দেশ

Alapan Bandyopadhyay: আলাপন-মামলায় বিপুল সরকারি ব্যয় নিয়ে দ্বিমত আধিকারিকদের

Alapan Bandyopadhyay: আলাপন-মামলায় বিপুল সরকারি ব্যয় নিয়ে দ্বিমত আধিকারিকদের
Key Highlights

আলাপন মামলায় বেশ কয়েক বার আলাপনের হয়ে আদালতে দাঁড়িয়েছিলেন অভিষেক (উকিল)। ফলে রাজ্যের কয়েক কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে।

কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আইনি লড়াইয়ে প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে আইনি সহায়তা দিচ্ছে রাজ্য। প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, এই মামলায় বেশ কয়েক বার আলাপনের হয়ে আদালতে দাঁড়িয়েছিলেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। প্রতিবারই তাঁর সেই ‘ফি’ মিটিয়েছে রাজ্য। সেই খাতে এখনও পর্যন্ত খরচ হয়েছে কয়েক কোটি টাকা।  রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর অনুযায়ী, আলাপনের হয়ে মামলায় আইনজীবী অভিষেকের এক বার দাঁড়ানোর ফি হল ২৫ লক্ষ টাকা। 

আধিকারিক মহলের একাংশ ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন, এমতাবস্থায় অবসরপ্রাপ্ত অফিসার আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন আইনি সহায়তা দেওয়া হবে এবং তাঁর জন্য এই বিপুল পরিমাণ টাকা গোনা হবে। যদিও অপর একাংশের মতে, যে ঘটনার সূত্রে এই আইনি লড়াই, তখন আলাপন রাজ্যের মুখ্যসচিব হিসেবে কর্মরত। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনেই কাজ করেছিলেন তিনি। ফলে তাঁকে আইনি সহায়তা দেওয়া রাজ্যের নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

আলাপনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগের প্রক্রিয়া শুরু করায় আলাপন কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ট্রাইবুনালের (Central Administrative Tribunal - CAT) কলকাতা বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। পরে তা দিল্লিতে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল কেন্দ্র। এই ঘটনার পর থেকেই মামলায় প্রাক্তন মুখ্যসচিব তথা বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য পরামর্শদাতা আলাপনের পাশেই রয়েছে রাজ্য।

প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, রাজ্যের মুখ্যসচিব হিসেবে আলাপন মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মানতে কার্যত বাধ্য। গত বছর কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকে পুরো সময় থাকার বদলে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই রাজ্য সরকারের কর্মসূচিতে যোগ দিতে হয়েছিল তাঁকে। তাই আলাপনের এই ‘দুঃসময়’-এ তাঁর পাশে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারের সর্বোচ্চ মহল। তাই আইনি খরচের ভার বর্তেছে স্বরাষ্ট্র দফতরের উপরে। প্রবীণ আধিকারিকদের একাংশের মতে, আলাপন বর্তমানে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (এটিআই) কর্ণধার এবং মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য পরামর্শদাতা। ফলে রাজ্যের থেকে আইনি সুবিধা পেতেই পারেন।

তবে প্রবীণ আমলাদের অপর একটি অংশের মতে, রাজ্যের আবেদনের ভিত্তিতে আলাপনের চাকরিজীবনের মেয়াদ তিন মাস বাড়িয়েছিল কেন্দ্র। সেই সময়কালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার ‘অ্যাপয়েন্টমেন্টস কমিটি’ তাঁকে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরিতে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু চাকরিবৃদ্ধির সুযোগ না নিয়ে অবসরগ্রহণ করেছিলেন আলাপন। ফলে রাজ্যের থেকে আইনি সহায়তা পেতে পারেন না তিনি।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের মে মাসে প্রাকৃতিক বিপর্যয় 'ইয়াস' পরবর্তী পরিস্থিতির পর্যালোচনা বৈঠকে তৎকালীন মুখ্যসচিব আলাপন পুরো সময় থাকতে পারেননি। ওই দিনই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে হয়েছিল আলাপনকে। অবশ্য প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে আলাপনকে সঙ্গে নিয়েই নিজের কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেই কেন্দ্রের কোপে পড়েন আলাপন। সেই সময়ে মুখ্যসচিবের পদে থেকে চাকরির মেয়াদবৃদ্ধির সুবিধা না নিলেও আলাপনের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের প্রক্রিয়া শুরু করে কেন্দ্র। তা নিয়েই এত জটিলতা।