জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী আতিফ আসলামের জীবনী | Biography of Atif Aslam, a popular music artist
বর্তমান সময়কালীন জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী আতিফ আসলামের জীবন কাহিনী সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ভূমিকা | Introduction of Atif Aslam
আতিফ আসলাম একজন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত বলিউডের পপ, রক, সুফি গায়ক এবং চলচ্চিত্র অভিনেতা। কথা ছিল ক্রিকেটার হওয়ার আর ভাগ্যের ফেরে নিজেকে পাকিস্তানের অনূর্ধ্ব-১৯ দলে ফাস্ট বোলার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ ও পেয়েছিলেন। কিন্তু মন বসল না তাই সেখান থেকে হঠাৎ করেই হয়ে গেলেন গায়ক, নিজের অসীম প্রতিভা বলে । দেশের গণ্ডি পেরিয়ে পাড়ি দিলেন বলিউডে। বর্তমানকালের এই সর্বজনপ্রিয় এবং মধুর কণ্ঠের গায়ক আতিফ আসলামকে এখন কেই বা না চেনে?
জন্ম ও প্রথম জীবন | Birth & first life of Atif Aslam
১২ মার্চ ১৯৮৩ সালে আতিফ আসলাম পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশেরওয়াজিরাবাদেএকটি পাঞ্জাবি মুসলমান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বাবা মোহাম্মদ আসলাম , মা রেহানা শাহিন আর তিন ভাই যথাক্রমে শাহবাজ যিনি একজন ডিজাইনার, শাহজাদ, যিনি ফটোগ্রাফার এবং শেরাজ কে নিয়েই আতিফ আসলামের পরিবার । জন্মসূত্রে পাওয়া নামটি হল মুহম্মদ আতিফ আসলাম।তিনি ছিলেন মীন রাশির অধিকারী ।
শিক্ষাজীবন | Education life of Atif Aslam
বাল্যকালে তিনি লারকানার কিম্বারলে হল স্কুলে তাঁর কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার সূত্রপাত করেছিলেন।
১৯৯১ সালে তিনি যখন রাওয়ালপিন্ডিতে চলে আসেন, তখন থেকে তিনি সেন্ট পলস কেমব্রিজ স্কুল, স্যাটেলাইট টাউন, রাওয়ালপিন্ডিতে অধ্যয়ন করতে শুরু করেন । আতিফ আসলাম যখন প্রথম শ্রেণিতে পড়েন তখন একটি ফ্যান্সি ড্রেস প্রতিযোগিতায় তিনি পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেট দলের অধিনায়ক, ইমরান খানের মতন করে নিজেকে সজ্জিত করেছিলেন। ১৯৯৫ সালে তিনি লাহোরে ফিরে এসে ডিভিশনাল পাবলিক স্কুল থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যান। তিনি মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সে দশম শ্রেণী উত্তীর্ণ করেছিলেন যা তার কোনো সহপাঠী করে উঠতে পারিনি । তিনি লাহোরের ফাজিয়া ইন্টার কলেজ থেকে এফএসসি পাঠক্রম শুরু করেছিলেন। তিনি কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের জন্য লাহোরের পাঞ্জাব ইনস্টিটিউট অফ কম্পিউটার সায়েন্সে (পিকস) যোগ দেন এবং সফলভাবে তা অর্জন ও করেন ।
বিবাহ | Marriage life of Atif Aslam
২৯ শে মার্চ , ২০১৩ সালে লাহোরে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সারা ভারওয়ানার সাথে আতিফ আসলাম বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির আহাদ নামে একটি পুত্রসন্তান ও রয়েছে।
