লাইফস্টাইল

Winter Indoor Plant | শীতে ঘর উষ্ণ ও দূষণমুক্ত রাখবে এই বিশেষ ইনডোর প্ল্যান্টগুলি! সঙ্গে জানুন কীভাবে শীতে গাছকে রাখবেন সবুজ ও স্বাস্থ্যকর?

Winter Indoor Plant | শীতে ঘর উষ্ণ ও দূষণমুক্ত রাখবে এই বিশেষ ইনডোর প্ল্যান্টগুলি! সঙ্গে জানুন কীভাবে শীতে গাছকে রাখবেন সবুজ ও স্বাস্থ্যকর?
Key Highlights

কিছু বিশেষ ইনডোর প্ল্যান্ট রয়েছে যা ঘরকেই উষ্ণ রাখার সঙ্গে সঙ্গে দূষণমুক্ত করে বাতাস। জেনে নিন এই তালিকায় রয়েছে কোন কোন গাছ। সঙ্গে জানুন শীতকালে কীভাবে গাছকে স্বাস্থ্যকর রাখবেন।

শহুরে দূষণ, চারিদিকে কংক্রিটের মাঝে চোখ খোঁজে সবুজ। পরিবেশ রক্ষার খাতিরে হোক কিংবা সবুজের প্রতি ভালোবাসা, বর্তমানে ইনডোর প্ল্যান্ট (Indoor Plants) কমবেশি দেখা যায় সকলের ঘরেই। ফুলের গাছ হোক কিংবা পাতা বাহারি অথবা মরশুমি গাছ, লিভিং রুমে ইনডোর প্ল্যান্ট (Living Room Indoor Plants) যেমন ঘরের পরিবেশ সুস্থ্য রাখে তেমনই ঘরের শোভা বাড়ায়। তবে এমন কিছু গাছ রয়েছে যা ভিন্ন মরশুমে ভিন্ন উপকার দেয়। গ্রীষ্মকাল, বর্ষাকালের মতো শীতকালেও এমন বিশেষ কিছু ইনডোর প্ল্যান্ট রয়েছে।

শীতকালের অন্দর সজ্জায় ইনডোর প্ল্যান্টের বিকল্প হয় না। তাছাড়া বিশেষ কিছু ইনডোর প্ল্যান্ট রয়েছে যা ঘরের আর্দ্রতার পরিমাণে ভারসাম্য রক্ষা করে ঘরকে প্রাকৃতিক ভাবে উষ্ণ রাখে। এই ধরনের বেশ কিছু ইনডোর প্ল্যান্ট আমাদের দেশের শীতকালীন আবহাওয়ার পক্ষে উপযুক্ত। দেখে নিন শীতকালে ঘরের উষ্ণ ও সুপরিবেশের জন্য ইনডোর প্ল্যান্ট।

গোল্ডেন হানি । Golden Honey :

 হলুদ আর সবুজের মিলিত রঙের পাতাবাহার গাছ গোল্ডেন হানি ঘরের বাতাসে টক্সিন দূর করে। খুব বেশি যত্নও পড়েনা এই গাছের জন্য। উল্লেখ্য, হলুদ আর সবুজের মিলমিশে এই পাতাবাহার গাছকে গুডলাক প্ল্যান্টও বলে।

অ্যাসপ্যারাগাস ফার্ন । Asparagus Fern :

লিভিং রুমে ইনডোর প্ল্যান্ট (Living Room Indoor Plants) হিসেবে এই গাছ বিশেষভাবে জনপ্রিয়। ঘরের জানালার ধারে এক কোণে হ্যাঙ্গিং টবে সাজিয়ে রাখা যায় এই বিশেষ ফার্ন গাছ। জানলা না হলে এই গাছ রাখতে পারেন ব্যালকনিতেও। পিট মস মাটি এই গাছের জন্য উপযুক্ত কারণ এই মাটি জল ধরে রাখতে সাহায্য করে। বোস্টন ফার্নও শীতকালীন আবহাওয়ায় উপযুক্ত। তবে খেয়াল রাখতে হবে মাটি যাতে কোন ভাবেই শুকিয়ে না যায়।

পাম গাছ । Palm Tree :

অন্দর সজ্জা পাম গাছের চল বহুদিন ধরেই জনপ্রিয়। এই গাছ কাঠের আসবাবে ব্যবহূত আঠা থেকে নির্গত টক্সিন বা সিগারেটের ক্ষতিকর ধোঁয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। ফলে বুঝতেই পারছেন বায়ুকে দূষণ মুক্ত রাখতে এই গাছের ভূমিকা কতটা।

অ্যাকালিকা হিসপিডা ।  Acalypha Hispida :

ঘন সবুজ রঙের পাতার মধ্যে উঁকি মারছে লাল টকটকে ফুল। সারাবছরই এই গাছ পাওয়া যায়। তবে এর উজ্জ্বল লাল রঙ শীতের রুক্ষ পরিবেশে আলাদা মাত্রা আনে অন্দর সজ্জায়। বেলে মাটি এই গাছের জন্য আদর্শ।

জারবেরা । Gerbera :

উজ্জ্বল লাল রঙের এই ফুলের এই গাছ শোয়ার ঘরে রাখার জন্য জনপ্রিয়। শহরের দমবন্ধ পরিবেশে ভরপুর অক্সিজেনের কারখানা এই গাছ। কেবল দিনেই নয়, রাতেও এই গাছ অক্সিজেন মুক্ত করে। জানলার কাছে যেখানে সহজেই আলো পাবে এমন জায়গায় এই গাছ রাখলে ভালো।

