লাইফস্টাইল

নিত্য প্রয়োজনীয় বস্তু কাগজের ইতিহাস জানুন

নিত্য প্রয়োজনীয় বস্তু কাগজের ইতিহাস জানুন
Key Highlights

মানুষের দৈনন্দিন জীবনে যে কয়েকটি জরুরী জিনিসের প্রয়োজন হয়, তার মধ্যে অন্যতম হল কাগজ। এই অত্যাবশ্যক এবং বহুমুখী উপাদানটি কোথা থেকে এসেছে, চলুন তা জেনে নেওয়া যাক।

কাগজ হল মানুষের দৈনন্দিন জীবনে একটি অন্যতম প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। বর্তমান সময়কালে কাগজবিহীন জীবনের কল্পনা করা প্রায় অসম্ভব। বর্তমানে আমরা অধিকাংশ কাজ ডিজিটাল মাধ্যমে করলেও আমাদের চারপাশে রয়েছে কাগজ এবং এর ব্যবহারিক গুরুত্ব অতীতের চেয়ে কোন অংশে কম নয়।

সকালে ঘুম থেকে উঠে আমাদের অতিপ্রয়োজনীয় প্রাতঃরাশ সারা থেকে শুরু করে খবরের কাগজ, শপিং ব্যাগ, টাকার নোট, স্টোর রসিদ, সিরিয়াল বাক্স এবং টয়লেট পেপার সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে কাগজের ব্যাবহার অনস্বীকার্য। আমরা প্রতিদিন নানাভাবে কাগজকে ব্যবহার করে থাকি।  কিন্তু আপনি কি জানেন এই অপূর্ব বহুমুখী উপাদানটি কোথা থেকে এসেছে? চলুন জেনে নেওয়া যাক তার উত্তর।

কাগজের আবিষ্কারক | Inventor of paper:

প্রাচীন চীনা ইতিহাসের তত্ব অনুযায়ী, সিস লুন (বা কাই লুন) নামে এক নপুংসক/খোজা সর্ব প্রথম ১০৫ খ্রিস্টাব্দে কাগজ আবিষ্কার করেন। তিনি চীনের অধিবাসী ছিলেন।

কাগজের আবিষ্কার | The invention of paper:

প্রাচীন চীনা ইতিহাস থেকে জানা গেছে, কাই লুন তৎকালীন হান রাজবংশের সম্রাট হেইদির নিকট তাঁর আবিষ্কৃত কাগজটি উপস্থাপন করেছিলেন । তবে পশ্চিম চীন এবং তিব্বতের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন থেকে বোঝা যায় যে কাগজের আবিষ্কার বহু শতাব্দী আগেই হয়েছিল। চীনের প্রাচীন সিল্ক রোড শহরগুলির অন্যতম দুনুয়াং, খোতান এবং তিব্বতে খ্রিস্টপূর্ব ২০০ সালের দিকে এ কাগজ আবিষ্কার হয়েছিল। এই জায়গাগুলির শুষ্ক জলবায়ু প্রথম আবিষ্কৃত এ কাগজকে পুরোপুরিভাবে পচন থেকে রক্ষা করেছিল এবং এটি প্রায় ২ হাজার বছর অবধি ভালভাবেই সংরক্ষিত ছিল। ইতিহাসবিদদের ধারণা অনুযায়ী, সে সময় প্রাচীন সিল্ক রোড এলাকায় তারা শুধুমাত্র কাগজ নন, কাগজের পাশাপাশি কালিরও আবিষ্কার করেছিলেন।

চীনের প্রথম কাগজ তৈরি | China's first paper made:

কাগজ প্রস্তুতের ক্ষেত্রে চীনের প্রাথমিক কাগজ প্রস্তুতকারীরা এক প্রকার শন জাতীয় উদ্ভিদ (হেম ফাইবার)-এর ব্যবহার করত, যা জলে ভিজিয়ে রাখা হত এবং কাঠের একটি বড় টুকরোর সাহায্যে তা ডুবিয়ে রাখা হতো। ফলস্বরূপ, এটি পাতলা তরলে রূপান্তরিত হলে সেটা একটি সমান্তরাল বাঁশের সাঁচে ঢেলে দেয়া হত। এরপর বাঁশের কাঠামোর উপরে শুকিয়ে যাওয়া সেই তরলটি প্রাথমিকভাবে আলগা বোনা কাপড়টি ফাইবারের কাগজে রুপ নিত। এভাবেই মূলত কাগজ তৈরির প্রক্রিয়াটি করা হতো।

যুগের সাথে, নয়া প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে, কাগজ প্রস্তুতকারীরা তাদের কাজের ক্ষেত্রে কিছু নতুনত্ব আনার চেষ্টা করেছে। তারা এসময় কাগজ প্রস্তুতির ক্ষেত্রে বাঁশ, তুঁত এবং বিভিন্ন ধরণের গাছের ছাল সহ অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করা শুরু করে।

সরকারী রেকর্ড সংরক্ষণের জন্য কাগজ প্রস্তুতকারীরা একটি হলুদ পদার্থ কাগজ তৈরির ক্ষেত্রে ব্যাবহার করতো যা কাগজকে ভিন্ন রঙ দিত, এই ইম্পেরিয়াল রঙের কাগজ অনেকদিন দীর্ঘস্থায়ী হতো এবং এতেকরে কাগজকে পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য অতিরিক্ত সুবিধা পাওয়া যেত।

