Hair Mask | গরমে তাপ, ধুলো থেকে রক্ষা করুন চুল! বাড়িতে বানানো হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করে রুক্ষ-শুষ্ক চুলকে করে তুলুন প্রাণোজ্জ্বল!

Tuesday, May 7 2024, 11:52 am
highlightKey Highlights

রোদ, ধুলো আর ধোঁয়া চুলের জন্য ক্ষতিকর। গ্রীষ্মে এই তিনটিই চুলের উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। রোদে বেরোলে ত্বকের যত্নে যতটা সচেতনতা দেখা যায়, চুল কিন্তু সেখানে ব্রাত্যই বলা চলে। অত্যধিক তাপে চুল রুক্ষ এবং শুষ্ক হয়ে যায়। চুল পড়ার সমস্যাও বেড়ে যায়। এই সময় চুলের চাই বাড়তি যত্ন।


গরমকালে যেমন ত্বকের বিশেষ যত্ন প্রয়োজন, তেমনই চুলেরও যত্ন নিতে হবে। না হলেই স্ক্যাল্পের সমস্যা থেকে শুরু করে চুল রুক্ষ্ম হওয়া পর্যন্ত নানান সমস্যা হবে। গরমের বিশ্রী ধুলো আর ঘাম চুল গড়া থেকেই নষ্ট করে দেয়। সব মিলিয়ে গরম এলেই খুসকি, চুলে আঠালোভাব দেখা দেয়। কাজেই এই গরমের দিনগুলোয় চুলের বাড়তি যত্ন নেওয়া খুব দরকার। এক্ষেত্রে চুলের যত্ন নিতে মানতে হবে কিছু নিয়ম এবং লাগাতে হবে হেয়ার মাস্ক (Hair Mask)।

গরমে চুল থাকবে নরম, উজ্জ্বল রাখবেন যেভাবে-

 স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখুন : গরমকালে প্রচুর ঘাম হয়। মাথাও ঘামতে থাকে। স্ক্যাল্পে ঘাম জমতে থাকে। ফলে চুলের গোড়াতেও ঘাম জমে। ধুলো, ময়লা জমতে থাকে। সামান্য টান পড়লেই চুল উঠে আসে। চুল আঠা-আঠা হয়ে থাকে। তাই চুলের ক্ষতি হয়। এই সময়ে চুল ভাল রাখার অন্যতম উপায় হল স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখা এবং নিয়মিত যত্ন নেওয়া।

নিয়মিত করুন শ্যাম্পু : গরমে প্রতিদিন শ্যাম্পু করতে না পারলেও সপ্তাহে অন্তত তিন দিন শ্যাম্পু করুন। শ্যাম্পু স্ক্যাল্পকে ক্লিনজিং করতে সাহায্য করে। শ্যাম্পু করার পরে চুল ধুয়ে নিন। তারপর কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন। ২ মিনিট অপেক্ষা করে চুল ধুয়ে নিন।

করতে পারেন অয়েল মাসাজ : আর্দ্রতা চুলের গভীরে ধরে রাখতে কন্ডিশনিংয়ের পাশাপাশি থেরাপিউটিক হেয়ার অয়েল মাসাজ করতে পারেন। নারকেল, অলিভ আর আমন্ড অয়েল চুলের স্বাস্থ্য আর বাড়বৃদ্ধির পক্ষে খুব ভাল। সাত দিন বা চোদ্দ দিন অন্তর চুলে অয়েল মাসাজ নিন।

ব্যবহার করতে পারেন মিস্ট : ঘাম হওয়ার কারণে কিন্তু অনেকের চুলে গন্ধ হয়। তা নিয়ে অস্বস্তিতেও পড়তে হয়। হেয়ার মিস্ট সঙ্গে রাখুন। প্রয়োজনে চুলে স্প্রে করে নিন।

চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ব্যবহার করুন হেয়ার মাস্ক : চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য নিয়মিত ব্যবহার করুন হেয়ার মাস্ক (Hair Mask)। রোদ, ধুলো আর ধোঁয়া এই তিনটিই চুলের উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। অত্যধিক তাপে চুল রুক্ষ এবং শুষ্ক হয়ে যায়। চুল পড়ার সমস্যাও বেড়ে যায়। এই সময় চুলের বাড়তি যত্ন নিতে পারে হেয়ার মাস্ক।

বাড়িতে কীভাবে বানাবেন হেয়ার মাস্ক?

