Offbeat Places Near Darjeeling | মেঘের মাঝে ছোট্ট সুন্দর গ্রাম 'রামধুরা! হাত বাড়ালেই কাঞ্চনজঙ্ঘা!

Saturday, February 24 2024, 9:44 am
highlightKey Highlights

সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার ফুট উপরে রয়েছে রামধুরার আকাশি গ্রাম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভোরপুর, কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য দেখতে পাবেন রামধুরায়। রাত কাটাতে পারেন জলসা ভিউ পয়েন্টে।


মনটা যখনই পাহাড় পাহাড় করে তখনই বাঙালির মাথায় সর্বপ্রথম আসে দার্জিলিংয়ের (Darjeeling) নাম। তবে এক ঘেয়ে দার্জিলিং কারই বা ভালো লাগে। ফলে এখন ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে দার্জিলিংয়ের আশেপাশে থাকা অফবিট জায়গাগুলি (Offbeat Places Near Darjeeling)। এরকমই পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে দার্জিলিংয়ের অফবিট জায়গা রামধুরা (Ramdhura)।

রামধুরা । Ramdhura :

মেঘের দেশে যদি বাসা বাঁধতে চান, মেঘের বাড়িতে যদি থাকতে চান তবে রামধুরা হতে পারে আপনার জন্য পারফেক্ট ডেস্টিনেশন। হোমস্টেতে বসেই দেখতে পাবেন কাঞ্চনজঙ্ঘাকে (Kanchenjunga)। এখন থেকে 'স্লিপিং বুদ্ধ'র এতো অপরূপ দৃশ্য অন্য অনেক জায়গা থেকেই দেখতে পাবেন না। সকালে ঘুম থেকে উঠবেন। হোমস্টের জানলা খুলে দেখবেন অপূর্ব সেই রূপ। প্রায় পাঁচ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই ছোট্ট গ্রাম রামধুরা। বলা হয় ভগবান রামচন্দ্রের নামে এই গ্রামের নাম এবং ধুরা অর্থে গ্রাম। একেবারে নির্জনে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে পেতে চাইলে রামধুরা হল একদম সঠিক জায়গা। এই ছোট্ট গ্রাম স্বর্গের চেয়ে কিছু কম নয়। দিনে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপূর্ব সৌন্দর্য, সামনে বহু নিচে আঁকাবাঁকা পাহাড়ি নদী এবং রাতে আকাশ ভর্তি হাজার হাজার তারা।

রামধুরাতে কী কী দেখতে পাবেন? । What Can You See in Ramdhura?

সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার ফুট উপরে রয়েছে রামধুরার আকাশি গ্রাম। রামধুরা যেন স্বর্গ থেকে খসে পড়া একটুকরো জমি। হোমস্টের ব্যালকনিতে বসে বা জানলা খুলেই দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘাকে। সিলারি গাঁও, ইচ্ছে গাঁও, জলসা বাংলো, খুবই সামনে। পূর্ব সিকিমের (East Sikkim) গা ঘেঁষে অবস্থিত এই আকাশি গ্রাম। মন কাড়া রামধুরা গ্রাম, খুবই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। এখান থেকে দিগন্ত বিস্তৃত পাহাড়ের সারি,তিস্তার একাধিক বাঁধ আর দেখা যায় রংপো ব্রিজ (Rangpo Bridge)। রামধুরাতে নাইট স্টে করে, এরপর এখান থেকে ইচ্ছে গাঁও, সিলারিগাঁও দেখে আসতে পারেন। অনেকেই ইচ্ছেগাঁও আর রাম ধরা দুটোকে একই প্যাকেজ এর মধ্যে রাখেন। দুটি জায়গা থেকেই আপনি কাছাকাছি একাধিক স্পটে যেতে পারবেন। বেড়ানোর প্ল্যানটা সেভাবেই করতে পারেন। একদিন ইচ্ছেগাঁওতে থাকলেন। অপর দিন রামধুরাতে থাকলেন।

দার্জিলিংয়ের কাছে অফবিট জায়গার সম্পর্কে আরও পড়ুন : কাঞ্চনজঙ্ঘার ভিউ সঙ্গে ট্রেকিং! ঘুরে আসুন মাইন্ড রিফ্রেশিং ধোত্রেতে!

