Vinicius JR. | বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই করে সম্মান! ভিনিসিয়াসের নামে আইন রাখলো রিও ডি জেনেইরো!
লা লিগা ম্যাচ চলাকালীন বর্ণবিদ্বেষের শিকার হন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। ফুটবলারের লড়াকু মনোভাবের জন্য তাঁর নামেই বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আইন ব্রাজিলে। 'ওয়াল অফ ফেমে'ও পেলেন বিশেষ সম্মান।
প্রায় দেড় মাস আগেই খেলা চলাকালীন বর্ণবিদ্বেষ ঘটনার শিকার হয়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের (Real Madrid) ব্রাজিলীয় ফুটবলার ভিনিসিয়াস জুনিয়র (Vinicius Junior)। এবার বিশ্বখ্যাত ফুটবলারের নামেই বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আইনের নাম রাখলো রিও ডি জেনেইরো সরকার (Rio De Janeiro Government)। সূত্রের খবর, ব্রাজিলের মারকানা স্টেডিয়ামে (Mercana Stadium) একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই আইনের নাম পরিবর্তনের ঘোষণা করেছে রিও সরকার।
চলতি বছরেই লা লিগা (La Liga) চলাকালীন ধারাবাহিকভাবে বর্ণবিদ্বেষী আক্রমণের শিকার হতে হয় ভিনিকে (Vinicius Jr)। তবে এই ঘটনায় থেমে থাকেন না ফুটবলার। বরং ক্রমাগত প্রতিবাদ এবং সমালোচকদের পাল্টা জবাব দেন ভিনি। এই লড়াকু মানসিকতাকে কুর্নিশ জানাতে এবং ফুটবলার ভিনিকে সম্মান জানাতেই বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে আইনের নাম বদলে রাখা হলো ভিনি জুনিয়র আইন (Vinny Jr. Act)। এই সম্মান পেয়ে রিয়াল মাদ্রিদ তারকা বলেন, এতো কম বয়সে এতো বড় সম্মান তিনি পাবেন তা ভাবতে পারেন নি।
এত কম বয়সে এমন সম্মান পাব ভাবতে পারিনি। জানি না এতকিছু পাওয়ার যোগ্যতা আমার আছে কিনা।
রিও ডি জেনেইরো সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়, ভিনির নামে বর্ণবিদ্বেষী আইনের নাম বদলই নয়, ফুটবলারকে দেওয়া হয়েছে বিশেষ সম্মানও। সূত্রের খবর, মারকানা স্টেডিয়ামের 'ওয়াল অফ ফেমে' (Maracana Stadium's 'Wall of Fame' ) বাঁধিয়ে রাখা হয়েছে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের পায়ের ছাপ। উল্লেখ্য, এখানে এর আগে মাত্র তিনজন ফুটবলারের পায়ের ছাপ রাখা হয়েছে। এই তিন ফুটবলার হলেন, পেলে (Pele), গ্যারিঞ্চা (Garrincha) ও রোনাল্ডো (Ronaldo)। এই গোটা বিষয়ে রিওর ক্রীড়া সচিব রাফায়েল পিচিয়ানি (Rafael Picciani) বলেন, ফুটবল কেরিয়ারে যাবতীয় সাফল্যের পাশাপাশি বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছেন ভিনিসিয়াস।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মে মাসে লা লিগায় ভ্যালেন্সিয়া (Valencia) বনাম রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচে গ্যালারি অর্থাৎ দর্শকদের থেকে বারংবার বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য করা হয় ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে উদ্দেশ্য করে। এই মন্তব্য এমন পর্যায়ে চলে যায় যে ম্যাচ থামিয়ে গ্যালারির দর্শকদের চিহ্নিত করেন ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড। কিন্তু ঘটনার সমাধান না হয়ে উল্টে সেখানেই শুরু হয় বচসা। ভ্যালেন্সিয়ার ফুটবলারদের সঙ্গে প্রায় হাতাহাতি লেগে যায় ভিনির। এর জেরে মাঠ ছেড়ে বেরোতে হয় ভিনিসিয়াসকে। তবে শাস্তি পেতে হয় ভ্যালেন্সিয়াকে। প্রায় ৫০ হাজার ডলার জরিমানার পাশাপাশি পাঁচ ম্যাচের জন্য বন্ধ রাখা হয় ভ্যালেন্সিয়ার গ্যালারি।
সেদিনের ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ শুরু করেন ভিনি। কড়া ভাষায় জবাব দেন সমালোচকদের। ভিনির সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদে নামেন তাবড় তাবড় ফুটবলার থেকে শুরু করে ফিফা সভাপতি ও ফুটবল জগতের প্রথম সারির ব্যক্তিরাও। রিয়ালের কোচ কার্লো আনচেলোত্তি (Carlo Ancelotti ) থেকে শুরু করে ফ্রান্সের ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপের (Kylian Mbappe) মতো প্রথম সারির একাধিক ফুটবলার ও ফুটবল জগতের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন। এই প্রতিবাদ ধীরে ধীরে ছেয়ে যায় গোটা বিশ্বে।
ভিনির সঙ্গে হওয়া বর্ণবিদ্বেষের ঘটনায় সব থেকে উল্লেখযোগ্য প্রতিবাদ করা হয় ‘ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার’ (Christ the Redeemer) এর সব আলো নিভিয়ে। সেদিনই স্থানীয় সময়ে সন্ধ্যে ৬টা থেকে নিভিয়ে রাখা হয় বিশ্বের সবথেকে উঁচু যিশুখ্রিস্টের মূর্তি ‘ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার’ আলো। এরপরেই সম্প্রতি ভিনিসিয়াসের রুখে দাঁড়ানোর লড়াইকে সম্মান জানাতে বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে আইনের নাম বদল করে ভিনির নাম রাখার সিদ্ধান্ত নিলো রিও সরকার। জানা গিয়েছে, খেলার মাঠে যদি বর্ণবিদ্বেষী আচরণ ঘটে, তাহলে খেলা বন্ধ করা বা বাতিল করা যেতে পারে এই আইনের মাধ্যমে। তবে কয়েকটি নিয়ম পালনের পরেই কার্যকরী হবে ভিনি জুনিয়র আইন।
- Related topics -
- খেলাধুলা
- ফুটবল
- ফুটবলার
- ব্রাজিল
- রিয়্যাল মাদ্রিদ
- পেলে
- ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো
- ভিনিসিয়াস জুনিয়র