Winter Skin Care | কেবল হাত-পায়ের জন্যই নয়, মুখের ত্বকের জন্যও উপকারী তেল! দেখুন শীতে কোন কোন ফেস অয়েল মাখলে পাবেন আদ্র-উজ্জ্বল ত্বক?
ফেস অয়েল শীতে ত্বকের শুষ্কতা দূর করে ত্বকের যত্ন রাখে। পাশাপাশি ত্বকের নানান নিরাময় করতে সাহায্য করে ফেস অয়েল। দেখে নিন শীতকালে স্কিন কেয়ার রুটিনে কোন কোন মুখে মাখার তেল রাখলে উপকার পাবেন।
শীতে কমবেশি সকলেরই রুক্ষ্ম-শুষ্ক ত্বকের সমস্যা হয়ে থাকে। যার ফলে শীতকালে স্কিন কেয়ার রুটিন (Winter Skin Care Routine) এ অবশ্যই থাকে হেভি ক্রিম। তবে অনেক সময়ই মুখে ক্রিম লাগলেও তা কিছুক্ষণ পরেই টেনে নেয়, যার ফলে আবারও শুষ্ক হয়ে ওঠে ত্বক। তবে এক্ষেত্রে ত্বককে দীর্ঘক্ষণ আদ্র রেখে ত্বকের নানান সমস্যা দূর করতে পারে ফেস অয়েল (Face Oil)।
এক সময়ে ত্বকের নানান সমস্যার কথা ভেবে মুখে তেল মাখার চল বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। তেল মাখলেই গোটা মুখ ব্রণয় ভরে যেত। কিন্তু বয়স বাড়তেই সেই তেলে টান পড়তে শুরু করে। শীতে এই সমস্যা আরও বেড়ে যায়। আবহাওয়ায় আর্দ্রতার অভাব হলেই ত্বকে টান ধরতে শুরু করে। এক্ষেত্রে ত্বক আদ্র রাখতে এবং শীতকালে স্কিন কেয়ার (Winter Skin Care) এর জন্য মুখে তেল মাখা ভালো অভ্যাস। তবে ইচ্ছা হলেই যেকোনো তেল মুখে মাখা যায় না। দেখে নিন মুখের আর্দ্রতা ধরে রাখতে, শুষ্কতার হাত থেকে ত্বককে রক্ষা করতে কোন কোন ফেস অয়েল (Face Oil) মাখা যেতে পারে।
নারকেল তেল । Coconut oil :
ত্বকের সুস্বাস্থ্য এবং আদ্রতার জন্য নারকেল তেল যুগ যুগ ধরে ব্যবহার করে আসা হচ্ছে। মাথার চুল থেকে শুরু করে হাত-পা এমনকি শুষ্ক ত্বকের জন্য ফেস অয়েল (Face Oil for Dry Skin) হিসেবেও নারকেল তেল উপকারী। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে দারুণ কার্যকর এই নারকেল তেল। ফ্যাটি অ্যাসিডে ভরপুর এই তেলের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান। যা ত্বকের যে কোনও ধরনের সংক্রমণ নিরাময় করতে সক্ষম। স্পর্শকাতর ত্বকের যত্নেও এই তেল বেশ ভাল।
আর্গন অয়েল । Argan Oil :
ভিটামিন ই-র গুণে এই তেল অনেকক্ষণ ত্বকের আর্দ্র ভাব ধরে রাখে। তাই শীতকালে স্কিন কেয়ার রুটিন (Winter Skin Care Routine)এ এই তেল থাকলে পাবেন উপকার। ত্বকের প্রয়োজনীয় বেশ কয়েকটি ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং ভিটামিন ই রয়েছে আর্গন অয়েলে। নিয়মিত এই তেল মাখলে ত্বকের তারুণ্য বজায় থাকে। বলিরেখা, ত্বকের কালচে ছোপ এবং খসখসে ভাব দূর করতে সাহায্য করে এই তেল। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টযুক্ত এই তেল নিয়মিত লাগালে রোদে পোড়া চেহারায় পুরনো জৌলুসও ফিরে আসে। ফলে উজ্জ্বল ত্বকের জন্য ফেস অয়েল (Face Oil for Glowing Skin) হিসেবে এই তেল বেশ কার্যকর। ত্বককে অতিবেগনি রশ্মি থেকে রক্ষা করে, অতিরিক্ত মেলানিন উৎপাদনেও বাধা দেয় এই তেল। আর্গন তেলে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণাগুণ আছে। তাই, এই ধরনের ত্বকের সমস্যা বা সংক্রমণের ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা ওষুধের পাশাপাশি আর্গন অয়েল লাগানোরও পরামর্শ দেন।
হোহোবা অয়েল । Jojoba Oil :
অন্যান্য তেলের তুলনায় হোহোবা অয়েলের দাম একটু বেশি। কিন্তু এই তেল বেশ কার্যকর। হোহোবা অয়েলের ঘনত্ব খুব বেশি নয়। তাই তৈলাক্ত ত্বকে মাখলেও খুব একটা অসুবিধা হয় না। স্পর্শকাতর ত্বকের জন্যেও এই তেল ভাল। হোহোবা অয়েল ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে এবং সেবামের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ত্বকের নানা ধরনের সংক্রমণও আটকাতে পারে হোহোবা তেল। ফলে শীতকালে স্কিন কেয়ার (Winter Skin Care) রুটিনে এই তেল থাকলে ত্বক থাকবে আদ্র ও জেল্লাদার।
কাঠবাদাম তেল । Almond Oil :
ভিটামিন এ, ই এবং ডি-এর প্রাকৃতিক উৎস হল কাঠবাদামের তেল। এই উপাদানগুলি ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। শীতকালে স্কিন কেয়ার (Winter Skin Care) রুটিনে ত্বক ও চুলের জন্য কাঠবাদাম তেল থাকলে উপকার পাওয়া যায়। কাঠবাদামের তেল খুবই হালকা এবং সহজেই ত্বকের সঙ্গে মিশে যায়। ত্বককে নরম এবং মসৃণ করে তোলে। ময়েশ্চারাইজার হিসেবে বাদাম তেলও ব্যবহার করতে পারেন। উজ্জ্বল ত্বকের জন্য ফেস অয়েল (Face Oil for Glowing Skin) হিসেবে কাঠবাদাম তেল বেশ কার্যকর।
অলিভ অয়েল । Olive Oil :
শীতকালে ত্বক আদ্র রাখতে অনেকেই অলিভ অয়েল ব্যবহার করে থাকেন। তবে কেবল গায়ের ত্বকের জন্যই নয়, শুষ্ক ত্বকের জন্য ফেস অয়েল (Face Oil for Dry Skin) হিসেবেও অলিভ অয়েল উপকারী। ভিটামিন ই-এর গুণে ভরপুর এই তেল ত্বকের ক্ষত নিরাময়েও সহায়তা করে। তা ছাড়াও ত্বকের প্রদাহ নাশ করার ক্ষমতাও রয়েছে অলিভ অয়েলের। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে এই তেল।
আরও পড়ুন : বিয়ের মরশুমে সেলিব্রিটিদের মতো চকচকে ত্বকের স্বপ্ন? সিটিএম রুটিন মেনে চললেই দিন কয়েকে বাড়বে জেল্লা!
প্রসঙ্গত, সাধারণত ত্বককে ময়শ্চারাইজ় করতেই ফেস অয়েল ব্যবহার করা হয়। তা ছাড়াও ভাল লিপ বাম, আন্ডারআই ক্রিম হিসেবেও ব্যবহার করা যায় ফেস অয়েল। ছাড়াও মেকআপ তুলতে বা মেকআপ টাচ আপ করতেও কাজে লাগে এই তেল। তবে ত্বকের জন্য যদি ফেস অয়েল ব্যবহার করার কথা ভাবেন তাহলে ত্বকের প্রকৃতি বুঝেই অর্থাৎ ড্ৰাই স্কিন না অয়েলি স্কিন নাকি প্রদাহজনিত স্কিন সেই বুঝে ফেস অয়েল ব্যবহার করতে হবে।