Holi 2024 | নতুনভাবে রাঙিয়ে তুলুন মনকে! এবার দোলে ঘোরার সঙ্গে হবে রং খেলাও! ঘুরে আসতে পারেন এই জায়গায়!

Wednesday, March 20 2024, 1:46 pm
highlightKey Highlights

দোল পূর্ণিমা মানে রং, আবির, পলাশফুল, নতুন শাড়ি-পাঞ্জাবি, খাওয়া দাওয়া। তবে এবার নতুনভাবে দোল উপভোগ করতে ঘুরে আসুন এই কয়েক জায়গায়।


 দিন কয়েক বাদেই ২০২৪ সালের হোলি (Holi in 2024)। চারিদিক রঙে রাঙানোর দিন। এদিন অনেকেই বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বা পছন্দের মানুষের সঙ্গে দোল খেলে থাকেন। আবার যারা ভ্রমণপ্রেমী তারা আবার এই সময়ে ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন। তবে অনেকেই বুঝেই উঠতে পারেন না কম দিনের জন্য যাবেন কোথায়। আবার অনেকে ঘুরতে যেতেও চান  আবার দোলও খেলতে চান। এই বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে আবার শনি-রবি-সোম মিলিয়ে পর পর তিন দিন ছুটি। ফলে আপনার জন্য রইলো  দোলের ছুটিতে ঘোরার জন্য কাছেপিঠের কয়েকটি ট্রাভেল ডেস্টিনেশন।

শান্তিনিকেতন । Santiniketan :

বসন্তোৎসবের কথা উঠলে প্রথমেই নাম আসবে শান্তিনিকেতনের। কবিগুরুর হাত ধরে বোলপুরে চালু হওয়া ঐতিহ্য আজও পালন করা হয় নিয়ম মেনেই। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা বসন্তোৎসবের দিন শান্তিনিকেতনকে আরও সুন্দর করে সাজিয়ে তোলেন। সঙ্গ দেন স্থানীয়রাও। সারাদিন ধরে চলে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আবির খেলা, গল্প-আড্ডা আরও কত কী। বিশ্বভারতীয় সংলগ্ন এলাকা ছাড়াও শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন জায়গায় আবির খেলা হয়। কোপাই নদীর ধার, সোনাঝুরির জঙ্গলেও রঙের খেলায় মেলে ওঠেন পর্যটকরা। কলকাতা থেকে বোলপুর যাওয়ার গাড়ি-বাস-ট্রেন সবই পাবেন। সময় লাগবে ঘণ্টা চারেক। রং খেলার পাশাপাশি বিশ্বভারতীর সাংস্কৃতিক উৎসব দেখার সুযোগও মিলবে। তবে এই সময় শান্তিনিকেতনে লোকসমাগম হয় খুব বেশি। তাই রাতে থাকতে চাইলে এখন থেকেই হোটেল বুক করে ফেলুন। বুক করে নিতে পারেন ট্রেনের টিকিটও।

পুরুলিয়া । Puruliya :

বসন্তে ঘুরতে যাওয়ার জন্য অনেকেই বেছে নেন পুরুলিয়া (Puruliya)। চারদিক পলাশের রঙে রঙিন হয়ে থাকে পুরুলিয়া। দোলে রং খেলার পাশাপাশি নানা ধরনের ফোক ডান্স দেখারও সুযোগ আপনি পাবেন লাল পাহাড়ির মাটিতে। পুরুলিয়ার দোলযাত্রা আবার সারা দেশের থেকে একদম আলাদা। ব্যতিক্রমী এই বসন্ত উৎসব চলে তিন দিন ধরে। পরব শুরু হয় দোলের ঠিক আগের দিন থেকে। চলে হোলি পর্যন্ত। এলাকাবাসী সারা বছর এই দিনগুলির জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। এই তিনদিন ধরে রঙের খেলা ছাড়াও লোকশিল্প প্রদর্শনী, নাচ-গান সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আদিবাসীদের নানা আচার আচরণ বিশেষ করে ছৌ, ঝুমুর, দরবারির সাক্ষী হতে চাইলে এবারের দোলটা কাটাতে পারেন পুরুলিয়ায়। পলাশ বনের ভিতর, কিংবা অযোধ্যা পাহাড়ের কোলে রং খেলার অনুভূতিই কিন্তু আলাদা। রং ধুতে পারেন ঝরনার জলে। শহরে বসে এমন অভিজ্ঞতা কখনও পাবেন না। সকালটা রং খেলে বিকেল থেকেই মাততে পারবেন ছৌ নাচ, দরবারী ঝুমুর, নাটুয়া নাচ এবং বাংলার বাউল গানে।

মথুরা-বৃন্দাবন । Mathura-Brindaban :