স্নেক প্ল্যান্ট । Snake Plant :

স্নেক প্ল্যান্ট একধরণের পাতাবাহার গাছ। এই গাছ আবার জারবেরার এক ধাপ ওপরে। এই গাছ রাতে অক্সিজেন ছাডে় তো বটেই সঙ্গে বাতাসে নাইট্রোজেনও অক্সাইড শুষে নেয়। এই গাছের খুব বেশি যত্নের প্রয়োজন নেই। অ্যালোভেরা- ভেষজ গুণে সমৃদ্ধ এই গাছটি বাডি়র অন্দরেও দূষণ মুক্ত পরিবেশ পাওয়ার জন্য রাখা যায়। তবে সরাসরি সূর্যের আলো যাতে এই গাছ না পায় তার খেয়াল রাখতে হবে।

পিস লিলি । Peace Lily :

ঘরে যদি বাইরের আলো বাতাস ঢোকার সুযোগ তেমন না থাকে তবে এই গাছটি ঘরে অক্সিজেন ও আর্দ্রতার ভারসাম্য রক্ষা করে। অল্প আলোতেও এই গাছ অনেকদিন বাঁচে। তবে গাছের মাটি যেন শুকিয়ে না যায়  সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

শীতকালে ইনডোর প্ল্যান্টের সার । Indoor Plant Fertilizer in Winter :

গ্রীষ্ম ঋতুর তুলনায়, শীতকালে গাছপালাদের একটু বেশি যত্ন নিতে হয়। কারণ শুষ্কতার মরশুমে অনেক সময় ক্রমবর্ধমান ঠাণ্ডা ও কুয়াশার কারণে অনেক গাছপালা মারা যায়। ফলে এই সময়ে গাছের দরকার সঠিক পরিমাণে পুষ্টি সরবরাহ। এমন পরিস্থিতিতে, নির্দিষ্ট ধরণের কিছু বিশেষ সার ব্যবহার করেই আপনার প্রিয় গাছগুলিকে সবুজ এবং স্বাস্থ্যকর রাখতে পারেন। দেখে নিন শীতকালে পুষ্টিকর ইনডোর প্ল্যান্টের সার (Indoor Plant Fertilizer)।

  • ভার্মি কম্পোস্ট সার সব ধরনের গাছপালার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। তবে ফুল ও ফল গাছের জন্য বেশি উপকারী হয়। ভার্মি কম্পোস্ট নিরাপদে গাছের পুষ্টি জোগায় এবং শীত মরশুমে গাছের সঠিক বৃদ্ধি করে। এটি জীবাণুমুক্ত সার যা উদ্ভিদের জন্য বেশি উপকারী।
  • কাঠের কম্পোস্ট গাছের জন্য কাঠের সার অনেক ভাল কাজ করে। এটি মাটির পিএইচ মাত্রা বাড়িয়ে মাটিতে পুষ্টি জোগায়। এটি গাছের বৃদ্ধিও বাড়াতে সাহায্য করে। তবে এই সার ব্যবহারে সতর্ক হওয়া জরুরি। উদ্ভিদে অল্প পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত এই সার।
  • জৈব সার শীতকালে জৈব খাবার দিয়ে উদ্ভিদকে পুষ্ট করা গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্য সামগ্রীতে গোবর, নারকেল সার, রান্নাঘরের বর্জ্য থেকে তৈরি কম্পোস্ট, শেওলা সারের মধ্যে দিতে পারেন।
  • যদি ফল ধারণকারী গাছগুলি শীতকালে বৃদ্ধি না পায় বা ফুল না দেয় তবে সর্ষে মণ্ড দিয়ে কম্পোস্ট ব্যবহার করতে পারেন। এই সার গাছের বৃদ্ধি বাড়ায়। এছাড়াও পোকমাকড় এবং রোগ থেকে গাছপালাকে রক্ষা করে।
  • পটাশ হল কমলা রঙের সার যা গাছের বৃদ্ধি বাড়ায়। আপনার ইনডোর প্ল্যান্ট (Indoor Plants) যদি কোনও কারণে বৃদ্ধি না পায় বা কোনও কারণে মরে যায়, তাহলে তাতে এই সার ব্যবহার করতে হবে। গাছ মৃত সঞ্জীবনীর মতো কাজ করে এই কম্পোস্ট।
  • নিম মণ্ড হলো সবচেয়ে সহজলভ্য সার। এটি মাটিতে জন্মানো ছত্রাকও দূর করে। গাছ লাগানোর সময় নিম মণ্ড মাটিতে লাগানো হয়। এ কারণে কোনও রোগ ছাড়াই গাছপালা বেড়ে ওঠে।
  • এপসম লবণ গাছের বৃদ্ধির জন্য সর্বোত্তম সার। এই সার গাছকে ঘন করতে সাহায্য করে। যদি আপনার গাছপালাকে সবুজ ও ঘন করতে চান তাহলে এই সার খুবই উপকারী।

উল্লেখ্য, গাছে সার প্রয়োগ করার আগে এই বিষয়ে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। যেমন-সারের পরিমাণশীতকালে গাছের সঠিক পুষ্টির জন্য সঠিক পরিমাণে সার প্রয়োগ করা জরুরি। এ জন্য গাছ অনুযায়ী সার ব্যবহার করতে হবে। যে কোনও সার গাছের গোড়ায় দিয়ে দিলেই গাছ তরতরিয়ে বাড়বে তা কিন্তু নয়। এক এক ধরণের সার এক এক কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়।