আতিফ আসলামের প্রথম ভালোবাসা | Atif Aslam's first love
সঙ্গীত জগতের প্রভূত খ্যাতিসম্পন্ন এই গায়কের কিন্তু প্রথম প্রেম ছিল ক্রিকেট । তিনি ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখে এসেছেন পাকিস্তান জাতীয় দলের ক্রিকেটার হওয়ার । তিনি ছিলেন ফাস্ট বোলার এবং অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের জন্য কিছুদিনের জন্য তাকে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছিল।
আসলাম নিজেই একটি সাক্ষাৎকারে প্রকাশ করেছিলেন যে বরাবর তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল একজন পেশাদার ক্রিকেটার হওয়ার।
জীবিকা | Livelihood of Atif Aslam
প্রথম জীবনে ক্রিকেট ব্যতীত অন্য কোনো কেরিয়ারের ব্যাপারে যেহেতু আতিফ আসলাম আগ্রহী ছিলেন না তাই আক্ষরিক অর্থে সংগীতের প্রাথমিক আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ ও তাঁর ছিল না। তবে স্কুল গণ্ডি পেরিয়ে যখন তাঁর কলেজ লাইফ শুরু হল তখন থেকেই তিনি বিভিন্ন সংগীত প্রতিযোগিতায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে আরম্ভ করেছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত আতিফ আসলামের বন্ধুদের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় নিজেকে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন এই শিল্পী। জীবনের প্রথম সংগীত অনুপ্রেরণা হিসাবে নুসরত ফতেহ আলী খানের রচনাগুলির কথা তিনি বার বার উল্লেখ করেছেন। ক্রিকেটপ্রেমী এই গায়ক আবিদা পারভিনের ও এক বিশাল অণুরাগী ছিলেন।
সঙ্গীত জীবনে প্রবেশ | Atif Aslam entered the music life
২০০২ সালে "Jal" নামক একটি সঙ্গীত ব্যান্ডের প্রধান সংগীতশিল্পী হিসাবে আতিফ আসলাম তাঁর কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। এই ব্যান্ডের মাধ্যমেই তিনি প্রাথমিকভাবে খ্যাতি লাভ করতে শুরু করেন । ব্যান্ডের প্রাথমিক সময়কালে আসলাম ছিলেন জালের প্রধান সংগীতশিল্পী। তিনি একাধিক সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছিলেন যে যখন তার ১৭ বছর বয়স তখন তিনি তার 'পকেট মানি' দিয়ে গান রেকর্ড করেছিলেন। ২০০৪ সালের ১৭ জুলাই আতিফ আসলামের প্রথম অ্যালবাম 'জাল পরি' প্রকাশিত হয়ে থাকে। ২০০৩ সালে তাঁর গাওয়া "আদাত" গানটি জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে যায় এবং তারপরই আতিফের এই অ্যালবামটি বাজারে ছেয়ে যায় যা বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল । এই অ্যালবামের ভিগি ইয়াদিন, এহ্সাস, মাহি ভে, আঁখো সে এবং জাল পরি গানগুলি আজও লোকের মুখে মুখে প্রসিদ্ধ। আতিফ আসলামের বিশেষত্ব হল তাঁর অনন্য গায়কী ভঙ্গীমা, যা বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের মন কেড়ে নিয়েছে । এক বিশাল শৈল্পিক দক্ষতার কারণে অ্যালবাম প্রকাশের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আতিফ আসলাম তারকাখ্যাতি অর্জন করে ফেলেন। সুমধুর কণ্ঠের শিল্পী তাঁর সহজাত প্রতিভা