দেশ

Air Taxi and Kolkata Traffic | যানজটে আর ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে থাকতে হবে না! আকাশ পথে ৯০ মিনিটের রাস্তা ৫-৭ মিনিটে পৌঁছে দেবে 'এয়ার ট্যাক্সি'!

Air Taxi and Kolkata Traffic | যানজটে আর ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে থাকতে হবে না! আকাশ পথে ৯০ মিনিটের রাস্তা ৫-৭ মিনিটে পৌঁছে দেবে 'এয়ার ট্যাক্সি'!
Key Highlights

ভারতে বহু শহরে যানজট সমস্যা এড়াতে শিঘ্রই চালু হবে 'এয়ার ট্যাক্সি' পরিষেবা। কালীপুজো ও দীপাবলিতে শহরে যান নিয়ন্ত্রণ করতে একাধিক নিয়ম জারি করলো কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ।

আগের তুলনায় ভারতের প্রত্যেক শহরেই বেড়েছে যানবাহন সংখ্যা। বিশেষত করনাকালে উল্লেখ্যভাবে অসংখ্য ভারতবাসী চার চাকা কিংবা দু চাকা গাড়ি কেনেন। এতে বাস, অটোর সংখ্যা ও পরিষেবা কিছুটা কম দেখা দিলেও বেড়েছে যানজটের সমস্যা। ভারতের সবচেয়ে ট্রাফিক শহর (Most traffic city in India) এর মধ্যে বেশ দীর্ঘ সময় ধরেই রয়েছে ব্যাঙ্গালোর, মুম্বই, নিউ দিল্লি। তবে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার পর আম জনতার বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে ট্রাফিক। এমনও ঘটনা দেখা গেছে, যখন ব্যাঙ্গালোর ট্রাফিক (Bangalore Traffic) এর জেরে এক স্কুল পড়ুয়া বাড়ি ফিরেছে রাত ৯টায়, যেখানে তার স্কুল ছুটি হয়েছিল দুপুর ২তে। কেবল ব্যাঙ্গালোর বা মুম্বই নয়, ভারতের সবচেয়ে ট্রাফিক শহর (Most traffic city in India) এর তালিকায় ক্রমশ নাম লেখাচ্ছে কলকাতা ও অন্যান্য মেগা সিটিগুলিও। হাতে ঘন্টাখানেক বেশি সময় নিয়ে বেরোলেও শহুরে যানজটে ফাঁসতে হয় কমবেশি সকলকেই। এই সময়ে মনে হয় যদি ডানা থাকতো তাহলে উড়ে আকাশ পথেই গন্তব্যে পৌঁছানো যেত চোখের পলকে। ডানা না গজালেও, আকাশ পথে গন্তব্যে পৌঁছনো সম্ভব হবে শীঘ্রই। সব ঠিক থাকলে আর কিছু সময় পরই চালু হবে এয়ার ট্যাক্সি (Air Taxi)

সূত্রের খবর, সব ঠিক থাকলে ২০২৬ সালের মধ্যে ভারতে আসছে ই ট্যাক্সি পরিষেবা (E-Taxi Service)। অত্যাধুনিক এই যান পরিষেবা দ্বারা  ৯০ মিনিটের পথ পেরোনো যাবে মাত্র ৭ মিনিটে। মূলত যানজট এড়িয়ে কম সময়ে যাত্রা করার জন্য এই উড়ানের ব্যবস্থা করতে চলেছে ইন্টারগ্লোব এন্টারপ্রাইজ (Interglobe Enterprise) নামের সংস্থা। ভারতে চালু বিমানসংস্থা ইন্ডিগোর (Indigo) সঙ্গে যুক্ত এই ইন্টারগ্লোব এন্টারপ্রাইজ।  ৯ই নভেম্বর ইন্টারগ্লোব এন্টারপ্রাইজের তরফে জানানো হয়েছে, তারা ভারতে এয়ার ট্যাক্সি (Air Taxi) আনতে চলেছে। ইন্টারগ্লোব ও মার্কিন সংস্থা আর্চার এভিয়েশনের মিলিত উদ্যোগেই এই এয়ার ট্যাক্সি আনা হবে। এই দুই সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, বিশ্বের সবথেকে জনবহুল দেশগুলিতে যানজট একটা বড় সমস্যা। জনসংখ্যা ও গাড়ির সংখ্যা প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পাওয়ায় রাস্তাঘাটে যানজটও ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। মাঝে মাঝে এই যানজট বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। ঘন্টার পর ঘন্টা এমনকি এক-দু বেলাও কেটে যায় এই যানজটে আটকে। ফলত এই সমস্যা দূর করতে ই-ট্যাক্সির পরিষেবা আনতে চলেছে এই সংস্থা।

