2023 Durga Puja | কৈলাশের পথে 'মা'! নবরাত্রির পর দশমীকে কেন বলা হয় 'বিজয়া' দশমী?

Tuesday, October 24 2023, 10:23 am
highlightKey Highlights

২০২৩ দূর্গা পূজার বিজয়া দশমীতে চোখের জলে মা দুর্গাকে বিদায় জানাবে বাঙালি। একই দিনে নবরাত্রি ২০২৩ এ দেশ মেতে উঠছে দশেরায়।


দেখতে দেখতে কেটে গেলো বাংলা ও বাঙালির মহোৎসব ২০২৩ দূর্গা পূজা (2023 Durga Puja)! আজ, ২৪ সে অক্টোবর, মঙ্গলবার ২০২৩ দূর্গা পূজা (2023 Durga Puja) র শেষ দিন, মায়ের বিদায়ের দিন, বিজয়া দশমী! নবরাত্রি ২০২৩ (Navratri 2023) অনুযায়ী আজ দশেরা। এদিনটিকে পালন করা হয় অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ শক্তির বিজয়দিবস হিসেবে। শাস্ত্র মতে মনে করা হয়, দুর্গা পূজা উদযাপন (Durga Puja Celebration) এর এই দশম দিনে একদিকে যেমন মা দুর্গা টানা ৯ দিনের যুদ্ধ শেষে দশমীর দিনে বধ করেন মহিষাসুরকে। আবার অন্যদিকে মানা হয় এই দশমীর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ক্রেতা যুগে রাবণের বিরুদ্ধে রামের জয়ের কাহিনীও। অসত্যের বিরুদ্ধে সত্যের বিজয়ের উদযাপনের জন্য  নবরাত্রি ২০২৩ (Navratri 2023) এর দশেরার দিনে প্রত্যেক বছরের মতো এদিন দেশ জুড়ে পালিত হবে নানান উৎসব।

দুর্গা পূজা উদযাপনের শেষ দিনে সিঁদুর খেলায়-মিষ্টিমুখে 'মা' এর বিদায় পর্ব 
দুর্গা পূজা উদযাপনের শেষ দিনে সিঁদুর খেলায়-মিষ্টিমুখে 'মা' এর বিদায় পর্ব 

দুর্গা পূজা উদযাপন (Durga Puja Celebration) এর দশেরা বা বিজয়া দশমী হল দুর্গাপুজোর শেষ দিন। আসলে অশুভ যা কিছু তার বিনাশ, ও শুভ শক্তির জয়ের উদযাপন হল দশেরা। প্রতি বছর দশেরা উত্‍সব সারা দেশজুড়ে পালিত হয় রাবণ দহন ও আতসবাজির আলোয় । মানুষের বিশ্বাস, দশেরার দিনেই দশানন রাবণকে পরাজিত করে শ্রী রামচন্দ্র রাবণকে বধ করে যুদ্ধে জয়ী হন। তাই এই উত্‍সব আসলে অসত্যের বিরুদ্ধে সত্যের বিজয়। মনে করা হয় রাবণ বধের মাধ্যমে অধর্মের নাশ করে ধর্মকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রামচন্দ্র। পিতৃপক্ষ পেরিয়ে মহালয়া তিথির পরদিন থেকে দেশজুড়ে শুরু হয় নবরাত্রি। নয়দিন মহামায়ার বিভিন্ন রূপের পুজো চলে। তারপর দশম দিনে এই উত্‍সব পালিত হয়। একদিকে মা দুর্গার প্রতিমা বিসর্জন, অন্যদিকে রাবণদহন, এই দুইয়ে মিলে দশেরা। হিন্দুধর্মে ভগবান রামকে আত্মচেতনার প্রতীক হিসাবে মনে করা হয়। রাবণ বীর, দৃঢ়চেতা, শিবভক্ত হলেও, সীতাহরণকারী লঙ্কাধীশকে নেতিবাচক শক্তি হিসেবেই দেখা হয়। রাবণের দশটি মাথাকে মানুষের দশটি খারাপ মানসিকতার তুলনা করা হয়। যেমন রাগ, লোভ, হিংসা, অহংবোধ, অসহিষ্ণুতা, অসংবেদনশীলতা, ভয়, ঘৃণা, অনুশোচনা, লালসা। এই খারাপ স্বভাবগুলির বিনাশসাধনের প্রতীকই রাবণ দহন। 

