ITR Filing | ট্যাক্সে ছাড় পেতে ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন ফাইল দাখিলের সময় মাথায় রাখুন এই বিকল্পগুলি!

Friday, December 15 2023, 11:27 am
highlightKey Highlights

২০২৩-২৪ মূল্যায়ন বছরের জন্য অনলাইন ও অফলাইন দুই বিকল্পে আয়কর রিটার্ন ফাইল শুরু হয়ে গিয়েছে। ৩১শে জুলাইয়ের মধ্যে দাখিল করতে হবে আইটিআর ফাইল। করে ডিডাকশন পাওয়ার জন্য রয়েছে একাধিক বিকল্প।


চলতি মাসের মধ্যেই দাখিল করতে হবে ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন (Income Tax Return) অর্থাৎ আইটিআর ফাইল (ITR Filing)। আগামী সোমবার, ৩১ শে জুলাইয়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার সময়সীমা রয়েছে। দেশের প্রত্যেককেই আয়কর দিতে হয়। তবে সবাই চেষ্টা করেন যাতে যতটা কম সম্ভব আয়কর দেওয়া যায়। এর জন্য বিভিন্ন ডিডাকশনের (Tax Deductions) সুযোগ খোঁজেন করদাতারা।

৩১ শে জুলাইয়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার সময়সীমা রয়েছে
৩১ শে জুলাইয়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার সময়সীমা রয়েছে

ট্যাক্স ডিডাকশন কী ? । What is Tax Deduction?

ট্যাক্স ডিডাকশন বা আয়কর ছাড় হলো ৮০ সি ধারার অধীনে একজন করদাতার পক্ষ থেকে করা বিনিয়োগ বা ব্যয়কৃত অর্থের অধীনে কর ছাড়ের যোগ্যতা। অর্থাৎ ডিডাকশান হল মূলত করদাতার মোট আয়ের উপর প্রযোজ্য একটি ছাড়, যার উপর ভিত্তি করে করদাতার প্রদত্ত মোট করের গণনা করা হয়ে থাকে। এই ব্যবস্থার সুবিধা তারাই পান যারা পুরানো কর পরিকাঠামোর অধীনে আয়কর রিটার্ন ফাইল করছেন।

ডিডাকশান হল মূলত করদাতার মোট আয়ের উপর প্রযোজ্য একটি ছাড়
ডিডাকশান হল মূলত করদাতার মোট আয়ের উপর প্রযোজ্য একটি ছাড়

নানান আয়কর ছাড় । Various Income Tax Deductions :

১৯৬১ সালের আয়কর আইনের (Income Tax Act, 1961) আওতায় কর সংক্রান্ত ডিডাকশনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে করদাতাদের। আয়কর আইনের ৮০ সি ধারার (Section 80C ) কথা প্রায় সকলেই জানেন। এই ধারার আওতায় স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের (Standard Deduction) সুযোগ দেওয়া হয়। তবে কেবল এই ধারারই নয়, আয়কর সংক্রান্ত আরও বেশ কয়েকটি সুযোগ আছে যার মাধ্যমে আয়করদাতা ডিডাকশন ক্লেম করতে পারেন। অর্থাৎ এই সুযোগ দ্বারা ডিডাকশন ক্লেম করলে আয়কর কম দিতে হবে। ফলে ৩১ শে জুলাইয়ের আগেই দেখেই নিন কিভাবে আয়কর ডিডাকশন ক্লেম করতে পারবেন।

১৯৬১ সালের আয়কর আইনের আওতায় কর সংক্রান্ত ডিডাকশনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে করদাতাদের
১৯৬১ সালের আয়কর আইনের আওতায় কর সংক্রান্ত ডিডাকশনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে করদাতাদের

১. ন্যাশনাল পেনশন স্কিমে বিনিয়োগ । Investment in National Pension Scheme :

এনপিএস (NPS) বা ন্যাশনাল পেনশন স্কিমে (National Pension Scheme) বিনিয়োগ করে ১.৫ লক্ষ টাকার যে সর্বোচ্চসীমা আছে, সেটার বেশি ডিডাকশন ক্লেম করতে পারবেন করদাতারা। এই সুবিধা মেলে আয়কর আইনের ৮০সিসিডির ১বি (80CCD 1B) ধারার আওতায়। তবে এনপিএসে সর্বাধিক ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করা যায়।

ন্যাশনাল পেনশন স্কিমে বিনিয়োগ করে ডিডাকশন ক্লেম করতে পারবেন করদাতারা
ন্যাশনাল পেনশন স্কিমে বিনিয়োগ করে ডিডাকশন ক্লেম করতে পারবেন করদাতারা

২.এডুকেশন লোন । Education Loan :

