Panchayat Election 2023 | ভোটের জন্য কেন্দ্রের কাছে ৮২২ কোম্পানি বাহিনী চাইলো রাজ্য নির্বাচন কমিশন!

Thursday, December 21 2023, 2:33 pm
highlightKey Highlights

নির্বাচন সন্ত্রাসে মানুষের রক্তের প্রতি বিন্দুর দায় কমিশনারকে নিতে হবে, কটাক্ষ রাজ্যপালের। পদত্যাগ করছেন না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন নির্বাচন কমিশনার।


 আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election 2023) কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) এবং সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) কাছে ধাক্কা খাওয়ার পর তৎপর রাজ্য নির্বাচন কমিশন (State Election Commission)। ভোটের জন্য ২২ কোম্পানি থেকে একে বাড়ে ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে চিঠি নির্বাচন কমিশনের।

 কেন্দ্রের কাছে ৮২২ কোম্পানি বাহিনী চাইলো রাজ্য নির্বাচন কমিশন
 কেন্দ্রের কাছে ৮২২ কোম্পানি বাহিনী চাইলো রাজ্য নির্বাচন কমিশন

পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পর থেকেই ক্রমশ উত্তপ্ত হতে শুরু করে গোটা পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal)। বোমাবাজি, গোষ্ঠীকোন্দলে প্রাণ হারান একাধিক। এমত অবস্থায় কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার জন্য। তবে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার (West Bengal Government)। তবে সেখানেও কটাক্ষের মুখে পরে ধাক্কা খেতে হয়। কলকাতা হাইকোর্টের রায়তে হস্তক্ষেপ করতে নারাজ বলে জানান  সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নাগরত্ন (Supreme Court Justice Nagarathna)। এরপর সেই নির্দেশ মেনে মাত্র ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চায় নির্বাচন কমিশন। যার ফলে রীতিমতো ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় নির্বাচন কমিশন তথা কমিশনারকে।

প্রথমে মাত্র ২২ কোম্পানি বাহিনী চাওয়ায় হাইকোর্টের কাছে ভৎসনার মুখে পড়তে হয় নির্বাচন কমিশনকে 
প্রথমে মাত্র ২২ কোম্পানি বাহিনী চাওয়ায় হাইকোর্টের কাছে ভৎসনার মুখে পড়তে হয় নির্বাচন কমিশনকে 

পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেবল ২২ কোম্পনি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে কেন্দ্রের কাছে কমিশনের আবেদনের ঘটনা প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম (Chief Justice TS Sivagnanam) কটাক্ষ করে বলেন, ২২টি জেলার ভোটের জন্য ২২ কোম্পানি বা ১৭০০ জওয়ান পর্যাপ্ত নয়। ফলে অধিক বাহিনী চাওয়ার জন্য আরও ২৪ ঘন্টা সময় বাড়তি দেওয়া হয়। সেই সময়ের মধ্যেই ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর আবেদন জানায় নির্বাচন কমিশন।

২২টি জেলার ভোটের জন্য ২২ কোম্পানি বাহিনী পর্যাপ্ত নয়, বলেন প্রধান বিচারপতি
২২টি জেলার ভোটের জন্য ২২ কোম্পানি বাহিনী পর্যাপ্ত নয়, বলেন প্রধান বিচারপতি

উল্লেখ্য, গতকাল অর্থাৎ বুধবার কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা বাড়াতে হবে। এমনকি ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের থেকেও বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করারও নির্দেশ দেয় আদালত। প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে মোতায়েন করা হয়  ৮২৫ কোম্পানি বাহিনী। বলাবাহুল্য, চলতি বছর পঞ্চায়েত নির্বাচন এক দফায় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তারওপর রাজ্যে প্রায় ৬১ হাজারের বেশি বুথ রয়েছে। ফলে এই অবস্থায়  গোটা রাজ্যে সন্ত্রাস ও হিংসা রুখতে ৮২২  কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আদৌ পর্যাপ্ত কি না, সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিরোধী দলনেতারা। 

২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের থেকেও বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেয় আদালত
২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের থেকেও বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেয় আদালত

অন্যদিকে,রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ভৎসনার ম্যুখে পড়তে হয় রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকেও (State Election Commissioner Rajiv Sinha)। প্রধান বিচারপতি ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন সংক্রান্ত মামলার রায় দিতে গিয়ে বলেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশন যদি আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে না পারেন তাহলে তিনি যেন পদ ছেড়ে দেন। এমনকি তাঁর জায়গায় নতুন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করার কথাও বলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (Governor CV Ananda Bose)।  এমনকি রাজীব সিনহার জয়েনিং রিপোর্টও (Governor Rejected State Election Commissioner Rajiv Sinha’s Joining Letter) প্রত্যাখ্যান করেছেন রাজ্যপাল। পাশাপাশি রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে ক্ষোভও উগড়ে দেন সিভি আনন্দ বোস। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কমিশনারকে নিয়োগ করা হয়েছিল, কিন্তু তাও মানুষ হতাশ হয়েছে। নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে সরাসরি উল্লেখ করে রাজ্যপাল বলেন, মানুষের রক্তের প্রতি বিন্দুর দায় নিতে হবে কমিশনারকে।

মানুষের রক্তের প্রতি বিন্দুর দায় নিতে হবে কমিশনারকে, রাজীব সিনহাকে সরাসরি উল্লেখ করে বলেন রাজ্যপাল
মানুষের রক্তের প্রতি বিন্দুর দায় নিতে হবে কমিশনারকে, রাজীব সিনহাকে সরাসরি উল্লেখ করে বলেন রাজ্যপাল

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কমিশনারকে নিয়োগ করেছিলাম । মানুষ হতাশ হয়েছে । নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ হওয়া উচিত। মানুষের রক্তপাত নিয়ে দরাদরি করা যায় না। হিংসাকে যেকোনও মূল্যে নির্মূল করতে হবে। গণতন্ত্রে হিংসার কোনও জায়গা নেই। হিংসা কোনও অবস্থাতেই কাম্য নয়, কিন্তু হিংসা হচ্ছে । মানুষের রক্তের প্রতি বিন্দুর দায় নিতে হবে কমিশনারকে।

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস
পদত্যাগ করছেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার
পদত্যাগ করছেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার

এই ঘটনার পরেই সম্পর্কিত মহলে প্রশ্ন ওঠে তাহলে কি রাজ্যপালের প্রত্যাখ্যানের পর  বৈধ রইল কমিশনারের নিয়োগ? এমনকি  রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগের দাবিও তুলতে শুরু কিওরে দেন বিরোধীরা। এক্ষেত্রে যদিও পদত্যাগ করছেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। বৃহস্পতিবার কমিশনের অফিসে ঢোকার সময় তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি ইস্তফা দিচ্ছেন কি না। সেই প্রশ্নের উত্তরে রাজীব সিনহা বলেন, রাজ্যপাল জয়েনিং রিপোর্ট গ্রহণ করেননি, এমন কোনও তথ্য তিনি পাননি। ফলে এই ঘটনা নিয়ে আরও বাড়ছে চাপানউতোর।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File