WB Krishak Bandhu Scheme | কৃষকদের সহায়তায় 'কৃষক বন্ধু প্রকল্প '

Thursday, December 21 2023, 2:33 pm
highlightKey Highlights

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের কৃষকদের কথা মাথায় রেখে নিয়ে এসেছেন 'কৃষক বন্ধু প্রকল্প', আসুন জেনে নেওয়া যাক এই প্রকল্প কিভাবে আমাদের চাষী বন্ধুদের সাহায্য করছে।


ভূমিকা | Introduction of Krishak Bandhu Scheme

পশ্চিমবঙ্গের সরকার মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছে যার মধ্যে অন্যতম প্রকল্পটি হল কৃষক বন্ধু প্রকল্প 2021।  পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের উন্নয়নকল্পে এবং তাদের কল্যাণার্থে এই প্রকল্পটি শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। অনেক সময় দেখা যায় কৃষক বন্ধুরা চাষ করার সময় তাদের হাতে সেই পরিমাণ অর্থ মজুত থাকে না , এ সমস্ত কৃষকদের আয় সুনিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে এবং গরীব চাষিদের জন্য আর্থিক সাহায্য করার লক্ষ্য মাথায় নিয়েই পশ্চিমবঙ্গ সরকার চালু করেন এই প্রকল্পটি। যে সমস্ত গরিব চাষীরা পয়সার অভাবে ঠিক ভাবে চাষ করতে পারছেন না তাদের প্রত্যেক বছর দুই কিস্তিতে ১০০০০ টাকা করে দুইবার দেওয়া হয়ে থাকে এবং বীমা স্বরূপ কোন কৃষকের মৃত্যু হলে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়ে থাকবে। কৃষক বন্ধু প্রকল্প থেকে প্রাপ্ত টাকা কৃষকরা দুই কিস্তিতে পেয়ে থাকেন যথাক্রমে ; রবি মরশুমে ও খরিফ মরশুমে।

বাংলার কৃষক বন্ধু প্রকল্পের শুভারম্ভ এবং নতুন কৃষক বন্ধু প্রকল্পের ঘোষণা | Announcement of Krishak Bandhu Scheme

Trending Updates

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৩১ শে ডিসেম্বর ২০১৮ সালে কৃষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ডব্লিউবি কৃষক বন্ধু স্কিমের ঘোষণা করেছিলেন। ১লা ফেব্রুয়ারি ,২০১৯ থেকে এই প্রকল্পের আওতায় থাকা সকল কৃষকদের আর্থিক অনুদান দেওয়া চালু হয়েছিল । মুখ্যমন্ত্রী এই প্রকল্পটি পুনরায় নতুন অবয়বে চালু করার সিদ্ধান্ত নেন এবং ১৭ ই জুন ২০২১ সালে মুখ্যমন্ত্রী নতুন কৃষক বন্ধু প্রকল্পটি ঘোষণা করেন যার অধীনে কৃষকদের প্রদেয় আর্থিক সহায়তা দ্বিগুণ করা হয়েছে। আগে কৃষকরা এক একর বা তার বেশি জমির জন্য প্রতি বছর ৫০০০ টাকা পেতেন। এখন কৃষকরা তার সুবিধা দ্বিগুণ করে বছরে ১০০০০ টাকা পাবে। ডব্লিউবি কৃষক বন্ধু স্কিমের সুবিধা দ্বিগুণ করে দেওয়া ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী ইশতেহারের একটি অংশ। এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৬৮ লক্ষ কৃষক উপকৃত হয়েছেন।

কৃষক বন্ধু প্রকল্পের সরকারি ওয়েবসাইট :

