দেশ

Gaganyaan Mission | গগনযান মিশন নিয়ে বড় পদক্ষেপ! ১০ দিন বাদেই গগনযানের প্রথম পরীক্ষামূলক উড়ান!

Gaganyaan Mission | গগনযান মিশন নিয়ে বড় পদক্ষেপ! ১০ দিন বাদেই গগনযানের প্রথম পরীক্ষামূলক উড়ান!
Key Highlights

তুঙ্গে গগনযান মিশনের প্রস্তুতি। ১০ দিন বাদে, সপ্তমীর দিনই প্রথম পরীক্ষামূলক উড়ানের আয়োজন করছে ইসরো। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার পরিকল্পনায় রয়েছে ইসরো স্পেস স্টেশন প্রতিষ্ঠাও।

মহাকাশ গবেষণায় ক্রমশ একের পর এক মিশন চালাচ্ছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (Indian Space Research Organization) তথা ইসরো (ISRO)। চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan-3), আদিত্য এল-১ (Aditya L-1 ) এর পর গগনযান মিশন (Gaganyaan Mission)। মহাকাশ গবেষণায় নিজস্ব অবদান রাখতে ভারতের এই একক প্রকল্প নিয়ে বড় ঘোষণা করলো ইসরো। ইতিমধ্যেই গগনযান (Gaganyaan) নিয়ে ইসরো প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে বেশ কিছু সময় ধরে। সম্প্রতি গগনযান মিশন (Gaganyaan Mission) এর জন্য দুই বায়ুসেনার জওয়ানদেরও শারীরিক প্রস্তুতি নেওয়া ছবি এসেছিলো সামনে। এবার ইসরো জানিয়েছে, আর ১০ দিন বাদে, অর্থাৎ ২১ সে অক্টোবর গগনযান (Gaganyaan) এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অর্থাৎ প্রথম পরীক্ষামূলক উড়ান আয়োজন করা হবে।

মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে এই পরীক্ষার কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং (Jitendra Singh)। চন্দ্রযান-৩  অভিযানের সঙ্গে যুক্তদের সংবর্ধনা দেওয়া হয় এক অনুষ্ঠানে। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন তিনি। অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী জানান, ২১ সে অক্টোবর গগনযান (Gaganyaan) এর প্রথম মহড়া উড়ান। এই পরীক্ষার জন্য জোরকদমে প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান  কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং। উল্লেখ্য, ১৯সে অক্টোবর থেকে দুর্গোৎসব। সেই মতো ২১ সে অক্টোবর সপ্তমী। অর্থাৎ দূর্গা পুজোর আনন্দের মধ্যেই মহাকাশ বিজ্ঞানে আরও এক ধাপ এগোতে চলেছে ভারত।

২১ সে অক্টোবর গগনযান মিশনের প্রাথমিক পরীক্ষায় কী করা হবে?

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং এপ্রসঙ্গে জানিয়েছেন, গগনযান (Gaganyaan)এর টেস্ট ভেহিকেল স্পেস ফ্লাইট (TV-D1) উৎক্ষেপণ করা হবে আগামী ২১সে অক্টোবর। অবতরণে সময় কী ভাবে মহাকাশচারীরা গগনযান থেকে বেরিয়ে আসবে সেই নিয়েই পরীক্ষা করা হবে এই টেস্ট স্পেস ভেহিকেলে। কেবল ২১সে অক্টোবরই নয়, এছাড়াও মোট দুটি মহড়া চালানো হবে বলা জানা যাচ্ছে। তারপরই ভারতীয় নভোচরদের নিয়ে রওনা দেবে গগনযান।

সূত্রের খবর, শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার (Satish Dhawan Space Center in Sriharikota) থেকে ২১সে অক্টোবর গগনযানের টেস্ট স্পেস ভেহিকেলটি উৎক্ষেপণ করা হবে। এই টেস্টের সাফল্যের উপর নির্ভর করছে মানবহীন গগনযান যাত্রার প্রস্তুতির নানান দিক। পরবর্তীতে মানব সম্পন্ন মহাকাশযানের সফরের ক্ষেত্রে যা পথ পরিষ্কার করে দেবে। গগনযান মিশনের আগে ইসরোর আরও এক মিশনের হাত ধরে পরের বছরই মহাকাশের পথে রওনা হবে ইসরোর রোবোট ব্যোমমিত্র। এই মহাকাশ যানের ‘ক্রিউ এসকেপ’ সিস্টেমও পরীক্ষা করে দেখবে। এই সিস্টেমের দ্বারা মহাকাশ যান থেকে নভশ্চরদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া রয়েছে।

ইসরো প্রধান এস সোমনাথ (ISRO chief S Somnath) এ প্রসঙ্গে বলেন, গগনযান মিশনের মূল লক্ষ্য হল মহাকাশচারীদের নিরাপদে মহাশূন্যে নিয়ে যাওয়া ও তাঁদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনা। এর জন্য একটি লঞ্চ ভেহিকেল ব্যবহার করা হবে। মহাকাশে ক্রুদের জন্য পৃথিবীর মতো পরিবেশ তৈরি করা জরুরি। যাতে জরুরি অবস্থায় সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন মহাকাশচারীরা ও পৃথিবীতে ফিরে আসতে পারেন সেই ব্যবস্থাও থাকবে। ইসরোর অন্যতম স্বপ্নের প্রকল্প গগনযান (Gaganyaan)। এই মিশনের জন্য বিশেষ ভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে ইসরো। ২০২৪ সালের মধ্যে চূড়ান্ত মিশনের সময় মহাকাশচারীদের নিয়ে উড়ে যাবে গগনযান। এখন থেকেই এই মিশনের জন্য প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে মহাকাশচারীদের। কিছুদিন আগেই মহাকাশচারীদের প্রশিক্ষণের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মাধ্যমে।

অন্যদিকে, কেবল গগনযান মিশনই নয়, এবার মহাকাশে ভারতের নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন স্থাপন করার উদ্যোগ নিচ্ছে ইসরো। আমেরিকা, রাশিয়া ও অন্যান্য দেশের লীগে যোগ দিয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে ইসরো স্পেস স্টেশন (ISRO Space Station) তৈরী করার পরিকল্পনা করছে বলে জানা গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে এস সোমনাথ এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, আগামী ভবিষ্যতে একাধিক মিশনের পরিকল্পনা রয়েছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার। এরই মধ্যে রয়েছে ইসরো স্পেস স্টেশন (ISRO Space Station) প্রতিষ্ঠা ও বেশি সময়ের জন্য নভোশ্চরদের মহাকাশে পাঠানো।

কয়েক দিন আগে ইসরোর তরফ থেকে জানা যায়, ভারতীয় মহাকাশ স্টেশনটি অর্থাৎ ইসরো স্পেস স্টেশন (ISRO Space Station) আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের তুলনায় অনেক ছোট হবে। এই মহাকাশ স্টেশনটিকে মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরীক্ষা চালানোর জন্য ব্যবহার করা হবে। মহাকাশ স্টেশনের প্রাথমিক পরিকল্পনা হল মহাকাশচারীদের ২০ দিনের জন্য মহাকাশে রাখা। মহাকাশ স্টেশনটি পৃথিবীর উপরে ৪০০ কিলোমিটার কক্ষপথে তৈরি করা হবে। এই মহাকাশ স্টেশনে ১৫ থেকে ২০ দিন থাকতে পারবেন নভোশ্চররা। জানা গিয়েছে, মিশন গগনযান সম্পূর্ণ হওয়ার পরে ইসরো স্পেস স্টেশন (ISRO Space Station) এর পদ্ধতিগুলি তৈরি করা হবে।