National Unity Day | ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা 'লৌহ মানব' সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল!

Tuesday, October 31 2023, 10:18 am
highlightKey Highlights

সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলকে সম্মান জানাতে তাঁর জন্মবার্ষিকীতে, ৩১ সে অক্টোবর দেশ জুড়ে পালিত হয় জাতীয় ঐক্য দিবস বা সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল জয়ন্তী বা রাষ্ট্রীয় একতা দিওয়াস।


ভারতের স্বাধীনতা তথা রাজনীতির ইতিহাসে অমর হয়ে থাকা ‘লৌহ মানব’ সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল (Sardar Vallabh Vai Patel)কে সম্মান জানাতে ইতিমধ্যেই গুজরাটে তৈরি হয়েছে স্ট্যাচু অব ইউনিটি (Statue of Unity)। ভাদোদরা থেকে স্ট্যাচু অফ ইউনিটি (Vadodara to Statue of Unity) অবস্থিত ৯০ কিলোমিটার দূরে। কেবল স্ট্যাচু অব ইউনিটিই নয়, বল্লভ ভাই প্যাটেলকে সম্মান জানাতে প্রতিবছর ৩১ সে অক্টোবর সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের জন্মবার্ষিকীতে দেশজুড়ে পালিত হয় জাতীয় ঐক্য দিবস (National Unity Day)

সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলকে সম্মান জানাতে তাঁর জন্মবার্ষিকীতে দেশ জুড়ে পালিত হয় জাতীয় ঐক্য দিবস 
সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলকে সম্মান জানাতে তাঁর জন্মবার্ষিকীতে দেশ জুড়ে পালিত হয় জাতীয় ঐক্য দিবস 

সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের জীবনী । Biography of Sardar Vallabh Vai Patel :

Trending Updates

সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলকে বলা হয়  ‘ভারতের লৌহমানব’ বা ‘দ্য আয়রনম্যান অফ ইন্ডিয়া’। গান্ধীজীর একটি আদেশে যিনি অখণ্ড ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পদকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন, ভারতের সর্বকালের অন্যতম মহান রাজনীতিবিদ সর্দার বল্লভভাই জাভেরভাই প্যাটেল (Sardar Vallabhbhai Jhaverbhai Patel)। দেশের প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও ছিলেন তিনিই।

প্রারম্ভিক জীবন । Early Life  :

পরাধীন ভারতে গুজরাটের নাদিয়াদে এক সম্ভ্রান্ত কুর্মী পরিবারে বল্লভভাই প্যাটেল জন্মগ্রহণ করেন। বাবা জাভেরভাই প্যাটেল ঝাঁসির রাণী লক্ষ্মীবাঈয়ের সেনাবাহিনীতে কিছুদিন সার্ভিসে যুক্ত ছিলেন। মা লাডবাঈ ছিলেন একজন আধ্যাত্মিক তপস্বিনী মহিলা। বাবা-মায়ের সূত্রেই বল্লভভাই প্যাটেল অধিকারী হয়েছিলেন একটি প্রগাঢ়, শীতল এবং আপোষহীন ব্যক্তিত্বের। ছয় সন্তানের একজন ছিলেন বল্লভভাই প্যাটেল। বাড়িতেই প্রাথমিক শিক্ষালাভ করেন বল্লভভাই প্যাটেল। এরপর এক গুজরাটি স্কুলে কিছুদিন শিক্ষা লাভ করেন তিনি। তবে কিছুদিন যেতেই  ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি হন তিনি। সেখানে পড়ার সময় ১৮৯১ সালে মাত্র ষোল বছর বয়সে জাভেরবেন নাম্নী এক মেয়ের সঙ্গে তাঁর বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিয়ের প্রায় ছয় বছর পরেই বল্লভভাই ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন।  বল্লভ ভাই প্যাটেলের এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তানও হয়। ১৯১১-তে প্রিয়পত্নী জাভেরবেন প্যাটেলের মৃত্যু হয়।

মানসিকভাবে ভেঙে পড়া প্যাটেল ছত্রিশ বছর বয়সে ইংল্যান্ডে গিয়ে ব্যারিস্টারি পড়বেন বলে মনস্থির করেন। সেই মতো ইংল্যান্ডের মিডল টেম্পলে ৩৬ মাসের ব্যারিস্টারির পড়া ৩০ মাসে শেষ করে রেকর্ড সৃষ্টি করেন তিনি। ইংল্যান্ড থেকে দেশে ফিরে গুজরাটের গোধরায় ওকালতি ব্যবসা শুরু করেন প্যাটেল। এই পেশায় বেশ নামডাকও অর্জন করেন তিনি। যার ফলে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে বিচার বিভাগীয় উচ্চতর পদে নিয়োগের প্রস্তাব করেন। কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব স্বীকার করেন না। যে ব্রিটিশের হাতে দেশ নির্যাতিত হচ্ছিলো সেই ব্রিটিশ সরকারের অধীনে কাজ করতে নারাজ ছিলেন সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল (Sardar Vallabh Vai Patel)