রামধুরা থেকে একাধিক ট্রেকিং রুট আছে। জঙ্গলের মধ্য দিয়ে রয়েছে পায়ে চলা পথ। চারপাশে কুয়াশার রহস্যময়তা। দূরের জিনিস ভালো করে বোঝা যায় না। আর এটাই ম্যাজিক রামধুরার। এছাড়াও রামধুরার বড় আকর্ষণ জলসা ভিউ পয়েন্ট (Jalsa View Point)। ১৯৩০ সালের সেই জলসা বাংলো আজও অবস্থিত। চার পাশে সিঙ্কোনা গাছের চাষ। সামনে বহু নিচে আঁকাবাঁকা পাহাড়ি নদী। একটা রুপোর হাঁসুলীর মতো মনে হবে। তিন হাজার ফুট নিচ অবধি গভীর খাদ নেমে গেছে। চাঁদের আলোয় দেখা যায় শুধু নীল কুয়াশায় ঢাকা পাহাড়ের ঢেউ। জলসা বাংলোতে রাত জাগলে মনে হবে এক অন্য দুনিয়ায় চলে এসেছেন। জলসা বাংলো পাঁচ হাজার ফুট উচ্চতায় দাঁড়িয়ে আছে। বিশাল জায়গা জুড়ে এই বাংলো। গাড়ি ভিতরে যাবার অনুমতি চাই। গেট থেকে প্রায় পাঁচশো মিটার হেঁটে এই বাংলো যেতে হয়।

কীভাবে পৌঁছবেন রামধুরায়? । How to reach Ramdhura?

এনজিপি (NGP)থেকে রামধুরার দূরত্ব প্রায় ৮৬ কিলোমিটার। মানে ইচ্ছেগাঁও যাওয়ার রাস্তাতেই এই গ্রাম পড়ে। আলগাড়া (Algara) হয়ে যে রাস্তাটা একটু উপরের দিকে উঠে যাচ্ছে সেটাই ইচ্ছেগাঁও ও রামধুরা যাওয়ার রাস্তা। এনজেপি থেকে সরাসরি গাড়ি নিয়ে চলে আসতে পারেন রামধুরায়। তবে গণপরিবহণে কালিম্পং (Kalimpong) হয়ে এলে খরচ অনেকটাই কম পড়বে। কালিম্পং থেকে ১৪ কিমি দূরে রামধুরা। এখান থেকে কালিম্পং- এর সাইট সিন করা যায়। ডেলো, কাককটাস হাউস, টেগোর হাউস ৬ কিমি এ।

রামধুরায় কখন যাবেন? । When to go to Ramdhura?

সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার ফুট উপরে রামধুরার আকাশি গ্রাম। বছরের প্রত্যেক ঋতু এবং সময়েই রামধুরার সৌন্দর্য অপরূপ। পাহাড় কখনো নিরাশ করে না। রামধুরাও নিরাশ করবে না। তবে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এই ছোট্ট সুন্দরী গ্রামে এলে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাওয়ার একটা নিশ্চয়তা থাকে। এই সময়ে মেঘ কেটে গিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে পরিষ্কার দেখা যায়।

দার্জিলিংয়ের কাছে অফবিট জায়গার সম্পর্কে আরও পড়ুন : তিস্তার শীতল জল,সঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা! ঘুরে আসুন 'অফবিট' পানবুদারায়!

স্বপ্নের সমান রামধুরার বহু নিচে ঘুমিয়ে রয়েছে তিস্তা (Teesta), নীল পাহাড়ের ঢেউ। এই গ্রামে চারিদিকে দেখতে পাবেন ফুল আর ফুল। অর্কিড ফুল ঘরে ঘরে ফুটে থাকে। পাহাড়ের ধাপে ধাপে চাষ হতে দেখবেন, কপি, আলু, ধান, গাজর, মুলো। মূলত চাষবাসই এখানকার গ্রামবাসীদের রোজগার। নীল আকাশ, চারদিকে পাহাড়, নিস্তব্ধতা, নির্জনতা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে থাকতে চাইলে ঘুরে আসুন রামধুরায়।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File