লাইফস্টাইল

Detoxing Drink | শরীর সুস্থ রাখতে করুন ডিটক্সিফিকেশন, বাড়িতেই বানান ডিটক্স ড্রিংক!

Detoxing Drink | শরীর সুস্থ রাখতে করুন ডিটক্সিফিকেশন, বাড়িতেই বানান ডিটক্স ড্রিংক!
Key Highlights

শরীর থেকে বের করুন টক্সিন। ডিটক্সিফিকেশন জন্য বাড়িতে বানিয়ে খান ডিটক্স ড্রিংক।

বর্তমান প্রযুক্তির যুগে আমরা প্রায় দিনই এমন অনেক খাবার খাই যার থেকে আমাদের শরীরে অনেক বিষাক্ত পদার্থ প্রবেশ করে, যা কিডনি, ফুসফুস, লিভারের মতো অঙ্গকে ক্ষতি করার সঙ্গে দূষিত করে শরীরের রক্ত। ফলে এই বিষাক্ত পদার্থ শরীর থেকে বের করতে এবং শরীরের রক্ত পরিষ্কার করতে প্রয়োজন ডিটক্সিফিকেশন (Detoxification)-এর। ডিটক্সিফিকেশন বা ডিটক্সিকেশন, সংক্ষেপে ডিটক্স (Detox)  হল প্রধানত লিভার দ্বারা সঞ্চালিত মানবদেহে থাকা বিষাক্ত পদার্থের শারীরবৃত্তীয় বা ঔষধি অপসারণ। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কিডনি, অন্ত্র, ফুসফুস, লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম এবং ত্বকের দ্বারা বিষাক্ত পদার্থগুলি নির্মূল করা হয়।

শরীর ডিটক্স করার জন্য অনেকেই অনেক রকম পানীয় খেয়ে থাকেন। ডিটক্স ড্রিংকস (Detox Drinks) শরীরের বিষাক্ত পদার্থগুলিকে বের করে রক্ত পরিশুদ্ধ করে। এছাড়াও এই ধরণের পানীয় লিভার, কিডনির মতো অঙ্গগুলিকে ভালো রাখে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাড়িতে থাকা ফল, সবজি দিয়ে সহজেই বানানো যায় ডিটক্স পানীয়, যা শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ভালো। দেখে নিন কীভাবে বাড়িতে বানাবেন ডিটক্স ড্রিংকস।

১. কমলা-গাজর আদা ডিটক্স ড্রিংক | Orange-Carrot Ginger Detox Drink :

কমলা লেবুতে ভরপুর পরিমাণে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (Antioxidants) এবং ভিটামিন সি (vitamin C)। আর এদিকে গাজরে রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন (beta-carotene) এবং ফাইবার (fiber), যা সাহায্য করে ওজন কমাতে। অন্যদিকে, হজমের সমস্যা, পেটার ফোলাভাব ও ব্যথা কমায় অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি (anti-inflammatory)-র বৈশিষ্ট যুক্ত আদা। এই তিন উপাদান দিয়ে তৈরী পানীয় শরীর থেকে টক্সিন দূর করে শরীরকে সুস্থ রাখতে চমৎকার কাজ করে। দেখুন কীভাবে বানাবেন এই পানীয়-

  • প্রথমে কমলা এবং গাজরের আলাদাভাবে রস তৈরী করুন।
  • এরপর একটি ব্লেন্ডারে রস দুটি ঢেলে সামান্য হলুদ এবং আদা দিয়ে দিন।
  • পরের পর্যায়ে, ৩০ সেকেন্ডের জন্য মিশ্রণটি ব্লেন্ড করে অর্ধেক লেবু চিপে দিলেই তৈরী কমলা-গাজর আদা ডিটক্স ড্রিংক।

২. শসা পুদিনা ডিটক্স ড্রিংক | Cucumber Mint Detox Drink :

