দেশ

Chandrayaan 3 | সেন্সর-ইঞ্জিন বন্ধ হলেও চাঁদে নামতে পারবে 'বিক্রম'! পৃথিবীর ছবি পাঠালো চন্দ্রযান-৩!

Chandrayaan 3 | সেন্সর-ইঞ্জিন বন্ধ হলেও চাঁদে নামতে পারবে 'বিক্রম'! পৃথিবীর ছবি পাঠালো  চন্দ্রযান-৩!
Key Highlights

চাঁদের আরও কাছে পৌঁছে গেলো ইসরোর চন্দ্রযান-৩। ইসরো প্রধান জানালেন, যে কোনো রকম পরিস্থিতিতেই চাঁদে নামতে পারবে চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার 'বিক্রম'।

চাঁদের আরও কাছে পৌঁছে গেল চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan b)। গতকাল অর্থাৎ ৯ই অগাস্ট, বুধবার ১৭৪ কিমি x ১৪৩৭ কিমি কক্ষপথে নিক্ষেপ করা হল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (Indian Space Research Organization) অর্থাৎ ইসরোর মহাকাশযানকে (ISRO Chandrayaan 3)। চন্দ্রযানের চাঁদ ছোঁয়ার অপেক্ষায় গোটা ভারত (India) সহ ইসরো। ভালোয়ভালোয় যাতে চন্দ্রযান-৩ এর মিশন সফল হয় সেই প্রার্থনাই করে চলেছেন দেশবাসী। তবে যতই বাধা আসুক, ইসরো-চন্দ্রযান-৩ এর চাঁদের মাটিতে নামা সফল হবে বলেই নিশ্চিত করলেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। কোনোভাবে দুর্ঘটনা বশত মহাকাশযানের কোনও সেন্সর এবং দুটি ইঞ্জিন যদি কাজ না করে, তাহলেও চাঁদের মাটিতে সফট ল্যান্ডিং করতে পারবে 'বিক্রম' ল্যান্ডার (Vikram Lander)।

দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর দাবি, যাবতীয় ব্যর্থতা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত 'ইসরো-চন্দ্রযান-৩'। আগের বার চন্দ্রযান-২ মডেলের (Chandrayaan-2 Model) এর যাত্রা সম্পূর্ণ সফল না হওয়ার ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই সবরকম ব্যবস্থা করে এবার মহাকাশ পাড়ি দিয়েছে ইসরো। মঙ্গলবার এক স্বেচ্ছাসেবীর সংস্থার আয়োজিত ‘চন্দ্রযান-৩: ভারত’স প্রাইড স্পেস মিশন’ (Chandrayaan-3: India's Pride Space Mission) শীর্ষক একটি প্রশ্নোত্তর পর্বে উপস্থিত ছিলেন ইসরোর প্রধান এস সোমনাথ (S Somnath)। সেখানেই তাঁর দাবি, চন্দ্রযান-৩-এর 'বিক্রম' ল্যান্ডারকে এমন ভাবেই তৈরি করা হয়েছে যে সমস্ত সেন্সর-সহ তার দু’টি ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেলেও ২৩রা অগস্ট সেটি চাঁদের মাটিতে নামাতে পারবে।

সেন্সর-ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেলেও কীভাবে চাঁদে নামবে 'বিক্রম'? । How Will 'Vikram' Land On The Moon Even If The Sensor-Engine Stopped?

ইসরোর প্রধান জানান, চন্দ্রযান-৩ এর 'বিক্রম' ল্যান্ডারের ডিজাইন এমনভাবেই করা হয়েছে যে, যেকোনও ধরনের পরিস্থিতি সামলে নিতে পারবে এটি। যদি সব ফেল করে যায়, সব সেন্সর ফেল করে যায়, কিচ্ছু কাজ না করে, তাহলেও বিক্রম ল্যান্ড করতে পারবে চাঁদের মাটিতে। ইসরো চেয়ারম্যান আরও জানান, আড়াআড়ি ভাবে রাখা 'বিক্রম' ল্যান্ডারকে উল্লম্বভাবে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করানো হবে। অরবিটার (Orbiter) থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সময় আড়াআড়ি ভাবে এগোবে ল্যান্ডারটি। এরপর বেশ কয়েকটি ধাপে চাঁদের মাটিতে লম্বালম্বি অবতরণ করবে সেটি। মূলত এই ধাপটিই বেশি কঠিন। চন্দ্রযান-২ মডেলের অভিযানের সময়ে এই ধাপেই বিফল হয়েছিল ইসরো। হিসেব করে রাখা জ্বালানি খরচের পরিকল্পনা,সবটা নিখুঁত ভাবে মেনে চলাই চ্যালেঞ্জ। তবে সেই ঘটনা থেকেই শিক্ষা নিয়ে প্রস্তুতি এবারের ইসরো চন্দ্রযান-৩ মিশনের। প্রোপালশন সিস্টেম ঠিকমতো কাজ করলেই বিক্রম চন্দ্রপৃষ্ঠে নামতে পারবে বলে জানান ইসরো প্রধান।

