Weather Update | আরব সাগরে তৈরী হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় 'বিপর্যয়'! পশ্চিমবঙ্গে কবে আসবে বর্ষা?
আরব সাগরে নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে 'বিপর্যয়'। বেশ কয়েক দিন তাপপ্রবাহ থাকবে বঙ্গে। গুটি কয়েক জেলায় হালকা বৃষ্টির সম্ভবনা।
সকাল থেকেই তীব্র তাপদাহে রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে বঙ্গবাসীদের। ইতিমধ্যেই তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। প্রায় রোজই এসএমএসের (SMS) মাধ্যমে তাপমাত্রা বৃদ্ধি নিয়ে সতর্কবার্তা পাঠানো হচ্ছে আম জনতাকে। বলা হচ্ছে বেলা ১১ টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত বাইরে না বেরোতে। এই অবস্থায় সবারই একটাই প্রশ্ন, কবে আসবে বর্ষা?
বঙ্গবাসীর সব আশায় জল ঢেলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আরও কয়েকদিন আগুন গরমে পুড়বে বাংলা। পাশাপাশি বর্ষাও ঢুকবে দেরিতে। চলতি সপ্তাহ জুড়ে দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি বজায় থাকবে। রেহাই নেই উত্তরবঙ্গেরও। দহন জ্বালা প্রবল হবে মালদা (Malda), উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে (North and South Dinajpur)। জানা গিয়েছে, কলকাতা-সহ (Kolkata) উপকূলের জেলাগুলিতে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি থাকবে। বইতে পারে লু বইবার। আবহাওয়াবিদরা জানান, এই পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে সঙ্গে সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও বাড়ছে, তাই রাতের তাপমাত্রাও স্বস্তিদায়ক থাকছে না।
এখন বেশ কয়েকদিনই চরম অস্বস্তিকর আবহাওয়া বজায় থকবে কলকাতায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে অস্বস্তিও। কলকাতার পাশাপাশি হাওড়া (Howrah), দক্ষিণ ২৪ পরগনা (South 24 Parganas), পশ্চিম মেদিনীপুর (Medinipur), বীরভূম (Birbhum), আসানসোল (Asansol), ঝাড়গ্রাম (Jhargram), পুরুলিয়া (Purulia) এই সকল জেলাতেই মোটামুটি কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা থাকছে ৪০ ডিগ্রি বা ৪০ ডিগ্রির বেশি।
অন্যদিকে, আগামী শনিবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহের সতর্কতা থাকছে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া (Bankura), বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া (Nadia), পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান (East and West Burdwan), পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া এবং হুগলিতে। তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি বজায় থাকবে কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরেও। জানা গিয়েছে বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকায় আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি চরমে উঠবে।
তীব্র গরম থেকে নিস্তার পাচ্ছে না উত্তরবঙ্গও। শৈলশহর দার্জিলিঙের (Darjeeling) তাপমাত্রা ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বাগডোগরাতে (Bagdogra) তাপমাত্রা ৪০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। তবে এই গরমের মধ্যেও রয়েছে ক্ষীণ আশা। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিন খুব হালকা বৃষ্টির সামান্য সম্ভাবনা রয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পংয়ের (Kalimpong) পার্বত্য এলাকায়। শনিবার থেকে বৃষ্টি বাড়তে পারে উত্তরবঙ্গে দার্জিলিং , কালিম্পং,আলিপুরদুয়ার (Alipurduar), কোচবিহার (Cooch Behar) ও জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) এই পাঁচ জেলাতে। বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বীরভূম, মুর্শিদাবাদ-সহ পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর ঝাড়গ্রাম ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই কেরল উপকূলের (Kerala coast) কাছাকাছি পূর্ব-মধ্য আরব সাগরে (East-Central Arabian Sea) গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ (Bangladesh) এই ঘূর্ণিঝড়কে নাম দিয়েছে 'বিপর্যয়' (Biporjoy)। যা ক্রমশ উত্তর দিকে এগোচ্ছে বলে জানিয়েছে ভারতের মৌসম ভবন (Mausam Bhavan)। জানা গিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ আগামী ২৪ ঘণ্টায় পূর্ব-মধ্য আরব সাগরে অবস্থান করবে। যার প্রভাব পড়বে ভারতবর্ষের উপকূল শহর কেরলা (Kerala), কর্ণাটক (Karnataka) এবং গোয়া (Goa)উপকূলে। এরপর আগামিকাল অর্থাৎ ৮ জুন এই ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় অবস্থান করবে দক্ষিণ আরব সাগর এবং পশ্চিম মধ্য আরব সাগরে। আগামী শুক্র ও শনিবার অর্থাৎ ৯ই এবং ১০ই জুন এটি মূলত দক্ষিণ আরব সাগরে অবস্থান করবে। আপাতত গুজরাত উপকূলের (Gujarat coast) দিকে এটি ক্রমশ এগিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত কোন দিকে বাঁক নেবে এই ঘূর্ণিঝড় তা এখনও স্পষ্ট জানা যায়নি।