West Bengal Weather Update | সোম থেকে বুধ পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সমস্ত জেলাতে বৃষ্টিপাত! তবে কি ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় 'রেমাল'?
মে মাসের ১৯ তারিখেই ভারতে প্রবেশ করল দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ভারতের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ এলাকায় রবিবার প্রবেশ করেছে। হিসেব মতো, নির্ধারিত সময়ের তিন দিন আগে এসেছে বর্ষা।
চলতি বছর গরমকালে নাজেহাল অবস্থা হয়েছিল বঙ্গবাসীর। রোজই যেন তাপমাত্রা নয়া রেকর্ড গড়ছিলো। কেবল পশ্চিমবঙ্গই নয়, গোটা ভারতেই একই দৃশ্য দেখা গিয়েছে। তবে গরমে যেমন অস্বস্তিকর পরিবেশ সহ্য করতে হয়েছে তেমনই এই বছর নির্ধারিত সময়ের আগেই বর্ষা প্রবেশ করবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। মে মাসের ১৯ তারিখেই ভারতে প্রবেশ করল দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। আর তার প্রভাবে বৃষ্টি শুরু হতে আর বেশি দেরি নেই। ভারত ভূখণ্ডে প্রবেশ করলেও, এখনও বাংলায় বর্ষা প্রবেশ করতে সময় লাগবে। তবে সপ্তাহের শুরু থেকেই বদল দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া।আজ, সোমবার বেলা গড়াতেই কলকাতা-সহ একাধিক জেলায় ঝড়-বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। এর পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড় (cyclone in west bengal) রেমালের (Cyclone Remal) আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস!
পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার রিপোর্ট (west bengal weather report) অনুযায়ী, সোমবার দুপুর ১ টার মধ্যেই ঝমঝমে বৃষ্টিতে ভিজতে পারে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের দুই জেলা। এর মধ্যে কলকাতার কিছু কিছু এলাকায় ইতিমধ্যেই আকাশ অন্ধকার করে মেঘ জমে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তবে হাওয়া অফিস সতর্ক করে জানিয়েছে, বৃষ্টির সঙ্গে ৫০-৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়াও বইতে পারে। তিন জেলায় বজ্রগর্ভ মেঘের ব্যাপারেও সতর্ক করেছেন আবহবিদরা। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার কিছু কিছু অংশে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলে পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার খবর (west bengal weather news)। এই সতর্কতা আগামী ২-৩ ঘণ্টার জন্য জারি করা হয়েছে।
হাওড়া জেলাতেও ঝড়-বৃষ্টির সতর্কতা। বৃষ্টির সঙ্গে ৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইবে। থাকবে বজ্রপাতের আশঙ্কা। এর পাশাপাশি হুগলি জেলাতেও ঝড়-বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে ৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইবে। থাকবে বজ্রপাতের আশঙ্কাও। পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার রিপোর্ট (west bengal weather report) অনুযায়ী, দক্ষিণবঙ্গের ছয় জেলায় কালবৈশাখীর সর্তকতা। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হবে দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই। আশঙ্কা বজ্রপাতের। উল্লেখ্য, আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে। বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ঝড়ও হতে পারে। হাওয়ার বেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত। তবে তার পর আবার শুকনো আবহাওয়া দেখা যেতে পারে দক্ষিণে।
উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস!
দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গেও ঝড়বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জন্য গিয়েছে, সোমবার এবং মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে বলে পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার খবর (west bengal weather news)। কোথাও হাওয়ার বেগ থাকবে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার। কোথাও বেগ বেড়ে হতে পারে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার। এই দু’দিনে ভারী বৃষ্টি হতে পারে জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারে। এই জেলাগুলিতে ৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটারের বেশি বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে আলিপুর।
ঘূর্ণিঝড় 'রেমালে'র আপডেট :
মে মাসের শেষে পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড় (cyclone in west bengal) রেমাল আসার কথা আগেই জানিয়েছিল আবহাওয়া দফতর। বর্তমানে ঘূর্ণিঝড় আপডেট (cyclone update) অনুযায়ী, ২২ মে বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হতে চলেছে। যা শক্তি বাড়ি ২৩ মে রাতে ঘূর্ণিঝড় রেমালে পরিণত হবে। প্রাথমিকভাবে ঘূর্ণিঝড়টি ততটা শক্তিশালী হবে না বলে মনে করা হলেও সাম্প্রতিক পূর্বাভাস বলছে ঘূর্ণিঝড় রেমালের কেন্দ্রে হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার পৌঁছতে পারে। জানা গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ঘূর্ণিঝড়টি ওড়িশা - অন্ধ্রপ্রদেশ সীমানা দিয়ে ভূভাগে প্রবেশ করতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হলেও সময় যত কেটেছে তত পূর্ব দিকে সরেছে ঘূর্ণিঝড়ের পথ। রবিবার বিকেলের পূর্বাভাসে জানানো হয়, ২৫ মে মধ্যরাতে ওড়িশার পারাদ্বীপের কাছাকাছি কোনও জায়গা দিয়ে ভূভাগে প্রবেশ করতে পারে ঘূর্ণিঝড় রেমালের কেন্দ্রটি। আবহাওয়াবিদদের একাংশ মনে করছেন, আরও পূর্বদিকে পশ্চিমবঙ্গের কাছাকাছি এগিয়ে আসতে পারে এই ঝড়ের গতিপথ। যদিও ঘূর্ণাবর্ত তৈরি না হওয়া পর্যন্ত ঝড়ের গতিপথের সুনির্দিষ্ট পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
ঘূর্ণিঝড়ের ফলে উপকূলবর্তী এলাকায় ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সঙ্গে ২ মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া, কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাংশে প্রবল বর্ষণের সম্ভাবনাও তৈরী হয়েছে। এমনকী উপকূলবর্তী এলাকায় ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে নামতে হতে পারে প্রশাসনকে। স্থানীয়দের উদ্ধার করে রাখতে হতে পারে স্কুল ও ত্রাণকেন্দ্রগুলিতে। পরিস্থিতি ভয়াবহ হলে বাড়ি থেকে বেরনোর ওপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে আবহাওয়া দফতর।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রবেশ করবে বর্ষা। সেই মতো মে মাসের ১৯ তারিখেই ভারতে প্রবেশ করল দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ভারতের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ এলাকায় রবিবার প্রবেশ করেছে। হিসেব মতো, নির্ধারিত সময়ের তিন দিন আগে এসেছে বর্ষা। মলদ্বীপ কোমোরিন এলাকা, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর, দক্ষিণ আন্দামান সাগর এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কিছু এলাকায় পৌঁছে গেছে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। আর এর প্রভাবে বাংলা-সহ দেশের একাধিক অংশে বৃষ্টি শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। যদিও এখনও বাংলায় বর্ষা প্রবেশ করতে সময় লাগবে।
- Related topics -
- আবহাওয়া
- আবহবিদ
- আবহাওয়া দফতর
- আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর
- আবহাওয়া আপডেট
- আবহাওয়া দফতর
- ঘূর্ণিঝড়
- সাইক্লোন
- বৃষ্টিপাত