এবং শিল্পী হবার তীব্র আকাঙ্ক্ষার জেরেই বিশ্ববিখ্যাত ও জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পীতে পরিণত হতে পেরেছিলেন । তিনি তাঁর স্বপ্রতিভ গায়কীর ভঙ্গিমায় সঙ্গীত চর্চা করতে থাকেন। প্রথম অ্যালবামের সাফল্যের পর তিনি কনসার্টে গান পরিবেশন করতে শুরু করেন এবং অতি অল্প সময়ে সেখানেও জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এই জনপ্রিয়তা পাকিস্তানের গণ্ডি পেরিয়ে সমগ্র উপমহাদেশে বিস্তার করেছিল। কনসার্টে সরাসরি সঙ্গীত পরিবেশন ছিল আতিফ আসলামের এক সহজাত ক্ষমতা আর সেই কারণে কনসার্টে শিল্পী হিসেবে তাঁর চাহিদা ক্রমশ বাড়তে থাকে।
কেরিয়ার টাইমলাইন | Career timeline of Atif Aslam
(২০০৫- ২০০৬) আতিফের বলিউড ও হলিউডকে পদার্পণ:
"জল পরী" অনুসরণ করে আতিফ আসলাম ২০০৬ সালে আরও একটি একক অ্যালবাম প্রকাশ করেছিলেন যার নাম ছিল ," দূরি"যার মধ্যে ছিক১৮ টি ট্র্যাক । অ্যালবামটি ২০০৭ সালে "সেরা অ্যালবাম" বিভাগে ষষ্ঠ , 'লাক্স স্টাইল পুরষ্কার'ও জিতেছিল।
বলিউডে আতিফ আসলামের প্রথম সাফল্য এসেছিল পরিচালক মহেশ ভট্ট এর হাত ধরে। আসলামকে তিনি তার নতুন মোশন ছবির জেহের (২০০৫) সাউন্ডট্র্যাকটির জন্য আতিফ আসলামেরই গাওয়া "ওহ লামহে" গানটিকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তাঁর সম্মতি চাইতে ডেকেছিলেন। তাছাড়া "আদত" ও তার রিমিক্স সংস্করণটি পুনরায় তৈরি করা হয় 'কলিযুগ' চলচ্চিত্রের জন্য যার পরিচালক ছিলেন মোহিত সুরি। ২০০৬ সালে, আতিফ আসলাম 'বাস এক পাল' চলচ্চিত্রটির জন্য মিঠুন এর সাথে "তেরে বিন" গানের জন্য কাজ করেছিলেন। গানটি ভারত এবং পাকিস্তান উভয় দেশেই ব্যাপক ভাবে জনপ্রিয় হয়েছিল এবং শিল্পীকে ফিল্মফেয়ার পুরষ্কারের জন্য মনোনীত ও করা হয়ে থাকে । আতিফ আসলামের প্রথম অ্যালবাম "আদত", "এহসাস" এবং "ইয়াকিন" এর তিনটি গান ২০০৫ সালে হলিউড ছবি 'ম্যান পুশ কার্টে' ব্যবহার করা হয়েছিল।
"মেরি কাহানী" শিরোনামে তৃতীয় একক অ্যালবামটি ২০০৮ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। এটি প্রযোজনা করেছিলেন সরমাদ আবদুল গাফুর। ২০০৮ সালে, অ্যালবামটি "সেরা অ্যালবাম" বিভাগে সপ্তম লাক্স স্টাইল পুরষ্কারে মনোনীত হয়েছিল।
২০০৯; কোক স্টুডিও তে অভিষেক
২০০৯ এর রোমান্টিক ছবি ,"আজব প্রেম কী গজব কাহানী"তে তিনি দুটি চার্টবাস্টার গান ,'তু জানে না' এবং 'তেরা হনে লাগা হুন 'দুটি গানের রিমিক্স সংস্করণ সহ গানগুলি গেয়েছিলেন। প্রীতমের সুরারোপিত এই গানগুলি আতিফ আসলামকে বেশ কয়েকটি পুরস্কারে মনোনীত করেছিল ।
২০১০ সালে তিনি 'প্রিন্স' ফিল্মের জন্য দশটি গান রেকর্ড করেছিলেন যার মধ্যে পাঁচটি রিমিক্স সংস্করণ ছিল যার রচয়িতা ছিলেন শচীন গুপ্ত । এই গানগুলি আসলামের রক স্টাইলের আঙ্গিকটিকে তুলে ধরেছিল । তার দ্বিতীয় অ্যালবাম 'দূরি'র দুটি গান "দূরি" এবং "মওলা" স্প্যানিশ বিউটি (হিন্দি সংস্করণ) ছবিতে ব্যবহৃত হয়েছিল।
২০১১; পাকিস্তানি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পা:
