Navratri 2023 | নবরাত্রির চতুর্থ দিনে পূজিত হন দেবী কুষ্মাণ্ডা! জানুন দেবীর এই সর্ব দুঃখহরণকারী রূপ সম্পর্কে বিশদে!

Thursday, October 19 2023, 12:27 pm
highlightKey Highlights

২০২৩ দূর্গা পুজোর দিনক্ষণ অনুযায়ী আজ চতুর্থী। নবরাত্রি ২০২৩ চতুর্থীর দিন পুজো করা হয় দেবীর কুষ্মাণ্ডা রূপ। মনে করা হয় দেবীর এই রূপ সব দুঃখ দূর করেন।


শুরু হয়েছে ২০২৩ দূর্গা পুজো (2023 Durga Puja)। আজ, ১৮ই অক্টোবর, বুধবার চতুর্থী। মহালয়ায় পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে দেবীপক্ষের সূচনা হয়। প্রতিপদ থেকে শুরু হয় নবরাত্রি উৎসব। মহালয়ার পরের দিন অর্থাৎ প্রথমা থেকে ৯ দিন দেবী দুর্গা নানারূপে পূজিত হন। একেক দিনের পুজো পদ্ধতি ও মাহাত্ম্য একেকরকম। চতুর্থীর দিন দেবীকে কুষ্মাণ্ডা নামে পুজো করা হয়। বিশ্বাস, এই দিন দেবী দুর্গা বিশ্বের স্রষ্টার রূপ গ্রহণ করেন।

 চতুর্থীর দিন পুজো করা হয় দেবীর কুষ্মাণ্ডা রূপ
 চতুর্থীর দিন পুজো করা হয় দেবীর কুষ্মাণ্ডা রূপ

দেবী কুষ্মাণ্ডা (Kushmanda) সিংহের উপর অধিষ্ঠিত। দেবীর এই রূপে দশ নয়, আট হাতের অধিকারী। দেবীকে বলা হয়, আদিশক্তি বা আদিস্বরূপ। গৌরবর্ণা দেবীর অঙ্গে অঙ্গে তাই সূর্যের মতো ছটা। তিনি সর্ব দুঃখহরণকারী। বিশ্বাস করা হয়,  মা ব্যাধি থেকে মুক্ত করে ভক্তদের ইহলৌকিক পরলৌকিক সমৃদ্ধি দেন। নবরাত্রির চতুর্থ দিনে মা কুষ্মাণ্ডার পুজো করা হয়। মা দুর্গার সমস্ত রূপের মধ্যে মা কুষ্মাণ্ডার রূপকে সবচেয়ে উগ্র বলে মনে করা হয়। পৌরাণিক বিশ্বাস অনুসারে, সমগ্র পৃথিবী যখন অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল, তখন মা কুষ্মাণ্ডা তার মিষ্টি হাসি দিয়ে বিশ্ব সৃষ্টি করেছিলেন। এছাড়াও বিশ্বাস করা হয় যে কুষ্মাণ্ডা মার পুজো করলে বুদ্ধি বাড়ে।

 দুঃখহরণকারী দূর্গা মায়ের দেবী কুষ্মাণ্ডা রূপ
 দুঃখহরণকারী দূর্গা মায়ের দেবী কুষ্মাণ্ডা রূপ

নবরাত্রি ২০২৩-তে মা কুষ্মাণ্ডার পুজো পদ্ধতি । Maa Kushmanda Puja Method in Navratri 2023 :

 শাস্ত্রমতে আনুষ্ঠানিকভাবে দেবী কুষ্মাণ্ডাকে পুজো করার পর, তার আরতি করে পুজো শেষ করা উচিত। শারদীয়া নবরাত্রির চতুর্থ দিনে কুষ্মাণ্ডা দেবীর পুজো করা হয়। দেবীর এই রূপকে পুজো করার সময় হলুদ রঙের পোশাক পরিধান করা উচিত। পাশাপাশি পুজোর সময় দেবীকে শুধু হলুদ চন্দন লাহান উচিত। এরপরে নিবেদন করতে হবে কুমকুম, মৌলি, গোটা চাল। এরপর একটি পানের উপর সামান্য জাফরান নিয়ে 'ওম ব্রীম বৃহস্পতে নমঃ' মন্ত্রটি জপ করে দেবীকে অর্পণ করতে হবে। এরপর ওম কুষ্মাণ্ডায় নমঃ মন্ত্রের একমালা জপ করুন এবং দুর্গা সপ্তশতী বা সিদ্ধ কুঞ্জিকা স্তোত্র পাঠ করুন।