কৃষক বন্ধু প্রকল্পের উদ্দেশ্য | Purpose of Krishak Bandhu Scheme

পশ্চিমবঙ্গ কৃষক বন্ধু প্রকল্পের উদ্দেশ্যগুলি নিম্নে উল্লেখ করা হল: –

  1. ত্রুটিপূর্ণ চাষের মহড়াগুলির কারণে নিয়মিত পর্যাপ্ত ফসল উৎপাদন অস্বীকার করা হয় এমন দরিদ্র কৃষক এবং শ্রমিকদের সহায়তা করার উদ্দেশ্য নিয়েই এই পরিকল্পনাটি উপস্থাপিত হয়েছে।
  2. কৃষক বন্ধু প্রকল্পের পরিকল্পনায় সমস্ত সুবিধাভোগীর জন্য মুদ্রা নির্দেশিকা সহ ১০০০০ টাকা বার্ষিক ভিত্তিতে; দুটি অংশে প্রদান করার লক্ষ্য ধার্য হয়।
  3. খরিফ ফসল রোপণের সময় এবং রবি ফসলের মরসুমে নগদের সমষ্টি টি 'পাত্তনা' হিসেবে প্রদান করা হবে কৃষকদের। 
  4. এই প্রকল্প থেকে প্রাপ্য আর্থিক সুবিধাগুলি সরাসরি সঠিক প্রাপকের ঠিকানায় প্রেরণ করার লক্ষ্য নিয়েছে রাজ্য সরকার এবং এটিও নজর রাখা হয়েছে যাতে সাহায্যটি সঠিক ব্যক্তির সাথে সংযুক্ত হয়।

কৃষক বন্ধু প্রকল্পের সুবিধা | Benefits of Krishak Bandhu Scheme

উক্ত প্রকল্পের আওতায় সুবিধাভোগীদের নিম্নলিখিত সুবিধা প্রদান করা হয়ে থাকে –

  1. কৃষক বন্ধু প্রকল্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিটি প্রাপককে ২ লক্ষ্য টাকার বীমা সুরক্ষা দেওয়া হবে। এই প্রকল্পে আগে দেওয়া হতো নূন্যতম ২০০০ টাকা ও সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকা।সেই অর্থের পরিমাণ রাজ্য সরকার বাড়িয়ে করেছে যথাক্রমে ৪০০০ টাকা ও ১০,০০০ টাকা।
  2. যাদের একদম ই কম জমি আছে এমন কৃষকরা ন্যূনতম হাজার টাকা পেয়ে থাকেন।
  3. এক বিঘা জমির মালিকেরা ১৬৫০ টাকা পেয়ে থাকেন। >>চাষবাস শুরু করার পূর্বে কৃষি উপকরণ কেনার জন্য কৃষকদের আর্থিক সাহায্য বা সহায়তা প্রদান করা।

কৃষক বন্ধু প্রকল্পের  অংশ | Part of Krishak Bandhu Scheme

কৃষক বন্ধু প্রকল্পের আওতায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কৃষকদের উন্নয়নের উদ্দেশ্যে এই স্কিমটি দুটি অংশে চালু করেছে: –

(১)সুনিশ্চিত আয় (Assured income)

“কৃষক বন্ধু” প্রকল্পে আয় সুনিশ্চিত করতে নথিভুক্ত কৃষক ও ভাগচাষী এক একর বা তার বেশি কৃষিযোগ্য জমির জন্য বছরে ১০০০০ টাকা যা আগে ছিল ৫০০০ টাকা সহায়তা পাওয়ার যোগ্য। এক একরের কম জমির ক্ষেত্রে আনুপাতিক হারে সহায়তা প্রদান করা হবে । তবে বছরে নূন্যতম ৪০০০ টাকা এই প্রকল্পের আওতায় কৃষক বন্ধুরা পাবেন যার পরিমাণ আগে ছিল ২০০০ টাকা। এই টাকা দুই কিস্তিতে দেওয়া হবে ;প্রথমটি খরিফ মরশুমে ও দ্বিতীয় কিস্তি রবি মরশুমে।

(২)কৃষক বন্ধু মৃত্যু জনিত সহায়তা (Farmer Friend Assistance in Death)