এই সংস্থাটি মনে করছে, ভারতের মতো জনবহুল দেশে সবচেয়ে সুবিধাজনক গণপরিবহণ ব্যবস্থা হয়ে উঠতে পারে এই এয়ার ট্যাক্সি। জানা গিয়েছে, বিদ্যুৎ চালিত এই ট্যাক্সিতে একবার চার্জ দিলেই ১৬১ কিলোমিটার উড়তে পারবে। ফলে আশা করা যাচ্ছে, ই-এয়ারক্রাফ্ট বা এয়ার ট্যাক্সির নাম ‘মিডনাইট’  জনবহুল শহরে এক-দেড় ঘণ্টার রাস্তা পৌঁছে দিতে পারে ৫-৭ মিনিটে। সাধারণ বিমান পরিষেবার চেয়ে কম খরচ হবে এতে। তাছাড়া একটি ট্যাক্সিতে চারজন যাত্রী বসতে পারবেন। সুতরাং ভাড়া শেয়ার করে নেওয়ারও একটা ব্যাপার থাকবে। এছাড়াও এয়ারট্যাক্সিগুলি উলম্বভাবে ওঠানামা করা যাবে। ফলে যে কোনও জায়গায় অবতরণে সমস্যা হবে না। দিল্লি-ব্যাঙ্গালোর ট্রাফিক (Bangalore Traffic) থেকে মুক্তি দিয়ে চোখের পলকে গন্তব্যে পৌঁছে দেবে এই ট্যাক্সি। তবে সরকার থেকে অনুমতি মিললেই ২০২৬ সালের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে দিল্লিতে ২০০টি এয়ার ট্যাক্সি নিয়ে পরিষেবা শুরু হবে। পরে এই পরিষেবার ব্যবস্থা করা হবে মুম্বই, বেঙ্গালুরু কলকাতার মতো বড় শহরেও।

প্রসঙ্গত, ফেস্টিভ সিজেন এলেই যেমন গোটা তিলোত্তমা সেজে ওঠে তেমনই শহরে বেড়ে যায় যানজট। কালীপুজো (Kali Puja) বা দীপাবলি (Diwali) উপলক্ষ্যেও একই দৃশ্য দেখা গিয়েছে কলকাতায়। তবে শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে একাধিক নির্দেশিকা জারি করেছে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ (Kolkata Traffic Police)। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও কালী প্রতিমা মণ্ডপে নিয়ে যাওয়ার বিষয় নিয়ে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। আলোর উৎসব উপলক্ষ্যে শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণ বিধি বলবৎ থাকবে ৯ থেকে ১২ই নভেম্বর অবধি। 

নির্দেশিকা অনুযায়ী, ৯ থেকে ১২ই নভেম্বর বিকেল ৪টে থেকে ভোর ৫টা অবধি কোনও পণ্যবাহী গাড়ি রবীন্দ্র সরণি দিয়ে চলাচল করতে পারবে না। তবে যেসব পণ্যবাহী গাড়ি কালী প্রতিমা বহন করবে, তাদের ক্ষেত্রে ছাড় রয়েছে। রবীন্দ্র সরণি ধরে উত্তর থেকে দক্ষিণের দিকে যাওয়া গাড়িগুলিকে প্রয়োজন ও ভিড় অনুযায়ী গ্যালিফ স্ট্রিট ক্রসিং থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হতে পারে। এছাড়া ১২ই নভেম্বর রাত ১০টা থেকে সকাল ৫টা অবধি পণ্যবাহী গাড়িগুলির জন্য পৃথক রুটের কথা ভাবা হয়েছে। এই গাড়িগুলি স্ট্যান্ড রোড, নিমতলা ঘাট স্ট্রিট, বিকে পাল অ্য্যাভিনিউ, জেএম অ্যাভিনিউ ও গিরীশ অ্যাভিনিউ হয়ে চলাচল করবে। তবে প্রতিমা বহনকারী গাড়িগুলি এই নিয়মের আওতায় পড়ছে না। এছাড়া প্রতিমা তোলার জন্য যে গাড়িগুলি কুমোরটুলির দিকে যাবে, তারা জেএম অ্যাভিনিউ, বিকে পাল অ্যাভিনিউ, অরবিন্দ সরণি, মদনমোহন তলা রোড, শ্যামবাজার স্ট্রিট, রাজা নবকৃষ্ণ স্ট্রিট ও নর্থ রবীন্দ্র সরণি ব্যবহার করবে। প্রতিমা বহনকারী গাড়িগুলির জন্য রবীন্দ্র সরণির পশ্চিম দিকে শোভাবাজার স্ট্রিট ও বাগবাজার স্ট্রিটে পার্কিংয়ের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ (Kolkata Traffic Police) জানিয়েছে, স্ট্র্যান্ড ব্যাঙ্ক রোড এবং শোভাবাজার স্ট্রিট থেকে ডিসি ব্যানার্জি রোড অবধি অন্য কোনও গাড়ি এই কদিন পার্কিং করতে পারবে না। মদনমোহন তলা রোডের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম বলবৎ থাকবে। প্রতিমা বহনকারী গাড়িগুলি ছাড়া কোনও গাড়ি কালীঘাট ও হাজরা রোড হয়ে উত্তরের দিকে যেতে পারবে না। এছাড়াও যানবাহন নিয়ন্ত্রণের বিধি অনুযায়ী, প্রতিমা বহনকারী গাড়িগুলি ৯ই থেকে ১২ই নভেম্বর অবধি শহরে অবাধে চলাচল করতে পারে। ১২ নভেম্বর সকাল ৭টা থেকে ভোর ৪টে ও ১৩ নভেম্বর গোটা দিন, রবীন্দ্র সরণি ওয়ান ওয়ে থাকবে বলে জানানো হয়েছে।