২০১১ সালে, তিনি F.A.L.T.U. ছবির জন্য রচিত "লে যা তু মুঝে" শীর্ষক একটি গান গেয়েছিলেন। একই বছর, তিনি পাকিস্তানি চলচ্চিত্র 'Bol' চলচ্চিত্রের জন্য হাদিকা কিয়ানির সাথে দুটি গান গেয়েছিলেন; "হোনা থা প্যায়ার" এবং "কহো আজ বোল দো" আর তার সাথে এই ছবিটিতে তিনি প্রধান চরিত্রে অভিনয় ও করেছিলেন। ২০১১ র 'বোল' ছবিটি দিয়েই তিনি চলচ্চিত্র জগতে অভিনেতা হিসেবে পা রেখেছিলেন।
২০১৩ সালে, তিনি চারটি ব্লকবাস্টার গান সহ মোট বারোটি গান রেকর্ড করেছিলেন। "মে রং শরবতোন কা" ২০১৪ সালে "সেরা সংগীত" এর জন্য বিশ্ব সঙ্গীত পুরষ্কারে মনোনীত হয়েছিল এবং বেশ কয়েকটি পুরষ্কার এবং একাধিক মনোনয়ন ও পেয়েছিল।
২০১৫ সালে আতিফ আসলাম, 'বদলপুর' চলচ্চিত্রের জন্য,' জীনা জীনা' গানের জন্য শচীন-জিগরের সাথে কাজ করেছিলেন ।'জিনা জিনা' গানটি বিভিন্ন চার্টে শীর্ষে ছিল এবং এটি ২০১৫ সালের অন্যতম সেরা হিট ছিল, যা তাকে সেরা প্লেব্যাক গায়কের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করেছিল।
২০২০ সালের জুলাই মাসে আসলমের "তাজদার-এ-হারাম" এর উপস্থাপনা ইউটিউবে ২৮৫ মিলিয়ন টি দর্শন(view) সংখ্যা ছাড়িয়েছিল, এটি মূলত ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয় যা পাকিস্তানের প্রথম ল্যান্ডমার্ক রেকর্ড অর্জনকারী ভিডিও হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল।
ডিসেম্বর 2017 এ, 'টাইগার জিন্দা হ্যায়' ছবির "দিল দিয়ান গ্যালান" গানটি প্রকাশিত হয় যা বিশাল-শেখর সুরারোপ করেছিলেন। ২০২১ জানুয়ারী পর্যন্ত এই গানটি ইউটিউবে ৬৭০ মিলিয়নের বেশি ভিউ পেয়েছিল। এই বছরই তাঁর প্রথম বাংলা গান "মিঠে আলো "ও প্রকাশিত হয়েছিল ,"ককপিট" চলচ্চিত্রের জন্য ।
২০১৯ সালে আসলাম এবং আবিদ পারভীন এর দ্বৈত কণ্ঠে গাওয়া 'পারদাদারি' মুক্তি লাভ করে । আতিফ আসলাম পাকিস্তান দিবসে মুক্তি পাওয়া আইএসপিআরের পক্ষে "শাহীন-ই-পাকিস্তান "ও গানটি পরিবেশন করেছিলেন ।
কোক স্টুডিও র -১২ র মরসুমটি আসলামের গান দিয়েই শুরু হয়েছিল।
বলিউড থেকে বহিষ্কার | Expulsion from Bollywood
২০১৯ এর ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামা হামলা এবং তারপরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক অবস্থানের ফলে, অল ইন্ডিয়ান সিনেমা ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশন, ভারত সরকারের নীতি অনুসরণ করে ভারতীয় সিনেমা / সংগীতের মধ্যে সমস্ত পাকিস্তানি কার্যকলাপে তাৎক্ষণিক নিষেধাজ্ঞা জারি করে এবং সমস্ত পাকিস্তানি শিল্পীদের নির্দেশ দেয়া হয় ভারতবর্ষ দেশ ছেড়ে চলে যেতে। সরকারের আদেশ অনুসারে আসলাম পাকিস্তান চলে গেলে তাঁর ইতিমধ্যে রেকর্ড করা গানগুলো যেগুলো প্রকাশিত হয়নি তা আটকে রাখা হয়েছিল যা পরবর্তীকালে বিভিন্ন ভারতীয় গায়ক পুনরায় রেকর্ড করেছিলেন।
আন্তর্জাতিক ট্যুর | International tour of Atif Aslam
আতিফ আসলামের প্রথম আন্তর্জাতিক সফরটি ছিল রিদম ঢোল বাস এবং অ্যানি খালিদকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায়।