কৃষক বন্ধু প্রকল্পে ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী কৃষক বা নথিভুক্ত ভাগচাষীর মৃত্যু হলে, তাঁর আইন সম্মত উত্তরাধিকারী এককালীন দুই লক্ষ টাকা সাহায্য পাওয়ার যোগ্য বা মৃত্যু পরবর্তী সময়ে পরিবারের সদস্যকে সরকারি বীমা পলিসির সুবিধা প্রদান করা হবে।

এই সংশ্লিষ্ট ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক  অর্থাৎ বি ডি ও , আইন সম্মত উত্তরাধিকারী নির্ধারণ করবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী । 

কৃষক বন্ধু  প্রকল্পের অধীনে আসার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা | Eligibility for Krishak Bandhu Scheme

কৃষকদের নিজ নামে কৃষিযোগ্য  জমির পরচা বা পাট্টা অথবা বনবিভাগের পাট্টা থাকতে হবে। নিবন্ধীকৃত ভাগচাষী হলেও আবেদনকারী এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে পারেন। 

প্রয়োজনীয় নথি বা ডকুমেন্টস | Required documents for Krishak Bandhu Scheme

  1. সাম্প্রতিক চাষযোগ্য জমির পরচা অথবা বর্গা নিবন্ধীকরণের নথী বা পাট্টা কিংবা বনবিভাগের পাট্টার নথি লাগবে। 
  2. ভোটার কার্ড লাগবে কৃষকের। ভোটার কার্ড না থাকলে এই প্রকল্পে আবেদন করতে পারা যাবে না। 
  3. আধার কার্ড লাগবে। তবে আবেদনকারীর আধার কার্ড না থাকলেও এ ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা নেই । 
  4. ব্যাঙ্ক পাসবুকের প্রথম পৃষ্ঠা অথবা বাতিল ব্যাঙ্ক চেক প্রয়োজন। 
  5. পাসপোর্ট সাইজের সাম্প্রতিক একটি ছবি এবং উপভোক্তার চালু মোবাইল ফোন নাম্বার পেশ করা একান্ত বাঞ্ছনীয়।

কৃষক বন্ধু প্রকল্প আবেদন পদ্ধতি | Application process for Krishak Bandhu Scheme

পশ্চিমবঙ্গের কৃষক বন্ধু প্রকল্পের জন্য আবেদন করার জন্য আবেদনকারীকে  দুয়ারের সরকার ক্যাম্পের কৃষক বন্ধু কাউন্টারে থেকে একটি ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে এবং সেটিকে সঠিকভাবে পূরণ করে তার সঙ্গে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট যুক্ত করে নির্ধারিত অফিসে জমা করতে হবে।

দুয়ারে সরকারকে বন্ধ হয়ে গেলে ও কৃষক বন্ধু প্রকল্পের জন্য আবেদন করা যাবে এবং তখন কৃষক বন্ধু প্রকল্পের সমস্ত কাজ নির্ধারিত বিডিও অফিসে সম্পন্ন হবে। সেখান থেকে আবেদনকারী সহজেই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

অনলাইনে আবেদন করতে হলে অফিসের ওয়েবসাইট থেকে তা করা যেতে পারে( krishok bondhu prokolpo form). 

কৃষক বন্ধু প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত জানবেন কী করে | How to know the details about Krishak Bandhu Scheme

নীচে উল্লেখ করা হল কয়েকটি সহজ পদক্ষেপ যা অনুসরণ করে আপনি এই প্রকল্প সম্পর্কে সহজেই জানতে পারবেন:-

কৃষক বন্ধু প্রকল্পটির সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে প্রথমে আপনাকে কৃষক বন্ধু প্রকল্পের  অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ  যেতে হবে, আর তার পরে ওয়েবসাইটের হোমপেজটি আপনার সামনে খুলবে।>>ওয়েবসাইটের হোমপেজে উপভোক্তাকে “About Krishak Bandhu “বিকল্পটি ক্লিক করতে হবে এবং তার পরে খুলে যাবে নতুন একটি পৃষ্ঠা । 