এই ডিটক্স ড্রিংক গরমকালের জন্য খুবই ভালো। শরীর ডিটক্স করার সঙ্গে সঙ্গে গরমকালে শরীর রাখবে ঠান্ডাও। পুদিনা পাকস্থলীর মাধ্যমে পিত্ত প্রবাহকেও উন্নত করে যা হজম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-সমৃদ্ধ শসা এবং লেবুর সাথে মিলিত এই পানীয় বানাতে আপনার প্রয়োজন ১ টি শসা ও ৮ থেকে ১০ টি পুদিনা পাতা, ২ চামচ লেবুর রস, বেশ কিছু বরফের টুকরো ও ঠান্ডা জল।

  • এই পানীয় বানাতে প্রথমে শসা, পুদিনা পাতা নিয়ে ১ কাকপ জলের সঙ্গে ব্লেন্ড করুন।
  • মিশ্রণটি ব্লেন্ড হয়ে গেলে সেটি ছেঁকে নিন।
  • এরপর তাতে প্রয়োজন মত মেশান লেবুর রস, কালো লবণ।
  • এরপর পানীয়টি একটি গ্লাসে ঢেলে কিছু বরফের টুকরো দিয়ে পুদিনা পাতা ও লেবুর রিং দিয়ে সাজিয়ে নিন, তৈরী আপনার শসা পুদিনা ডিটক্স ড্রিংক।

৩. ডালিম ও বীটরুটের ডিটক্স ড্রিংক | Pomegranate and Beetroot Detox Drink :

শরীর ডিটক্স করতে ডালিম এবং বীটরুটের গুণের গুরুত্ব অপরিসীম। এই পানীয়তে যদি তাজা অ্যালোভেরা  জেল (aloe vera gel) দেন তাহলে এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যাবে আরও।

  •  ডালিমের ও বীটরুটের ডিটক্স ড্রিংক বানাতে প্রথমে একটি ধারালো ছুরি নিয়ে অ্যালোভেরা গাছ থেকে পাতা কেটে  নীচের থকথকে স্তরটি তুলে নিন । খেয়াল রাখবেন যাতে আপনার কাছে ২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল  থাকে।
  • এরপর একটি ব্লেন্ডারে ডালিমের রস, কাটা বিটরুট দিয়ে ব্লেন্ড করেনিন।
  • মিশ্রণটিতে মিশিয়ে নিন অ্যালোভেরা জেল।
  • পানীয়টি পুরো ব্লেন্ড করা হয়ে গেলে প্রয়োজন মতো কালো মরিচ মিশিয়ে পরিবেশন করুন।

৪. আম পান্না | Mango Panna :

গরমকাল এলেই সবার ঘরে ঘরে আম। আর এই গরমে আম পান্নার থেকে ভালো পানীয় আর কী হয়। এই পানীয় খেতে যেমন ভালো তেমনই শরীর ডিটক্স করার সঙ্গে সঙ্গে যোগায় শক্তিও। এই পানীয় বানাতে প্রয়োজন, ৫০০ গ্রাম সবুজ আম,১/২ কাপ চিনি, ২ টেবিল চামচ লবণ ও ভাজা-গুঁড়া জিরা, ২ কাপ জল এবং ২ টেবিল চামচ সূক্ষ্মভাবে কাটা পুদিনা পাতা।

  • আম পান্না বানাতে প্রথমে, আম সিদ্ধ করুন। যতক্ষণ না সেটি ভিতর থেকে নরম হয়ে যায়।
  • এরপর আমটিকে ঠান্ডা করে খোসা ছাড়িয়ে নিন।
  • পরবর্তী পর্যায়ে সব উপাদান ২ কাপ জলের সঙ্গে মেশালেই তৈরী আম পান্না।

আপনার যদি হজমের সমস্যা, দুর্বলতা, ফোলাভাব, বমি বমি ভাব, এবং ত্বকের সমস্যা থাকে তবে ডিটক্স পানীয় আপনাকে করতে পারে সাহায্য। ডিটক্সিং শরীর থেকে টক্সিন (Toxin) বের করার সঙ্গে আপনার শরীরকেও রাখে সুস্থ।  এই ধরণের পানীয়গুলি শক্তি বৃদ্ধিতে, লিভার পরিষ্কার করতে, ওজন কমাতে সাহায্য করার পাশাপাশি প্রদাহ কমাতে এবং ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতেও প্রশংসনীয়ভাবে কাজ করে ।