ভারতের প্রথম পেপার মিল | India's first paper mill:

সপ্তম শতাব্দীর দিকে ভারতের প্রথম কাগজ তৈরি হলেও এর চাহিদা বাড়তে শুরু করেছিল দ্বাদশ শতাব্দীতে। ১৮১২ সালে ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গের শ্রীরামপুরে প্রথম পেপার মিল তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় কাগজের চাহিদাগত সমস্যার কারণে সেটি বন্ধ হয়েছিল। এরপর ফের ১৮৭০ সালে নতুন করে কলকাতার নিকটে বালিগঞ্জে কাগজের মিল তৈরি করা হয়। বর্তমানে ভারতের প্রধান কাগজ উৎপাদনকারী রাজ্য হিসেবে পশ্চিমবঙ্গকে গণ্য করা হয়। ভারতের প্রথম কাগজের মিলটি হল ১০০ বছর পুরনো।

১৬৯০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়াতে কাগজ নির্মাণের কাজ শুরু হয় । ১৮৩০ সালে চার্লস ফেনেরটি এবং ফ্রেডরিক গোটলব কেলার কাগজ তৈরির জন্য নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করেন। তারা এমন একটি যন্ত্র তৈরি করেছিলেন যার মধ্যে কাঠ থেকে তন্তু আলাদা করা যেত এবং সেই তন্তু দিয়ে কাগজ তৈরি করতেন। তন্তু শুদ্ধিকরণ করে চার্লস ফেনেরটি সাদা কাগজ নির্মাণের পদ্ধতি বের করেন। বর্তমানে কাগজের গুণগতমান অনেকটাই উন্নত হয়েছে এবং পাশাপাশি বেশ সস্তা হয়েছে।

কাগজের প্রসার | Paper spread:

চীনে প্রস্তুতকৃত কাগজের প্রচলন পরবর্তীতে বেশ প্রসার লাভ করে এবং কাগজ তৈরির ধারণা, প্রযুক্তি সমগ্র এশিয়া জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। খ্রিস্টীয় ৫০০ এর দশকে কোরিয়ান উপদ্বীপের কারিগররা চীনা কাগজ প্রস্তুতকারীদের মতো একই ধরণের উপকরণ ব্যবহার করে কাগজ তৈরি শুরু করেছিল। কোরিয়ানরাও কাগজ তৈরির ক্ষেত্রে ধানের খড় এবং সামুদ্রিক শৈবাল ব্যবহার করত।

এক কোরিয়ান বৌদ্ধ ভিক্ষু ডন-চ, জাপানের সম্রাট কোটোকুর দরবারে ৬১০ সালের দিকে কাগজকে পরিচিত করেছিলেন। এভাবে কাগজ তৈরির প্রযুক্তি, তিব্বতের পশ্চিমে এবং পরে দক্ষিণে ভারতে ছড়িয়ে পড়েছিল। ১২৩৪ খ্রিস্টাব্দে কাগজ তৈরির ধাতব যন্ত্রটির আবিষ্কারও হয়েছিল এই উপদ্বীপে। 

প্রশ্নোত্তর - Frequently Asked Questions

কোন দেশে প্রথম কাগজ তৈরি হয়?

চীন দেশ।

কাগজের আবিষ্কারক কে ছিলেন?

কাগজের আবিষ্কারকের নাম হল কাই লুন। তিনি চীনের অধিবাসী ছিলেন।

কবে কাগজ আবিষ্কার হয়?

১০৫ খ্রিস্টাব্দে কাগজ আবিষ্কার হয়।

ভারতবর্ষে প্রথম পেপার মিল কবে তৈরি হয়েছিল?

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শ্রীরামপুরে ১৮১২ সালে প্রথম পেপার মিল তৈরি করা হয়েছিল।


Frozen Shoulder | ঘণ্টার পর ঘণ্টা অফিসে বসে কাজ করার ফলে কাঁধের ব্যথা পরিণত হতে পারে ফ্রোজেন শোল্ডারের সমস্যায়! দ্রুত উপশম পেতে করুন এই ৫টি ব্যায়াম!
Largest Airport | প্রায় ২.৯ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করে বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবন্দর বানাবে দুবাই! ভারতের বৃহত্তম বিমানবন্দর কোনগুলি জানেন?
Short Trip in West Bengal | পকেটে কম চাপ দিয়ে কমদিনেই ঘুরে আসতে পারেন এইসব জায়গায়! পাহাড় থেকে সমুদ্র, সেরা অফবিট ডেস্টিনেশনের খোঁজ থাকলো এখানে!
আজকের সেরা খবর | কলকাতায় সর্বকালীন রেকর্ড গরম ৪৩ ডিগ্রি! পশ্চিমবঙ্গ-সহ ৪ রাজ্যে দু’তিন চূড়ান্ত সতর্কতা! এরই মাঝে বৃষ্টির আশ্বাস দিলো হাওয়া অফিস!
অপরাজেয় সুভাষচন্দ্র বসুর জীবনী | Biography of Subhas Chandra Bose, Indian Nationalist Leader in bengali
১০০ টি দারুন সব আজব ফ্যাক্ট | Unique & Interesting Facts in Bangla
স্বনামধন্য লেখিকা লীলা মজুমদারের জীবনী | Biography of Leela Majumdar