২০০৮ সালে আসলাম সোভার্ভেন ব্যাঙ্ক অ্যারেনায় সামার বিটস , নিউ জার্সিতে আত্মপ্রকাশ করেন এবং একটি একক কনসার্ট করেছিলেন, যেই কনসার্টে কৈলাশ খের, রিচা শর্মা এবং আমানত আলী মতো সংগীতশিল্পীও ছিলেন।
২২ এপ্রিল ২০১২, আতিফ আসলাম পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ভালবাসা, শান্তি ও মৈত্রীর প্রয়োজনীয়তা প্রচারের জন্য লন্ডনের একটি কনসার্টে প্রথম পাকিস্তানি হিসেবে সঙ্গীত পরিবেশনা করেছিলেন ।সেই অনুষ্ঠানটিতে তিনি চার ঘন্টা একসাথে পারফর্ম করেছিলেন ।
২০১২ সালের ডিসেম্বরে, আসলামকে দুবাইয়ে শীর্ষস্থানীয় অভিনেতাদের মধ্যে স্থান দেওয়া হয়েছিল।
আতিফ আসলাম হলেন এশিয়ার প্রথম শিল্পী এবং ব্রায়ান অ্যাডামসের পরে দ্বিতীয় শিল্পী, যিনি নেপালের কাঠমান্ডুর দশরথ রাঙ্গাসলা জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়ামে পারফর্ম করার অনুমতি পেয়েছিলেন। ব্যাপক জনপ্রিয়তা এবং ফ্যান ফলোয়িংয়ের কারণে আতিফ আসলাম বাংলাদেশ ও কেনিয়াতেও অনুষ্ঠান করেছিলেন।
অবদান ও সম্মাননা | Contributions and honors of Atif Aslam
আতিফ আসলাম পাকিস্তান এবং ভারত উভয় দেশের হয়েই অসংখ্য চার্ট-টপার গান রেকর্ড করেছেন এবং তিনি ভোকাল বেল্টিংয়ের জন্য প্রসিদ্ধ এবং জনপ্রিয়। মূলত উর্দু এবং হিন্দিতে গান করা ছাড়াও পাঞ্জাবি, বাংলা এবং Pashto ভাষা তেও গান গেয়েছেন তিনি । বেশ কয়েকটি সফল ও চার্ট বাস্টার গানের সাথে, তিনি ভারতীয় এবং পাকিস্তান সংগীত জগতে অন্যতম সেরা প্লেব্যাক গায়ক হিসাবে বিবেচিত ।২০০৮ সালে আতিফ আসলাম পাকিস্তান সরকারের কাছ থেকে চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পুরস্কার তমঘা-ই-ইমতিয়াজ সম্মানে ভূষিত হন । তিনি বেশ কয়েকটি লাক্স স্টাইল পুরষ্কারেরও প্রাপক। সেরা প্লেব্যাক সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে তিনি সাহারা সঙ্গীত পুরস্কার ও লাভ করেছিলেন। ২০১২ সালে, তিনি পাকিস্তানের সেরা গায়কে হিসেবে মনোনয়নের পরে দুবাই 'ওয়াক অফ ফেমের' অন্যতম তারকা হিসেবে ভূষিত হয়েছিলেন। ২০১৩ সালে তিনি ,' The Brand Laureate International Award' পেয়েছিলেন। পাকিস্তানের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশ ভারত ও বাংলাদেশের শ্রোতাদের কাছেও আতিফ আসলমের জনপ্রিয়তা ব্যাপক আকারের। তিনি তাঁর অনুরাগীদের "আদিজ" হিসাবে উল্লেখ করে থাকেন।
উপসংহার | Conclusion
পাকিস্তানের গায়ক আতিফ আসলাম ভারতবর্ষে ও সমানভাবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে । তাঁর সুমধুর কণ্ঠ এবং গায়কী আমজনতার মন কেড়ে নিয়েছে। বিশেষ করে এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কাছে আতিফ আসলাম নামটি এক অনন্য অর্থ বহন করে ; তিনি হলেন তাদের কাছে সংগীতের আইকন স্বরূপ। এক সত্যিকারের গুণী সংগীতশিল্পী আতিফ আসলাম এর নাম তাই আজ ঘরে ঘরে সমৃদ্ধ ।
প্রশ্নোত্তর - Frequently Asked Questions
আতিফ আসলামের পরিচয় কী ?
