Flower Bloomed In Space | মহাকাশে ফুটলো প্রথম ফুল! 'শূন্যে' খাদ্যশস্য উৎপাদনে নতুন আশা নাসার!

২০১৬ থেকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে ফুল ফোটানোর গবেষণায় সাফল্য নাসার। মহাকাশে ফুটলো কমলা রঙের জিনিয়া ফুল।
এক সময়ে মহাকাশে পাড়ি দেওয়া ছিল যেন স্বপ্নের মতো। প্রযুক্তির হাত ধরে মহাকাশের পথের দ্বার খুলে যাওয়ার সঙ্গে আরও বেড়েছে আশা। প্রতিনিয়তই মহাকাশ সংক্রান্ত নানা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন মহাকাশচারী এবং বিশেষজ্ঞরা। যার মধ্যে অন্যতম আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে খাদ্যশস্য ও গাছপালা উৎপাদনের চেষ্টা। এবার সেই পথেই এক ধাপ জয় পেলো নাসা (NASA)। দীর্ঘ গবেষণা চালানোর পর মহাকাশে ফুটলো প্রথম ফুল (Flower Bloomed In Space)।

গতকাল অর্থাৎ ১৩ই জুন মঙ্গলবার মার্কিন মহাকাশ সংস্থা, নাসা তাদের ইনস্টাগ্রাম (Instagram) অ্যাকাউন্টে ছবি পোস্ট করে জানায়, দীর্ঘ গবেষণা করে মহাকাশে প্রথম ফুল ফোটাতে সফল হয়েছে মহাকাশচারী এবং বিশেষজ্ঞরা। নাসা জানিয়েছে, মহাকাশে প্রথম ফোঁটা ফুলটি একটি কমলা রঙের জিনিয়া ফুল (Zinnia Flower), যা জন্মেছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে (International Space Station) অর্থাৎ আইএসএস-এ (ISS)।

১৯৭০ এর দশক থেকে মহাকাশ কেন্দ্রে খাদ্যশস্য, গাছপালা উৎপাদনে ও উদ্ভিদের চাষাবাদ নিয়ে বিজ্ঞানীরা নানান গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর আগেই আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে টমেটো (Tomatto), লেটুস (Lettuce) এবং অন্যান্য শাকসবজি জন্মিয়েছেন মহাকাশচারী ও বিজ্ঞানীরা। তারপরেই অন্যান্য উদ্ভিদ উৎপাদনের লক্ষ্য নেয় নাসা।

গতকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় নাসা দ্বারা মহাকাশে ফোটা প্রথম জিনিয়া ফুলের ছবি পোস্ট করায় উচ্ছাসিত হয়ে ওঠে গোটা বিশ্ববাসী। তবে সূত্রের খবর, এটি নতুন নয়। ২০১৬ সাল থেকেই এই জিনিয়া গাছ ও ফুলটি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে বিকশিত হচ্ছে। মহাকাশে ফুল জন্মানোর গবেষণা শুরু হয় ২০১৫ সাল থেকে। এই কাজ শুরু করেন মহাকাশচারী কেউলি লিন্ডগ্রেন (Astronaut Kelly Lindgren)। ২০১৭ সালে নাসা জানায়, তারা মহাকাশে জিনিয়া ফুল ফোটানোর চেষ্টায় গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই ফুল ফোটাতে গিয়ে যে ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে, তা বিজ্ঞানীদের আলো নিয়ে গবেষণা করতে সাহায্য করবে। এই গবেষণার মাধ্যমে তারা বুঝতে পারবেন, কীভাবে মাইক্রোগ্র্যাভিটির (Microgravity) মধ্যেও গাছ জন্মানো যাবে। আর মহাকাশচারীরা কীভাবে মহাকাশে নিজস্ব বাগান তৈরি করতে পারবেন।

নাসা জানিয়েছে, ভেজিটেবল প্রোডাকশন সিস্টেম (Vegetable Production System) বা ভেজি (Veggie) হল আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে অবস্থিত একটি মহাকাশ বাগান। যার লক্ষ্য হল, মাইক্রোগ্রাভিটিতে উদ্ভিদের বিকাশ অধ্যয়নে নাসাকে সহায়তা করা এবং সেইসঙ্গে মহাকাশচারীদের তাজা ও পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করা। ভেজি গার্ডেনটি সাধারণত একটি ক্যারি-অন ব্যাগেজের (Carry-On Baggage) আকারের হয় যাতে ছয়টি গাছপালা থাকে।

প্রতিটি উদ্ভিদ তার নিজস্ব "বালিশে" (Pillow) কাদামাটি-ভিত্তিক বৃদ্ধির মাধ্যম এবং সার তৈরি করে। শিকড়ের চারপাশে জল, পুষ্টি এবং বাতাসের স্বাস্থ্যকর মিশ্রণ বজায় রাখার জন্য এই কুশনগুলি অপরিহার্য। কুশনগুলি ছাড়া মহাকাশে তরল বুদবুদ তৈরি করার প্রবণতার কারণে, গাছের শিকড়গুলি জলে ডুবে যাবে বা বায়ু দ্বারা নষ্ট হয়ে যাবে।

মঙ্গলবার অপূর্ব সুন্দর কমলা রঙের জিনিয়া ফুলের ছবি পোস্ট করে নাসা জানায়, এই ফুল কেবল মাত্র জনসমাজকে দেখানোর জন্য নয়, এটি একটি গবেষণা যা মহাকাশে চাষাবাদের অধ্যায়নে সাহায্য করবে। পাশাপাশি পরবর্তীকালে চাঁদ (Moon) ও মঙ্গল গ্রহেও (Mars) উদ্ভিদ উৎপাদনে এবং চাষাবাদের ক্ষেত্রে গবেষণায় সাহায্য করবে।
- Related topics -
- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
- মহাকাশ
- মহাকাশচারী
- নাসা
- ইনস্টাগ্রাম