এই পৃষ্ঠায় উপভোক্তা কৃষক বন্ধু স্কিম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য যাচাই করে নিতে পারেন।

কৃষক বন্ধু মৃত্যু সুবিধাভোগী ফর্ম | Farmer Friend Death Beneficiary Form

  1. ডেথ বেনিফিসারী ফর্মটি ডাউনলোড করার পরে, উপভোক্তাকে এই ফর্মটির একটি প্রিন্টআউট নিয়ে নিতে হবে এবং ফর্মের বিবরণ সঠিক ভাবে পূরণ করতে হবে।
  2. ফর্ম পূরণ করার পর উপভোক্তাকে নিজের জেলার সংশ্লিষ্ট ব্লকের সহকারী পরিচালক, কৃষি বিভাগের কাছে সেই আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।

কৃষক বন্ধু প্রকল্পে নাম চেক করার প্রক্রিয়া | The process of checking the name in the farmer friend scheme

কৃষক বন্ধু নাম চেক করার জন্য কোন বিকল্প নেই। এই লিস্ট গুলি সাধারণত কৃষি দপ্তর এবং বিডিও অফিসে অফিশিয়াল ভাবে নথিভুক্ত করা থাকে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার কৃষক বন্ধু চেক করার জন্য কোন অনলাইন বন্দোবস্ত করে নি। একান্ত প্রয়োজনে উপভোক্তা বিডিও অফিসে গিয়ে  বা নিজেরা স্থানীয় অঞ্চলে গিয়ে কৃষক বন্ধু নাম চেক করতে পারেন।

কৃষক বন্ধু প্রকল্প ফর্ম পি ডি এফ | Krishak Bandhu Scheme Form

কৃষক বন্ধু প্রকল্পের ফর্ম উপভোক্তা দুয়ারে সরকার সরকার ক্যাম্পে ও পেয়ে যাবেন ।

কৃষক বন্ধু সেল্ফ ডিক্লারেশন ফর্ম 

নিজস্ব জমি না থাকলে বা নিজের নামে কোনো কাগজপত্র না থাকলে আথচ উপভোক্তাকে কৃষক বন্ধু প্রকল্পের আওতায় আসতে গেলে সেল্ফ ডিক্লারেশন ফর্মটি পূরণ করতে হবে:

কৃষক বন্ধু প্রকল্প হেল্পলাইন নম্বর | Helpline number of Krishak Bandhu Scheme Form

প্রয়োজনীয় যোগাযোগ নম্বর  8336957298, 6291720406 (সময়সীমা~ সকাল ১০ থেকে সন্ধে ৬ টা)

E-Mail– krishak.bandhu@ingreens.in

প্রশ্নোত্তর - Frequently Asked Questions

কৃষক বন্ধু প্রকল্পে আবেদন করতে কত বয়স লাগবে?

ন্যূনতম ১৮ বছর ।

কৃষক বন্ধু প্রকল্পের সুবিধা কারা কারা পাবেন?

কৃষকদের নিজ নামে কৃষিযোগ্য জমির পরচা বা পাট্টা অথবা বনবিভাগের পাট্টা থাকতে হবে। নিবন্ধীকৃত ভাগচাষী হলেও আবেদনকারী এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে পারেন।

কৃষক বন্ধু প্রকল্প ফর্ম PDF কোথায় পাওয়া যাবে?

আবেদন ফর্ম দুয়ারে সরকার শিবিরে পাওয়া যাবে কিংবা নিকটবর্তী কৃষি দপ্তর অফিসে তা প্রাপ্ত করা যাবে।এছাড়াও অনলাইন থেকেও ডাউনলোড করা যাবে www.matirkatha.gov.in ও www.matirkatha.net এই দুটো ওয়েবসাইট থেকে।




Contents ( Show )

পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File