ইংল্যান্ডের মিডল টেম্পলে ৩৬ মাসের ব্যারিস্টারির পড়া ৩০ মাসে শেষ করে রেকর্ড সৃষ্টি করেন সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল
ইংল্যান্ডের মিডল টেম্পলে ৩৬ মাসের ব্যারিস্টারির পড়া ৩০ মাসে শেষ করে রেকর্ড সৃষ্টি করেন সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল

ভারত স্বাধীনতায় অবদান । Contribution to India's Independence :

১৯১৭ সালে বল্লভভাই আহমেদাবাদে স্যানিটেশন কমিশনার (Sanitation Commissioner) পদের নির্বাচনে জয়লাভ করেন। উল্ল্যেক্ষভাবে, রাজনীতিতে কোনও আগ্রহী ছিল না বল্লভভাই প্যাটেলের। এমনকি গান্ধীজীর অহিংস নীতির ঘোর বিরোধীও ছিলেন তিনি। তবে ১৯১৭ সালেই অক্টোবরে এক সভায় গোধরায় গান্ধীজীর সঙ্গে বল্লভভাইয়ের প্রথম সাক্ষাৎ হয়। আর সেই সাক্ষাতই বদলে দেয় তাঁর চিন্তাধারা। গান্ধীজীর আচরণ ও দর্শনে প্যাটেল মুগ্ধ হন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল। এরপরেই তিনি গান্ধীজীর স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগদান করেন। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য ইংরেজি বেশ-ভূষা ছেড়ে খাদি পরা শুরু করেন তিনি। এরপর গান্ধীজীর অনুরোধে প্যাটেল কংগ্রেসে যোগ দেন এবং গুজরাট কংগ্রেসের সেক্রেটারি পদ গ্রহণ করেন।

গুজরাটের কায়রায় ভয়াবহ বন্যায় কৃষকগোষ্ঠী মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ব্রিটিশদের কৃষকদের ওপর করারোপ, জমি কেড়ে নেওয়ার মতো ঘটনা ঘটলে কৃষকরা ‘কর দেব না’ আন্দোলন শুরু করেন। আর এই আন্দোলনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন বল্লভভাই। কায়রার কৃষকদের সংগঠিত করে বিশাল ‘কর শুল্ক অভিযান’ পরিচালনা করেন তিনি। এই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মুখে ব্রিটিশরাজ নত হয় এবং কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দেওয়া শুরু করে। এরপরই কায়রার কৃষকরা বল্লভভাইকে ‘সর্দার’ উপাধি প্রদান করে। এরপর ১৯২৩ সালে গান্ধীজী 'অসহযোগ আন্দোলন' শুরু করলে সর্দার প্যাটেল সে আন্দোলনেও সর্বাত্মকভাবে অংশগ্রহণ করেন। গান্ধীজীর নির্দেশে এ সময় বল্লভভাই প্যাটেল পশ্চিম ভারত ভ্রমণ করে কংগ্রেসের পক্ষে প্রায় তিন লাখ সদস্য এবং প্রায় পনেরো লক্ষ টাকা দলের তহবিলে সংগ্রহ করেন। এছাড়াও গান্ধীজীর  গ্রেফতারির পর প্যাটেলই সত্যাগ্রহ আন্দোলনের নেতৃত্ব প্রদান করেছিলেন। বারদোলির কৃষকরা সরকার কর্তৃক কর বৃদ্ধির ফাঁদে পড়লে আবারও সরকার এবং কৃষকদের মধ্যে গিয়ে দাঁড়ান কংগ্রেস এবং সর্দার প্যাটেল।

১৯১৭ সালে বল্লভভাই আহমেদাবাদে স্যানিটেশন কমিশনার পদের নির্বাচনে জয়লাভ করলেও রাজনীতিতে কোনও আগ্রহী ছিল না তাঁর 
১৯১৭ সালে বল্লভভাই আহমেদাবাদে স্যানিটেশন কমিশনার পদের নির্বাচনে জয়লাভ করলেও রাজনীতিতে কোনও আগ্রহী ছিল না তাঁর 