শাস্ত্রমতে মা কুষ্মাণ্ডা হলুদ রং খুব পছন্দ করেন। ফলে এই দিনে দেবীকে পুজো করার সময় হলুদ বস্ত্র, হলুদ চুড়ি এবং হলুদ মিষ্টি নিবেদন করুন। দেবী কুষ্মাণ্ডা হলুদ পদ্ম পছন্দ করেন। এটা বিশ্বাস করা হয় যে এটি দেবীকে নিবেদন করলে, ব্যক্তি সুস্বাস্থ্যের আশীর্বাদ লাভ করবেন। পাশাপাশি, দেবীর এই রূপের পুজোতে ভোগ হিসেবে নিবেদন করুন মালপোয়া। বিশ্বাস করা হয়, এতে বুদ্ধিমত্তা, খ্যাতি ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। মালপোয়া নিবেদনের পর নিজে খাবেন এবং ব্রাহ্মণকেও দেবেন।

মা কুষ্মাণ্ডা মন্ত্র: ওম জয়ন্তী মঙ্গলা কালী ভদ্রকালী কপালিনী। দুর্গা ক্ষমা শিবা ধাত্রী স্বাহা স্বধা নমোস্তুতে। অথবা দেবী সর্বভূতেষু মা কুষ্মাণ্ডা, নমস্তেষ্যয়ে নমস্তেষ্যয়ে নমস্তেষ্যয়ে নমো নমঃ।

শাস্ত্রমতে, জগজ্জননীর পূর্ণ প্রকাশ দেবী কুষ্মাণ্ডার মধ্যে। সমগ্র ব্রহ্মাণ্ডের জননী মনে করা হয় দেবী কুষ্মাণ্ডাকে। মানা হয়, সন্তানকে রক্ষা করেন সমগ্র জাগতিক কষ্ট থেকে মুক্ত করেন দেবীর এই রূপ। দেবীর নামের অর্থটি খুব সুন্দর। কুষ্মাণ্ডার ‘উষ্মা' শব্দের মানে তাপ এবং ‘কু' মানে কুৎসিত-কষ্টদায়ক তাপ হচ্ছে 'ত্রিতাপ'। এই ত্ৰিতাপ ‘কুষ্মা' যিনি উদরে ধারণ করেন বা জীবের সকল প্রকার রোগ, জ্বালা, ব্যধী গ্রাস করেন, তিনিই দেবী কুষ্মাণ্ডা। দেবী অষ্টভূজা। দেবীর ডান দিকের চার হাতে থাকে পদ্ম, বান, ধনুক ও কমণ্ডলু এবং বাঁদিকের চার হাতে থাকে চক্র, গদা, অমৃতপূর্ণ কলস জপমালা।

সমগ্র ব্রহ্মাণ্ডের জননী মনে করা হয় দেবী কুষ্মাণ্ডাকে
সমগ্র ব্রহ্মাণ্ডের জননী মনে করা হয় দেবী কুষ্মাণ্ডাকে

 উল্লেখ্য, কাশীতে দেবী কুষ্মাণ্ডার মন্দির বিখ্যাত। কাশীতে তিনি দুর্গা নামেই সমধিক পরিচিত। তিনি কাশীর দক্ষিণ দিকের রক্ষয়িত্রী। কাশীতে অসি নদীর সঙ্গমস্থলে কুষ্মাণ্ডার অধিষ্ঠান রয়েছে। দেবীর মন্দিরটি বেশ বড়ো ও বহুচূড়াবিশিষ্ট। লাল পাথরের তৈরি সুদৃশ্য এই মন্দিরের কাছেই কাশীর বিখ্যাত তীর্থ দুর্গাকুণ্ড। হিন্দুধর্মে অবিশ্বাসীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ এই মন্দিরে। মূল মন্দিরের গর্ভগৃহে দেবী কুষ্মাণ্ডার পশ্চিমমুখী দুই হাত উঁচু বিগ্রহটি অবস্থিত। নবরাত্রির চতুর্থীর দিন অর্থাৎ নবরাত্রি ২০২৩ (Navratri 2023) এর চতুর্থ দিনে ইতিমধ্যেই কাশীর এই মন্দিরে ভক্তদের বিশাল ভিড় হয়েছেন। নবরাত্রি ২০২৩ (Navratri 2023) উপলক্ষ্যে প্রত্যেক নয় দিনই এই মন্দিরে প্রচুর ভক্তসমাগম।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File