2023 Durga Puja | 'কুমারী পুজো' ও সন্ধি পুজোর মাহাত্ম্য কী? মহাঅষ্টমীতেই পূজিত হন মাতা মহাগৌরী!
২০২৩ দূর্গা পূজার গুরুত্বপূর্ণ দিন মহাঅষ্টমী। এদিন দেবী রূপে কুমারীকে আরাধনা করার রীতি প্রচলিত। নবরাত্রি ২০২৩ অনুযায়ী, এদিন পূজিত হন মাতা মহাগৌরী।
আজ, ২১ সে অক্টোবর, রবিবার ২০২৩ দূর্গা পূজা (2023 Durga Puja) এর মহাঅষ্টমী। দুর্গা পূজা উদযাপন (Durga Puja Celebration) এর সব থেকে বড় দিন আজ। এদিন সকল বাঙালিই দুর্গা পূজা প্যান্ডেল (Durga Puja Pandal) বা পেটপুজোতে মেতে। নতুন জামা-কাপড় পরে অষ্টমীর অঞ্জলি দেওয়াও অনেকের কাছে মাস্ট! মন্ত্রপাঠ করে সকলেই দেবীর চরণে ফুল, বেলপাতার অঞ্জলি দান করেন। এরপর মধ্যাহ্নভোজে লুচি দিয়ে পেটপুজো করে বিকেল-সন্ধ্যে থেকে দুর্গা পূজা প্যান্ডেল (Durga Puja Pandal) হপিং।
মহাস্নান শেষে অষ্টমী পূজা করা হয়। দুর্গা পূজা উদযাপন (Durga Puja Celebration) এ মহাষ্টমীর সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ হল ‘কুমারী পূজা’। এই রীতি অনুযায়ী একজন কুমারীকে দেবী দুর্গারূপে আরাধনা করা হয়। যেসব বালিকারা বয়:সন্ধিতে পৌঁছায়নি এদিন সকালে তাদের দেবীরূপে পুজো করা হয়। ১৬টি উপকরণ দিয়ে পূজার সূত্রপাত হয়। শুরুতেই গঙ্গাজল ছিটিয়ে কুমারী মা-কে শুদ্ধ করে তাঁর চরণযুগল ধুয়ে তাঁকে বিশেষ অর্ঘ্য প্রদান করা হয়। অর্ঘ্যের শঙ্খপাত্রকে সাজানো হয় গঙ্গাজল, বেল পাতা, আতপ চাল, চন্দন, পুষ্প ও দূর্বাঘাস দিয়ে। দেবীর গলায় পরানো হয় পুষ্পমাল্য। এরপর অগ্নি, জল, বস্ত্র, পুষ্প ও বাতাস- এই পাঁচ উপকরণ দেওয়া হয় ‘কুমারী’ পূজাতে। বয়স অনুযায়ী এদের নাম হয়ে থাকে সন্ধ্যা, সরস্বতী, ত্রিধামূর্তি, কালিকা, সুভগা, উমা, মালিনী, কুব্জিকা, অপরাজিতা, কালসন্দর্ভা, রুদ্রানি, ভৈরবী, মহালক্ষ্মী, পীঠনায়িকা, ক্ষেত্রঞ্জা ও অম্বিকা। এ ১৬টি নামে এরা বয়স অনুযায়ী পূজিত হয়।
অষ্টমী ও নবমী তিথির সন্ধিস্থলে করা হয় সন্ধি পূজা। মহাষ্টমীর সন্ধ্যায় ১০৮টি প্রদীপ জ্বালিয়ে সন্ধি পূজা করা হয়। কথিত আছে, মহিষাসুর বধের সময় সন্ধির এই ক্ষণেই দেবী দুর্গা চামুণ্ডা বা কালীমূর্তির রূপ ধারণ করেছিলেন। সন্ধি কথার অর্থ হল ‘মিলন’। অষ্টমী তিথির শেষ ২৪ মিনিট ও নবমী তিথির শুরুর ২৪ মিনিট, মোট ৪৮ মিনিটের মধ্যে শেষ করতে হয় সন্ধিপুজো। এই দুই তিথির মহামিলনের সময়কে ‘মহাসন্ধিক্ষণ’ বলা হয়। এই পুজো করার অর্থ হল রাগ, অভিমান সব ভুলে একসঙ্গে থাকা। প্রসঙ্গত, নবরাত্রি ২০২৩ (Navratri 2023) অনুযায়ী, আজ মহাঅষ্টমীর দিন পূজিত হন দেবীর মাতা মহাগৌরী রূপ।
সারাদেশ জুড়ে পালিত হচ্ছে নবরাত্রি ২০২৩ (Navratri 2023), ২০২৩ দূর্গা পূজা (2023 Durga Puja)। এই উৎসবের মহাঅষ্টমীর দিন মাতা মহাগৌরী রূপে মা দূর্গা ধীর-স্থির, শান্ত। বিশ্বাস করা হয়, মায়ের এই রূপের পূজা করলে দূর হয়ে যায় ভক্তের মনের সব পাপ। শাস্ত্রে প্রচলিত আছে, দীর্ঘদিন জঙ্গলে তপস্যা করার পর কালো হয়ে গিয়েছিল মা দূর্গার গায়ের রং। মহাদেব যখন গঙ্গাজল দিয়ে তাঁকে স্নান করান, তখন তিনি হয়ে ওঠেন গৌরবর্ণা। মায়ের এই নতুন রূপেরই নাম মহাগৌরী। প্রচলিত বিশ্বাস, নবরাত্রির অষ্টম রাতে তাঁর পুজো করলে সব পাপ ধুয়ে যায়। সাদা পোশাক পরিহিতা, চার হাত বিশিষ্টা দেবীর বাহন ষাঁড়। তিনি সন্তানবত্সলা, শিবসোহাগিনী, বিদ্যুদ্বর্ণা মা দুর্গার প্রসন্ন মূর্তি। দেবীর এক হাত শোভিত বরাভয় মুদ্রায়। বাকি তিন হাতে থাকে পদ্ম, ত্রিশূল এবং ডমরু। উপরের ডান হাতে রয়েছে ত্রিশূল এবং উপরের বাম হাতে একটি ডমরু। নীচের হাত দুটি অভয়া এবং বরামুদ্রার ভঙ্গিমায় থাকে। মাতা মহাগৌরীর এই রূপে দেবীর বাহন হল একটি ষাঁড়। দুর্গার এই রূপটিকে তাঁর গাত্র বর্ণের কারণে মহাগৌরী বলা হয়। ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে, মাতা সমস্ত অশুভ শক্তিকে বিনাশ করেন এবং তাঁর আশীর্বাদে জীবন সম্পূর্ণভাবে সুখময় ও প্রেমময় হয়ে ওঠে।
- Related topics -
- দূর্গা পুজো ২০২৩
- দুর্গাপুজো
- পুজো ও উৎসব