দোল খেলতে চাইলে ঘুরতে যেতে পারেন মথুরা-বৃন্দাবনে। উত্তরপ্রদেশের নন্দগাঁও, বারসানায় হোলিরও আগে থেকে শুরু হয়েছে এই হোলি উৎসব।দেশের মধ্যে খুব জনপ্রিয় মথুরা-বৃন্দাবনের হোলি। উত্তরপ্রদেশের নন্দগাঁও, বারসানায়  আবার হোলির আগে থেকে শুরু হয় লাঠমার হোলি। চারদিক সাজানো হয় আবির আর ফুলের পাঁপড়ি দিয়ে। মাঝখানে বসে মাথায় মোটা পাগড়ি আর হাতে পোক্ত ঢাল নিয়ে বসে থাকেন পুরুষরা। আর ঢাল ধরা হাতে আছড়ে পড়ে মেয়েদের হাতের লাঠির ঝড়। হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে, লাঠমার হোলির এই প্রথাটি ঐশ্বরিক দম্পতি রাধা কৃষ্ণের সময়কাল থেকে চলে আসছে।

নবদ্বীপ-মায়াপুর । Nabadwip- Mayapur :

নদিয়ার নবদ্বীপ-মায়াপুর (Mayapur) এর রঙের দোল আবার আন্তর্জাতিক। সারা বিশ্ব থেকে বহু পর্যটক দোল পূর্ণিমার দিন এখানে হাজির হন। প্রধানত ইসকনের উদ্যোগে আয়োজিত রঙের পরবের কোনও তুলনাই হয় না। মায়াপুরের রঙের মায়া কাটানো অসম্ভব। দুই তিনটে দিন সেখানে থেকে আসুন। সন্ধ্যার সময় ইসকনের মন্দিরে আরতি দেখে সময় কাটান। আনন্দ এবং প্রশান্তি উভয়েই মনকে ঘিরে ধরবে।

মহিষাদল রাজবাড়ি । Mahishadal Rajbari

দোলের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন মহিষাদল রাজবাড়ি থেকে। এখানকার দোল উৎসব খুবই বিখ্যাত। দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে প্রতিবারই সেজে ওঠে পূর্ব মেদিনপুরের মহিষাদল রাজবাড়ি। প্রতিবছর রাজবাড়ির নিজস্ব দোল উৎসব যেমন হয়, তেমনই সারা রাজ্য থেকে পর্যটকরা আসেন এই উৎসবে যোগ দিতে। রাজ্যের নানা জায়গা থেকে শিল্পীরাও আসেন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। দিনে দিনে উৎসবের জনপ্রিয়তা এবং লোক সমাগম বেড়েই চলেছে। মহিষাদল রাজবাড়িতে গেলে রাজবাড়ির মিউজিয়াম, নাটমন্দির, গোপালজিউ মন্দির, নাটশালের আশ্রম, গেঁয়োখালির ত্রিবেণী সঙ্গম ইত্যাদি দেখবেন অবশ্যই।

উদয়পুর । Udaipur :

উদয়পুরের দোল উৎসবও খুব জনপ্রিয়। মেওয়ারের রাজ পরিবার থেকে এটির আয়োজন করা হয়ে থাকে। দোলের একদিন আগে, হোলিকা দহন হিসেবে শুরু হয় এই অনুষ্ঠান। দোলের দিন সকালে রাজবাড়ির ঘোড়া, ঘোড়ার গাড়ি আর ব্যান্ড নিয়ে হয় শোভাযাত্রা। রং খেলা হয় আবির, ফুলের পাঁপড়ি দিয়ে।

ঝাড়গ্রাম । Jhargram :

শাল বনে রং খেলেছেন? না খেললে এবার খেলতে পারেন ঝাড়গ্রাম (Jhargram) এ। সেখানে শাল গাছের জঙ্গল ভর্তি। পর্যটকরা সেখানে মনের সুখে রং খেলেন। রাজবাড়ি, ঝরনা, জলাশয় ঘুরে বেড়াতে পারেন। আর রং খেলার পাশাপাশি চলতে পারে দেদার পেটপুজো। মোট কথা পর্যটকদের মনোরঞ্জনের যাবতীয় ব্যবস্থা রয়েছে এখানে।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে ভারতে হোলির তারিখ (holi 2024 date in india) হলো ২৫ তারিখ সোমবার। ফলে ২০২৪ সালে হোলি (Holi in 2024) এর আগে শনি-রবি দুদিন ছুটি। সব মিলিয়ে ২০২৪ সালে ভারতে হোলির তারিখ (holi 2024 date in india) নিয়ে ৩ দিন পর পর ছুটি! আর এই ছুটিতে পরিবার-বন্ধুদের সঙ্গে নিশ্চিন্তে ঘুরে আসতে পারেন কাছেপিঠে।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File