Esplanade and Traffic | এসপ্ল্যানেড বাস টার্মিনাসের ঠিকানার বদল! পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলের সময় বেঁধে দিলো কলকাতা পুলিশ!
ধর্মতলা বাস টার্মিনাসে আর দাঁড়াতে পারবে না শহর-শহরতলি বাস। কেবল যাত্রী ওঠা নামার অনুমতি এই অঞ্চলে। পথ দুর্ঘটনায় শিশু মৃত্যুর পর কলকাতার রাস্তায় কেবল রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বড় ও ভারী পণ্যবাহী গাড়ি চালানোর নির্দেশ।
ধর্মতলায় (Dharmatala) আর দাঁড় করিয়ে রাখা যাবে না বাস। শহর ও শহরতলি থেকে ধর্মতলামুখী সমস্ত রুটের বাস আর এসপ্ল্যানেডে পার্কিং করতে পারবে না। কেবল যাত্রী ওঠা নামার জন্য দাঁড়াতে পারবে বাস। গতকাল অর্থাৎ সোমবার বেসরকারি বাসমালিকদের এমনটাই জানিয়ে দিলেন পরিবহণ দফতরের কর্তারা। পাশাপাশি দূরপাল্লার বাস তাঁরা কোথায় রাখতে চান সেই বিষয়ে চিঠি দিয়ে বাসমালিকদের জানাতে বলা হয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) তরফ থেকে এসপ্ল্যানেড (Esplanade) এলাকা থেকে বাস টার্মিনাস সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এই অঞ্চল কেবলমাত্র যাত্রী ওঠানামার জন্য ব্যবহার করা যাবে। অর্থাৎ এসপ্ল্যানেড বাস টার্মিনাস চত্বরে শহর ও শহরতলি থেকে ধর্মতলামুখী সমস্ত রুটের বাস পার্কিং করা যাবে না। হাওড়া (Howrah), দুই ২৪ পরগনা সহ সিটি সার্ভিসের বাসগুলি আগামী দিনে ধর্মতলায় আর দাঁড়াবে না।
উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসে এ নিয়ে নবান্নে (Nabanna) রাজ্যের মুখ্যসচিবের উপস্থিতিতে একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, কলকাতা পুলিশ, নগরোন্নয়ন দপ্তর, কলকাতার পুর কমিশনার, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, বিদ্যুৎ দপ্তর, পূর্ত দপ্তর, সেনা, কলকাতা মেট্রো, রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড, কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন এবং সমীক্ষা সংস্থা রাইটস-এর শীর্ষকর্তারা। মূলত মহানগর ও ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের দূষণ রোধে আদালতের নির্দেশে এসপ্ল্যানেড বাস টার্মিনাস নিয়ে এমন সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের। এছাড়াও ধর্মতলায় ইস্ট-ওয়েস্ট এবং জোকা–এসপ্ল্যানেড দু’টি মেট্রো রুটের স্টেশন তৈরি হচ্ছে। যার জেরে বিধান মার্কেট-সহ একাধিক ক্লাব তাঁবু সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবার কলকাতা আদালতের রায়ে ধর্মতলার বাস টার্মিনাসও সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
তবে দূরপাল্লার বাস কোথায় রাখা হবে তা নিয়ে এদিন কলকাতা পুরসভা, পরিবহণ দপ্তর, কলকাতা পুলিস সহ একাধিক পক্ষকে নিয়ে যৌথ পরিদর্শন করা হয়। জানা গিয়েছে, উত্তর ও দক্ষিণের একাধিক সরকারি বাস ডিপোকে বিকল্প হিসেবে ভাবা হচ্ছে। মানুষের স্বার্থে সরকারি ডিপোতে বেসরকারি দূরপাল্লার বাস ঢোকার অনুমতি দেওয়া হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে, বেহালার পথ দুর্ঘটনায় দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার পর বেশ তৎপর হয়ে উঠেছে কলকাতা ট্রাফিক ব্যবস্থা। রাতারাতি বদলে যায় বেহালা চৌ রাস্তার চেহারা। সর্বক্ষণ স্কুলের সামনে মোতায়েন ট্রাফিক পুলিশ। তবে এবার এই পথ দুর্ঘটনা থেকেই বড় সিদ্ধান্ত নিলো কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। বেঁধে দেওয়া হলো শহরের পণ্যবাহী যান চলাচলের সময়।
কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, সকাল ৬টা থেকে শহরে পণ্যবাহী যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে বন্দর এলাকা ছাড়া কলকাতার রাস্তায় রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বড় ও ভারী পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করবে। ওষুধ, দুধ, সবজি, ফল, এলপিজি (LPG) ও অক্সিজেন সিলিন্ডারবাহী জরুরি সামগ্রীর গাড়ির ক্ষেত্রে কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, এই সমস্ত পণ্যবাহী গাড়ি সকাল ৮টা পর্যন্ত এবং বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত চলাচল করতে পারবে। তবে ছোট ও মাঝারি পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা এবং দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৪টে পর্যন্ত। মূলত দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য সোমবার এই নির্দেশিকা জারি করা হয়। নির্দেশিকা অনুযায়ী, এদিন অর্থাৎ ৮ই অগাস্ট মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হয় যান শাসন।