Love Brain | দিনে ১০০ বার প্রেমিককে ফোন! উত্তর না পেয়ে জিনিসপত্র ভাঙচুর করতেন তরুণী! হাসপাতালে নিয়ে যেতেই ধরা পরে 'ভালোবাসার পোকা বা 'লাভ ব্রেন'!

Sunday, April 28 2024, 1:42 pm
highlightKey Highlights

প্রেমিক কখন, কোথায়, কী করছেন, দিনে রাতে প্রতি মুহূর্তের আপডেট ফোন করে জানতে চাইতেন চীনা তরুণী। কোনওভাবেই প্রেমিকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারলে ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর করতেও শুরু করতেন ওই তরুণী। এমনকি একদিন নিজের বাড়ির ব্যালকনি থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করার হুমকিও দিতে থাকেন তিনি।


মোবাইল ফোন, সোশ্যাল মাধ্যম যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করার পাশাপাশি কাছে এনেছে পছন্দের মানুষকে। নাওয়া-খাওয়া যখন তখন প্রেমিক-প্রেমিকার সঙ্গে কথা বলা যাচ্ছে মুহূর্তের মধ্যেই। এমনকি দিনের প্রায় অধিকাংশ সময়ই যুগলের মধ্যে কথোপকথন হচ্ছে এমন দৃশ্যও দুর্লভ্য নয়। তবে সবকিছুরই সীমা রয়েছে। সীমাতীত কিছুই ভালো না। বেশি ভালোবাসাও ভালো না। মাথায় বাসা বাঁধতে পারে 'ভালোবাসার পোকা! ডাক্তারি পরিভাষায় যাকে বলে 'লাভ ব্রেন (Love Brain)'!

সম্প্রতি চিনে এই ব্যামোর শিকার হয়েছেন এক তরুণী! চিনের সংবাদমাধ্যম সাউথ চীনা মর্নিং পোস্ট (South China Morning Post) বা এসসিএমপি (SCMP) সূত্রে জানা যাচ্ছে, দিনে একশো বার প্রেমিককে ফোন করতেন ওই তরুনি। বিষয়টি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছতেই ওই তরুণীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন যে, ওই তরুণীর ‘লাভ ব্রেন’-র শিকার।
চিনের ১৮ বছর বয়সী এক মেয়ের 'লাভ ব্রেন (Love Brain)' ধরা পড়েছে। এটি প্রকাশ্যে আসে যখন তিনি প্রতিদিন কয়েকশ বার তার প্রেমিককে কল এবং মেসেজ পাঠাতেন। জিওয়াউ নামে ওই চিনা তরুণী দিনে একশো বার প্রেমিককে ফোন। সারাক্ষণ-ই নিজের প্রেমিককে পাশে পেতে চাইতেন তরুণী। প্রেমিক কখন, কোথায়, কী করছেন, দিনে রাতে প্রতি মুহূর্তের আপডেট ফোন করে জানতে চাইতেন জিওয়াউ। এমনকি প্রেমিক যদি মেসেজের উত্তর না দিত, তাহলে জিওয়াউ নামে ওই তরুণী তখন প্রেমিককে ভিডিয়ো কল করতে শুরু করত। শেষে যদি কোনওভাবেই প্রেমিকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারতেন, তাহলে ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর করতেও শুরু করতেন ওই তরুণী। এমনকি একদিন নিজের বাড়ির ব্যালকনি থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করার হুমকিও দিতে থাকেন জিওয়াউ। এই ঘটনার পর কার্যত ভয় পেয়ে পুলিশে খবর দেন যুবক।


চিনের সংবাদমাধ্যম সাউথ চীনা মর্নিং পোস্ট (South China Morning Post) বা এসসিএমপি (SCMP) সূত্রে খবর, জিয়াওউর সব সময় প্রয়োজন তার প্রেমিককে। তিনি তার মনোযোগ পেতে সব কিছু করতে প্রস্তুতও ছিলেন। জিয়াওয়ু তার প্রেমিককে দিনে ১০০ বারের বেশি ফোন করতেন। তার এই আচরনগুলি এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে সে রাগে ঘরের জিনিসপত্র ছুঁড়তে শুরু করে, এমনকি নিজের ক্ষতি করার হুমকি পর্যন্ত দেয়। এরপর বাড়িতে পুলিশ আসায় ব্যালকনি থেকে ঝাঁপ দেওয়ারও হুমকি দিয়েছিলেন জিওয়াউ। শেষ পর্যন্ত পুলিশকর্মীদের সাহায্যে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো সম্ভব হয়। চেংডুর চতুর্থ পিপলস হাসপাতালের ডাক্তার ডু না বলেছেন, চিকিৎসা পরিভাষায় বিশেষ ব্যবহৃত না হলেও প্রেমঘটিত সম্পর্কে এমন আসক্তিকে ‘লাভ ব্রেন’ বলা হয়ে থাকে। যা ‘বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার’-এর (Borderline Personality Disorder) একটি ধরন। চিকিৎসকের দাবি, জিওয়াউয়ের এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী তাঁর ছোটবেলার কোনও খারাপ অভিজ্ঞতা।


বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার হল একটি মানসিক ব্যাধি যা একজন ব্যক্তির নিজস্ব আবেগ পরিচালনা করার ক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে। মানসিক নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিসঅর্ডার আবেগপ্রবণতা বাড়াতে পারে, একজন ব্যক্তি কীভাবে নিজের সম্পর্কে অনুভব করে তা প্রভাবিত করতে পারে এবং অন্যদের সাথে তাদের সম্পর্ককে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। যদিও জিওয়াউয়ের অসুখের নির্দিষ্ট কারণ বলতে পারেন নি চিকিৎসকরা। তবে তাদের বক্তব্য, ছোটবেলার বাবা-মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক তেমন ভাল না হলে সাধারণত এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File