বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

ISRO Chandrayaan 3 | চন্দ্রযান-৩ এর চাঁদ ছুঁতে বাকি ১৭৭ কিমি পথ! চাঁদে অবতরণের পরই সৌর মিশনে যাবে ইসরো!

ISRO Chandrayaan 3 | চন্দ্রযান-৩ এর চাঁদ ছুঁতে বাকি ১৭৭ কিমি পথ! চাঁদে অবতরণের পরই সৌর মিশনে যাবে ইসরো!
Key Highlights

১৪ই অগাস্ট আরও এক কক্ষপথ পেরিয়ে চাঁদের আরও কাছে পৌঁছে গিয়েছে চন্দ্রযান-৩। চাঁদে অবতরণের পরেই সূর্যের উদ্দেশ্যে মিশনে যাবে ইসরো।

চাঁদের আরও কাছে পৌঁছে গেলো ইসরোর চন্দ্রযান-৩ (Isro Chandrayaan 3)। আজ অর্থাৎ ১৪ই অগাস্ট, সোমবার সফল ভাবে চাঁদের কক্ষপথ পরিবর্তন করেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (Indian Space Research Organization') চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan-3)। চাঁদে পৌঁছতে আর মাত্র ১৭৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে ভারতের মহাকাশযানকে।

ইসরো সূত্রে খবর, আজ অর্থাৎ ১৪ই অগাস্ট, সোমবার পৃথিবীর উপগ্রহের আরও কিছুটা কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে এই মহাকাশযান।  সফল ভাবে চাঁদের কক্ষপথ পরিবর্তন করেছে চন্দ্রযান-৩। ইসরো টুইট করে জানায়, চন্দ্রযান-৩-এর আরও একটি কক্ষপথ পরিবর্তনের প্রক্রিয়া সফল ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এই মুহূর্তে চন্দ্রযান-৩ ১৫০ কিমি X ১৭৭ কিমি কক্ষপথে রয়েছে। চাঁদের টানে ওই কক্ষপথে থেকে চাঁদের চারপাশে পাক খাচ্ছে। পরবর্তী কক্ষপথ পরিবর্তিত হবে আগামী ১৬ই অগস্ট সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ।

ইসরোর পরিকল্পনা অনুযায়ী, চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাধ্যাকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে পাঁচবার কক্ষপথ পরিবর্তন করবে। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ ইতিমধ্যেই সফল ভাবে উতরে গিয়েছে সে। এখনও দু’টি কক্ষপথ পেরোনো বাকি। এর পর চন্দ্রযান-৩ ১৫০ কিলোমিটার দূরের কক্ষপথে পৌঁছবে। তার পরে তার শেষ গন্তব্য চাঁদ থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরের কক্ষপথ। সেখান থেকেই চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামবে ভারতের মহাকাশযান। জানা গিয়েছে, সোমবার তৃতীয় পর্যায়ে কক্ষপথ বদলায় চন্দ্রযান-৩। সকাল ১১টা থেকে বেলা ১২টার মধ্যে ওই কৌশল প্রয়োগ করা হয়। 

উল্লেখ্য, গত ১৪ই জুলাই দুপুর ২টো ৩৫ মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টারের (Satish Dhawan Space Center in Sriharikota) ‘লঞ্চিং প্যাড’ থেকে সফল উৎক্ষেপণ হয়েছিল ইসরোর ‘চন্দ্রযান-৩’ (Isro Chandrayaan 3)। উৎক্ষেপণের ২২ দিন পর চন্দ্রযান-৩ পৌঁছেছে চাঁদের কক্ষপথে। এর আগে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বলের টানে পৃথিবীর কক্ষপথেই ঘুরছিল মহাকাশযানটি। সেখানেও পাঁচ বার কক্ষপথ পরিবর্তন করানো হয়েছে তার। এখনও পর্যন্ত সফলভাবেই পথ অতিক্রম করছে চন্দ্রযান-৩। সব ঠিক থাকলে আগামী ২৩ সে অগস্ট বিকেল ৫টা ৪৭ মিনিটে রোভার প্রজ্ঞানকে পেটের ভিতরে নিয়ে ‘পাখির পালকের মতো অবতরণ’ অর্থাৎ সফট ল্যান্ডিং করার কথা চন্দ্রযান-৩-এর বিক্রম ল্যান্ডারের (Vikram Lander)।

তবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর উদ্দেশ্যে পাড়ি দেওয়া চন্দ্রযান-৩ আর এই যাত্রায় একলা নেই। চাঁদ ছোঁয়ার দৌড়ে রয়েছে রাশিয়ার 'লুনা-২৫' (Russia's 'Luna-25')। গতির ঝড় তুলে সেও ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর দিকে। এমনকি অনুমান করা হচ্ছে, চন্দ্রযান-৩ এবং 'লুনা-২৫' প্রায় একই সময় অবতরণ করবে চাঁদের মাটিতে। কেবল কয়েক সেকেন্ডের তফাৎ থাকবে এক্ষেত্রে।

প্রসঙ্গত, কেবল চাঁদই নয়, সূর্যের উদ্দেশ্যেও পাড়ি দিতে চলেছে ইসরো। প্রথম সৌর মিশনে যেতে চলেছে ইসরো। টুইট করে প্রথমবার আদিত্য-এল ১(Aditya-L1) এর ছবি প্রকাশ্যে এনেছে ইসরো। ছবিটিতে যে কৃত্রিম উপগ্রহটি দেখা যাচ্ছে সেটিই সূর্যের একাধিক তথ্য অনুসন্ধানের কাজ চালাবে বলে জানা গিয়েছে। ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে,পৃথিবীর নিকটতম নক্ষত্র ও সৌরজগতের বৃহত্তম বস্তুর উপর নজর রাখবে আদিত্য-এল১।

ইসরো সূর্যের উপর অবিচ্ছিন্ন নজর রাখতে তার প্রায় ১৫০০ কিলোগ্রাম বৈজ্ঞানিক রোবোটিক উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করতে চায়। জানা গিয়েছে, এই মিশনের জন্য খরচ হচ্ছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। মূলত যে লক্ষ্যে আদিত্য-এল১ এগোচ্ছে, তা হল সান-আর্থ সিস্টেমের হ্যালো অরবিটের ল্যাঙ্গরেঞ্জ পয়েন্ট ১ এ (L1) মহাকাশযানটিকে স্থাপন করা । পৃথিবী থেকে এই অঞ্চল ১.৫ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এল১-এর কাছে 'হ্যালো অরবিটে' (Halo Orbit) পৌঁছানোর বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। সূর্য ঘিরে নানা তথ্য তল্লাশিতে সুবিধা হবে। এই অঞ্চল থেকে সূর্যের উপর গ্রহণ-বিহীনভাবে নজরদারি চালানো যাবে। রিয়েল টাইমে মহাকাশের আবহাওয়ায় সূর্যের কর্মকাণ্ডের প্রভাবকে প্রত্যক্ষ করা যাবে এই অঞ্চল থেকে। জানা গিয়েছে, চাঁদে অবতরণ করার দু'তিন দিন পরেই সূর্যকে নিয়ে অধ্যয়ন শুরু করে দিতে চায় ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।