রোদ, ধুলো আর ধোঁয়া চুলের জন্য ক্ষতিকর। গ্রীষ্মে এই তিনটিই চুলের উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। রোদে বেরোলে ত্বকের যত্নে যতটা সচেতনতা দেখা যায়, চুল কিন্তু সেখানে ব্রাত্যই বলা চলে। অত্যধিক তাপে চুল রুক্ষ এবং শুষ্ক হয়ে যায়। চুল পড়ার সমস্যাও বেড়ে যায়। এই সময় চুলের চাই বাড়তি যত্ন। এক্ষেত্রে ঘরে বসেই চুলের যত্ন নেওয়া সম্ভব। চুলের রুক্ষ্মভাব দূর করতে পারে চুলের মাস্ক। আর এই মাস্ক বাড়িতেই সহজে বানানো যায়। গরমে চুলের  স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কীভাবে চুলের মাস্ক বানিয়ে ব্যবহার করবেন রইলো তার কয়েকটি উপায়।

ডিমের কুসুম, নারকেল বা অলিভ তেল :

ডিম প্রোটিনে ভরপুর এবং চুলের স্বাস্থ্যরক্ষায় তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। ডিমের কুসুম, নারকেল বা অলিভ তেল আর মধুর প্যাক তৈরি করে নিন। ডিমের আঁশটে গন্ধ তাড়াতে এই প্যাকে মেশাতে পারেন পছন্দের কোনও এসেনশিয়াল অয়েল।পুরো মাথায় ও স্ক্যাল্পে এই প্রলেপ লাগিয়ে রাখুন আধ ঘণ্টার জন্য। তার পর শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন। খুশকির সমস্যা থাকলে এর মধ্যে লেবুর রসও মেশানো যায়। সপ্তাহে একবার লাগাতে পারেন। ফ্রিজি চুলের জন্য হেয়ার মাস্ক (Hair Mask for Frizzy Hair) হিসাবে এটি বেশ উপকারী। যাঁরা ডিমের গন্ধ সহ্য করতে পারেন না, তাঁরা দই দিয়ে এই প্যাক বানিয়ে নিতে পারেন। নারকেলের দুধ হালকা একটু গরম করে নিয়ে পুরো চুলে মাখিয়ে নিন ভালো করে।

মেথি-ফ্ল্যাক্স সিড-টক দই :

শুষ্ক চুলের জন্য হেয়ার মাস্ক (Hair Mask for Dry Hair) হিসেবে ব্যাপক কার্যকরী এটি। এই মাস্ক বানানোর জন্য প্রথমে একটি ছোট্ট বাটিতে ২ চামচ মেথি দানা ভিজিয়ে রাখুন, একই সময় আরও একটি পাত্রে ভিজিয়ে রাখুন ২ চামচ ফ্ল্যাক্স সিড। কয়েক ঘণ্টা পরে দানাগুলি ছেঁকে নিয়ে গ্রাইন্ডারে দিয়ে একটি ঘন পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। এবার দুই বীজের ঘন মিশ্রণ ঢেলে রাখুন একটি পাত্রে। এরপর ৩-৪ চামচ টকদই নিয়ে ভালো করে ফেটিয়ে নিন। তারপর বীজের মিশ্রণের মধ্যে মিশিয়ে দিন। তারপর যোগ করুন আমলকী পাউডার। প্রতিটি উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে নিলেই তৈরি হেয়ার মাস্ক। এটি লাগানোর আগে চুলের জট ছাড়িয়ে নিয়ে চুল কয়েক ভাগে ভাগ করে নিন। এবার হেয়ার ব্রাশ দিয়ে বানিয়ে রাখা মাস্ক চুলে লাগিয়ে নিন। এরপর ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করে ফেলুন। সবশেষে কন্ডিশনার লাগাতে ভুলবেন না।

