বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

AI | কথায় কথায় এআই ব্যবহার? নিজের পায়েই মারছেন কুড়ুল ? প্রতি চ্যাটে হাফ লিটার জল খরচ করে চ্যাটজিপিটি!

AI | কথায় কথায় এআই ব্যবহার? নিজের পায়েই মারছেন কুড়ুল ? প্রতি চ্যাটে হাফ লিটার জল খরচ করে চ্যাটজিপিটি!
Key Highlights

সম্প্রতি এক গবেষণার দাবি, প্রতি কথোপকথনে ৫০০ লিটার জল খরচ করে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটজিপিটি। প্রতি মিনিটে এর জল খরচের হিসেবে জেনে চক্ষু চড়কগাছ পরিবেশবিদদের।

বর্তমানে গোটা পৃথিবীতে দাপট বেড়েছে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (Artificial Intelligence) এর। কোনও বিষয়ে তথ্য জানার ক্ষেত্রে হোক বা চাকরির ক্ষেত্রে, ধীরে ধীরে এআই (AI) এর ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে। তেমনই বাড়ছে এআই নিয়ে দুশ্চিন্তাও। মানবজাতির ভয়, পরবর্তীকালে সকল চাকরিতেই রাজ করবে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা। তবে তার আগে এখন থেকেই পরিবেশ ধ্বংসের পথে হাটছে এআই।

২০২২ সালের নভেম্বর মাসে যাত্রা শুরু করে ওপেন এআই (OpenAI) এর চ্যাটবট  চ্যাটজিপিটি (ChatGPT)। বাজারে সাধারণ মানুষের জন্য এই পরিষেবা চালু হওয়ার পর থেকেই খুব কম সময়েই একের পর এক দেশে বাড়তে এর ব্যবহার। বর্তমানে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে ভারতেও (India) তুমুল চর্চা। যে কোনো বিষয়ে প্রশ্ন করলেই নিমেষের মধ্যে উত্তর দিয়ে দেয় চ্যাটজিপিটি। তবে প্রত্যেক কথোপকোথনেই একটু একটু করে পরিবেশের ও মানবজীবনের এক অন্যতম প্রাকৃতিক উপাদান নষ্ট করছে এই কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা। জানা গিয়েছে, প্রতি চ্যাটে হাফ লিটার জল খরচ করে এই চ্যাটবট।

ইতিমধ্যেই বহু দেশে চলছে জল সংকট। অনেক দেশেই আকাশ ছোঁয়া দাম দিয়ে কিনতে হয় সামান্যতম জল। সেখানে প্রতি কথোপকথনে ৫০০ মিলিলিটার জল খরচ করছে চ্যাটজিপিটি। তথ্য অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ১০০ মিলিয়ন মানুষ ব্যবহার করেন এই কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা। ফলে প্রতি মিনিটে বিশ্ব জুড়ে এর ব্যবহার সংখ্যার কথা চিন্তা করেই অবাক পরিবেশবিদরা। চ্যাটজিপিটি ট্রেনিংয়ের পিছনে যে শক্তি খরচ হয় তা জানতে সম্প্রতি একটি গবেষণা চালানো হয়। এই গবেষণা করার পরই 'মেকিং এআই লেস থার্স্টি' (Making AI Less Thirsty) নামক গবেষণা পত্রে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা এবং এআই সম্পর্কিত এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।

গবেষণাপত্র থেকে জানা গিয়েছে, এআই টুল চ্যাটজিপিটিকে একাধিক বিষয়ে ট্রেনিং দেওয়া হয়। আর এই ট্রেনিংয়ের জন্যই গড়ে উঠেছে একাধিক ডেটা সেন্টার (Data Center)। এখানে এআই মডেলগুলি সংরক্ষণ করা হয়। তবে এই ডেটা সেন্টারগুলির সার্ভার পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ শক্তির। ফলে এই শক্তি এবং কাজের জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত কুলিং সিস্টেম (Cooling System) এবং শক্তি নির্ভর কম্পিউটিং ব্যবস্থা (Energy-Efficient Computing Systems)। এগুলি চালু রাখতে যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয় তা উৎপাদন করা হয় জলের মাধ্যমেই। কারণ উচ্চ শক্তি এবং পর্যাপ্ত কুলিং সিস্টেম না থাকলে হার্ডওয়্যারগুলি (Hardware) সঠিক ভাবে কাজ করতে পারে না।

জানা গিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাইক্রোসফট স্টেট অফ দ্য আর্ট ডেটা সেন্টারে (Microsoft State of the Art Data Center in the United States) চ্যাটজিপিটি ট্রেনিংয়ের পিছনে খরচ হয় প্রায় ৭লক্ষ্য লিটার জল। উল্লেখযোগ্যভাবে এই সংখ্যা এশিয়ার (Asia) ডেটা সেন্টারগুলিতে তিনগুণ বেশি হয়। ফলে কার্যতই এআই ব্যবহারে বেশ চিন্তিত পরিবেশবিদরা। তবে কি সত্যিই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানবজাতিকে দমিয়ে রেখে গোটা পৃথিবীতে রাজত্ব করতে চলেছে? এই প্রশ্ন উঠছে বারংবার।