শিক্ষা সংক্রান্ত ঋণ বা এডুকেশন লোনের ক্ষেত্রে ডিডাকশন ক্লেম করা যায়। আয়কর আইনের ৮০ই ধারার আওতায় শিক্ষা সংক্রান্ত ঋণে সুদ বাবদ অর্থ প্রদান করা হয়। নিজের জীবনসঙ্গী, সন্তানের উচ্চশিক্ষার জন্য এই ঋণ আবেদন করা যায়। যে বছর থেকে এই ঋণের টাকা গ্রাহক প্রদান করা শুরু করবেন, সেই বছর থেকে আগামী আট বছর পর্যন্ত ডিডাকশন ক্লেম করা যাবে।

শিক্ষা সংক্রান্ত ঋণ বা এডুকেশন লোনের ক্ষেত্রে ডিডাকশন ক্লেম করা যায়
শিক্ষা সংক্রান্ত ঋণ বা এডুকেশন লোনের ক্ষেত্রে ডিডাকশন ক্লেম করা যায়

৩.  সেভিংস অ্যাকাউন্ট । Savings Account :

আয়কর আইনের ৮০টিটিএ ধারার (Section 80TTA) আওতায় এই সুবিধার ক্ষেত্রে করদাতাকে কোনও ঋণ দিতে হয়না। অর্থাৎ এই আইনের আওতায় কোনও ব্যক্তি যদি কোনও অর্থবর্ষে সেভিংস অ্যাকাউন্ট (Savings Account) থেকে সুদ বাবদ ১০,০০০ টাকা পান, তাহলে তাকে কোনও কর দিতে হবে না।

সেভিংস অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে কর দিতে হয়না 
সেভিংস অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে কর দিতে হয়না 

৪. অনুদান । Donation :

অনুদান বা ডোনেশনের ক্ষেত্রে ডিডাকশন ক্লেম করতে পারেন করদাতারা। কেন্দ্রীয় সরকারের সমর্থিত তহবিল অনুদান দিলে এই ক্ষেত্রে পুরোপুরি ডিডাকশন ক্লেম করা যায়। যেমন প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল, মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে অনুদান ১০০ শতাংশ ডিডাকশন ক্লেম করতে পারবেন করদাতারা। অন্যান্য ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ ডিডাকশন ক্লেম করা যায়।

ডোনেশনের ক্ষেত্রে ডিডাকশন ক্লেম করতে পারেন করদাতারা
ডোনেশনের ক্ষেত্রে ডিডাকশন ক্লেম করতে পারেন করদাতারা

৫. এলআইসি ও পিপিএফ । LIC, PPF :

এলআইসি, পিপিএফের জন্য ডিডাকশন ক্লেম করা যায়। এক্ষেত্রে ট্যাক্স বিশেষজ্ঞরা জানান, সন্তানের আয়কর রিটার্ন ফাইল দাখিল করার সময় এলআইসি অর্থাৎ লাইফ ইনসিওরেন্স অফ ইন্ডিয়া (Life Insurance of India) বা জীবন বিমা নিগম এবং পিপিএফ বা পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডে (Public Provident Fund) ডিডাকশন ক্লেম করতে পারবেন বাবা-মা।

এলআইসি, পিপিএফের জন্য ডিডাকশন ক্লেম করা যায়
এলআইসি, পিপিএফের জন্য ডিডাকশন ক্লেম করা যায়

৬. চিকিৎসা ক্ষেত্রে । In Medical Case : 

হেলথ চেকআপের ক্ষেত্রেও কর ডিডাকশন করা যায়। আয়কর আইনের ৮০ডি ধারার (Section 80D) আওতায় নিজের, নির্ভরশীল সন্তান, জীবনসঙ্গী বা ৬০ বছরের কম বয়স্ক অভিভাবকের চিকিৎসার জন্য বছরে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ডিডাকশন ক্লেম করতে পারবেন করদাতা। উল্লেখ্য, ষাটোর্ধ্ব অভিভাবকদের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত।

চিকিৎসার জন্য বছরে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ডিডাকশন ক্লেম করা যায়
চিকিৎসার জন্য বছরে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ডিডাকশন ক্লেম করা যায়

প্রসঙ্গত, চলতি বছরে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য করদাতাদের কাছে নতুন ও পুরোনো, দু'টি কর পরিকাঠামোর বিকল্প রয়েছে। এই নতুন ও পুরনো কর পরিকাঠামোর বিকল্পের মধ্যে যে কোনও একটি পরিকাঠামো বাছাই করে করদাতারা আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে। পুরনো কর ব্যবস্থায় করদাতারা কর-অব্যাহতি (Exemption), কর ছাড় (Deduction) ও করহ্রাস (Rebate) এর সুযোগ পাবেন। কিন্তু, নতুন কর ব্যবস্থার ক্ষেত্রে কোনওরকম ছাড়ের সুবিধা পাবেন না করদাতারা।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File