Meta and AI | AI দ্বারা তৈরী ছবি, ভিডিও পোস্ট করলেই ধরবে মেটার নয়া 'ফিচার'! কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দুনিয়ায় ভারতের সঙ্গী হতে প্রস্তাব মাইক্রোসফ্টের!

Thursday, February 8 2024, 1:25 pm
highlightKey Highlights

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই -এর সাহায্য তৈরি কোনও ছবি ফেসবুক কিংবা ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করলেই তা ধরতে নতুন ফিচার আনতে চলেছে মেটা। অন্যদিকে ,২০২৫ সালের মধ্যে ভারতে প্রায় ২০ লাখ মানুষকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কীভাবে কাজ করে, তার একটি সম্যক ধারণা পৌঁছে দেওয়ার টার্গেট নিয়েছে মাইক্রোসফ্ট।


বেশ কিছু সময় ধরেই সেলিব্রিটি থেকে শুরু করে আমজনতার চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছে ডিপ ফেক ভিডিও। এরকম ঘটনার সবচেয়ে বড় উদাহরণ রশ্মিকা মান্দানার ডিপ ফেক ভিডিও (Rashmika Mandana Deep Fake Video)। এই ঘটনা গোটা বলিউড থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে। তবে এবার এই বিষয়েই বড় সিদ্ধান্ত নিলো মেটা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই  (AI)-এর সাহায্য তৈরি কোনও ছবি ফেসবুক কিংবা ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করলেই তা ধরে পড়ে যাবে মেটার কাছে! এই নিরাপত্তার জন্য নতুন ফিচার আনতে চলেছে সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থা।

এআই -এর সাহায্য তৈরি কোনও ছবি ফেসবুক কিংবা ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করলে তা ধরতে নতুন ফিচার আনছে মেটা
এআই -এর সাহায্য তৈরি কোনও ছবি ফেসবুক কিংবা ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করলে তা ধরতে নতুন ফিচার আনছে মেটা

মেটার কর্নধার মার্ক জ়াকারবার্গ জানিয়েছেন,  ফেসবুক কিংবা ইনস্টাগ্রামে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই  (AI)-এর সাহায্য তৈরি কোনও ছবি পোস্ট করলেই তা ধরে পড়ে যাবে। কেবল ছবিই নয়, অডিয়ো ও ভিডিয়োর ক্ষেত্রেও এআই ব্যবহার করা হলে সেগুলি ফেসবুক কিংবা ইনস্টাগ্রামের পাতায় বিশেষ ভাবে চিহ্নিত করবে মেটা। মেটা কর্ণধার আরও জানিয়েছেন, কয়েক মাসের মধ্যেই এই নয়া ফিচারের সুবিধা পাবেন গ্রাহকেরা। এই নতুন বৈশিষ্ট্যটির প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ (Matter President of Global Affairs Nick Clegg) একটি ব্লগ পোস্ট করে লিখেছেন, গ্রাহকেরা যে ফোটোরিয়্যলিস্টিক কনটেন্টটি দেখছেন, সেটা যে আদতে এআই দিয়ে তৈরি, তা গ্রাহকদের জানানো ভীষণ জরুরি। মেটার এআই বৈশিষ্ট্যের সাহায্যে তৈরি চিত্রগুলিতে তাই ‘ইমাজিন্‌ড উইথ এআই’ বা ‘এআই দিয়ে তৈরি’— এই লেবেলটি প্রয়োগ করা হয়। তবে অন্যান্য অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে এআইয়ের সাহায্য তৈরি ছবিগুলিকেও যাতে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম চিহ্নিত করতে পারে, সেই চেষ্টাই চলছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে হঠাৎই সোশ্যাল মাধ্যমে ছড়িয়ে পরে রশ্মিকা মান্দানার ডিপ ফেক ভিডিও (Rashmika Mandana Deep Fake Video)। সেখানে একটি এক ব্রিটিশ-ভারতীয় সমাজমাধ্যম প্রভাবীর ভিডিয়োয় প্রযুক্তিগত কারচুপি করে রশ্মিকার মুখ জুড়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কিত  হয়ে পড়েন দক্ষিণী অভিনেত্রী। তবে কেবল রশ্মিকার ডিপ ফেক ভিডিও (Rashmika Deep Fake Video) নয়, একে একে ডিপ ফেক ভিডিওর শিকার  হন বলিউডের প্রথম সারির একাধিক অভিনেত্রীরাও। কাজল, আলিয়া, ক্যারিনারর ডিপ ফেক ভিডিও ছড়িয়ে পরে সোশ্যাল মাধ্যমে। এই ঘটনায় বিশেষ পদক্ষেপ নেয় কেন্দ্র সরকার। শুরু হয় তদন্ত। গত ১০ই নভেম্বর ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৬৫, ৪৬৯ ধারায় এবং তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত আইনের ৬৬সি এবং ৬৬ই ধারায় দিল্লি পুলিশের তরফে দায়ের করা হয়েছিল এফআইআর। প্রায় ৫০০ প্রোফাইল ঘেঁটে খুঁজে বার করা হয় মূলচক্রীকে। অবশেষে গ্রেফতার হন রশ্মিকা ডিপ ফেক ভিডিও (Rashmika Deep Fake Video) বানানো ব্যক্তি।

