফোঁটাতেই দুর্দান্ত কাজ হয়। তবে যাঁদের বাদামজাতীয় তেলে অ্যালার্জি আছে বা যাঁদের ত্বক অতি সংবেদনশীল, তাঁরা প্রথম বার ব্যবহারের আগে প্যাচ টেস্ট করিয়ে নিন। কনুই বা কব্জির ভিতরের দিকে এক ইঞ্চি জায়গা জুড়ে এই তেলের পরত লাগান। ২৪ ঘণ্টা ওই অংশে জল লাগাবেন না। যদি কোনও সমস্যা না হয়, তবে তেল ব্যবহার করতে পারেন।