মেথি দানায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট স্ক্যাল্পের অন্দরে জমে থাকা ফ্রিব়্যাডিকালসের বিরুদ্ধে লড়াই চালাবে। ফলে স্ক্যাল্পের সুস্বাস্থ্য অটুট থাকবে। এদিকে ফ্ল্যাক্স সিড রুক্ষ চুলকে রেশমের মতো নরম করে তুলবে। আমলকীর ভিটামিন সি-এর, যা স্ক্যাল্পের অন্দরে কোলাজেনের উৎপাদন বাড়াবে। আর টকদইয়ের ল্যাকটিক অ্যাসিড মাথার তালুর সুস্বাস্থ্য অটুট রাখবে। ফলে আর্দ্রতায় ঘাটতি হবে না সহজে।

মধু, নারকেল তেল ও অ্যালো ভেরা :

শুষ্ক চুলের জন্য হেয়ার মাস্ক (Hair Mask for Dry Hair)হিসেবে মধু, নারকেল তেল ও অ্যালো ভেরা দিয়ে তৈরী মাস্ক বেশ কার্যকরী। শুষ্ক চুলে আর্দ্রতা ফেরাতে ও চুলের জেল্লা ফেরাতে এই মিশ্রণটির জুড়ি মেলা ভার। এটি বানানোর জন্য এক চামচ মধু, দু’ চামচ নারকেল তেল ও দু’ চামচ অ্যালো ভেরা নিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। স্নানের আধ ঘণ্টা আগে এই মিশ্রণ চুলে লাগিয়ে নিন। আধ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন চুল।

দই ও অ্যালো ভেরা :

চুলের জেল্লা ধরে রাখতে দু’ চামচ টক দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে দিন এক চামচ অ্যালো ভেরা জেল। এই মিশ্রণ প্রায় দশ মিনিট ধরে মাথার ত্বকে মালিশ করে শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিন চুল। ফ্রিজি চুলের জন্য হেয়ার মাস্ক (Hair Mask for Frizzy Hair) হিসেবে দই ও অ্যালো ভেরার মিশ্রণ ভালো কাজ করে।

অ্যালো ভেরা ও ডিম :

চুলের বৃদ্ধির জন্য হেয়ার মাস্ক (Hair Mask For Hair Growth) এর উপাদান অ্যালো ভেরা ও ডিম চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এটি বানানোর জন্য প্রথমে একটি পাত্রে ডিমের কুসুম, দু’চামচ অ্যালো ভেরা ও তার সঙ্গে এক চামচ অলিভ অয়েল নিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। প্যাকটি চুলে মেখে আধ ঘণ্টা পর চুল ভাল করে ধুয়ে শ্যাম্পু করে নিন। চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে ও চুল পড়া রোধ করতে এই প্যাক বিশেষ কার্যকর।

আমাদের চুল তৈরি হয় কেরাটিন আর অ্যামাইনো অ্যাসিড দিয়ে। অতিরিক্ত রাসায়নিক, দূষণের প্রভাব, গরম বা রোদ্দুরে দীর্ঘক্ষণ থাকার ফলে প্রোটিন ভেঙে যায়। তখনই গোড়া থেকে দুর্বল হয়ে যায় চুল, তা হারায় উজ্জ্বলতা, ঝরে পড়তে থাকে। চুল ভালো রাখতে যেমন চুল যত্নের প্রসাধনী ব্যবহার করতে হবে তেমনি খাদ্যতালিকা সুষম হতে হবে। বেশি করে খেতে হবে ডাল, সবজি, মাছ, মাংস।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File