Janmashtami 2023 | ৬ না ৭? কবে পালন করবেন জন্মাষ্টমী? কেনই বা জন্মাষ্টমীতে দেওয়া হয় তালের বড়া?
জন্মাষ্টমীর দিনক্ষণ নিয়ে তৈরী হয়েছে ফের বিভ্রাট। জানুন কবে পালন করবেন জন্মাষ্টমী। কেনই বা ভোগে দেবেন তালের বড়া।
রাখী পূর্ণিমার মতো জন্মাষ্টমী ২০২৩ (Janmashtami 2023) এর দিনক্ষণ নিয়েও তৈরী হয়েছে বিভ্রাট। ৬ই সেপ্টেম্বর না ৭ই সেপ্টেম্বর পালন করবেন জন্মাষ্টমী? হিন্দু ক্যালেন্ডার বলে, প্রতি বছর ভাদ্রপদ মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে জন্মাষ্টমী উৎসব (Janmashtami) পালন করা হয়। পুরাণ মতে, কৃষ্ণকে বিষ্ণুর অষ্টম অবতার বলেই মনে করা হয়। জন্মাষ্টমীর দিন অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণের জন্মের দিন বিভিন্ন মন্দির ও ঘরে ঘরে কৃষ্ণ জন্মতিথি ও পুজোর বিশেষ আয়োজন করা হয়।
জন্মাষ্টমী ২০২৩ কখন পালন করবেন? । When will Janmashtami 2023 be Celebrated?
হিন্দু মতে, রাত ১২টা নাগাদ বিধি-আচার মেনে কৃষ্ণের পুজোর আয়োজন করা হয়। তবে মথুরা-বৃন্দাবনে (Mathura-Vrindavan) শ্রীকৃষ্ণ জন্মাষ্টমীর দিন বিশেষ জাঁকজমক করে পালন করা হয়। তবে জন্মাষ্টমী ২০২৩ (Janmashtami 2023) কবে পালন করা হবে তা নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন ভক্তরা। প্রকৃতপক্ষে প্রতি বছর জন্মাষ্টমীর উৎসব দুই দিন ধরে পালিত হয়। একদিন গৃহস্থরা জন্মাষ্টমী উদযাপন করেন ও দ্বিতীয় দিন বৈষ্ণব সম্প্রদায়েের মধ্যে এই উত্সব পালন করে থাকেন। শ্রীকৃষ্ণ জন্মোৎসব ৬ই ও ৭ই সেপ্টেম্বর উভয় দিনেই পালন করা হয়ে থাকে। যারা ঘরে পুজো করে থাকেন তাঁরা ৬ সেপ্টেম্বর জন্মাষ্টমী পালন করতে পারেন। যাঁরা বৈষ্ণব ধর্মে বিশ্বাসী, তাঁরা ৭ই সেপ্টেম্বর পুজো-আচার করতে পারেন। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, শ্রী কৃষ্ণ রোহিণী নক্ষত্রে মধ্যরাত ১২টায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাই এই সময়েই পুজো করা প্রচলন রয়েছে।
জন্মাষ্টমী ২০২৩ এর শুভ সময় । Auspicious Time of Janmashtami 2023 :
ভাদ্রপদ মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথি শুরু হয়, ৬ সেপ্টেম্বর, দুপুর ৩টে ২৭ মিনিট থেকে। কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথি শেষ হয়, ৭ সেপ্টেম্বর, বিকাল ৪টে ৪৪ মিনিটে। অন্যদিকে, রোহিণী নক্ষত্র, ৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা ২০ মিনিট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত থাকবে।
পুরাণ মতে শ্রীকৃষ্ণ জন্মাষ্টমীর দিন উপবাস করলে সকল মনোবাসনা পূর্ণ হয়। বলা হয়ে থাকে, এদিনে নিয়ম মেনে যশোদা নন্দনের পুজো করলে সুখ ও সমৃদ্ধির আশীর্বাদ পাওয়া যায়। অন্যদিকে, যে দম্পতিরা সন্তান নিতে চান বা সন্তান সুখ থেকে বঞ্চিত, তাঁরাও জন্মাষ্টমীর দিন গোপালের পুজো করে থাকেন। অনেক মন্দিরে বা ভক্তদের বাড়িতে দোলনা ঝোলানো হয় গাছে। সেই দোলনায় দোদুল্যমান থাকেন স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণের বালগোপাল বা নাড়ুগোপাল বিগ্রহ।
জন্মাষ্টমীতে শ্রীকৃষ্ণের পছন্দের খাবার মাখন, দই, দুধ, ক্ষীর, চিনি, দধি, মিষ্টি নিবেদন করে থাকেন। তবে এই ভোগের সঙ্গে তালের বড়া দিতেই হয়। বলা হয়, শ্রীকৃষ্ণের অতি প্রিয় খাদ্য তালের বড়া। তাই জন্মাষ্টমীতে তালের বড়া থাকবেই। আসলে এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে একটি পুরাণ কথাও। ভাদ্র মাসে জন্ম শ্রীকৃষ্ণের। আর এই মরসুমেরই ফল তাল। তাই তালের বড়া, তাল ক্ষীর পরিবেশন করা হয় তাঁকে। শোনা যায়, বাসুদেব কৃষ্ণকে নন্দরাজের কাছে রেখে আসার পর নন্দ উৎসবেই প্রথম খাওয়া হয় তালের বড়া।তাই জন্মাষ্টমী এলেই গোপালের ভোগে থাকবে তালের বড়া।
জন্মাষ্টমী পুজোর রীতি শুরু হয় সূর্য অস্ত যাওয়ার পর। ভজন, পুজো, মধ্য রাতে উপবাস ভাঙার পরের দিন পালন করা হয় হয় নন্দ উৎসব। এই দিন গোপালকে ৫৬ পদে ভোগ দেওয়ার নিয়ম। এই দিন তালের বড়া ছাড়াও কৃষ্ণের প্রিয় মাখন, মিছরি, ফল, মেওয়া, নিমকিও থাকে ভোগে। এছাড়াও জন্মাষ্টমী তিথিতে উপবাস ব্রত পালন করে থাকেন ভক্তরা। প্রচলিত বিশ্বাস, এই উপবাসে কোনও দানাশস্য গ্রহণ করা বিধেয় নয়। তামসিক আহার বর্জন করে সাত্তিক খাবার তথা ফলাহার গ্রহণ করা যায়। রোহিণী নক্ষত্র সমাপনে এবং অষ্টমী তিথি শেষ হলে উপবাস ভঙ্গ করা হয়। চরণামৃত এবং প্রসাদ খেয়ে উপবাস ভঙ্গ করেন ভক্তরা।
- Related topics -
- লাইফস্টাইল
- পুজো ও উৎসব
- জন্মাষ্টমী
- শ্রীকৃষ্ণ
- মথুরা
- বৃন্দাবন