এরপর গান্ধীজির ডাকে 'সর্দার' ‘লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলনে’ও যোগদান করেছিলেন। তবে এই আন্দোলনের জেরে গান্ধীজী-সহ সর্দার প্যাটেল ও অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কারাগারবন্দি হতে হয়েছিল। পরের বছর ১৯৩১ সালে গান্ধীজীর সাথে তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড আরউইনের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যেটি ইতিহাসে ‘গান্ধী-আরউইন চুক্তি’ নামে খ্যাত। সেই চুক্তির একটি শর্ত ছিল গান্ধীজী তার অনুসারীদের আন্দোলন থামাতে বলবেন এবং সরকার সকল রাজবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তি দেবে। চুক্তির আওতায় সর্দার প্যাটেল ও অনেক রাজবন্দী মুক্তি পেয়েছিলেন। এরপর ১৯৩১ সালেই সর্দার প্যাটেল করাচিতে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের জাতীয় সম্মেলনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। তবে সভাপতি হওয়ার পরে অনেক বিষয়েই কংগ্রেসের আধিকারিকদের সঙ্গে তার মতপার্থক্য দেখা দিতে থাকে। এমনকি নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর (Subhas Chandra Bose) সঙ্গে গান্ধীজীর মতভেদ এবং মনোমালিন্য হলে প্যাটেল নেতাজীকে ‘ক্ষমতালোভী’ আখ্যা দিয়েছিলেন এবং এর ফলে যথেষ্ট সমালোচিতও হয়েছিলেন। 

তবুও এক সময়ের গান্ধীবাদীর বিরোধী এই সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলই কোনোদিনও রাজনীতিতে গান্ধীজীর মতের বাইরে গিয়ে কিছু করেননি। ১৯৪২ সালেও গান্ধীজী যখন ইংরেজদের বিরুদ্ধে ‘ভারত ছাড় আন্দোলন’ শুরু করেন তখন সর্দার প্যাটেল ভারত ছাড় আন্দোলনেও আপাদমস্তক গান্ধীজীকে সমর্থন করেন। প্যাটেলসহ কংগ্রেসের কয়েকজন বড় বড় নেতৃবৃন্দকে এ সময়ে গ্রেফতার করা হয়। তিন বছর কারাগারবন্দি থাকার পরে ১৯৪৫ সালে মুক্তি পান। সর্দার প্যাটেল দেশ ভাগের পক্ষে ছিলেন। তিনি মনে করতেন, একমাত্র দেশ ভাগই হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাকে শান্ত করতে পারবে। গান্ধীজীকেও তিনি দেশ ভাগের ব্যাপারে বোঝানো শুরু করেন। উল্লেখ্য, হিন্দু-মুসলিম প্রতিনিধিদলের সমন্বয়ে গঠিত পার্টিশন কাউন্সিলের একজন সদস্য ছিলেন সর্দার প্যাটেল। ১৯৪৬ সালে কংগ্রেসের সভাপতি পদে নির্বাচন করা হয় সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলকে। এ বিষয়টি নিশ্চিত ছিল যে কংগ্রেসের সভাপতি যিনি হবেন তিনিই হবেন স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রত্যেকটি প্রদেশের কংগ্রেস সভাপতিদের একটি করে ভোট ছিল এই নির্বাচনে। মোট পনেরটি ভোটের মধ্যে সর্দার প্যাটেল তেরটি ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। হবে গান্ধীজীর অনুরোধে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেন। অনেকের মতে, সর্দার প্যাটেল ছিলেন খানিকটা রক্ষণশীল এবং নেহেরু ছিলেন কিছুটা উদারপন্থী,আর, একটি নবসৃষ্ট দেশকে সুসংগঠিত করার জন্যে নেহেরু অধিক যোগ্য। এই কারণেই গান্ধীজি সর্দারকে উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণের অনুরোধ করেছিলেন।

গান্ধীজীর অহিংস নীতির ঘোর বিরোধী থাকলেও পরবর্তীতে গান্ধীজির মতাদর্শ ছাড়া কোনো কাজ করতেন না সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল
গান্ধীজীর অহিংস নীতির ঘোর বিরোধী থাকলেও পরবর্তীতে গান্ধীজির মতাদর্শ ছাড়া কোনো কাজ করতেন না সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল

'ভারতের লৌহমানব' সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল । 'Iron Man of India' Sardar Vallabhbhai Patel : 

