Smart Watch and Health | ঘন্টার পর ঘন্টা হাতে পরে রয়েছেন স্মার্ট ওয়াচ? অজান্তেই স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছেন না তো?
প্রায় অধিকাংশ স্মার্ট ঘড়িতে থাকে হার্ট রেট সেন্সর যা হার্ট রেট মাপে, ফিটনেস ট্র্যাকারের মতো একাধিক হেলথ ট্র্যাকার। তবে বেশিক্ষণ এই ঘড়ি পরে থাকলে উল্টে হতে পারে ক্ষতি।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের কাজ সহজ করতে আরও উন্নত হচ্ছে প্রযুক্তি। বাজারী আসছে নতুন নতুন সব যন্ত্রপাতি। যেমনটা ধরুন-স্মার্ট ব্যান্ড (smart bands) বা স্মার্ট ওয়াচ (smart watches)। বর্তমানে প্রায় সকলের হাতেই এই আধুনিক ঘড়ি দেখা যায়। নামি দামি ব্রান্ডের হোক কিংবা কমদামি টেকসই-কাজ চালানোর মতো। যেমন এর রূপের বাহার তেমনি রয়েছে গুনাগুনও। প্রায় অধিকাংশ স্মার্ট ঘড়িতে থাকে হার্ট রেট সেন্সর (heart rate sensor) যা হার্ট রেট মাপে, ফিটনেস ট্র্যাকার (fitness tracker) এর মতো একাধিক হেলথ ট্র্যাকার। আবার এখন তো স্মার্ট ওয়াচের সঙ্গে কল করার (smart watch with calling) সুবিধাও পাওয়া যাচ্ছে। তবে ঘন্টার পর ঘন্টা এই স্মার্ট ব্যান্ড বা ঘড়ি পরে থাকা কি আদতে শরীর- স্বাস্থ্যের জন্য ভালো? নাকি হেলথ ট্র্যাকিংয়ের নামে উল্টে করছে শরীরের ক্ষতি?
কীভাবে কাজ করে স্মার্ট ঘড়ি? । How does The Smartwatch Work?
স্মার্ট ব্যান্ড ঘড়িগুলি(smart band watch) পোর্টেবল এবং পরিধানযোগ্য কম্পিউটার ডিভাইস যা প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য একটি স্থানীয় টাচস্ক্রিন ইন্টারফেস সরবরাহ করে। নানারকম স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ট্র্যাকিংয়ের পাশাপাশি মোবাইল ফোনের বিভিন্ন অ্যাপও এই ঘড়ির মাধ্যমে কিছুক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়। এমনকি বর্তমানে স্মার্ট ওয়াচের সঙ্গে কল করার (smart watch with calling) সুবিধাও পাওয়া যাচ্ছে। তবেই মূলত বেশিরভাগ স্মার্ট ঘড়ি যেইসব কাজ করে থাকে-
অ্যাপস এবং কানেক্টিভিটি:
স্মার্ট ব্যান্ড ঘড়িগুলি (smart band watch) অ্যাপ চালাতে পারে, ডিজিটাল মিডিয়া চালাতে পারে এবং ক্যালকুলেটর, থার্মোমিটার এবং কম্পাসের মতো বিভিন্ন কাজ করতে পারে। এগুলি ইন্টারনেট সংযোগের জন্য স্মার্টফোনের সাথে লিঙ্ক করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এছাড়াও এই ঘড়িগুলিতে বার্তা বিজ্ঞপ্তি,জিপিএস নেভিগেশন এবং ক্যালেন্ডার সিঙ্ক্রোনাইজেশনের মতো সুবিধা পাওয়া যায়।
স্বাস্থ্য ট্র্যাকিং:
স্মার্ট ঘড়িগুলির মূল কাজের মধ্যে একটি হলো ফিটনেস ট্র্যাকার (fitness tracker)। অন্তর্নির্মিত জিপিএস এবং হার্ট রেট সেন্সর (heart rate sensor) সহ স্মার্টওয়াচগুলি প্রতিদিনের ক্রিয়াকলাপ যেমন ধাপ (steps), সিঁড়ি আরোহণ, ক্যালোরি বার্ন, ঘুমের সময় ও ধরণ এবং ব্যায়ামের সময় ট্র্যাক করে। এই আধুনিক ঘড়িগুলি হার্ট রেট পর্যবেক্ষণের মতো বিভিন্ন স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত অ্যাপ্লিকেশনগুলিকেও সমর্থন করতে সক্ষম।
স্মার্টফোনের সাথে পেয়ারিং:
স্মার্টওয়াচগুলি সাধারণত স্মার্টফোনের সাথে ব্লুটুথের মাধ্যমে পেয়ার বা যুক্ত হয়। এই ঘড়িগুলি অনেক ক্ষেত্রে ফোনের জন্য রিমোট হিসাবে কাজ করতে পারে। কল, মেসেজ, ইমেল এবং ক্যালেন্ডারের ডেটা প্রদর্শন করতে পারে।
সেন্সর:
স্মার্টওয়াচগুলি পদক্ষেপগুলি ট্র্যাক করতে পেডোমিটারের মতো সেন্সর ব্যবহার করে এবং অবস্থান ট্র্যাক করার জন্য জিপিএস, গতিবিধি শনাক্তকরণের জন্য অঙ্গভঙ্গির সেন্সর, ঘুমের ধরণগুলি নিরীক্ষণের জন্য স্লিপ মনিটর, কার্যকলাপ ট্র্যাকিংয়ের জন্য বায়োইম্পেডেন্স সেন্সর এবং হার্ট রেট পর্যবেক্ষণের জন্য অপটিক্যাল হার্ট রেট সেন্সর ব্যবহার করে।
আরও পড়ুন : শরীর সুস্থ রাখার কিছু প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য টিপস
স্মার্ট ওয়াচ ও স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব । Smartwatches and Health Effects :
আজকাল ছোট থেকে বড় প্রায় সকলের হাতেই দেখা যায় আধুনিক ঘড়ি-স্মার্ট ওয়াচ বা স্মার্ট ব্যান্ড (smart bands)। এটি ফিটনেস ট্র্যাক করতে, ওজন কমানোর যাত্রা নিরীক্ষণ এবং পরিচালনা করতে সাহায্য করে থাকে। হৃদস্পন্দন নিরীক্ষণ, পদক্ষেপ নেওয়া, দূরত্ব ভ্রমণ, এবং ক্যালোরি বার্ন দৈনিক কার্যকলাপের মাত্রার একটি পরিষ্কার চিত্র প্রদান করে এই ঘড়ি। তবে দীর্ঘায়িত স্মার্টওয়াচ ব্যবহারের ফলে উদ্ভূত সম্ভাব্য স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে সমাজে। এদিকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, ঘন্টার পর গঘন্টা স্মার্ট ওয়াচ না পরে থাকতে।
দিনে ১২ থেকে ১৮ ঘন্টা একটানা এই ঘড়ি পরা হলে, স্মার্টওয়াচ থেকে সবুজ আলোর আকারে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশনের (electromagnetic radiation) ক্রমাগত ত্বক এবং স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করতে পারে। এর পাশাপাশি ব্যবহারকারীরা মাথাব্যথা, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, মেজাজের পরিবর্তন, অনিদ্রা এবং উদ্বেগের মতো স্বাস্থ্য সমস্যাগুলি অনুভব করতে পারে। তীব্র শারীরিক ক্রিয়াকলাপের সময়, যেমন ওয়ার্কআউট, যখন শরীরের তাপমাত্রা এবং রক্তের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়, তখন স্মার্টওয়াচ থেকে বিকিরণ এক্সপোজারের সম্ভাব্য বিপদ বেড়ে যায়। ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক উদ্বেগ ছাড়াও, অবিচ্ছিন্ন হার্ট রেট পর্যবেক্ষণ বা ঘুম ট্র্যাকিংয়ের মতো নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলি অসাবধানতাবশত কিছু ব্যবহারকারীর উদ্বেগ বা বাধ্যতামূলক আচরণের কারণ হতে পারে।
আরও পড়ুন : Health tips in bangla
এখন প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করা বন্ধ করে দেওয়া উচিত? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘড়ি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখা, দায়িত্বের সাথে এই ডিভাইসগুলি ব্যবহার করা এবং ক্রমাগত এবং অত্যধিক ব্যবহারের চেয়ে ব্যক্তিগত সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া অপরিহার্য। স্মার্টওয়াচগুলি সাধারণত নিরাপদই হয় তবে কিছু ব্যক্তি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশনের প্রতি সংবেদনশীল হতে পারে, যার ফলে অস্বস্তি বা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। ফলে ব্যক্তিগত সংবেদনশীলতা সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেলে স্মার্টওয়াচ পরা থেকে বিরতি নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও এই ঘড়ি ব্যবহার করার সময় সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্মার্ট ওয়াচ ঘন্টার পর ঘন্টা না পড়ে থাকাই শ্রেয়।
- Related topics -
- লাইফস্টাইল
- স্বাস্থ্য
- প্রযুক্তি
- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
- নতুন প্রযুক্তি