অবশেষে গ্রেফতার হন রশ্মিকা ডিপ ফেক ভিডিওর  মূলচক্রীকে
অবশেষে গ্রেফতার হন রশ্মিকা ডিপ ফেক ভিডিওর মূলচক্রীকে

কাণ্ডটি ঘটিয়েছেন বছর ২৪-এর এক যুবক। কেউ বলছেন, অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে গ্রেফতা করা হয়েছে তাঁকে। কারও দাবি, উত্তরপ্রদেশ থেকে ধরা হয় তাঁকে। ধৃতের নাম ইমানি নবীন। তিনি অন্ধ্রের গুন্টুর জেলার বাসিন্দা। পুলিশের জেরার মুখে নবীন স্বীকার করেন, তিনি অভিনেত্রীর বিরাট বড় অনুরাগী। জানিয়েছেন, রশ্মিকার একটি ফ্যানপেজ চালাতেন তিনি। ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ার বাড়ানোর নেশাতেই তিনি এই কাজ করেছিলেন। তার ফলও পান তিনি। ফলোয়ার বাড়ে। তবে পরে পুলিশের ভয়ে সব তথ্য মুছে দেন অভিযুক্ত। তবে অবশেষে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন তিনি। এরপর দিল্লি পুলিশকে ধন্যবাদ জানান অভিনেত্রী রশ্মিকা। তবে এই ঘটনা যাতে আর কারুর সঙ্গে না ঘটে তার জন্য নয়া ফিচার আনছে মেটা। এমনকি  নতুন এই ফিচারের উপর ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন মেটা কর্তৃপক্ষ। এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা সহজেই আসল ও নকলের তফাত বুঝতে পারবেন বলে আশাবাদী মেটা।

অন্যদিকে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভারতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোম্পানি (Artificial Intelligence Companies in India) এর সংখ্যাও বাড়ছে। নতুন প্রজন্ম এই বিষয়ে বেশ উৎসাহ দেখাচ্ছে। তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মে পর্যন্ত, ৬০টি জেনারেটিভ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স স্টার্টআপ ছিল ভারতে। ২০২৪ এর শুরুতে ভারতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোম্পানি (Artificial Intelligence Companies in India) এর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দুনিয়ায় বড় সুযোগ এলো ভারতের জন্য। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে কাজকর্মে ভারতের পাশে থাকতে চাইছে মাইক্রোসফ্ট। সংস্থার সিইও সত্য নাদেলা সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে জানান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে ভারত যেভাবে চিন্তাভাবনা করছে, সেই স্রোতের সঙ্গে এবার নিজেদের যুক্ত করতে চাই মাইক্রোসফ্ট। সত্য নাদেলা জানিয়েছেন, তাঁরা এমন কিছু টুলস তৈরি করতে চাইছেন, যা বিশেষভাবে এআই ডেভেলপারদের জন্যই হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দুনিয়ায় ভারতের সবথেকে বিশ্বস্ত সঙ্গী হতে চাইছে মাইক্রোসফ্ট, সে কথাও জানালেন সংস্থার সিইও।

আমরা চাই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স হোক সর্বজনীন। সেই লক্ষ্য পূরণে আমরা ভারতের সবথেকে বিশ্বস্ত সঙ্গী হতে চাই।

মাইক্রোসফ্ট সংস্থার সিইও সত্য নাদেলা

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দুনিয়ায় ভারতের সবথেকে বিশ্বস্ত সঙ্গী হতে চাইছে মাইক্রোসফ্ট
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দুনিয়ায় ভারতের সবথেকে বিশ্বস্ত সঙ্গী হতে চাইছে মাইক্রোসফ্ট

মাইক্রোসফ্ট সংস্থার সিইও আরও বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যাতে প্রতিটি প্রান্তে প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে যায়, সেই লক্ষ্য রয়েছে মাইক্রোসফ্টের। পাশাপাশি ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতে প্রায় ২০ লাখ মানুষকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কীভাবে কাজ করে, তার একটি সম্যক ধারণা পৌঁছে দেওয়ার টার্গেট নিয়েছে মাইক্রোসফ্ট।  জানা গিয়েছে, এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রশিক্ষণ আপাতত প্রাথমিকভাবে চলবে দ্বিতীয় শ্রেণি ও তৃতীয় শ্রেণির শহরগুলিতে। একইসঙ্গে গ্রামীণ এলাকাগুলিতেও চলবে মাইক্রোসফ্টের ট্রেনিং প্রোগ্রাম। সংস্থার তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এর ফলে আর্থ-সামাজিক বিকাশেও সাহায্য হবে।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File