Sikkim Railway Station | এনজিপি থেকে নয়, এবার ঝঞ্ঝাট ছাড়াই রেলপথে যাওয়া যাবে সিকিম! চিন সীমান্ত পর্যন্ত উত্তর-পূর্বের রাস্তা এবং রেলপথ সম্প্রসারণ!
ভার্চুয়াল মাধ্যমে সিকিমের প্রথম রেলওয়ে স্টেশনের শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর ফলে আর নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নেমে সিকিম যাওয়ার জন্য গাড়ি ধরতে হবে না। সোজা ট্রেনেই পৌঁছে যাওয়া যাবে রংপোতে।
ভ্রমণপ্রেমী বিশেষ করে পাহাড় প্রেমীদের জন্য সুখবর! এবার রেলপথেই যাওয়া যাবে সিকিম! সোমবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে সিকিম রেলওয়ে স্টেশন (Sikkim Railway Station) এর শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Prime Minister Narendra Modi)। ফলে সিকিম বেড়ানো এবার আরও সহজ। এবার থেকে আর নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নেমে সিকিম যাওয়ার জন্য গাড়ি ধরতে হবে না। সোজা ট্রেনেই পৌঁছে যাওয়া যাবে রংপো (Rangpo)তে।
সিকিমের প্রথম রেলস্টেশন!
ভারতের রেল মানচিত্রে প্রবেশ করল সিকিম। সোমবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে সিকিম রেলওয়ে স্টেশন (Sikkim Railway Station) এর উদ্বোধন করেন মোদি। তার পাশাপাশি আরও দু’হাজারটি রেল প্রকল্পের ঘোষণাও করলেন তিনি। সব প্রকল্প মিলিয়ে কেন্দ্রের তরফে ৪১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, সিকিমের প্রথম রেলস্টেশন তৈরি করা হবে রংপোয়। ২০২২ সালের বাজেটেই সিকিমের রেল প্রকল্পে আড়াই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই, নিউ জলপাইগুড়ি রেলস্টেশন থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে সেবক রেলস্টেশনে পুননির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। সেবক স্টেশন থেকেই রংপোর উদ্দেশে ট্রেন চলাচল করবে।
সেবক-রংপো রেল প্রজেক্ট :
সাধারণত পশ্চিমবঙ্গ থেকে সিকিম যেতে গেলে পর্যটকেরা সড়কপথে যাওয়াই বেশি পছন্দ করেন। অনেকে আবার দার্জিলিং থেকে সিকিমও (Darjeeling to Sikkim) ঘুরে নেন। এছাড়াও বিকল্প পরিবহণ ব্যবস্থা হিসাবে কেউ কেউ আকাশপথেও সফর করেন। তবে ভবিষ্যতে রেলপথ চালু হওয়ার ফলে বাঙালির অন্যতম প্রিয় পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার ধকল অনেকটাই কমে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। ট্রেনে করে সরাসরি যাওয়া যাবে রংপো (Rangpo) হয়ে গ্যাংটক। এমনকি চিন সীমান্তের কাছে নাথু লা (Nathu La)তেও ট্রেনে করে পৌঁছে যাওয়া যাবে।
জানা গিয়েছে, সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার পথে বিস্তৃত হবে এই রেললাইন। এর মধ্যে সাড়ে তিন কিলোমিটার সিকিমে এবং বাকি সাড়ে ৪১ কিলোমিটার পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে পড়ছে। এমনটাই জানিয়েছেন প্রজেক্ট ডিরেক্টর মহীন্দর সিং। শিলিগুড়ি রেল স্টেশন থেকে এই রেললাইন ২৬ কিলোমিটার দূরে।রেলের তরফে জানানো হয়েছে, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলপথের অন্তর্ভুক্ত সেবক-রংপো রেললাইনের উপর দিয়ে প্রতি ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন ছুটতে পারবে। প্রায় ২৩ হাজার কিলোগ্রাম ওজন নিতে সক্ষম লাইনটি। তিন ধাপে পশ্চিমবঙ্গ থেকে সিকিম রেলপথ নির্মাণ করা হবে। প্রথম ধাপে সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত রেললাইন তৈরি করা হবে। রংপো পর্যন্ত রেললাইন তৈরি হলে শুরু হবে দ্বিতীয় ধাপের কাজ। দ্বিতীয় ধাপে রংপো থেকে গ্যাংটক রেলপথের মাধ্যমে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। রেল সূত্রে খবর, তৃতীয় ধাপে গ্যাংটক থেকে নাথু লা (Nathu La) পর্যন্ত রেলপথের মাধ্যমে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
রেল জানিয়েছে, এএনআই সূত্রে খবর, সেবক-রংপো রেলপথে মোট ১৪টি সুড়ঙ্গ, ১৩টি বড় সেতু এবং ন’টি ছোট সেতু পড়বে। ইতিমধ্যেই ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি রংপো-গ্যাংটক পর্যন্ত সমীক্ষার কাজও শেষ হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই শুরু হবে পরের ধাপে নাথু লা পর্যন্ত সমীক্ষা। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের শেষে সেবক-রংপো রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ধস এবং বন্যার কারণে সেই কাজ পিছিয়ে যায়। মনে করা হচ্ছে ২০২৫ সালের মধ্যে রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ হবে। মার্চ মাসে রেললাইন সংক্রান্ত খুঁটিনাটি কাজ শুরু হবে বলে এএনআই সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকারের নজরে রয়েছে চিন সীমান্ত পর্যন্ত উত্তর-পূর্বের রাস্তা এবং রেলপথ সম্প্রসারণ। সেই কাজেরই প্রথম ধাপ ছিল সেবক-রংপো রেল প্রকল্প। এ বারে নাথু লা পর্যন্ত রেলপথও দ্রুত শেষ করার ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। যা একই সঙ্গে সেনাবাহিনী এবং পর্যটকদের সুবিধা দেবে।
উল্লেখ্য, ভ্রমণপিপাসু বাঙালিদের কাছে সিকিম দার্জিলিং (Sikkim Darjeeling) সবচেয়ে পছন্দের ডেস্টিনেশন। যার ফলে অনেকেই দার্জিলিং থেকে সিকিম (Darjeeling to Sikkim) ঘোরার প্ল্যান করে থাকেন। ছাঙ্গু লেক, নাথু লা, বাবা মন্দির থেকে শুরু করে পূর্ব ও উত্তর সিকিমের নানাবিধ পর্যটন স্থলগুলি হাতছানি দেয় পর্যটকদের। গরমের ছুটি হোক কিংবা মুড ভালো করা লম্বা উইকএন্ড, বাঙালির মাথায় একবার না একবার সিকিম দার্জিলিং (Sikkim Darjeeling) এর কথা আসবেই। দার্জিলিং যাওয়া তাও সহজ হলেও সিকিম যেতে গেলে এনজিপি স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছে সেখানে থেকে গাড়ি ধরতে হয়। অনেক সময় সুযোগ বুঝে পর্যটকদের থেকে মোটা দরও হাঁকেন গাড়িচালকরা। আবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সড়কপথে তুষার বা ধসে গাড়ি আটকে গিয়েও বিপত্তি হয়। ফলে ট্রেন চালু হলে কোনও ঝঞ্ঝাট ছাড়াই পর্যটকরা সিকিমে বেড়াতে পারবেন, তা বলাই বাহুল্য।
- Related topics -
- ভারতীয় রেল
- সিকিম
- দার্জিলিং
- নরেন্দ্র মোদি
- রেলওয়ে
- ভ্রমণ