Dates Health Benefit | কেবল শীতেই নয়, মরশুম বদলের সময়েও স্বাস্থ্য ভালো রাখে খেজুর! সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে কীভাবে কখন খাবেন এই ড্ৰাই ফ্রুট?

Tuesday, March 12 2024, 9:23 am
highlightKey Highlights

একাধিক পুষ্টিগুণে ভরপুর খেজুর ড্ৰাই ফ্রুটের মধ্যে বেশ উল্লেখ্য। তবে কেবল শীতকালই নয়, অন্যান্য ঋতুতেও খেজুর স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। তবে এটি খাওয়ার সময় কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি।


মরশুম বদলের সময়ে কমবেশি সকলেরই শরীর খারাপ হয়ে থাকে। এদিকে চলতি বছর বসন্তকাল এসে গেলেও দিনে গ্রীষ্মের গরম আর রাতে শীতের ঠান্ডা অনুভব হচ্ছে অনেক জায়গায়। ফলে ঠান্ডা গরমের খেলে প্রভাব পড়ছে শরীরের ওপর। জ্বর-সর্দি-কাশি-গা ম্যাচ ম্যাচে ছোট থেকে বড় আক্রান্ত অনেকেই। এক্ষেত্রে শরীর  সুস্থ্য রাখতে বড় ভরসা হতে পারে মিক্সড ড্ৰাই ফ্রুটস (Mixed Dry Fruits)। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে উপকারী খেজুর (Dates)।

শীতকালই নয়, অন্যান্য ঋতুতেও খেজুর স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী
শীতকালই নয়, অন্যান্য ঋতুতেও খেজুর স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী

স্বাস্থ্যের উপকারে খেজুর ড্ৰাই ফ্রুট । Dates Dry Fruit for Health Benefits :

অনেকেই শীতকালে নিয়মিত খেজুর ড্ৰাই ফ্রুট (Dates Dry Fruit) খেয়ে থাকেন শরীর চাঙ্গা রাখার জন্য। তবে অনেকেরই ধারণা এই ড্ৰাই ফ্রুটস (Dry Fruits) উপকারী শীতের মরশুমের জন্যই। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খেজুর বসন্ত মৌসুমের ফল (Spring Season Fruits) না হলেও গ্রীষ্মের সঙ্গে খেজুরের কোনও বিরোধ নেই। বরং মুরশুমী অসুখ থেকে দ্রুত সুস্থ্য হতে এবং রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে এই ড্ৰাই ফ্রুটস (Dry Fruits)। দেখে নিন কী কী স্বাস্থ্য উপকার পাওয়া যায় খেজুর থেকে।

ব্রেনের সুপারফুড :

 ব্রেন ফাংশন বাড়ানোর কাজে একাই একশো খেজুর। কারণ, এই ড্রাই ফ্রুটসে এমন কিছু ফ্ল্যাভানয়েডস রয়েছে যা মস্তিষ্কের প্রদাহ প্রশমিত করার কাজে সিদ্ধহস্ত। আর এই কারণেই নিয়মিত খেজুর খেলে বাড়বে স্মৃতিশক্তি। এমনকী এড়িয়ে চলা যাবে অ্যালঝাইমার্সের মতো রোগের ফাঁদ।

রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে :

রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে খেজুর বেশ উপকারী। যাঁদের রক্তে হিমগ্লোবিনের মাত্রা কম রয়েছে, তাঁরা নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন। খেজুর খেলে রক্তাল্পতার রোগীদের শারীরিক শক্তিও বাড়বে। ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার পর অনেক মহিলাই রক্তাল্পতায় ভোগেন। তাঁদের ডায়েটেও খেজুর রাখা জরুরি।

হাড়কে শক্ত করে :

 অনেকেই বয়স ৩০-এর গণ্ডি পেরনো মাত্রই অস্টিওপোরোসিস এবং অস্টিওআর্থ্রাইটিসের মতো হাড়ের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। এক্ষেত্রে হাড়ের যত্ন নিতে পারে খেজুর। এই ড্রাই ফ্রুটসে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফসফরাস, ক্যালশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম। আর এই সমস্ত উপদান হাড়ের জোর বাড়ানোর কাজে সিদ্ধহস্ত।

রাতে ঘুম ভালো হয় :

খেজুর শরীরে মেলাটোনিন হরমোন নিঃসরণে সহায়তা করে, যার ফলে রাতে ভাল ঘুম হয়। তাই মানসিক চাপে অনিদ্রাজনিত সমস্যা এড়াতে রোজ খেজুর খেতে পারেন।

আরও পড়ুন : Health tips in bangla 

মুরশুমী অসুখ থেকে দ্রুত সুস্থ্য হতে এবং রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে খেজুর
মুরশুমী অসুখ থেকে দ্রুত সুস্থ্য হতে এবং রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে খেজুর

সুগার নিয়ন্ত্রণ করে :

ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খেজুর। তাই ডায়াবিটিস রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ মতো দিনে ২ থেকে ৩টি খেজুর খেতেই পারেন।

সংক্রমণের ঝুঁকি কমায় :

 মরশুম বদল মানেই ভাইরাল সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। এক্ষেত্রে সংক্রমণ ঠেকাতেও ডায়েটে রাখতে পারেন খেজুর। শরীরের রোগ-প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করতে খেজুর দারুণ উপকারী। যাঁদের অ্যালার্জির ধাত রয়েছে, তাঁরাও খেজুর খেলে উপকার পাবেন।

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে :

অনেকেরই রোজ সকালে পেট পরিষ্কার হয় না। এই পরিস্থিতিতে রোজ রোজ ল্যাক্সেটিভ খাওয়ার পরিবর্তে দিনে ৪টে খেজুর খেলে উপকার মেলে। খেজুরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফাইবার থাকায় বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কম হয়। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীর ডায়েটে এই ড্রাই ফ্রুট থাকাটা মাস্ট।

ওজন নিয়ন্ত্রণ করে :

জলদি ওজন ঝরাতে যাঁরা জিমে যাওয়া শুরু করেছেন, তাঁরাও ডায়েটে খেজুর রাখতে পারেন। পরিমিত মাত্রায় খেজুর খেলে ওজন বাড়ে না। তাই শরীরচর্চার আগে চাঙ্গা হতে ও শরীরচর্চার পর ক্লান্তি কাটাতে খেতেই পারেন খেজুর।

ত্বকের যত্ন নেয় :

এই ড্রাই ফ্রুটসের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি এবং ডি যা ত্বকের ইলাস্টিসিটি বজায় রাখে অর্থাৎ ত্বকের গঠন দৃঢ় রাখে। এর ফলে সহজে বলিরেখা বা রিঙ্কেলস দেখা যাবে না ত্বকে। এছাড়াও ত্বক মোলায়েম রাখতে সাহায্য করে খেজুর।

১০০ গ্রাম খেজুরে রয়েছে ৭ গ্রাম ফ্রাইবার, ২ গ্রাম প্রোটিন, ১৫ শতাংশ পটাসিয়াম, ১৩ শতাংশ ম্যাগনেশিয়াম
১০০ গ্রাম খেজুরে রয়েছে ৭ গ্রাম ফ্রাইবার, ২ গ্রাম প্রোটিন, ১৫ শতাংশ পটাসিয়াম, ১৩ শতাংশ ম্যাগনেশিয়াম

উপকারের পেতে কখন, কীভাবে খাবেন খেজুর?

পুষ্টিবিদরা বলছেন, ৰরোজ খেজুর খাওয়া ভালো তবে এটি খাওয়ার সময় কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। কারণ, খেজুরে চিনির পরিমাণ অনেক বেশি। ফলে একসঙ্গে বেশি খেজুর খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। তাই খেজুরের পরিমাণের উপর নজর রাখা জরুরি। ২-৪টে খেজুর খেয়ে নিলে উপকার মিলবে বেশি। দিনের যে কোনও সময়ে খেজুর খাওয়া গেলেও সকালে ভিজিয়ে রাখা খেজুর খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ভাল।

দিনে ২-৪টে খেজুর খেয়ে নিলে উপকার মিলবে বেশি
দিনে ২-৪টে খেজুর খেয়ে নিলে উপকার মিলবে বেশি

 মরশুম বদলের সময়ে তাপমাত্রার হেরফেরের কারণে অনেকেরই দৈহিক তাপমাত্রা কমে যায়। এক্ষেত্রে ঠান্ডা কাটিয়ে শরীর উষ্ণ বা গরম রাখতে অর্থাৎ দৈহিক তাপমাত্রা সঠিকভাবে বজায় রাখতে সাহায্য করে এই খেজুর। প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, গ্লুকোজ, সুক্রোজ, ফ্রুক্টোজ থাকে খেজুরের মধ্যে। অনেকেই শীতে মিক্সড ড্ৰাই ফ্রুটস (Mixed Dry Fruits) এর মধ্যে খেজুর খেয়ে থাকেন। তবে শীতকাল চলে যেতেই তা খাওয়া বদনঃ করে দেন। পুষ্টিবিদরা বলছেন, ১০০ গ্রাম খেজুরে রয়েছে ৭ গ্রাম ফ্রাইবার, ২ গ্রাম প্রোটিন, ১৫ শতাংশ পটাসিয়াম, ১৩ শতাংশ ম্যাগনেশিয়াম,৪০ শতাংশ কপার, ১৩ শতাংশ ম্যাঙ্গানিজ, ৫ শতাংশ আয়রন ও ভিটামিন বি-৬ রয়েছে ১৫ শতাংশ। ফলে সারাবছরই খেজুর খাওয়া যায়। এর পাশাপাশি বসন্তে শরীর সুস্থ্য রাখতে বসন্ত মৌসুমের ফল (Spring Season Fruits)ও ডায়েটে রাখা ভালো।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File