Chia Seeds for Weight Loss | বাড়তি ওজন দ্রুত কমাবে চিয়া বীজ! কেবল জলের সঙ্গে নয়, এই বীজ দিয়ে বানানো সুস্বাদু খাবারও কমাতে পারে ওজন!
ওজন কমানোর জন্য চিয়া বীজ বিশেষভাবে পরিচিত। সুস্বাস্থ্যের সঙ্গে ত্বক এবং চুলের জন্যও উপকার এই বীজ। দেখুন জলের সঙ্গে মেশানো ছাড়া আর কী কী ভাবে খেতে পারেন চিয়া বীজ। সঙ্গে জানুন এই বীজের উপকারিতা।
ওজন কমানোর জন্য যেসব খাদ্য বিশেষভাবে পরিচিত তার মধ্যে অন্যতম চিয়া সিড্স বা বীজ (Chia seeds)। এই বীজের নাম কম বেশি সকলেই শুনেছেন। তবে অনেকেই ভেবে থাকেন বীজ জলে গুলি খেয়ে নিলেই ওজন কমে। তবে তা কিন্তু নয়। ওজন কমানোর জন্য চিয়া বীজ (Chia seeds for weight loss) নিয়মিত খেলেই যে ওজন কমে যাবে এরকম একেবারেই নয়। ওজন কমাতে চিয়া সিডস খাওয়ার সঙ্গে করতে হবে আরও কিছু কাজ। এছাড়াও কেবল জলে গুলেই নয়, চিয়া সিডস খেতে পারেন আরও অনান্যভাবেও।
চিয়া সিডের উপকারিতা :
শরীরের জন্য সর্বাঙ্গে উপকারী চিয়া বীজ। স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ত্বকের জন্য চিয়া বীজ (Chia seeds for skin) ও চুলের জন্য চিয়া বীজ (Chia seeds for hair) বেশ উপকারী। চিয়াকে সুপারফুড বলা হয়। কোভিডের সময় থেকেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই বীজ। চিয়া সিডের মধ্যে থাকে ফাইবার প্রোটিন-সহ একাধিক স্বাস্থ্যকর উপাদান। দেখে নিন চিয়া বীজের উপকারিতা-
- চিয়া বীজে ফাইবার, প্রোটিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস সহ প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রয়েছে।
- চিয়া বীজের ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে, রক্তচাপ কমাতে এবং সামগ্রিক হৃদরোগকে সমর্থন করতে পারে।
- চিয়া বীজের উচ্চ ফাইবার সামগ্রী তৃপ্তি বাড়ায় এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসকে সহায়তা করে।
- চিয়া বীজের দ্রবণীয় ফাইবার একটি স্বাস্থ্যকর পাচনতন্ত্রকে সমর্থন করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং নিয়মিত মলত্যাগে সহায়তা করে।
- চিয়া বীজ রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল করতে সাহায্য করতে পারে, যা ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন প্রতিরোধী ব্যক্তিদের জন্য উপকারী করে তোলে।
- চিয়া বীজ ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাসের একটি সমৃদ্ধ উত্স, যা শক্তিশালী এবং স্বাস্থ্যকর হাড় বজায় রাখতে অবদান রাখে।
- চিয়া বীজ তাদের কার্বোহাইড্রেট এবং পুষ্টির ধীরে ধীরে মুক্তির কারণে একটি টেকসই শক্তি বৃদ্ধি প্রদান করে।
- চিয়া বীজে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা কোষকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করতে এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- চিয়া বীজের পুষ্টিগুলি স্বাস্থ্যকর ত্বকে অবদান রাখে, হাইড্রেশন প্রচার করে এবং বার্ধক্যের লক্ষণগুলি হ্রাস করে। ত্বকের জন্য চিয়া বীজ (Chia seeds for skin) বেশ কার্যকর।
- চিয়া বীজের প্রোটিন উপাদান পেশী মেরামত এবং বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, এগুলি ক্রীড়াবিদ এবং সক্রিয় ব্যক্তিদের জন্য উপকারী করে তোলে।
- চিয়া বীজগুলি প্রাকৃতিকভাবে গ্লুটেন-মুক্ত, এটি গ্লুটেন সংবেদনশীলতা বা সিলিয়াক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য একটি নিরাপদ এবং পুষ্টিকর বিকল্প তৈরি করে।
- স্বাস্থ্য ও ত্বকের পাশাপাশি চুলের জন্য চিয়া বীজ (Chia seeds for hair) বেশ উপকারী। এটি চুলকে স্বাস্থ্যকর করে তোলে।
আরও পড়ুন : শীতে ক্লান্তি,আলস্য দূর করে এনার্জি যোগাবে 'সুপারফুড'! দেখুন শক্তি পেতে কোন কোন খাবার খাবেন?
কীভাবে চিয়া সিডস খাবেন?