যদি সব কিছু ব্যর্থ হয়, সমস্ত সেন্সর অকেজো হয়ে পড়ে, কোনও কিছুই কাজ না করে, তা হলেও এটি (বিক্রম চন্দ্রপৃষ্ঠে) অবতরণ করতে পারবে। এভাবেই এর নকশা তৈরি করা হয়েছে। তবে একটা শর্ত রয়েছে, এর প্রোপালশন সিস্টেম ঠিকমতো কাজ করা চাই।

ইসরোর প্রধান এস সোমনাথ (ISRO Chief S. Somnath)

উল্লেখ্য, গতকাল, বুধবার ৭৪ কিমি x ১৪৩৭ কিমি কক্ষপথে নিক্ষেপ করা হল চন্দ্রযান-৩ কে। ইসরোর তরফে টুইট করে জানানো হয়ে, সফলভাবে এই পদ্ধতি সম্পন্ন হয়েছে। উল্লেখ্য, ৩রা অগাস্টও চাঁদের কক্ষপথ ছুঁয়ে ফেলে চন্দ্রযান-৩। পৃথিবীকে বিদায় জানিয়ে ক্রমশ নিজের গন্তব্যের দিকে এগোয় মহাকাশযান। চন্দ্র কক্ষপথে প্রবেশের পর চাঁদের প্রথম দৃশ্যের আগেই পাঠিয়েছিল চন্দ্রযান-৩। এবার পৃথিবীকে বিদায় জানানোর সময় জন্মগ্রহের ছবিও পাঠালো মহাকাশযানটি। এদিন টুইট করে সেই ছবি পোস্ট করলো ইসরো।

ইসরোর তরফ থেকে টুইটে বলা হয়েছে, ওই দু'টি ছবি র মধ্যে পৃথিবীর ছবিটি ল্যান্ডারের 'এল আই' (LI) ক্যামেরার সাহায্যে তোলা হয়েছে। উৎক্ষেপণের দিনই ওই ছবিটি তুলেছে চন্দ্রযান-৩। অন্যদিকে চাঁদের কক্ষপথের রাস্তা ধরে নেওয়ার পরের দিনই দূর থেকে আস্ত চাঁদের ছবি তুলেছে চন্দ্রযান-৩। সেই ছবিটি তোলা হয়েছে 'ল্যান্ডার হরাইজোনটাল ভেলোসিটি ইমেজ ক্যামেরা'-তে (LHVC)। প্রসঙ্গত, 'এল আই' ও 'ল্যান্ডার হরাইজোনটাল ভেলোসিটি ইমেজ ক্যামেরা' দুটি বানিয়েছে এসএসি (SAC) ও এলইওএস (LEOS)।

১৪ই জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারের (Satish Dhawan Space Center, Sriharikota) 'লঞ্চিং প্যাড' থেকে দুপুর ২টো ৩৫ মিনিটে সফলভাবে উৎক্ষেপণ হয় চন্দ্রযান-৩-এর। এরপর ক্রমশ একেরই পর এক ধাপ পেরিয়ে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর দিকে এগিয়ে চলেছে ইসরোর চন্দ্রযান-৩। জানা গিয়েছে, এই মহাকাশযানের পরবর্তী নিক্ষেপ বা কক্ষপথ সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি কার্যকর করার হবে ১৪ই অগাস্ট। ফলে বলাই চলে, এখন থেকেই শুরু দেশবাসীর দিন গোণার পালা। সব ঠিক থাকলে ২৩সে অগাস্ট বিকেল ৫টা ৪৭ মিনিটে রোভার প্রজ্ঞানকে পেটের ভিতরে নিয়ে ‘পাখির পালকের মতো অবতরণ’ অর্থাৎ সফ্‌ট ল্যান্ডিং করার কথা চন্দ্রযান-৩-এর 'বিক্রম' ল্যান্ডারের ।