2023 Durga Puja | মহাষষ্ঠীতে নীলপদ্ম নিবেদন করে দেবীর নিদ্রাভঙ্গ করেন রাম! জানুন দেবীর বোধনের তাৎপর্য!
২০২৩ দূর্গা পূজাতে মহালয়া থেকেই দুর্গা পূজা প্যান্ডেল হপিং শুরু হলেও দুর্গা পূজা উদযাপন শুরু হয় মহাষষ্ঠী থেকে। বোধন দ্বারা জাগরিত করা হয় দেবীকে।
গোটা বছরের প্রতীক্ষার অবসান। আজ, ২০ই অক্টোবর, শুক্রবার মহাষষ্ঠীতে মহা ধূমধামের সঙ্গে শুরু হয়ে গেল ২০২৩ দূর্গা পূজা (2023 Durga Puja)। মহালয়া থেকেই উত্সবের আবহ শুরু হলেও খাতায় কলমে আজকের দিনে অর্থাৎ মহাষষ্ঠী ও নবরাত্রি ২০২৩ (Navratri 2023) এর ষষ্ঠ দিন দেবীর বোধনের মধ্যে দিয়ে শুরু এই বছরের দুর্গা আরাধনা। দেবীর বোধন দ্বারাই দেবীকে ঘুম থেকে জাগরিত করা হয়। আসুন জেনে নেওয়া যাক দুর্গা পূজা উদযাপন (Durga Puja Celebration) এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়, দেবীর বোধনের মাহাত্ম।
পুরাণ অনুসারে, পৃথিবীর এক বছর হচ্ছে স্বর্গের এক দিনের সমান। সূর্যের উত্তরায়ন হচ্ছে দেবতাদের দিন, আর দক্ষিণায়ন হচ্ছে দেবতাদের রাত্রিকাল। বিষুবরেখা থেকে সূর্য যখন ক্রমশ উত্তরে গমন করে তখন সেটি হল সূর্যের উত্তরায়ন। ছয় মাস ধরে চলে সূর্যের উত্তরায়ন ও ছয় মাস চলে দক্ষিণায়ন। বিষুবরেখা থেকে সূর্যের ক্রমশ দক্ষিণ দিকে যখন গমন করে তখন সেটি হল সূর্যের দক্ষিণায়ন। মনে করা হয়, দিনের বেলায় অর্থাৎ সূর্যের উত্তরায়নের সময় জাগ্রত থাকেন দেবতারা। তাই শাস্ত্রে এই সময়ই দেবতাদের পুজো করা বিধান রয়েছে। অন্যদিকে সূর্যের দক্ষিণায়ন হল দেবতাদের রাত। এই সময় দেবতারা নিদ্রায় থাকেন। সূর্যের এই গমনকালের ব্যপ্তিও ছয় মাস। সেই কারণেই দক্ষিণায়নের সময় পুজো করার বিধান নেই শাস্ত্রে।
আরও পড়ুন : নবরাত্রির পঞ্চম দিনে পূজিত হন দেবী স্কন্দমাতা! সমৃদ্ধি এবং শক্তি আশীর্বাদ করেন দেবীর এই রূপ!
অন্যদিকে, শরৎকালে চলে সূর্যের দক্ষিণায়ণ। শাস্ত্র অনুসারে এটি দেবতাদের রাত্রিকাল, এই সময় তাঁরা নিদ্রিত থাকেন। তাই শরৎকাল দেবীর আরাধনার জন্য উপযুক্ত সময় নয়। তাই এই অকালে দুর্গা পূজা উদযাপন (Durga Puja Celebration) করতে হলে তাঁকে জাগরিত করতে হয়। জাগরনের এই প্রক্রিয়াটিই বোধন নামে পরিচিত। সেই কারণে দুর্গাপুজো শুরু হয় মহাষষ্ঠীতে দেবীর অকাল বোধন দিয়ে।
আবার শাস্ত্র মতে বিশ্বাস করা হয়, রাবণকে বধ করে সীতাকে উদ্ধার করতে যাওয়ার আগে দেবী দুর্গার আশীর্বাদ লাভ করতে এই অসময়েই দেবী দুর্গার পুজো করেছিলেন রামচন্দ্র। তাই শরত্কালের দুর্গাপুজোকে দেবীর অকাল বোধন বলা হয়। কালিকাপুরাণ অনুসারে,রাবণবধে রামচন্দ্রকে সাহায্য করার জন্য রাত্রিকালে দেবীর বোধন করেছিলেন ব্রহ্মা। ঘুমন্ত দেবীকে জাগ্রত করার জন্য স্বয়ং ব্রহ্মাকে দেবীস্তুতি করতে হয়েছিল৷ ব্রহ্মার এই আবেদনে দেবী বেল গাছের একটি পাতায় কুমারী কন্যার রূপে আবির্ভূতা হন৷ দেবীর সেই আবির্ভাবকে স্মরণ করে আজও বোধনের সময় বেলতলায় দেবীর পুজো করা হয়। কথিত আছে, মা যখন পিত্রালয়ে আসেন, তখন মহাদেব স্বয়ং স্ত্রী-পুত্র-কন্যাকে পৌঁছে দিয়ে গিয়েছিলেন এই বেলতলা পর্যন্ত। তাই এমন পুজোর রীতি।
কলকাতা তথা রাজ্যজুড়েই কার্যত প্রতিপদ থেকেই দুর্গা পূজা প্যান্ডেল (Durga Puja Pandal) হপিং শুরু করে দেন ভক্তরা। ২০২৩ দূর্গা পূজা (2023 Durga Puja) ক্ষেত্রে যদিও দুর্গা পূজা প্যান্ডেল (Durga Puja Pandal) হপিং এর উৎসাহ দেখা যাচ্ছে বেশিই। তবে শাস্ত্রমতে আজ, মহাষষ্ঠী ও নবরাত্রি ২০২৩ (Navratri 2023) এর ষষ্ঠ দিন থেকেই শুরু হয় দেবীর পুজো। মহাষষ্ঠীর পুণ্যলগ্নে আদ্যাশক্তি মহামায়ার বোধনের পুজো হয়। অর্থাৎ প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয় দেবীমূর্তিতে। মৃন্ময়ী মা এই লগ্ন থেকেই হয়ে ওঠেন চিন্ময়ী।
- Related topics -
- দূর্গা পুজো ২০২৩
- দুর্গাপুজো
- পুজো ও উৎসব
- মন্দির