দেশীয় জমিদার বা রাজা যারা ইংরেজদের কর প্রদান করে নিজেদের মতো করে নিজ রাজ্য বা জমিদারির অন্তর্ভুক্ত এলাকা শাসন করতেন সেই এলাকাগুলোকে বলা হতো প্রিন্সলি স্টেট। ‘দ্য ইন্ডিয়ান ইনডিপেন্ডেন্স অ্যাক্ট, ১৯৪৭’ (The Indian Independence Act, 1947) এর আওতায় ইংরেজ সরকার প্রিন্সলি স্টেটের রাজা বা জমিদারদের দুটো শর্ত রাখে। হয় ভারত বা পাকিস্তানের সঙ্গে জুড়ে যাওয়া, নয়তো স্বাধীন থাকা। এক্ষেত্রে সিংহভাগ প্রিন্সলি স্টেটের রাজাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ভি পি মেনন (VP Menon) এবং সর্দার প্যাটেল তাদের ভারতে অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে রাজি করালেও সমস্যার সৃষ্টি হয় জুনাগড়, হায়দরাবাদ, জম্মু ও কাশ্মীর ও ভোপালকে নিয়ে। তবে পরবর্তীতে রাজনৈতিক ছলনা ও কূটনীতির দ্বারা এ রাজ্যগুলোকেও ভারতের অন্তর্গত করেছিলেন সর্দার প্যাটেল। জম্মু ও কাশ্মীর পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে সেনাবাহিনীকে জম্মু ও কাশ্মীরে প্রবেশ করিয়ে পুরোটা দখল করা নিয়ে নেহেরুর সঙ্গে প্যাটেলের বাক-বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়েছিল। তবে এভাবেই, সর্দার প্যাটেল ভারতের অখণ্ডতা রক্ষা করেন। এছাড়াও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে থাকাকালীন ভারতীয় সিভিল সার্ভিস ও ভারতীয় পুলিশ সার্ভিস গঠন ও সংস্কারে সর্দার প্যাটেলের অবদান অনস্বীকার্য। গান্ধীজীর হত্যাকাণ্ডের পর তিনিই রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘকে (RSS) নিষিদ্ধ করেন। দেশ স্বাধীনে সীমাহীন অবদানের সঙ্গে স্বাধীন ভারতের জন্যও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল। একাধিক বাধা আসা সত্ত্বেও দেশের জন্য নিজের শেষটুকু দিয়ে 'লৌহ মানবে'র মতোই লড়াই করে গিয়েছিলেন বল্লভভাই।

 ভারতের অখণ্ডতা রক্ষা করেন 'ভারতের লৌহ মানব' সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল
ভারতের অখণ্ডতা রক্ষা করেন 'ভারতের লৌহ মানব' সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল

জাতীয় ঐক্য দিবস । National Unity Day :

 ১৯৫০ সালের ডিসেম্বর মাসের ১৫ তারিখ সর্দার প্যাটেল দিল্লীর বিড়লা হাউসে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের অবদানের জন্য ১৯৯১ সালে সর্দার প্যাটেলকে ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক মরণোত্তর ভারতরত্ন প্রদান করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এরপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Prime Minister Narendra Modi) ২০১৪ সালে প্রথমবারের জন্য সরকার গঠন করার পর সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলকে সম্মান জানাতে তাঁর জন্মবার্ষিকীর দিনটিতে অর্থাৎ ৩১সে অক্টোবর জাতীয় একতা দিওয়াস (Ekta Diwas) বা সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল জয়ন্তী (Sardar Vallabhbhai Patel Jayanti) বা জাতীয় ঐক্য দিবস (National Unity Day) হিসেবে ঘোষণা করেন। এছাড়াও গুজরাটের নর্মদা জেলায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে সর্দার প্যাটেলের প্রায় ১৮২ মিটার উঁচু প্রতিকৃতি– দ্য স্ট্যাচু অফ ইউনিটি। ভাদোদরা থেকে স্ট্যাচু অফ ইউনিটি (Vadodara to Statue of Unity) অবস্থিত ৯০ কিমি দূরে। দ্য স্ট্যাচু অফ ইউনিটি বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভাস্কর্য।

গুজরাটের নর্মদা জেলায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে সর্দার প্যাটেলের প্রায় ১৮২ মিটার উঁচু প্রতিকৃতি– দ্য স্ট্যাচু অফ ইউনিটি
গুজরাটের নর্মদা জেলায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে সর্দার প্যাটেলের প্রায় ১৮২ মিটার উঁচু প্রতিকৃতি– দ্য স্ট্যাচু অফ ইউনিটি

সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল জয়ন্তী (Sardar Vallabhbhai Patel Jayanti) উপলক্ষ্যে চলতি বছর, অর্থাৎ ২০২৩ এর ৩১সে অক্টোবর 'দ্য স্ট্যাচু অফ ইউনিটি'র সামনে রাষ্ট্রীয় একতা দিবস পালন করা হচ্ছে। এদিন এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের একতা নগরে স্ট্যাচু অফ ইউনিটির কাছে জাতীয় ঐক্য দিবসের শপথ গ্রহণ করেন। এছাড়া স্ট্যাচু অফ ইউনিটিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানেও অত্যন্ত উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে বিভিন্ন রকমের স্টান্ট দেখান পুলিশ কর্মীরা। কেবল স্ট্যাচু অফ ইউনিটির সামনেই নয় গোটা দেশ জুড়েই এদিন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলকে সম্মান জানানো হচ্ছে।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File