আতিফ আসলাম একজন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত বলিউডের পপ, রক, সুফি গায়ক এবং চলচ্চিত্র অভিনেতা।
আতিফ আসলাম কবে ,কোথায় জন্মগ্রহণ করেন ?
১২ মার্চ ১৯৮৩ সালে আতিফ আসলাম পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশেরওয়াজিরাবাদে একটি পাঞ্জাবি মুসলমান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
সঙ্গীতশিল্পী হওয়ার আগেই আতিফ আসলাম কী করতেন ?
সঙ্গীতশিল্পী হওয়ার আগে আতিফ আসলাম ছিলেন একজন ক্রিকেট প্লেয়ার ।তিনি ছিলেন পাকিস্তান এর ফাস্ট বোলার এবং অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের জন্য কিছুদিনের জন্য তাকে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছিল।
আতিফ আসলাম কোন সঙ্গীত ব্যান্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন?
২০০২ সালে "Jal" নামক একটি সঙ্গীত ব্যান্ডের প্রধান সংগীতশিল্পী হিসাবে আতিফ আসলাম তাঁর কেরিয়ার শুরু করেছিলেন।
কোন হিন্দি ছবি দিয়ে আতিফ আসলামের অভিনয় জীবন শুরু হয়েছিল ?
২০১১ সালে পাকিস্তানি চলচ্চিত্র 'Bol' চলচ্চিত্রে তিনি প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। এই ছবি দিয়েই তিনি অভিনয় জগতে পদার্পণ করেছিলেন ।
- Related topics -
- জীবন ও জীবনী
- জীবনী সাহিত্য
- আতিফ আসলাম
- সঙ্গীতশিল্পী
- সেলিব্রিটি
- লাইফস্টাইল
Contents ( Show )
- ভূমিকা | Introduction of Atif Aslam
- জন্ম ও প্রথম জীবন | Birth & first life of Atif Aslam
- শিক্ষাজীবন | Education life of Atif Aslam
- বিবাহ | Marriage life of Atif Aslam
- আতিফ আসলামের প্রথম ভালোবাসা | Atif Aslam's first love
- জীবিকা | Livelihood of Atif Aslam
- সঙ্গীত জীবনে প্রবেশ | Atif Aslam entered the music life
- কেরিয়ার টাইমলাইন | Career timeline of Atif Aslam
- (২০০৫- ২০০৬) আতিফের বলিউড ও হলিউডকে পদার্পণ:
- ২০০৯; কোক স্টুডিও তে অভিষেক
- ২০১১; পাকিস্তানি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পা:
- বলিউড থেকে বহিষ্কার | Expulsion from Bollywood
- আন্তর্জাতিক ট্যুর | International tour of Atif Aslam
- অবদান ও সম্মাননা | Contributions and honors of Atif Aslam
- উপসংহার | Conclusion
- প্রশ্নোত্তর ( Frequently Asked Questions )
- পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File