Blue Java Banana | কৃত্রিম নয়, এই কলার রং আসলেই নীল! ভ্যানিলা আইসক্রিমের মতো খেতে এই নীল কলার রয়েছে একাধিক পুষ্টিগুণও!
নীল জাভা কলা বা নীল কলা উৎপাদন হয় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ফিলিপিনস আর ফিজিতে। এই কলার রং নীল এবং খেতে পুরো ভ্যানিলা আইসক্রিমের মতো। এই কলার রয়েছে একাধিক গুণ।
আমাদের এখানে সারা বছরই সিঙ্গাপুরি, মর্তমান এবং কাঁঠালির মতো নানান কলা পাওয়া যায়। দেখনদারী আর স্বাদ দুয়েই প্রায় এক এই ভিন্ন জাতের কলা। তবে জানেন কি এমনও কলা আছে যা জাতে 'কলা' হলেও দেখতে আর শেড একেবারেই ভিন্ন? গায়ের রংও এর নীল! খেতে নাকি পুরো ভ্যানিলা আইসক্রিমের মতো! এই 'বিশেষ কলা'র নাম নীল জাভা কলা (Blue Java Banana)। আকারে সাধারণ কলার মতো হলেও দেখতে নীল। ভাবছেন হয়তো এই আবার হয় নাকি কৃত্তিম উপায়ে বানানো এই ফল। আসলে তা কিন্তু নয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ফিলিপিনস আর ফিজিতে এই রকম নীল কলা (Blue Banana) এর খোঁজ পাওয়া যায়।
কেন এই কলা নীল?
কোনও রাসায়নিক ছাড়া সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ভাবে উৎপাদিত হয় এই নীল কলা (Blue Banana)। এমনকী প্রবল ঠান্ডাতেও এই গাছের ফল উৎপাদনে কোনও সমস্যাও হয়না। পাহাড়ের উপর মাইনাস ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও দেখা গিয়েছে দিব্যি গজাচ্ছে কাঁদি কাঁদি নীল কলা। তবে এই কলার ফলনের জন্য আদর্শ তাপমাত্রা হল ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। এই কলার পুষ্টিগুণও বেজায় নজরকাড়া। কিন্তু এই কলার রং হলুদের বদলে নীল কেন? আসলে জানা গিয়েছে, এটি একটি হাইব্রিড ফল। অন্য দু’ধরণের কলা মুসা বালবিসিয়ানা (Musa balbisiana) এবং মুসা অ্যাকুমিনাটা (Musa acuminata) এর মধ্যে হাইব্রিড করেই এই কলার ফলন করা হয়। কাঁচা অবস্থায় নীলাভ রঙ থাকলেও পেকে গেলে একটা হাল্কা হলুদ আভা দেখা দেয় খোসায়। এই কলার প্রথম খোঁজ মেলে ১৯২০ সালে হাওয়াইয়ে। নীলচে সবুজ রঙের এই কলা মুখে দিলেই যেন মাখনের মতো গলে যায়। কোনও রাসায়নিক ব্যবহার করে এই রং করা হয় না। প্রকৃতিক উপায়েই এই ফল হয়। তবে ভারতে নীল জাভা কলা (Blue Java Banana in India) উৎপাদন হয়না, এটি পাওয়া যায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ফিলিপিনস আর ফিজিতে।
নীল জাভা কলার পুষ্টিগুণ :
বলা হয় এই নীল কলা নাকি স্বাদে পুরো ভ্যানিলা আইসক্রিমের মতো খেতে। তবে সুস্বাদের পাশাপাশি অন্য সাধারণ কলার মতো এই কলাতেও রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন সি এবং বি৬ এর মতো সব পুষ্টিগুণই রয়েছে এই কলায়। পুষ্টিবিদদের থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, নীল কলায় ক্যালোরির পরিমাণ ১০৫ ক্যালোরি, প্রোটিনের পরিমাণ ১.৫ গ্রাম। এছাড়াও ভিটামিন এবং মিনারেলের খনি হল এই কলা। বিশেষ করে সন্ধান মেলে ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি সহ ম্যাঙ্গানিজ, কপার, পটাশিয়াম এবং আয়রনের মতো উপকারী উপাদান। দেখে নিন এই নীল জাভা কলা (Blue Java Banana) খেলে কী কী স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যাবে।
- এই ফলে প্রচুর পুষ্টিগুণ থাকায় প্রতিদিন একটি করে নীল কলা খেলে মিলবে অফুরন্ত এনার্জি ও পুষ্টির ডোজ। যার ফলে শরীর সুস্থ্য থাকবে।
- এই কলা গ্যাস-অম্বলের সমস্যা দূর করে ফাইবারের ঘাটতিও মেটাবে। পাশাপাশি হজম ক্ষমতা বাড়ানো, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা নিরাময় করার মতো কাজ করবে এই কলা।
- হার্ট সুস্থ্য রাখতে এই নীল কলার উপকারিতা অপরিসীম।
- এই নীল কলা পটাশিয়ামের উৎস। তাই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে হার্টকে সুস্থ রাখতে সিদ্ধহস্ত এই কলা।
- ডায়াবিটিস রোগীদের ক্ষেত্রেও এই কলা দারুণ উপকারী। এতে ফাইবারের পরিমাণ বেশি হওয়ায় সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- অ্যানিমিয়ার রোগীদের জন্যও এই কলা বেশ কার্যকর।
ভারতে নীল জাভা কলা (Blue Java Banana in India) উৎপাদন না হলেও অনলাইনে তা অর্ডার করা সম্ভব। তবে নীল জাভা কলার দাম (Blue Java Banana Price) আর সাধারণ কলার দাম যে ভিন্ন হবে তা আর বলা বাকি থাকে না। ইতিমধ্যেই এই নীল কলা অনেকের কাছে আগ্রহের বিষয়। দিন দিন এর জনপ্রিয়তা এত বাড়ছে যে, এর বীজ আমাজন বা অনলাইনে অন্যান্য ওয়েবসাইটেও পাওয়া যাচ্ছে। সোশ্যাল মাধ্যমেও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে পড়েছে এই কলা। এই অবস্থায় আশা করা যাচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব যে ভাবে চোখে পড়ছে, তাতে এই ধরনের কলার ফলন বাড়বে। ফলে যেমন নীল জাভা কলার দাম (Blue Java Banana Price) সাধারণের আয়ত্তে আসবে বলে আশা তেমনই এই কলা আম জনতার স্বাস্থ্য উন্নত করবে বলেও আশা রয়েছে।