শুধু জলে চিয়া বীজ (Chia seeds in water) দিয়ে খেলেই যে ওজন কমবে এরকমটা নয়। এর পাশাপাশি শরীরচর্চা, ডায়েট সবই চালিয়ে যেতে হবে। ফাইবার আমাদের হজমে সাহায্য করে সেই সঙ্গে অন্ত্র ঠিক রাখতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে রোজ ১০০ গ্রাম পর্যন্ত চিয়া সিড খাওয়া যেতে পারে। চিয়া বীজের মধ্যে যে প্রোটিন থাকে তার জন্য অনেকক্ষণ পর্যন্ত খিদে পায় না। ওজন কমানোর জন্য চিয়া বীজ (Chia seeds for weight loss) নানানভাবে খাওয়া যায়। কেবল যে জলে চিয়া বীজ (Chia seeds in water) দিয়ে খেলেই কাজ হয় তা কিন্তু নয়। তবে অবশ্যই চিয়া বীজ জলে ভিজিয়ে খেতে হবে।
পুষ্টিবিদেরা বলছেন, চিয়া বীজ জলে ভেজালে তবেই তার গুণাগুণ বৃদ্ধি পায়। কিন্তু সকালে খালি পেটে চিয়া ভেজানো জল খেতে গেলে অনেকেরই গা গুলিয়ে ওঠে। স্যালাড, ওটমিল, ইয়োগার্ট ছাড়াও এই বীজ খাওয়ার আরও উপায় রয়েছে। ফলে দেখে নিন আর কী কী ভাবে খেতে ডায়েটে রাখতে পারেন চিয়া বীজ।
- চিয়া পুডিং : গরুর দুধ বা উদ্ভিজ্জ যে কোনও ধরনের দুধের মধ্যে ভেজানো চিয়া বীজ, মধু বা মেপ্ল সিরাপ মিশিয়ে সারা রাত ফ্রিজে রেখে দিন। পরের দিন সকালে বিভিন্ন রকম ফল, বাদাম কিংবা বীজ মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে ওজন তো কমবেই সেই সঙ্গে পেটও ভর্তি থাকবে। চিয়া, কোকো পাউডার, ড্রাই ফ্রুটস দিয়ে পুডিং বানিয়ে নিন। আর রোজ সকালে একগ্লাস দুধের মধ্যে দু চামচ চিয়া সিড দিয়ে খেলে ওজন কমে খুব তাড়াতাড়ি।
- চিয়া স্মুদি বা ফলের রস : ফলের রস বা স্মুদির পুষ্টিগুণ আরও বেড়ে যেতে পারে চিয়া মেশালে। চিয়ার মধ্যে থাকা ফাইবার এবং ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে প্রয়োজনীয় খনিজের জোগান দেয়। আলাদা করে খেতে ভাল না লাগলে এই বিকল্প উপায়ে খাওয়া যেতেই পারে। এছাড়া একগ্লাস জলে চিয়া সিড আগের রাতে ভিজিয়ে রেখে পরদিন ওর মধ্যে সামান্য লেবু দিয়ে খেতে পারেন।
- বেকিং : বাড়িতে তৈরি কেক, মাফিন, পাউরুটির মধ্যে ব্যবহার করাই যায় চিয়া। যাঁরা ‘এগলেস’ কেক খান, তাঁরা কেকের মিশ্রণে ডিমের বদলে জলে ভিজিয়ে রাখা চিয়া ব্যবহার করতেই পারেন।
- স্যালাড : চিয়া দিয়ে যেমন ডিটক্স ওয়াটার বানিয়ে নিতে পারেন তেমনই চিয়া কাজে লাগান ফ্রুট স্যালাডেও। সব রকম ফল কেটে নিয়ে ওর মধ্যে আগে থেকে ভিজিয়ে রাখা চিয়া সিড এক চামচ ছড়িয়ে দিন। এতে খেতে খুবই ভাল লাগবে। এছাড়া চিয়া সিড ভিজিয়ে রেখে টকদই, স্যালাড, সিরিয়ালের মধ্যে মিশিয়ে খেতে পারেন।
উল্লেখ্য, দেহের অতিরিক্ত ওজন ঝরাতে, শরীরে বিভিন্ন খনিজের জোগান দিতে বিভিন্ন রকম খাবারের সঙ্গে বিভিন্ন রকম বীজ খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা। তার মধ্যে চিয়া বীজের ভূমিকা বেশি। এই বীজ যেমন দেহের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে সাহায্য করে, তেমন চুল এবং ত্বকের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে। এছাড়া হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে রোজ অ্যান্টাসিড না খেয়ে চিয়া খেয়ে দেখতে পারেন।
- Related topics -
- লাইফস্টাইল
- স্বাস্থ্য
- খাদ্যগুণ
- খাদ্যের গুনাগুন
- পেটপুজো