Agarwood | সোনা-রুপোর থেকেও মূল্যবান! এই কাঠ এতটাই দামি যে ধনী ব্যক্তিরাও কেনার আগে দুবার ভাবেন!

আমরা অনেকেই জানি পৃথিবীর সবথেকে মূল্যবান বস্তু হলো সোনা-রূপো-হিরে। কিন্তু আপনি কি জানেন এর থেকেও বহু দামি এক বিশেষ গাছের কাঠ! হ্যাঁ,ঠিকই পড়ছেন, এই কাঠ এতটাই দামি যে ধনী ব্যক্তিরাও এটি কেনার আগে দুবার ভাবেন। এই গাছটির নাম আগরউড (agarwood)। সাধারণত, চন্দন কাঠকে সবচেয়ে দামি কাঠ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যার দাম প্রতি কেজি ১৮ থেকে ২৫ হাজার টাকার মধ্যে। কিন্তু আগরউড কাঠের দাম প্রতি কেজিতে (agarwood price per kg) কত তা জানলে আপনার মাথা ঘুরতে বাধ্য। জেনে নিন এই কাঠের দাম কেন এতো মুল্যবান এবং এর বিশেষত্ব।
আমরা অনেকেই জানি পৃথিবীর সবথেকে মূল্যবান বস্তু হলো সোনা-রূপো-হিরে। কিন্তু আপনি কি জানেন এর থেকেও বহু দামি এক বিশেষ গাছের কাঠ! হ্যাঁ,ঠিকই পড়ছেন, এই কাঠ এতটাই দামি যে ধনী ব্যক্তিরাও এটি কেনার আগে দুবার ভাবেন। এই গাছটির নাম আগরউড (agarwood)। সাধারণত, চন্দন কাঠকে সবচেয়ে দামি কাঠ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যার দাম প্রতি কেজি ১৮ থেকে ২৫ হাজার টাকার মধ্যে। কিন্তু আগরউড কাঠের দাম প্রতি কেজিতে (agarwood price per kg) কত তা জানলে আপনার মাথা ঘুরতে বাধ্য। আগরউডের দামের ধারের কাছেই নেই চন্দন কাঠ। জেনে নিন এই কাঠের দাম কেন এতো মুল্যবান এবং এই আগরউড গাছ (agarwood tree)-এর বিশেষত্ব।
কী ভাবে জন্মায় আগরউড?
বস্তুত আগরউড গাছ (agarwood tree)বলে কিছু নেই। অ্যাকুইলারিয়া নামক এক ধরণের ছত্রাক গাছে আক্রমণ করলে তবেই এটি উৎপন্ন হয়। প্রথমে অ্যাকুইলারিয়া নামক সবুজ আগরউড গাছের গায়ে গরম ধাতব রড বা ড্রিলের সাহায্যে ছিদ্র করে তার মধ্যে বিশেষ ধরনের ফাঙ্গাস প্রবেশ করানো হয়। এই ফাঙ্গাস গাছের ভেতরে ছড়িয়ে পড়তেই ওই গাছ সেটিকে বিপদ হিসেবে ধরে নেয় এবং গাঢ় কালো রেজিন উৎপন্ন করতে শুরু করে। ধীরে ধীরে এই রেজিন গাছের কাঠকে আগরউডে পরিণত করে। এরপর কাঠ সংগ্রহ করে তা থেকে ওউড তেল নিষ্কাশন করা হয়। এই তেলই বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান সুগন্ধি তৈরির উপাদান। এই তেল প্রতি কেজি ২৫ লাখ টাকার বেশি দামে বিক্রি হয়।