দুর্গাপুজোর নয়টা দিন বাংলা জুড়ে যেমন একাধিক দুর্গা পূজা প্যান্ডেল (Durga Puja Pandal) তৈরি হয়, পুজো হয়, তেমন দেশের অবাঙালি হিন্দুরা পালন করেন নবরাত্রি। আর এই নবরাত্রির দশম দিনে অর্থাৎ দশেরার দিনে গোটা দেশ জুড়ে নানান উৎসব পালন হয়। তবে ভারতের নানা প্রান্তে অসংখ্য রাবণ দহন পালিত হলেও তার মধ্যে কয়েকটি বিখ্যাত। যার মধ্যে দিল্লির লালকেল্লার রামলীলা ময়দানের লব কুশ রামলীলা সর্বজন খ্যাত। এখানে বিভিন্ন বছর প্রধানমন্ত্রী থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যতম মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীদের উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। আকাশ ছোয়া উচ্চতার রাবণের কুশপুত্তলিকা থাকে। রাবণের কুশপুত্তলিকার পাশে থাকে কুম্ভকর্ণ ও মেঘনাথের কুশপুত্তলিকা। এই কুশপুত্তলিকাগুলিতে প্রতীকী তির নিক্ষেপ করা হয়। আর তারপরই এক এক করে জ্বলে ওঠে রাবণ, কুম্ভকর্ণ, মেঘনাদের কুশপুত্তলিকাগুলি। রামলীলা ময়দানে উপরি পাওনা ডিজিটাল রাবণ দহন। সন্ধের অন্ধকার নামা আকাশে এবার লেজার রশ্মির সাহায্যে এক অপরূপ দৃশ্য়পট তৈরি করা হবে। সেখানে ওই লেজার রশ্মির সাহায্যেই রাবণ দহন তুলে ধরা হবে।

বিজয়া দশমীতে, নবরাত্রি ২০২৩ এর দশেরায় মেতে গোটা দেশ 
বিজয়া দশমীতে, নবরাত্রি ২০২৩ এর দশেরায় মেতে গোটা দেশ 

এছাড়াও হিমাচল প্রদেশের কুলুতে কুল্লু উত্‍সব পালিত হয় দশেরায়। এই উপলক্ষ্যে বিশাল মেলা হয় ৭ দিন ধরে। বারাণসীতে এই উত্‍সব সুপ্রাচীন কাল থেকে পালিত হয়। এক মাস ব্যাপী রামলীলা চলে। দশেরা উপলক্ষ্যে সেজে ওঠে মহীশূর। আলোর মালায় সাজানো হয়েছে মহীশূর প্যালেস। সঙ্গে দশেরা উপলক্ষ্যে ২৮০ কেজি ওজনের সোনার সিংহাসন চাপানো হয় হাতির পিঠে। তার ওপর বসেন মহীশূরের রাজা। চতুর্দোলায় সাজিয়ে শোভাযাত্রা বের করা হয়। রাজস্থানের কোটার দশেরা ময়দান একটি বিশালাকার রাবণ দহন পালা অনুষ্ঠিত হয়। রাবণের সঙ্গে তাঁর ভাইদের কুশপুত্তলিকায় আগুন দেওয়া হয়। এছাড়াও বারাণসী, জয়পুর, চণ্ডীগড়, দেরাদুনে ধুমধাম করে পালিত হয় দশেরা অনুষ্ঠান। 




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File