আগরউড কোথায় কোথায় পাওয়া যায়?
আগরউড (agarwood) মূলত ভারত, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির বনাঞ্চলে পাওয়া যায়। বিশেষ করে, ভারতের আসামে এই কাঠ পাওয়া যায়। যার জন্য আসামকে 'ভারতের আগরউড রাজধানী বলা হয়।
আরও পড়ুন : ভবিষ্যতে জ্বালানির জন্য ভরসা ' বায়োডিজেল উদ্ভিদ'! ফলের বীজ থেকেই তৈরি করা সম্ভব বায়োডিজেল!
কত মূল্যবান এই আগরউড ?
সোনা, রূপা এবং অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর তুলনায় আগরউড কাঠের দাম (agarwood price) বেশি। আগরউড কাঠের দাম প্রতি কেজি (agarwood price per kg) ১ লক্ষ টাকারও বেশি। তবে আগরউডের মধ্যেও বিশেষ কিছু প্রজাতি রয়েছে, যা অত্যন্ত মূল্যবান। এই কাঠের নাম 'কিনাম' যা আগরউড গাছের এক বিরল প্রজাতি। এটি এতটাই দুর্লভ যে, টাইটানিয়াম, ইউরেনিয়াম এবং প্লাটিনামের চেয়েও কম পাওয়া যায়! এটি আগরউড পরিবারের সবচেয়ে উন্নতমানের সুগন্ধি কাঠ হিসেবে পরিচিত। আল জাজিরার একটি প্রতিবেদন অনুসারে, কিনাম আগরউড কাঠের দাম (agarwood price) প্রতি গ্রামে ১০ হাজার ডলার । যা টাকার হিসেবে ১২ কোটি টাকারও বেশি। কয়েক বছর আগে, চীনের সাংহাইতে ২ কেজি কিনাম কাঠ প্রায় ২১ কোটি টাকাতে বিক্রি হয়।
আরও পড়ুন : ইনডোর প্ল্যান্ট দিয়ে ঘর সাজাবেন? বাস্তু মতে এই গাছগুলি পরিবেশ সুন্দর করার সঙ্গে আনবে সুখ-সমৃদ্ধি!
আগরউড কেন এত মূল্যবান?
বলা হয় আগরউড (agarwood)বিরল এবং এর রজন উৎপাদন প্রক্রিয়া খুবই ধীর হওয়ায় এটি এত মূল্যবান। বাজারে উচ্চ চাহিদার কারণে এই কাঠের দামও ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই কাঠ অনন্য, মনোরম সুগন্ধ যুক্ত। এই রজন দিয়ে ধূপ, সুগন্ধি এবং ওউড তেল তৈরি হয়। কিন্তু রজন তৈরি হতে কয়েক দশক সময় নেয়, যা কাইনামকে পৃথিবীর বিরলতম কাঠে পরিণত করে। আগারউড, যা অ্যালোউড, ঈগলউড, জিনকোহ এবং গাহারু নামেও পরিচিত, যা বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান ধূপ হিসাবে বিবেচিত।

আগরউডের ব্যবহার :
মূলত সুগন্ধি শিল্পে আগরউড (agarwood) রজন থেকে উচ্চমানের পারফিউম তৈরি করা হয়। এছাড়াও আরব দেশগুলিতে আগরউড পোড়ানো হয় অতিথিদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য। এই কাঠের রজন থেকে উচ্চমানের পারফিউম তৈরি করা হয়। কোরিয়ায় এই কাঠ থেকে ওষধি ওয়াইন তৈরি করা হয়। মধ্যপ্রাচ্যে পোশাক ও সুগন্ধি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে, কাইনাম কাঠ ধূপ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। কোরিয়াতে, কাইনাম ঔষধি ওয়াইন তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

বলা বাহুল্য, বিপুল চাহিদা ও সীমিত প্রাপ্যতার কারণে আগরউড ও কিনাম বর্তমানে বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় পড়েছে। অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে এর সংখ্যা কমে যাচ্ছে, পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্যেও প্রভাব ফেলছে। তাই আগরউড (agarwood) সংরক্ষণ করা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। আগর কাঠের চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এটি চাষেরও প্রচেষ্টা চলছে দেশে দেশে। প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন আগর কাঠের গুণমান অর্জনের জন্য এখনও অবশ্য গবেষণা চলছে।